২০৩০ সালের মধ্যে আপনার চিরচেনা উইন্ডোজ আর থাকছে না!

আমরা সবাই কম-বেশি কম্পিউটার ব্যবহার করি, আর উইন্ডোজ (Windows) অপারেটিং সিস্টেমের (Operating System) সাথে তো আমাদের প্রায় সকলেরই একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সেই উইন্ডোজ, যা বছরের পর বছর ধরে আমাদের ডিজিটাল জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে রয়েছে, ২০৩০ সালে কেমন হবে, তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? হয়তো ভাবছেন, আর কী-ই বা পরিবর্তন হতে পারে, নতুন কিছু ফিচার যোগ হবে, ইন্টারফেস একটু আধুনিক হবে – এই তো? তবে মাইক্রোসফট (Microsoft) কিন্তু আরও বড় কিছু করার পরিকল্পনা করছে। তারা এমন এক উইন্ডোজের স্বপ্ন দেখছে, যা আমাদের কল্পনার জগৎকেও হার মানাতে পারে!

সম্প্রতি মাইক্রোসফটের কর্পোরেট ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভিড ওয়েস্টন (David Weston), যিনি অনলাইন দুনিয়ায় DWIZZZLE নামেই পরিচিত, তাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০৩০ সালের উইন্ডোজ নিয়ে একটি বিস্ফোরক ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। সেখানে তিনি এমন কিছু পরিকল্পনার কথা বলেছেন, যা শুধু প্রযুক্তিপ্রেমীদের নয়, সাধারণ মানুষের জীবনকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। ওয়েস্টন মনে করেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মানুষ যেভাবে প্রযুক্তির সাথে Interact করবে, সেই পুরো দৃশ্যপটটাই হয়তো আমূল বদলে যাবে। তাই চলুন, আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক, মাইক্রোসফট আমাদের জন্য কী চমক নিয়ে আসছে.

২০৩০, কীবোর্ড, মাউসের বিদায়, AI-এর জয়জয়কার!

২০৩০ সালের মধ্যে আপনার চিরচেনা উইন্ডোজ আর থাকছে না!

ডেভিড ওয়েস্টন, যিনি একইসাথে মাইক্রোসফটের দুর্ধর্ষ Penetration Testing টিমের লিড (Lead), বেশ জোরের সাথেই বলেছেন যে সনাতনী কীবোর্ড (Keyboard) ও মাউস (Mouse)-এর দিন প্রায় শেষ। Gen Z বা জেন জি-এর কাছে এগুলোকে দেখলে হয়তো মনে হবে যেন জাদুঘরে রাখা কোনো প্রাচীনকালের বস্তু! তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছেন যে, মাল্টিমোডাল ইন্টার‍্যাকশন (Multimodal Interaction)-এর মাধ্যমেই মানুষ যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করবে, যেখানে সবকিছু হবে আরও স্বচ্ছন্দ, স্বাভাবিক এবং একেবারে intuitive। ওয়েস্টনের ভাষায়:

"আমার মনে হয় আমরা চোখের ব্যবহার কমিয়ে কম্পিউটারের সাথে কথা বলার দিকে বেশি ঝুঁকবো। উইন্ডোজের ফিউচার ভার্সন (Future Version) এবং মাইক্রোসফটের অন্যান্য Operating System মাল্টিমোডাল হবে— কম্পিউটার আমাদের দেখা জিনিস দেখবে, আমাদের শোনা কথা শুনবে এবং আমরা যা চাইছি, তা আরও সহজে বুঝতে পারবে। "

মাল্টিমোডাল ইন্টার‍্যাকশন (Multimodal Interaction)-এর ধারণাটা আসলে কী? সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এর মানে হলো কম্পিউটারের সাথে কথা বলা, হাতের ইশারায় কাজ করা অথবা শুধু চোখের চাহনিতে কমান্ড (Command) দেওয়া। ধরুন, আপনি কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে বললেন, "আমার ইমেইলগুলো (Email) খোলো, " আর সাথে সাথেই আপনার ইনবক্স (Inbox) খুলে গেল! অথবা, আপনি হাত নেড়ে একটি জটিল গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design) তৈরি করে ফেললেন। বিষয়টা অনেকটা সায়েন্স ফিকশন (Science Fiction) সিনেমার মতো, তাই না?

তবে এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) বা AI। ওয়েস্টন বিশ্বাস করেন, AI খুব শীঘ্রই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে। তিনি বলেন: "You will talk to them on Teams, they’ll join meetings, receive emails, and get assigned tasks." তার মানে, AI শুধু আপনার ব্যক্তিগত সহকারি নয়, বরং অফিসের জটিল কাজগুলোও সামলাতে এটি আপনাকে সাহায্য করবে। AI আপনার মিটিংয়ের schedule তৈরি করে দেবে, গুরুত্বপূর্ণ ইমেইলগুলো (Email) আলাদা করে দেখাবে এবং আপনার হয়ে প্রেজেন্টেশনও (Presentation) তৈরি করে দিতে পারবে!

সাইবার নিরাপত্তা, AI যখন আপনার বডিগার্ড!

২০৩০ সালের মধ্যে আপনার চিরচেনা উইন্ডোজ আর থাকছে না!

ওয়েস্টন শুধু ইউজার ইন্টারফেস (User Interface) নিয়েই থেমে থাকেননি, সাইবার নিরাপত্তা (Cybersecurity) নিয়েও তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। তিনি মনে করেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যে কেউ একজন Security Expert ভাড়া করতে পারবে, আর সেই Expert হবেন একটি AI Agent! শুধু তাই নয়, এই AI Security Agent-এর সাথে আপনার কথোপকথন হবে আরও বেশি human-like। তার মানে, আপনার কম্পিউটারের Security নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না, AI আপনার বডিগার্ডের মতো সবসময় আপনার ডেটাকে (Data) সুরক্ষিত রাখবে!

বর্তমানে ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসার জন্য Cybersecurity Staff নিয়োগ করা বেশ ব্যয়বহুল। কিন্তু ওয়েস্টন মনে করেন, ভবিষ্যতে AI Agent সাশ্রয়ী Security Solution দেওয়ার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করবে। এর ফলে ছোট ব্যবসায়ীরাও তাদের Data এবং সিস্টেমকে (System) সুরক্ষিত রাখতে পারবে, যা তাদের ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের হুমকি, প্রস্তুতি এখন থেকেই!

২০৩০ সালের মধ্যে আপনার চিরচেনা উইন্ডোজ আর থাকছে না!

ওয়েস্টন Quantum Computing-এর Security-র উপর কেমন প্রভাব ফেলতে পারে, সে বিষয়েও আলোকপাত করেছেন। তিনি বলেন, Quantum Computing-এর ক্ষমতা এতটাই বেশি যে, এটি বর্তমানের Encryption পদ্ধতিকে ভেঙে দিতে পারে। তাই আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে Attacker-রা কোনো সুযোগ না পায়। সেই কারণেই মাইক্রোসফট উইন্ডোজে Post-Quantum এবং Quantum-Safe Encryption ব্যবহার করছে। এর মাধ্যমে হ্যাকারদের (Hacker) জন্য Security ভেদ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।

সবশেষে, ডেভিড ওয়েস্টন ইউজারদের Attack-Proof Strategy ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি Passwordless সিস্টেম (System) ব্যবহার এবং নিয়মিত Operating System আপগ্রেড (Upgrade) করার কথা বলেছেন। এর মাধ্যমে আপনারা নিজেদের Data এবং সিস্টেমকে (System) আরও সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।

মোটকথা, মাইক্রোসফট এমন একটি ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে, যেখানে AI হবে উইন্ডোজের সাথে ইউজারদের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। ২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, যখন আমরা উইন্ডোজের এই নতুন জাদু নিজের চোখে দেখতে পাবো!

আপনি কি সেই ভবিষ্যতের জন্য তৈরি? নাকি আপনি আজকের উইন্ডোজেই সন্তুষ্ট? আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না!

-

টেকটিউনস টেকবুম

Level 9

আমি টেকটিউনস টেকবুম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1061 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস