
বছরের পর বছর ধরে আমরা অনেকেই এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছি, যেখানে Android Operating System কেবল Smartphone বা Tablet এর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, Laptop এবং Desktop Computers এও সমানভাবে কাজ করবে। এর প্রধান কারণ ছিল Android এর বিশাল App Ecosystem এবং Mobile Centric Convenience, যা অনেকেই Desktop Productivity এর সাথে Merge করতে চেয়েছিল। আর অবশেষে, আমাদের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে চলেছে! Google এর একজন Exec, Rick Osterloh, আজ সকালে Qualcomm Snapdragon Summit Event এ রীতিমতো বোমা ফাটিয়ে নিশ্চিত করেছেন যে, Android Laptops এবং Desktop Computers সত্যিই আসছে! এই ঘোষণাটি Tech Community তে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
অনেকেই এই Devices গুলোর জন্য তীব্রভাবে অপেক্ষা করছে, যদিও আমরা সম্পূর্ণভাবে জানি যে এগুলো হয়তো একটা Normal PC এর মতোই হবে, কিন্তু সম্ভবত আরও খারাপ এ হতে পারে! মানে, Windows বা macOS এর বিশাল Software Ecosystem এর সাথে পাল্লা দেওয়া Android এর জন্য কতটা কঠিন হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
আমি নিশ্চিত, Samsung Dex Users রা ইতিমধ্যেই রীতিমতো চটে আছেন! আসলে, Desktop Experience এর জন্য Android এর Adaptability নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন আছে। এটা কি কেবল বড় স্ক্রিনে Mobile Apps চালানোর মতো হবে, নাকি সত্যিকারের Productivity Features নিয়ে আসবে?
কিন্তু Qualcomm এর CEO Cristiano Amone কিন্তু এত হতাশ নন। তিনি মনে করেন না যে Android PC খারাপ হবে। বরং, তিনি মনে করেন এটি একটি Game Changer!
তিনি Android এর এই PC Version টি দেখেছেন এবং তিনি একজন Financially Interested Person, তাই তিনি এটিকে Incredible বলে আখ্যা দিয়েছেন। অদ্ভুত হলেও, আমি তাকে বিশ্বাস করতে চাই! এই Confirmation টি আসলেই বিশাল একটি খবর, কারণ এটি এমন এক প্রযুক্তির আগমন ঘোষণা করছে যা আমাদের Computing Experience কে নতুন দিকে নিয়ে যেতে পারে। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে Google, Qualcomm এবং অন্যান্য Partners রা এই Project এর পেছনে যথেষ্ট Investment এবং Effort দিয়েছে।

ডেস্কটপের জন্য অ্যান্ড্রয়েডের ধারণাটি কিন্তু একেবারেই নতুন নয়। এর আগেও আমরা বিভিন্ন রূপে এর বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা দেখেছি। Samsung এর DeX নিঃসন্দেহে এই পথের অন্যতম পথিকৃৎ, যা একটি স্মার্টফোনকে একটি মনিটরের সাথে সংযুক্ত করে ডেস্কটপের মতো অভিজ্ঞতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যদিও DeX একটি অসাধারণ উদ্ভাবন এবং এর একটি ডেডিকেটেড ইউজার গ্রুপও রয়েছে, এটি অ্যান্ড্রয়েডের মূল কাঠামোর উপর একটি সমাধান হিসেবে কাজ করে, যা সব অ্যাপের জন্য সমানভাবে ইফেক্টিভ হয় না।
এছাড়াও, Remix OS এবং Phoenix OS এর মতো থার্ড-পার্টি উদ্যোগগুলো অ্যান্ড্রয়েডকে ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে রূপান্তর করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পর্যাপ্ত অ্যাপ সাপোর্ট এবং গুগল-এর সরাসরি সমর্থনের অভাবে সেগুলো খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি।
তবে এবারের ঘোষণাটি ভিন্ন মাত্রা বহন করে, কারণ এবার গুগল সরাসরি এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে। Qualcomm এর Snapdragon চিপসেটের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে গুগল অ্যান্ড্রয়েডের মূল পর্যায় থেকেই ডেস্কটপ অভিজ্ঞতার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো আনছে। এর মানে হলো, ডেভেলপাররা এখন সরাসরি ডেস্কটপ পরিবেশের জন্য তাদের অ্যাপ অপ্টিমাইজ করার সুযোগ পাবে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য একটি মসৃণ এবং সমন্বিত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে পারে।

যদিও গুগল বা কোয়ালকম কেউই এখনও অ্যান্ড্রয়েড পিসির সমস্ত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি, তবে কিছু বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আশা করা হচ্ছে, এতে একটি সম্পূর্ণ নতুন ইউজার ইন্টারফেস থাকবে যা কীবোর্ড এবং মাউসের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। মাল্টি-টাস্কিং এর জন্য উন্নত উইন্ডো ম্যানেজমেন্ট, যেমন- স্প্লিট-স্ক্রিন, ফ্রি-ফর্ম উইন্ডো এবং একটি টাস্কবার থাকার সম্ভাবনা প্রবল। এর পাশাপাশি, ফাইল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমেও বড় ধরনের উন্নতি আনা হতে পারে, যা এটিকে প্রচলিত ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেমের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে।
সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হতে পারে এর অ্যাপ ইকোসিস্টেম। লক্ষ লক্ষ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ যা আমরা প্রতিদিন আমাদের ফোনে ব্যবহার করি, সেগুলো এখন বড় স্ক্রিনে उपलब्ध হবে। গেমিং থেকে শুরু করে প্রোডাক্টিভিটি টুলস, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাপস—সবকিছুই এখন ডেস্কটপে নতুন রূপে আবির্ভূত হতে পারে। বিশেষ করে ARM-ভিত্তিক Snapdragon চিপসেটের ব্যবহারের ফলে এই ডিভাইসগুলো অসাধারণ ব্যাটারি লাইফ এবং অলওয়েজ-অন কানেক্টিভিটি প্রদান করতে সক্ষম হবে, যা ইন্টেল বা এএমডি-ভিত্তিক প্রচলিত ল্যাপটপের তুলনায় একটি বড় সুবিধা হতে পারে।
এত সম্ভাবনার পরেও, অ্যান্ড্রয়েড পিসির সফলতার পথটি মোটেও মসৃণ হবে না। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসবে Windows এবং macOS এর প্রতিষ্ঠিত দুর্গ থেকে। পেশাদার কাজের জন্য ব্যবহৃত বহু সফটওয়্যার, যেমন- Adobe Creative Suite বা Microsoft Office এর সম্পূর্ণ ডেস্কটপ ভার্সন, এখনও অ্যান্ড্রয়েডে Available নয়। যদিও এগুলোর মোবাইল বা ওয়েব সংস্করণ রয়েছে, তবে ডেস্কটপ ব্যবহারকারীরা যে ধরনের শক্তিশালী কার্যকারিতা আশা করেন, তা পূরণ করা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপগুলোর জন্য একটি বড় পরীক্ষা হবে।
আরেকটি বড় প্রশ্ন হলো, অ্যাপ ডেভেলপাররা কি আদৌ ডেস্কটপের জন্য তাদের অ্যাপগুলোকে নতুন করে ডিজাইন এবং অপ্টিমাইজ করতে আগ্রহী হবে? যদি বেশিরভাগ অ্যাপ কেবল ফোনের ইন্টারফেসটিকেই বড় স্ক্রিনে প্রসারিত করে, তবে ব্যবহারকারীরা খুব দ্রুত হতাশ হবেন। গুগলকে ডেভেলপারদের জন্য শক্তিশালী টুলস এবং ইনসেনটিভ প্রদান করতে হবে, যাতে তারা সত্যিকারের ডেস্কটপ-ক্লাস অ্যাপ তৈরি করতে উৎসাহিত হয়। এই রূপান্তরটি মসৃণ না হলে, অ্যান্ড্রয়েড পিসি কেবল একটি বড় আকারের ট্যাবলেটের চেয়ে বেশি কিছু হয়ে উঠতে পারবে না।
শেষ পর্যন্ত, অ্যান্ড্রয়েড পিসির আগমন আমাদের কম্পিউটিং জগতের জন্য একটি এক্সাইটমেন্ট মুহূর্ত। এটি একদিকে যেমন মোবাইল এবং ডেস্কটপ কম্পিউটিং-এর মধ্যবর্তী দেয়াল ভেঙে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনই অন্যদিকে এর সফলতা নিয়ে অনেক বাস্তবসম্মত প্রশ্নও রয়েছে। এটি কি সত্যিই একটি "Game Changer" হবে, নাকি আরেকটি প্রযুক্তিগত পরীক্ষা হয়েই থেকে যাবে, তা সময়ই বলে দেবে।
তবে আমার মতো যারা দীর্ঘদিন ধরে এমন কিছুর স্বপ্ন দেখেছে, তাদের জন্য অপেক্ষাটা নিঃসন্দেহে রোমাঞ্চকর হতে চলেছে।
-
টেকটিউনস টেকবুম
আমি টেকটিউনস টেকবুম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1061 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।