WiFi এর জটিল অ্যালগরিদম যা ভাঙ্গা একেবারে মুশকিল!

Level 6
Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর

আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস ওয়েবসাইটের নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। স্বাগতম সবাইকে WiFi এর জটিল অ্যালগরিদম যা ভাঙ্গা একেবারে মুশকিল নিয়ে নতুন আরো একটি টিউনে। বন্ধুরা আমরা কেই না চিনি WiFi কী? WiFi দিয়ে কী করা হয়? বর্তমানে যারা স্মার্ট ডিভাইসে পারদর্শী তারা প্রায় সবাই WiFi সম্পর্কে বেশ ভালো ভাবেই জানেন। আশাকরি আপনিও WiFi সম্পর্কে খুব বেশি না জানলেও WiFi দিয়ে কি করা হয় সেটি অন্তত জানেন। তাই আজকের টিউনে WiFi কী এই বিষয় নিয়ে আর বিস্তারিত বলবো না। WiFi নিয়ে সবার মনে জল্পনা কল্পনার শেষ নাই। অনেকেই আছেন WiFi নিয়ে অজানা রহস্যের খোঁজে।

তাইতো আপনি আজকে আমার এই পোস্টটি খুঁজে পড়তে শুরু করলেন। এখানে অনেকেই আছেন যাঁদের নিজের WiFi নাই। তারা প্রায় সময়ই অন্যের WiFi চুরি করে ব্যবহার করতে চান। তারপর যখন পারেন না তখন তারা তাদের WiFi hack করে ব্যবহার করতে চান। তারপরেও যখন WiFi hack করতে সফল হোন না তখন তারা ভাবতে থাকেন। WiFi কি এমন করা থাকে? কেনো WiFi চুরি করে ব্যবহার করা যায় না? কেনো WiFi hack করা যায় না? এছাড়া অনেকেই আবার ভাবতে থাকেন WiFi কি হ্যাক করা সম্ভব? কেনো WiFi হ্যাক করা সম্ভব নয়? আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর পাবেন আমার এই আজকের টিউনে। কারণ আজকে আমি আপনাদের সাথে WiFi এর জটিল অ্যালগরিদম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো যা ভাঙ্গা একেবারেই অসম্ভব।

WiFi একটি ডাটা অথবা এম্বি প্রোভাইডার সেন্টার। যা আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য কাঁচামাল প্রদান করে। বিনিময়ে আমরা তাদের অর্থ প্রদান করি। বিষয়টি একটু জটিল হয়ে গেলো তাই না? চলুন তাহলে আরো একটু ক্লিয়ার ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করি। আপনি যখন সিনেমা হলে ছবি দেখতে যান তখন ছবি দেখার জন্য আপনাকে টিকিট কাটতে হয়। তো মনে করুন, হলে "মেশিনম্যান" নামে একটি ছবি পাবলিশ করা হয়েছে। ওই ছবিটি দেখার জন্য টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। এখন আপনি ওই ছবিটি দেখার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের, নির্দিষ্ট মূল্যের, নির্দিষ্ট একটি টিকিট পাবেন। টিকিটটি ব্যবহার করে আপনি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ছবিটি দেখতে পারবেন এ ছাড়া পরবর্তীতে সেই টিকিটটি আর কোন কাজে লাগাতে পারবেন না।

ঠিক এরকম সিস্টেমে ওয়াইফাই অ্যালগরিদম কাজ করে। ছবিটির মতো ইন্টারনেট অনেক ডাটা স্টোর করা থাকে। আর টিকিটের মত কাজ করে ওয়াইফাই এর এমবি সিস্টেম। আপনি তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালক কে কিছু টাকা প্রদানের মাধ্যমে তারা আপনাকে নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য টিকিটের মতোই ভেলু প্রদান করবে। যা পরবর্তী ইচ্ছামতো ডাটা দেখতে কিংবা খুঁজতে ব্যবহার করতে পারবেন। প্রতিটি দেশেই ওয়াইফাই সিস্টেমকে মাসে মাসে নবায়নযোগ্য করা থাকে। আপনার নির্দিষ্ট সময়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেই আপনাকে তা আবারও অর্থ প্রদান করে রিনিউ করতে হবে। অর্থ প্রদান না করলে অথবা আপনার ইন্টারনেট সার্ভিসটি রিনিউ না করলে আপনাকে আর ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদান করা হবে না। তো চলুন এবার জেনে নেই Wifi কীভাবে কাজ করে?

WiFi কীভাবে কাজ করে?

আজকে টিউনে আরো বিস্তারিত জানার আগে প্রথমেই আমাদের জেনে নেওয়া উচিত WiFi কীভাবে কাজ করে? কারণ এই বিষয় নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পেলে টিউনের পরবর্তী বিষয়গুলো আপনাদের বুঝতে আরো বেশি সহজ হবে। ওয়াইফাই মূলত রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে প্রতিটি ডিভাইস ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করে। তবে শুরুতেই বলে নেওয়া ভালো রেডিও তরঙ্গ গুলো সরাসরি রেডিও তরঙ্গ হয়ে আসে না। এটি এক প্রকার বিশেষ ধরনের আলোর গতিময় সিগন্যাল হয়ে আসে। এই আলোর গতিময় সিগন্যাল এক বিশেষ উপায়ে রিসিভ করা হয়। তারপর সেই আলোর গতিকে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে অনেক দ্রুত গ্রাহকদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হয়।

তারপর এই সিগন্যালকে রেডিও তরঙ্গ তে পরিণত করা হয় যাকে আমরা বলে থাকি কনভার্ট করা। বিষয়টি আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে আলোর গতিকে রেডিও তরঙ্গ তে পরিণত করার জন্য প্রক্রিয়া করা হয়। এই আলোর গতিকে রেডিও তরঙ্গে পরিণত করার প্রক্রিয়াটি মূলত দুইটি উপাদান ব্যবহার করে সম্পূর্ণ করা হয়। উপাদান দুটি হলোঃ

  1. ওয়াইফাই রাউটার
  2. ওয়াইফাই অ্যাডাপ্টার

অপটিক্যাল ফাইবার দ্বারা পাঠানো আলোক রশি ওয়াইফাই রাউটার দ্বারা রিসিভ করা হয়। তারপর এই ওয়াইফাই রাউটার সেই অপটিক্যাল ফাইবারের আলোক রশিকে কনভার্ট করে রেডিও তরঙ্গে রূপান্তর করে। অন্যদিকে ওয়াইফাই অ্যাডাপ্টার সেই রেডিও তরঙ্গকে রিসিভ করে তারপর সেই রেডিও তরঙ্গকে ডেটাতে রূপান্তর করে। পরবর্তীতে সেই ডেটাই আমরা ব্যবহার করে ইন্টারনেট চালাতে পারি। তো আশাকরি এ পর্যন্ত আপনারা ওয়াইফাই রাউটার এবং ওয়াইফাই এডাপ্টারের কাজগুলো সম্পর্কে খুব ভালোভাবেই ধারণা পেলেন।

ওয়াই-ফাই মডিউলগুলো কীভাবে কাজ করে?

এ বিষয়ে আমরা একটু আগেই অল্প একটু ধারণা নিয়েছি। এবার আমরা এ বিষয় নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। একটু আগে আমরা ওয়াইফাই রাউটার এবং অ্যাডাপ্টার সম্পর্কে কথা বলেছিলাম। ওয়াইফাই রাউটারে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ইথারনেট কেবল ব্যবহার করা হয় যা পরে মোবাইল ডাটা হিসেবে পরিবর্তিত হয়ে আমাদেরকে ইন্টারনেটের সংযুক্ত করে। রাউটার ইন্টারনেট থেকে ডেটা গ্রহণ করে এটা আমরা সবাই জানি, সেই সাথে 2.4 GHz বা 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে রেডিও তরঙ্গে তৈরি করে থাকে। পরবর্তী রাউটার সেই রেডিও তরঙ্গগুলোকে বিকিরণ করতে থাকে। যার কারণে আমরা রাউটার থেকে অনেক দূরে গিয়েও ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারি।

ওয়াইফাই অ্যাডাপ্টার সে রেডিও তরঙ্গগুলোকে গ্রহণ করে। তারপর অ্যাডাপ্টার সেই রেডিও তরঙ্গগুলোকে ডেটায় রূপান্তর করে। এই ডেটাই মূলত আমাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে। এই ডেটা গুলো ব্যবহারের ফলে আমরা ইন্টারনেটের সাথে সবসময় সংযুক্ত থাকতে পারি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোবাইলের ডিফল্টভাবে অ্যাডাপ্টার স্থাপন করা থাকে। তবে অনেক সময় অনেক কম্পিউটারের ক্ষেত্রে এর ভিন্নতা দেখা যায়। অনেক কম্পিউটার বা ল্যাপটপগুলোতে কাজের ক্ষেত্রে কাস্টমভাবে অ্যাডাপ্টার স্থাপন করতে হয়। আপনার ডিভাইস যখন ইন্টারনেট এক্সেস করতে পারে তখন ব্রাউজিং, ই-মেইল পাঠানো, ভিডিও দেখা সহ ইন্টারনেটের সকল কাজ করতে পারে।

ওয়াই-ফাই এর সুবিধা

আমরা যারা নিয়মিত ওয়াইফাই ব্যবহার করি তারা সকলে জানি ওয়াইফাই ব্যবহারে কতটা সুবিধা। ওয়াইফাই সার্ভিস বর্তমান সময়ে ডেটা সার্ভিসের এক চূড়ান্ত গেম চেঞ্জিং হিসাবে কাজ করে। কারণ বর্তমান সময় আমরা সকলেই জানি একটি মাসিক প্যাকেজে ওয়াইফাই সার্ভিসের মূল্য আর মাল্টিপল প্যাকেজে মোবাইল ডাটা সার্ভিসের মূল্যের ঠিক কতটা পার্থক্য। বর্তমান সময়ে মোবাইল ডাটা সার্ভিস প্রদান করা মোবাইল অপারেটরগুলোর MB স্টুডেন্ট কিংবা সাধারণ ইউজারদের প্রায় সাধ্যের বাহিরে। প্রতিমাসের প্যাকেজে মূল্যের দিক থেকে বিবেচনা করলে ওয়াইফাই ডাটা সার্ভিস প্রদানকারীরা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে। ওয়াই-ফাইয়ের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হলঃ

  1. তার বহনের ঝামেলা ছাড়াই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন এবং যখন খুশি নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে যেখানে খুশি ব্যবহার করতে পারবেন।
  2. মোবাইল অপারেটরদের প্রদান করা ডাটা সার্ভিসের স্পিডের তুলনায় ওয়াইফাই ডাটার স্পিড তুলনামূলকভাবেই অনেক বেশি পাবেন।
  3. নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে যেকোনো জায়গায় সমান স্পিডে ইন্টারনেট সংযোগ ধরে রাখতে সক্ষম।
  4. সহজেই ওয়াইফাই তারবিহীন ভাবেই মোবাইল এর সাথে সংযুক্ত করা সম্ভব।
  5. ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক নির্দিষ্ট মোবাইলের GHz সক্রিয়ভাবেই শনাক্ত করতে পারে। ফলে সেই মোবাইল কতটুকু ডাটা পেলে নিজের কার্যক্রম সচল রাখতে পারবে তা ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক বুঝতে পারে। সেই নির্দিষ্ট ডিভাইসগুলোর জন্য নির্দিষ্টভাবেই ডেটা বিতরণ করতে থাকে।
  6. ডাটা ব্যবহারে কোন লিমিটেশন থাকে না। একজন ইউজার যত খুশি তত ওয়াইফাই ডাটা ব্যবহার করতে পারে। তবে শুধু মাসে মাসেই গ্রাহকদের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে সার্ভিসের রিনিউ করতে হয়।

ওয়াই-ফাই এর অসুবিধা

এতক্ষণ তো আমরা শুধু ওয়াইফাই এর সুবিধাগুলোই জানলাম। এবার আমরা ওয়াইফাই ব্যবহারে কিছু অসুবিধা জানব। কারণ অসুবিধা গুলো না জানলে আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় এই ওয়াইফাইটি আমাদের জন্য অনেক ধরনের অসুবিধা বয়ে নিয়ে আসবে। যার কারণে ফিউচার আমাদের নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আমি মনে করি খুব কম সংখ্যক মানুষই ওয়াইফাই এর অসুবিধা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন। তাই আমি আপনাদের সুবিধার জন্য আজকের টিউনে ওয়াইফাই এর কিছু কমন অসুবিধা তুলে ধরব। ওয়াইফাই এর কিছু কমন অসুবিধা হলঃ

  1. ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে কভারেজ করে থাকে। এই নির্দিষ্ট সীমানার বাহিরে গেলে আপনি আর সেই ওয়াইফাই সার্ভিসটি ব্যবহার করতে পারবেন না।
  2. আপনার ব্যবহার করা ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক হ্যাকিং এর শিকার হলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ অনেক পার্সোনাল ডাটাই চুরি হয়ে যেতে পারে।
  3. ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক অন্যান্য ইলেকট্রনিক কার্যকরী ডিভাইস দ্বারা হস্তক্ষেপ হতে পারে। যার ফলে আপনার গোপনীয়তা প্রকাশ পেতে পারে।
  4. ওয়াইফাই রাউটার থেকে বিকিরণ হওয়া তরঙ্গ রশি আপনার বিভিন্ন প্রকার ভয়াবহ স্ক্রিন জনিত রোগের কারণ হতে পারে। তবে এই তথ্য এখনো তেমনভাবে প্রমাণিত নয়।

WiFi এর জটিল অ্যালগরিদম কেনো তা ভাঙ্গা একেবারে মুশকিল?

এবার আমরা আমাদের টিউনের মূল বিষয়টি আলোচনা করব। এই পর্বে আমরা আলোচনা করব ওয়াইফাই এর জটিল অ্যালগরিদম নিয়ে। WiFi এর জটিল অ্যালগরিদম কেন তা ভাঙ্গা সম্ভব নয়। এছাড়াও আমাদের আজকের পর্ব থেকে আপনারা জানতে পারবেন ওয়াইফাই এর মডিউলগুলো তাদের ইউজারদের সিকিউরিটির জন্য কোন কোন বিষয়গুলো এনক্রিপ্ট করে। এছাড়া ওয়াইফাই কতটা জটিল অ্যালগরিদম ব্যবহার করে? আপনি জানলে অবাক হবেন যে ওয়াই-ফাই অনেক জটিল অ্যালগরিদম ব্যবহার করে কাজ করে। এই অ্যালগরিদমগুলো একজন সাধারণ ইউজারের পক্ষে ভাঙ্গা একেবারেই মুশকিল। এর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যালগরিদম হল-

1. মাল্টিপল অ্যাক্সেস কন্ট্রোল (MAC)

WiFi এর এই মাল্টিপল অ্যাক্সেস কন্ট্রোল ফিচার দ্বারা একসাথে অনেকগুলো ডিভাইসকে কন্ট্রোল করে থাকে। সেই সাথে এটি অনেক দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্ধারণ করে নেয় কোন ডিভাইস কোন সময় কতটুকু ডাটা প্রেরণ করতে পারবে। এটি ইউজারদের প্রাইভেসি রক্ষাতেও কাজ করে থাকে। এই সিস্টেমটি ইউজারদের ক্ষতি হতে পারে এমন ডাটাগুলো এনক্রিপ্ট করে রাখে। এই এনক্রিভ ডেটাগুলোকে ডিক্রিপ করা একেবারেই মুশকিল। এই সিস্টেমটি সাধারণত বেশিরভাগ ইউজারদের কাছে ম্যাক অ্যাড্রেস নামেই এই পরিচিত। MAC বিভিন্ন অ্যালগরিদম রয়েছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অ্যালগরিদম হল:

  1. CSMA/CA
  2. TDMA
  3. OFDMA

2. ফ্রিকোয়েন্সি হপিং স্প্রেড স্পেকট্রাম (FHSS)

এটি 2.4 GHz ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডে 79 টি 22 MHz চ্যানেল ব্যবহার করে কাজ করে থাকে। এটি ইউজারদের প্রাইভেসি রক্ষাতে বেশ ভালো কাজ করে থাকে। কারণ এটি হ্যাকারদের ডেটা চুরির আক্রম রোধ করে। যার ফলে হ্যাকাররা সহজে সাধারণ ইউজারদের ডেটা এক্সেস করতে পারেনা। FHSS একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ডিভাইস গুলির জন্য একটি নির্দিষ্ট চ্যানেল প্রদান করে। যা পরে প্রয়োজন অনুযায়ী নিজে নিজেই পরিবর্তন হতে সক্ষম।

3. ডিরেক্ট সিকোয়েন্স স্প্রেড স্পেকট্রাম (DSSS)

এটি মূলত 2.4 GHz ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডে 11 টি 22 MHz চ্যানেল ব্যবহার করে কাজ করে থাকে। তবে এখানে আরেকটি মজার ব্যাপার হল এটি ডাটা বিনিময় করার সময় "ছদ্ম-র্যান্ডম" কোড ব্যবহার করে ডাটা আদান প্রদান করে থাকেন। এতে সেই নির্দিষ্ট ডাটা কে ট্রাক করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর ট্রাক হলেও সেই এনক্রিপ্ট করার ডাটা কে ভেঙ্গে ফেলা একেবারেই অসম্ভব। DSSS একই সময়ে একই চ্যানেলে একাধিক ডাটা আদান প্রদান করতে পারে। যার ফলে নির্দিষ্ট ডাটা কে ধরে ফেলা একেবারেই মুশকিল।

4. OFDM (Orthogonal Frequency Division Multiplexing)

এই OFDM প্রসেস মূলত 2.4 GHz এবং 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডে ব্যবহার করা হয়। এটি একই সময়ে একাধিক যেটা বহন করতে সক্ষম। ইতিমধ্যে আমরা সবাই জেনে গেছি যে, ফ্রিকুয়েন্সি গুলো মূলত ডেটা আদান-প্রদান সহ চ্যানেল পরিচালনা কাজগুলো সুষ্ঠুভাবেই সম্পূর্ণ করে থাকে। তবে এই OFDM নির্দিষ্ট ডিভাইসে ডাটা বহন করার জন্য একাধিক সাবকেরিয়ার ব্যবহার করে। এটি একই সময়ে একাধিক ডিভাইসে একাধিক ডেটা মাল্টিপল ভাবে পাঠাতে সক্ষম। এই ডেটা আদান প্রদানের সিস্টেমটি একটি উচ্চমানের ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে সম্পূর্ণ করা হয়। যার ফলে বহিরাগত যেকোনো ব্যক্তির সেই সমস্ত ডেটার উপর হস্তক্ষেপ করা একেবারেই মুশকিল। OFDM মূলত একটি হাই সিকিউরিটি প্রটোকল হিসেবে কাজ করে থাকে।

5. WPA2 (WiFi Protected Access 2)

WPA2 এই নামটি হয়ত আমাদের সকলেরই জানা। কারণ আপনারা যারা এক একজন এক একটি ওয়াইফাই চ্যানেল এর মালিকানায় থাকি। তখন এর সিকিউরিটি সেকশনে WPA2 পাসওয়ার্ড সিস্টেম দেখে থাকি। এটি মূলত ওয়াইফাই এর একটি শক্তিশালী এক্সেস প্রোটোকল। এটি AES (Advanced Encryption Standard) ব্যবহার করে ডেটা এনক্রিপ্ট করে। এই এনক্রিপ্ট করা ডাটা কে ডিক্রিপ্ট করে সেই ডাটা থেকে তথ্য চুরি করা একেবারেই মুশকিল। এই কথাটি যদি আরেকটু সহজভাবে বলা যায়। তাহলে এই এনক্রিপ্ট করা ডাটা থেকে তথ্য নেওয়া সাধারণ মানুষের কাছে কখনোই সম্ভব নয়।

আপনি যখন নিজের ওয়াইফাইয়ে নিজের সিকিউরিটির জন্য পাসওয়ার্ড দিয়ে সিকিউর করে রাখেন তখন এই পাসওয়ার্ড ডব্লিউপির WPA2 অটোমেটিকভাবে এনক্রিপ্ট হয়ে যায়। এর বিশেষ কারণ হলো কেউ যেন সহজে আপনার মেইন চ্যানেলের ডাটাবেজে এক্সেস করতে না পারে। কারণ কেউ যদি এই WPA2 সিকিউরিটি অতিক্রম করতে পারে তাহলে সে চাইলেই আপনার যাবতীয় সকল তথ্য দেখে নিতে পারবে যেমন ব্রাউজার হিস্টোরি, ব্রাউজার দিয়ে ডাউনলোড করার ফটো অথবা ভিডিও, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা বিভিন্ন মেসেজ, পরিচিতদের সাথে কলে কথা বলার সহ এমন আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রাইভেসি ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তাই WPA2 সিকিউরিটি এমন ভাবে বানানো হয়েছে যাকে কখনোই ভাঙ্গা সম্ভব নয়।

তো চলুন ওয়াইফাই নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে আরেকটু ধারণা দেওয়া যায়। এখানে আমরা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব আপনি যখন একজন ওয়াইফাই এর মালিক হবেন তখন আপনার নিজস্ব ওয়াইফাই কে কীভাবে সিকিউর করবেন। নিজের পার্সোনাল ওয়াইফাই কে সিকিউর করা কেন প্রয়োজন? আশাকরি এমন কোনো প্রশ্ন আপনারা করবেন না। কারণ আজকের পোস্টটি যদি শুরু থেকে এই পর্যন্ত খুব ভালোভাবেই পড়ে আসে তাহলে আমি আশাকরি, কেন আপনাদের ওয়াইফাই সিকিউরিটি অনেক বেশি জটিল করা দরকার তা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়ে গেছেন। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যায় কীভাবে ওয়াইফাই এর সিকিউরিটি বাড়াবেন?

কীভাবে ওয়াইফাই এর সিকিউরিটি বাড়াবেন?

এনক্রিপশন উপায়ে ওয়াইফাই হাই সিকিউরিটি জন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার সময় অবশ্যই WPA2 পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। এতে পাসওয়ার্ড অনেক বেশি জটিল অবস্থায় এনক্রিপ্ট হয়ে যায়। এটি অত্যন্ত নিরাপদ একটি পাসওয়ার্ড এনক্রিপশন পদ্ধতি। WPA2 AES এনক্রিপশন সিস্টেমটি কম্পিউটার দ্বারা ভাঙতে চাইলেও বহু বছর সময় লেগে যাবে। তাই আপনার উচিত নিজের পার্সোনাল ডাটাকে অত্যন্ত সিকিউর করতে WPA2 AES শক্তিশালী এনক্রিপশন সিস্টেম ব্যবহার করা

অথেন্টিকেশন

আমরা সকলেই চাই আমাদের পার্সোনাল জিনিসকে অনেক গোপনীয় রাখতে তারই পরিপ্রেক্ষিতে অথেন্টিকেশন এক কার্যকারী উপায়। অথেন্টিকেশন এতটাই কার্যকারী যে বর্তমান সময়ে বেশ ভরসাযোগ্য একটি সিস্টেম হলো অথেন্টিকেশন অথবা টু স্টেপ ভেরিফিকেশন। এই অথেন্টিকেশন সিস্টেমটি আপনি যে কোনো ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন। বিশেষ করে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের কার্যক্রমে অনেক বেশি হাই সিকিউরিটি দিয়ে থাকে তারাই মূলত অথেন্টিকেশন সিস্টেমে ব্যবহার করে থাকে।

পাসওয়ার্ডের এই অথেন্টিকেশন সিস্টেমটি ব্যবহার করলে কোন ব্যক্তি আপনার পাসওয়ার্ড জানার পর সে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবে না। কারণ সেই ব্যক্তি যখন আপনার সমস্ত ইনফরমেশন যেমনঃ নাম্বার, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি সঠিকভাবে দিয়ে লগইন এ ক্লিক করার পর উক্ত অ্যাকাউন্টে আপনার যে মোবাইল নাম্বার অথবা gmail অ্যাকাউন্ট এড করা ছিল সেই মোবাইল নাম্বার অথবা gmail অ্যাকাউন্টে আলাদা করে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। সেই কোডটি যতক্ষণ পর্যন্ত প্রবেশ না করানো হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিজেও আপনার নিজস্ব অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেন না। অথেন্টিকেশন একটি হাই সিকিউরিটি সিস্টেম।

MAC ফিল্টারিং

মাক ফিল্টারিং এক বিশেষ সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। MAC ফিল্টারিং মূলত ওয়াইফাই সিস্টেমে হয়ে থাকে। তো আজকের টিউনে যেহেতু ওয়াইফাই নিয়ে আমরা MAC ফিল্টারিং নিয়ে আলোচনা করতে পারি। আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড যদি অনেক বেশি লোক জেনে যায় সে ক্ষেত্রে সবাই আপনার ওয়াইফাই কানেক্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন। এতে অনেক বেশি ইউজার অ্যাক্টিভিটি থাকার কারণে নেটওয়ার্ক স্পিড অনেক কমে আসবে।

এমন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আর সবার সাথে অনেক ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য MAC ফিল্টারিং তুলনা হয়না। যে সকল ওয়াইফাই সিস্টেমে MAC ফিল্টারিং চালু করা থাকবে সেই সকল ওয়াইফাই এ আপনার চাওয়া ব্যতীত পাসওয়ার্ড জানলেও আপনার ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারবে না। এমনকি সঠিক পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরেও তার ডিভাইসে আপনার ওয়াইফাই কানেক্ট হবে না। এর ফলে আপনি অধিক ইউজার আর ওয়াইফাই স্পিড কম এমন ঝামেলা থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন।

নিয়মিত আপডেট

আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন না ওয়াইফাই তাদের মালিকানাধীন সিস্টেমকে নিয়মিত আপডেট করে থাকে। কারণ ওয়াইফাই সিস্টেমকে নিয়মিত আপডেট রাখার কারণে অনেক নিরাপদ রাখা হয়। এতে হ্যাকার চক্র খুব কম সময় পায় আপনার ওয়াইফাই কে অ্যাটাক এর মাধ্যমে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিতে। যার ফলে আপনার ওয়াইফাই চ্যানেলটি ঝুঁকিমুক্ত থাকে। আপনার সকল গোপনীয় ডেটা অনেক সুরক্ষিত থাকে। তাই আপনার উচিত আপনার ওয়াইফাই চ্যানেলকে নিয়মিত আপডেট রাখা।

শেষ কথা

আজকের টিউনে আমরা ওয়াইফাই এর জটিল অ্যালগরিদম নিয়ে বিস্তারিত জানলাম। অনেকেই ইউটিউব অথবা প্লে স্টোরে অনেক অ্যাপ অথবা ভিডিও দেখে থাকবেন সেখানে প্রায়ই উল্লেখ থাকে যে খুব সহজে একটি ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড খুঁজে বের করুন। এখন ভিডিও অথবা অ্যাপ দেখে আপনারা প্রায় অনেক জটিল ভাবনার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এসবের পিছনে আপনাদের মূল্যবান সময়টুকু নষ্ট করে ফেলেন। অনেকে আবার ভাবতে থাকেন আসলে কি ওয়াইফাই এর জটিল অ্যালগরিদম ভাঙ্গা সম্ভব? এছাড়াও অনেকে আবার ভাবতে থাকে ওয়াইফাই কীভাবে কাজ করে?

আশাকরি আজকের এই পোস্টটি পড়ে ওয়াইফাই সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত নতুন অনেক কিছুই জানতে পারলেন। আর আশাকরি এটাও বুঝতে পেরেছেন যে ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড হ্যাক করা সহজ না কঠিন। কেন সহজেই একটি ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড হ্যাক করা সম্ভব নয়! আশাকরি আপনার মনে থাকা এমন অনেক জটিল প্রশ্নের উত্তর আজকে পেয়ে গেলেন। এছাড়াও আজকের টিউন নিয়ে আপনার মনে যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই টিউমেন্ট করে জানাবেন। আমি যতটা পারি উত্তর প্রদান করে সাহায্য করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, Wifi এর জটিল অ্যালগরিদম যা ভাঙ্গা একেবারে মুশকিল! আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।

Level 6

আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস