
আসসালামু আহলাইকুম। আজ আমি আপনাদেরকে নতুন ওয়েব ডেভেলপ ধারনা আরএমডব্লিউএস'র সহিত পরিচিত করাবো। প্রথমে আমি আমার পরিচয় দিতেছি। আমি কুয়েট থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল এ স্নাতক সম্পূর্ণ করে বর্তমানে বুয়েটে উন্নত প্রকৌশল ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত আছি। পাশাপাশি গত পাঁচ বছর যাব্যত দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক পরামর্শক হিসাবে কাজ করতেছি। আমি বরাবর পুরান ধারনার সমস্যাগুলি দূর করে সেটার নতুন ধারণা প্রশন করতেই বেশী আগ্রহী। এবং সবাই মিলে একটু আলাদা কিছু করতেই বেশি পছন্দ করি। তার ওই প্রচেষ্টায় আজ আরএমডব্লিউএস নামে একটা নতুন ধারণা আপনাদের নিকট উপস্থাপন করব। যেটা নিয়া উন্নত বিশ্বে কিছুটা কাজ শুরু হলেও আমাদের দেশে এখনও শুরু হয়নি।
আজকের এই লেখার মূল উদ্দেশ্যঃ
১। আপনাদেরকে নতুন ওয়েব ডেভেলপ ধারনা আরএমডব্লিউএস সহিত পরিচিত করানো।
২। নিয়মিত/আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং কাজের বিকল্প হিসাবে আরএমডব্লিউএস'র ভূমিকা আলোচনা।
৩। আরএমডব্লিউএস গঠন ও ডেভেলপ কৌশল আলোচনা।
৪। ওয়েব ডেভেলপারসহ অন্যান্য পেশাজীবীদের বিকল্প কর্মস্থানে আরএমডব্লিউএস'র সম্ভাবনাসমূহ আলোচনা।
৫। পরিশেষে আরএমডব্লিউএস'র ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ও ওয়েব অবকাঠামো বিষয়ক আলোচনা।
এখন নতুন ওয়েব ডেভেলপ ধারণা আরএমডব্লিউএস সহিত পরিচিতি হবার পালা। প্রথমে জানা যাক, আরএমডব্লিউএস কি? আরএমডব্লিউএস (RMWS) হল রেডি মেড ওয়েব সার্ভিস (Ready Made Web Service), বিভিন্ন ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদান করার জন্যে। তাহলে আগে জানাযাক ওয়েবসাইট কি? সাধারন কথায় ওয়েবসাইট হলো কোন কিছুর ভার্চুয়াল বা ওয়েব ভার্সন। ওয়েবসাইট কোন ওয়েব সার্ভারে রাখা ওয়েব পেজ, ছবি, অডিও, ভিডিও ও অন্যান্য ডিজিটাল তথ্যের সমষ্টিকে বোঝায়, যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অ্যাক্সেস করা যায়। ওয়েব পেজ মূলত একটি এইচটিএমএল ডকুমেন্ট, যা এইচটিটিপি প্রোটোকলের মাধ্যমে ওয়েব সার্ভার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওয়েব ব্রাউজারের স্থানান্তরিত হয়। ওয়েবসাইট সর্ম্পকে আপনাদের সবার কম বেশি ধারনা আছে। তাই এই বিষয়ে আর বেশী কিছু বলার দকার নাই।
ওয়েবসাইট কেন দরকার?
মূলত নিম্নোক্ত কারনে ওয়েবসাইট দরকার হতে পারেঃ
১। ওয়েব ভিত্তিক সেবা (ডব্লিউবিএস) প্রদান করার জন্য (যে কাজে অদূর ভবিষতে সব চেয়ে বেশি ওয়েবসাইট ব্যবহার করা হবে)।
২। কোম্পানি, পণ্য বা সেবার পরিচিতি বা প্রচারনার জন্য (বর্তমানে যে কাজে সব চেয়ে বেশি ওয়েবসাইট ব্যবহার করা হয়)।
৩। অনলাইনে পণ্য বিক্রয় ও পণ্যের অর্ডার নিবার জন্য (যেটাকে আমরা সাধারনত ইকমার্স বলে জানি)।
৪। ওয়েব ভিত্তিক বিজনেস অটোমেশন (ইআরপি) এর জন্য।
৫। ওয়েবের মাধ্যমে যোগাযোগ করার জন্য (যেমন ওয়েব মেইল, ফেসবুক, স্কাইপি ইত্যাদি)।
৬। ব্লগিং
৭। ফাইল শেয়ারিং
ওয়েবসাইটের সুবিধাসমূহঃ
১। ওয়েবের মাধ্যমে প্রায় আমাদের ৫০% দৈনন্দিন কাজ করা সম্ভব।
২। আর কিছু সাপোর্টিং হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে ৮০% পর্যন্ত করা সম্ভব হতে পারে।
৩। সহজ প্রাপ্যতা (ওয়েব হোস্টিং)।
৪। সহজ প্রবেশাধিকার (ওয়াইফাই/৩জি/স্মার্ট ফোন/ট্যাব/নেটবুক)।
৫। দ্রুত প্রতিক্রিয়া (ওয়েব অ্যাড)।
৬। এক সাথে অনেক মানুষের সমাগম।
৭। বিশ্ব ব্যাপী।
৮। ব্যবহার করা সহজ ও সহজ শিখতে।
আরএমডব্লিউএস কি?
এটা একটা নতুন ধারণা। ইতিমধ্যে এটা নিয়া সীমিত আকারে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতে এটা বেপক জনপ্রিয় হবে ও এটা নিয়া অনেক কাজ হবে। আর সব থেকে বড় বেপার হল এটা নিয়মিত/আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং কাজের একটা ভাল ও নির্ভরযোগ্য বিকল্প হতে পারে। তাহলে এটা নিয়ে একটু বিস্তারিত জানা যাক। সাধারনত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যদি কোন ওয়েবসাইট দরকার হয়, তাহলে তারা কোন ওয়েব ডেভেলপারকে বলে আর ডেভেলপার এককালীন কিছু অর্থের বিনিময়ে সেটা বানায় দেয়। ভবিষ্যতে কোন পরিবর্তনের দরকার হলে সম্ভাব হলে সে নিজেই করে বা আবার ডেভেলপারের শরণাপন্ন হয়। এটা যদি কোন প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত দরকার হয়, তাহলে তারা সাধারনত স্থায়ী ওয়েব ডেভেলপার রাখে। ওয়েবসাইট বানানোর পরে এর সাথে প্রয়োজনীয় ইন্টিগ্রেশন (যেমন পেমেন্ট গেটওয়ে) করে সেটা ওয়েবে হোস্টিং করা হয়। আর আরএমডব্লিউএস অনেকটা রেডি মেড গ্যার্মেন্ট (Ready Made Garment) এর মত। বিভিন্ন গ্যার্মেন্ট ফ্যাক্টরী রেডি মেড গ্যার্মেন্ট বানায়া শোরুমে পাঠায় আর শোরুমে সেগুলি বিভিন্ন মূর্তিতে পড়ায় রাখা হয়। ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে গ্যার্মেন্ট ফ্যাক্টরী হল ওয়েব ডেভেলপার, রেডি মেড গ্যার্মেন্ট হল ওয়েব ভিত্তিক সেবা (ডব্লিউবিএস), মূর্তি হল ওয়েব হোস্টিং আর শোরুম হল ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকারী (ডব্লিউএসপি)। ওয়েব ডেভেলপারা সাধারনত নিজেরা সরাসরি ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদান করে না। তারা সাধারনত ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানে আগ্রহী কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট বানায় দেয়। যেমন গ্যার্মেন্ট ফ্যাক্টরী শোরুমেগুলার জন্য রেডি মেড গ্যার্মেন্ট বানায়। শোরুমেগুলা সস্তার জন্য নিজেরা না বানায় গ্যার্মেন্ট ফ্যাক্টরীর মাধ্যমে রেডি মেড গ্যার্মেন্ট বানায়। আজকাল ঠিক একই রকম ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলি সস্তার জন্য আউটসোর্স/ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বানাই নিতেছে। কিন্তু আউটসোর্স/ফ্রিল্যান্সিং এর বেশ কিছু অসুবিধা আছে।
ফ্রিল্যান্সার বা ওয়েব ডেভেলপারের ক্ষেত্রেঃ
১। নতুন ওয়েব ডেভেলপারদের প্রথমে নিয়মিত/আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া বেশ কঠিন।
২। আর আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং কাজে এককালীন কিছু অর্থ পাওয়া যায় যা অনেক ক্ষেত্রেই খুব সামান্য। অথচ বায়ার এটার মাধ্যমে অনেক দিন যাবত অনেক আয় করতে পারে।
যে আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং কাজ দিবে তার বা ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকরী (ডব্লিউএসপি) এর ক্ষেত্রেঃ
১। ওয়েবসাইটে সাধারনত প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফিচার সংযুক্ত করতে হয়, সে ক্ষেত্রে অনেক সময়ই ওয়েব ডেভেলপারের সাপোর্ট পাওয়া যায় না।
২। অনেক ক্ষেত্রেই ওয়েবসাইটের গুনগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না।
৩। গোপনীয় তথ্য এর নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে।
৪। আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং সাইটে দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার নির্বাচন করা কঠিন।
৫। আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ওয়েব ডেভেলপারের দক্ষতা পরীক্ষিত না।
৬। ভাল ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকরী ওয়েবসাইটের আইডিয়া বানানো কঠিন।
৭। ওয়েবসাইটের জন্য নিজস্ব ক্লাউড ওয়েব হোস্টিং ও নিজস্ব পেমেন্ট গেটওয়ের ব্যবস্থা করা খুব কঠিন।
৮। তাছাড়া বিভিন্ন আইনগত বেপার আছে।
আসলে এই সমস্যাগুলি দূর করা জন্যই এই নতুন ওয়েব ডেভেলপ ধারণা আরএমডব্লিউএস। এবার ধরুন রেডি মেড গ্যার্মেন্ট যেমন বিভিন্ন ক্রেতার জন্য বিভিন্ন মাপে বানানো হয়, ঠিক একইভাবে যদি ওয়েব ডেভেলপেরা ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকরী ওয়েবসাইট এমনভাবে বানাত যেন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের চাহিদামাফিক প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে পারে। যাকে কাস্টমাইজেশন সিস্টেম বলা যায়। এই ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকরী ওয়েবসাইটগুলি যদি কোন ওয়েব প্ল্যাটফর্মে রাখা হয় যা রেডি মেড ওয়েব হোস্টিং ও পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টিগ্রেটেড এবং ওয়েব ডেভেলপারা ভবিষ্যৎ চাহিদামাফিক নিয়মিত হালনাগাদ করে আর প্ল্যাটফর্ম কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় মান নিয়ন্তন ও নিরাপত্তাগত দিক দেখে, তাহলে এখন এই ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকরী ওয়েবসাইটগুলির প্রতিটিকে এক একটি আরএমডব্লএস বলা হবে। আশা করি এখন আরএমডব্লিউএস সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা হয়েছে।
আরএমডব্লিউএস’র বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
১। ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক
২। অবকাঠামো (ক্লাউড হোস্টিং) অন্তর্ভুক্ত
৩। পেমেন্ট গেটওয়ে অন্তর্ভুক্ত
৪। সহজ কাস্টমাইজেশন
৫। প্রশাসন ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত
৬। স্বয়ংক্রিয় আপডেট
৭। ইন্টিগ্রেশন ও মনিটরিং সিস্টেম
৮। রেডি মেড
এবার একটা উদাহরণের মাধ্যমে আরএমডব্লিউএস প্রচলিত ওয়েবসাইট থেকে কতটা আলাদা তা বুঝাবার চেষ্টা করব। এর জন্য উদাহরণ হিসাবে একটা অনলাইন টিকেট ক্রয়-বিক্রয় সিস্টেমের কথা বলব। ধরুন একটা এয়ারলাইন অনলাইন টিকেট ক্রয়-বিক্রয় সিস্টেম চালু করতে চায়। তারা ওয়েব ডেভেলপারের স্মরনাপন্ন হল। ওয়েব ডেভেলপার তাদের কথা শোনে সেটার একটা ওয়েব আর্কিটেকচার বানালো। তারপরে প্রয়োজনীয় কোডিং করলো। এদিকে এয়ারলাইন নিজস্ব ওয়েব হোস্টিং ও পেমেন্ট গেটওয়ের ব্যবস্থা করলো। ওয়েব ডেভেলপার পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টিগ্রেশন করে ওয়েবে হোস্টিং করে দিলো। বাস কাজ শেষ। এবার চিন্তা করুন যদি অনলাইন টিকেট ক্রয়-বিক্রয় আরএমডব্লিউএস হত তাহলে কেমন হত। এক্ষেত্রে ওয়েব ডেভেলপার নিজে থেকে এমন একটা সিস্টেম বানাত যেন যে কোন এয়ারলাইন এমন কি যে কোন প্রতিষ্ঠান (যেমন পাবলিক পরিবহন, রেলওয়ে, ছিনেমা হল ইত্যাদি) যারা অনলাইনে টিকেট বিক্রয় কতে চায় তারা এটা ব্যবহার করতে পারে ও সেটা প্রস্তাবিত ওয়েব প্ল্যাটফর্মে রাখত। তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলি প্রয়োজনীয় কাস্টমাইজেশন করে রেডি মেড ওয়েব হোস্টিং ও পেমেন্ট গেটওয়ে সহ অনলাইন টিকেট ক্রয়-বিক্রয় সিস্টেম এককালীন বা মাসিক বিভিন্ন প্যাকেজ ভিত্তিতে ব্যবহার করতে পারত। এখন আরএমডব্লিউএস মানে খুব জটিল কিছু মনে হতে পারে কিন্তু এর কারিগরি দিক আলোচনা করলে মনে হবে এটা আর তেমন কিছুই না, খুব সহজ, শুধু প্রচলিত ওয়েবসাইটের সাথে কিছু নতুন ফিচারের সংযুক্তি।
কেন আরএমডব্লিউএস (প্রচলিত ওয়েবসাইট ও নিয়মিত/আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং কাজের বিকল্প হিসাবে)?
ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকরীর ভিউ থেকেঃ
১। কম খরচ। প্রচলিত ব্যবস্থায় এককালীন ডেভেলপ (ধরুন $২৫০০) ও মাসিক (ধরুন $২৫০) উভয় খরচ ছিল। এখন যে কোন একটি (ধরুন এককালীন $১০০০)।
২। ডেভেলপারের সাথে যোগাযোগের প্রয়জোন হয় না।
৩। গোপনীয় তথ্য এর নিরাপত্তা ঝুঁকি নাই।
৪। ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকরী ওয়েবসাইটের আইডিয়া'র দরকার নাই।
৫। নিজস্ব অবকাঠামো (ওয়েব হোস্টিং) দরকার নাই।
৬। নিজস্ব পেমেন্ট গেটওয়ে দরকার নাই।
৭। নিজস্ব ডেভেলপার দরকার নাই।
৮। নিজস্ব রক্ষণাবেক্ষণ দরকার নাই।
৯। রেডি মেড।
১০। ভাল প্রচার ও প্রসার।
১১। ভাল বিক্রয়।
১২। বেশী গ্রাহক।
ফ্রিল্যান্সার বা ওয়েব ডেভেলপারের ভিউ থেকেঃ
১। কাজ পাওয়ার দরকার নাই। মানে কাজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।
২। যেহেতু আরএমডব্লিউএস সস্তা তাই বেশী গ্রাহক (আগে যেখানে ১ জন পেত এখন মনে করুন ১০ জন পেল)।
৩। বেশী আয় (আগে যেখানে $২৫০০ ছিল সেখানে এখন $১০X১০০০)।
৪। শিখতে সহজ।
৫। ডেভেলপ সহজ।
৬। পূর্ণকালীন কাজ করতে হবে না।
৭। ভাল প্রচার ও প্রসার।
৮। ভাল বিক্রয়।
উপরোক্ত বিষয়গুলির আলোকে আমরা নির্দিধায় বলতে পারি যে, আরএমডব্লিউএস প্রচলিত ওয়েবসাইট ও নিয়মিত/আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং কাজের একটা নির্ভরযোগ্য বিকল্প হতে পারে। সেই সাথে এটা ওয়েব ভিত্তিক সেবা প্রদানকরীদের জন্য একটা সহজ মাধ্যম হতে পারে।
কেন আমরা আরএমডব্লিউএস'র বেপারে আগ্রহী হবো?
ওয়েব ডেভেলপ কাজের অনেক সুযোগ থাকলেও নিয়মিত কাজ পাওয়া একটু কঠিন। আর প্রথম দিকে আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া ভালই দূরুহ। কিন্তু আরএমডব্লিউএস (RMWS) ক্ষেত্রে কাজ পাওয়ার কোন চিন্তা করতে হবে না। কারন এটার জন্য কাজ পাওয়ার কোন দরকার নাই। আরএমডব্লিউএস তথা ওয়েব ডেভেলপের ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে, শুধু নিজে নিজে কিছু আইডিয়া দাঁড় করায় কাজ শুরু করলেই হবে। আর বাকিটা আমরা দেখব, যেটা পড়ে আলচনা করা হবে। আর দরকার হলে প্রথম দিকে কিছু আইডিয়া দিয়েও সহযোগিতা করা যাবে। কি ভাবে আগ্রহীদের সহযোগিতা করা হবে, একটু পরে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাহলে আমাদের আরএমডব্লিউএস ডেভেলপ শিখতে হবে। এবার আরএমডব্লিউএস গঠন ও ডেভেলপ কৌশল আলোচনা করা যাক। তার আগে ওয়েবসাইটের কিছু বেপার জানা যাক।
ওয়েবসাইট প্রকারঃ
১। স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট
২। ডাইনামিক ওয়েবসাইট
প্রচলিত ওয়েবসাইট ভিউঃ


ওয়েবসাইট গঠনঃ
১। ওয়েব লেআউট/টেমপ্লেট
২। হেডার (ব্যানার/লোগো ও মেন্যু)
৩। বডি (কনটেন্ট/স্লাইডশো/ফরম/টেবিল)
৪। ফুটার
আরএমডব্লিউএস = স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট + ডাইনামিক ওয়েবসাইট + কাস্টমাইজেশন সিস্টেম
(এইচটিএমএল, পিএইচপি, মাইএসকিউএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিট, এজ্যাক্স, এক্সএমএল, পিএইচপি ফ্রেমওয়ার্ক ইত্যাদি)
আরএমডব্লিউএস'র গঠনঃ
১। ওয়েব লেআউট/টেমপ্লেট
২। হেডার (ব্যানার/লোগো ও মেন্যু) এবং ফুটার
৩। ইনপুট আউটপুট সিস্টেম (ইনপুট ফর্ম, ডেইটাবেজ, আউটপুট টেবিল)
৪। ইন্টিগ্রেশন (যেমন পেমেন্ট গেটওয়ে), কাস্টমাইজেশন সিস্টেম, প্রশাসন সিস্টেম/ড্যাশবোর্ড, আইফ্রেম (এইচটিএমএল, পিএইচপি, মাইএসকিউএল, এজ্যাক্স)
আরএমডব্লিউএস টেমপ্লেট, হেডার ও ফুটার হবে ডাইনামিক, যাতে সেবা প্রদানকারী এটা কাস্টমাইজড করা যায়। এ জন্যে একটা ইন্টারফেস থাকবে যেখানে যা যা কাস্টমাইজড করা যাবে তার লিস্ট থাকবে আর কোন কিছু আপলোড করার থাকলে তার অপশন থাকবে।
ইনপুট আউটপুট সিস্টেমঃ

ইন্টিগ্রেশনঃ
১। পেমেন্ট গেটওয়ে
২। কাস্টমাইজেশন সিস্টেমঃ যাতে সেবা প্রদানকারী এটা কাস্টমাইজড করতে পারে। এ জন্যে একটা ইন্টারফেস থাকবে যেখানে যা যা কাস্টমাইজড করা যাবে তার লিস্ট থাকবে আর কোন কিছু আপলোড করার থাকলে তার অপশন থাকবে।
৩। প্রশাসন সিস্টেম/ড্যাশবোর্ড
৪। আইফ্রেমঃ সেবা প্রদানকারী যদি তার নিজস্ব ওয়েব হোস্টিং ব্যবহার করতে চায় তাহলে এটা দরকার হবে। তাকে একটা আইফ্রেম দিয়া হবে যেটা সে তার নিজস্ব ওয়েব হোস্টিং সাইটে অন্তর্ভুক্ত করবে।
শীঘ্রই অন্য এক লেখায় আরএমডব্লিউএস গঠন ও ডেভেলপ কৌশল আরও বিস্তারিত আলোচনা করব।
এবার জানা যাক একটা আরএমডব্লিউএস জন্য কি কি দরকার?
১। আরএমডব্লিউএস'র আইডিয়া ও আর্কিটেকচার
২। কোডিং (ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপ, ইন্টিগ্রেশন, কাস্টমাইজেশন, আইফ্রেম, ড্যাশবোর্ড) ও কনটেন্ট
৩। ওয়েব অবকাঠামো (ক্লাউড ওয়েব হোস্টিং, পেমেন্ট গেটওয়ে), ওয়েব ডেভেলপ টুলস ও ওয়েব ডেভেলপ টিম
৪। আরএমডব্লিউএস'র প্রমোশন, মান নিয়ন্তন, নিরাপত্তা ও আইনীগত দিক (যদি দরকার হয়)
৫। ওয়েব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও নিয়মিত হালনাগাদ
৬। আরএমডব্লিউএস'র ওয়েব প্ল্যাটফর্ম (ইপ্রোজেক্ট২৪) (যেখানে সদ্য প্রস্তুত আরএমডব্লিউএস রাখা হবে)
আরএমডব্লিউএস কমিউনিটির কাজসমূহঃ
১। আরএমডব্লিউএস পরিচিতি ও আরএমডব্লিউএস ডেভেলপ শিক্ষা
২। আরএমডব্লিউএস আইডিয়া ও আর্কিটেকচার
৩। ওয়েব ডেভেলপ টুলস
৪। ভার্চুয়াল টিম
৫। ওয়েব অবকাঠামো (ক্লাউড ওয়েব হোস্টিং, পেমেন্ট গেটওয়ে)
৬। আরএমডব্লিউএস'র মান নিয়ন্তন ও নিরাপত্তা
৭। আরএমডব্লিউএস'র প্রমোশন
৮। আইনীগত দিক (যদি দরকার হয়)
৯। আরএমডব্লিউএস'র ওয়েব প্ল্যাটফর্ম (ই'স্টার্টআপ গ্রীড)
আরএমডব্লিউএস কমিউনিটিঃ
১। বিজনেস কমিউনিটি (সব+৬+৮)
২। আইপ্রিপারেটরি (১)
৩। ই'স্টার্টআপ গ্রীড (২, ৩, ৪ ও ৫)
৪। ই'স্টার্টআপ গ্রীড কমিউনিটি (সব+৭+৯)
আমরা আরএমডব্লিউএস ডেভেলপে আগ্রহীদের জন্যে কি কি ব্যবস্থা করবো?
১। আরএমডব্লিউএস শিখার জন্যে আইপ্রিপারেটরি (ফ্রী)
২। আরএমডব্লিউএস'র আইডিয়া ও আর্কিটেকচার (২০%)
৩। ওয়েব অবকাঠামো (ওয়েব ডেভেলপ টুলস, ক্লাউড ওয়েব হোস্টিং, পেমেন্ট গেটওয়ে) (৩০%)
৪। আরএমডব্লিউএস'র প্রমোশন, মান নিয়ন্তন, নিরাপত্তা ও আইনীগত দিক (যদি দরকার হয়) (১০%-২০%)
৫। আরএমডব্লিউএস'র ওয়েব প্ল্যাটফর্ম (ফ্রী)
আরএমডব্লিউএস'র রেভিনিউ শেয়ারঃ
ডেভেলপার (৫০% পর্যন্ত)
নিজস্ব আইডিয়ার ক্ষেত্রে ডেভেলপার (৭০%)
আরএমডব্লিউএস বিষয়ক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ
আগ্রহীদের ফ্রী আরএমডব্লিউএস ডেভেলপ শিখানো হবে এবং তাদের মাধ্যমে আরএমডব্লিউএস কমিউনিটি বানানো হবে যেখানে তারা আরএমডব্লিউএস বানায় এর মাধ্যমে আজীবন রেভিনিউ অর্জন করতে পারবে। ই'স্টার্টআপ গ্রীড হলো নতুন ওয়েব ডেভেলপ ধারণা আরএমডব্লিউএস'র উন্নয়ন প্রকল্প। যার প্রধান উদ্দেশ্য দক্ষ আরএমডব্লিউএস ডেভেলপার তৈয়ারি আর নতুন নতুন আরএমডব্লিউএস ধারনা, অবকাঠামো (যেমন ক্লাউড ওয়েব হোস্টিং, ওয়েব ডেভেলপ টুল), পেমেন্ট গেটওয়ে, আরএমডব্লিউএস'র মান নিয়ন্তন ও নিরাপত্তা ইত্যাদির ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে আমরা পেশাদার ও শিক্ষানবিস ওয়েব ডেভেলপারদের ফ্রী আরএমডব্লিউএস শিক্ষাতে উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের টার্গেট এই বছরের মধ্যে কমপক্ষে এক হাজার দক্ষ আরএমডব্লিউএস ডেভেলপার তৈয়ারি, তাদের মাধ্যমে কম পক্ষে একশত আরএমডব্লিউএস বানানো ও তাদের কর্মস্থান। আর এই আরএমডব্লিউএস গুলির মাধ্যমে কম পক্ষে ১০ লক্ষ মানুষকে ওয়েব ভিত্তিক বিভিন্ন সেবা প্রদান ও পরোক্ষভাবে তাদেরও কর্মস্থান। বিস্তারিত জানতে পরিদর্শন করুন http://www.estartupgrid.com
আপনারা ইচ্ছা করলেই আমাদের এই প্রচেষ্টার অংশ হতে পারেন। ই'স্টার্টআপ গ্রীড এ যারা কন্ট্রিবিউটর হিসাবে কাজ করতে আগ্রহী, তারা অনুগ্রহপূর্ব এই লিঙ্কে আতিশীঘ্রই নিবন্ধন করুন। আর যারা ফ্রী আরএমডব্লিউএস গঠন ও ডেভেলপ কৌশল শিখতে চান তারা অনুগ্রহপূর্ব এই লিঙ্কে আতিশীঘ্রই নিবন্ধন করুন।
আজ এই পর্যন্তই, সবাইকে ধন্যবাদ আর আমি যেহেতু বাংলায় লেখতে তেমন একটা অভ্যাস্ত না তাই কোন ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। আপনাদের আনুপ্রেরনা পেলে আগামীতে আরও বিভিন্ন বিষয়ে লেখার ইচ্ছা আছে। আশা করি সাথে থাকবেন।
আমি জয়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 3 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আসসালামু আহলাইকুম। আমি অনেক দিন আগেই টেকটিউনস টিউনে রেজিস্ট্রেশান করেছিলাম কিন্তু নানা ব্যস্তার কারনে এতো দিন কোন লেখা হয়নি। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত লেখব, যদি আপনাদের আনুপ্রেরনা পাই। প্রথমে আমি আমরা পরিচয় দিতেছি। আমি কুয়েট থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল এ স্নাতক সম্পূর্ণ করে বর্তমানে বুয়েটে উন্নত প্রকৌশল ব্যবস্থাপনা...
বিশাল লেখা, কিন্তু মাথার উপ্রে দিয়া গেল ! ধন্যবাদ এত কষ্ট করে তথ্যবহুল টিউন করার জন্য।