ফোন হ্যাকিং কি? ফোন হ্যাকিং থেকে বাঁচার উপায়

 

বর্তমান সময়ে ফোন হ্যাকিং একটা গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা প্রয়োজনীয় সকল তথ্যই এখন আমরা সংরক্ষণ করে রাখছি আমাদের পারসোনাল মোবাইল ফোনে। একবার মোবাইল হ্যাক হলে আপনার সব তথ্যতো আপনি হারাবেনই সেইসঙ্গে সেসব তথ্য চলে যাবে অন্যের হাতে। তাই ফোন হ্যাকিং এবং হ্যাকার থেকে বাঁচতে কীভাবে ফোনকে সুরক্ষিত রাখবেন, এর জন্য কী কী পদক্ষেপ নিতে পারেন তা নিয়ে বিস্তারিত থাকছে আজকের আয়োজনে:

ফোন হ্যাকিং কি

ফোন হ্যাকিং হলো এমন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনার ফোনের সব সংরক্ষিত তথ্যসহ ফোনের সব ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে অন্য একজনের কাছে। মোবাইল হ্যাক হলে আপনি বুঝার আগেই আপনার মোবাইলের ফোনের ক্যামেরা সিস্টেম চালু হয়ে তার ভিডিও চলে যাবে অন্য আরেকজনের কাছে। সাধারণত ফোনের ডেটা সিস্টেমের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াটি হয়ে থাকে। আপনি ফোনে কিছু না করলেও যদি হঠাৎ আপনার ফোনে মাত্রাতিরিক্ত হারে ডেটা ব্যবহৃত বেশি হয় তাহলে বুঝবেন ফোন হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

আজকের বিশ্বে ফোন হ্যাকিং ক্রমাগত নিরাপত্তা সমস্যা হিসেবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি আপনার মোবাইলে অটোমেটিক নম্বর ডায়েল হয়, অটোমেটিক অ্যাপস চালু হয়ে যায়, অল্প সময়েই মোবাইল গরম হয়ে গেলে, অপারেশন স্পিড কমে যাবে, খুব দ্রুত আপনার মোবাইল ফোনের ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গেলে অথবা আপনার ব্যবহার করা অ্যাপস গুলো চালাতে চালাতে হঠাৎ যদি বন্ধ হয়ে যায় বুঝে নিবেন আপনার মোবাইল ফোনটি হ্যাক হওয়ার বেশি সম্ভাবনা রয়েছে।

 

একটি লাইভ কথোপকথন বা কারো ভয়েসমেল হ্যাক করা থেকে শুরু করে একজনের স্মার্টফোনে সঞ্চিত ডেটা হ্যাক করা পর্যন্ত অনেক ধরনের ফোন হ্যাকিং পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন? আপনার লাইভ কথোপকথন বা ভয়েসমেলে হ্যাক করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি সেই ব্যক্তি হবেন যাকে আপনি ইতিমধ্যেই চেনেন। যেহেতু আমরা আমাদের মোবাইল ডিভাইসে ক্রমবর্ধমান সংবেদনশীল ডেটা সেভ করি তাই গোপনীয়তার দুর্বলতাগুলোকে কাজে লাগানোর সুযোগটি অসাধু বন্ধু, বহিরাগত বা অপরিচিত ব্যক্তিরা প্রায়ই খোঁজে।

 

ফোন হ্যাকিং থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আপনি বেশ কিছু ব্যবস্থা নিতে পারেন। যেমন আপনার ফোনকে কখনই অযত্নে রাখবেন না। সব সময় আপনার মোবাইলটি আপনার সঙ্গে রাখার চেষ্টা করুন। আপনার ফোনের ডিফল্ট পাসকোড পরিবর্তন করুন। অচেনা ওয়েব সাইটে স্ক্রল করবেন না, যে কোনো অচেনা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার ব্লুটুথ নিরাপত্তা পরিচালনা করুন। অরক্ষিত ব্লুটুথ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। আপনার পিন এবং ক্রেডিট কার্ড ডেটা সুরক্ষিত করুন। পিন নম্বর এবং ক্রেডিট কার্ড সংরক্ষণ করতে একটি সুরক্ষিত অ্যাপ ব্যবহার করুন।

এছাড়া অনিরাপদ পাবলিক ওয়াইফাই এড়িয়ে চলুন। হ্যাকাররা প্রায়শই পাবলিক ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানগুলোকে লক্ষ্য করে। আপনার ফোনের স্বয়ংসম্পূর্ণ অপশনটিও বন্ধ করুন মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচতে। এটি করার মাধ্যমে আপনি হ্যাকারকে ব্যক্তিগত ডেটা অ্যাক্সেস করা থেকে আটকাতে পারেন বলে জানিয়েছেন প্রযুক্তিবিদরা।

ফোন হ্যাকিং হল অন্যকের ফোনের সেই তথ্যে অগ্রহণ যেখানে তার অনুমতি ছাড়াই অন্য ব্যক্তি তার তথ্যে প্রবেশ করে। এটি একটি বিপর্যস্ত অ্যাক্টিভিটি এবং সে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপে প্রাপ্ত হতে পারে, যেমন ফোনের সিস্টেমে অনুমতি পেতে, সেন্সিটিভ তথ্যের অ্যাক্সেস করতে, ব্যবহারকারীর নিজস্ব তথ্য পাওয়া ইত্যাদি। এটি অবৈধ এবং নিয়ম ভঙ্গের সঙ্গে জড়িত এবং এর ফলে সামগ্রিক দুর্ভাগ্যবশত প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ফোন হ্যাকিং একটি অবৈধ প্রথা এবং এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা এবং তথ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। এটি অনুমোদিত এবং নিয়ম মেনে ব্যবহার করা উচিত এবং যদি কোনও সন্দেহজনক কার্যক্রম সনাক্ত হয়, তা অবিলম্বে অধিকারীদের নোটিশ করা উচিত।

ফোন হ্যাকিং বিভিন্ন উপায়ে ঘটে যেতে পারে, যেমন:

 

1. ফিশিং: প্রধানত মেইল বা ম্যাসেজের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে প্রাপ্তির পরে আত্মসাতের জন্য বা কোন ধরনের আউথেন্টিকেশনের জন্য ধারাপাত করা হয়।

 

2.ম্যালওয়্যার: ব্যবহারকারীর নিজস্ব অনুমতি ছাড়াই ম্যালওয়্যার ইনস্টল করা যেতে পারে যা তাদের ফোনে সাংগঠিত কার্যকর হতে পারে।

ফোন হ্যাকিং কি

3.সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং: হ্যাকাররা মানুষের মনোযোগ সহজভাবে আকর্ষণ করে এবং অনুমতি দিতে উৎসাহিত করতে পারে, যাতে তারা নিজের তথ্য সাঝান।

 

4.দুর্নীতি সংস্থাগুলির হ্যাকিং: দুর্নীতি সংস্থাগুলির সাহায্যে বা তাদের উপায়ে অন্যকের ফোনে অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ পাওয়া যেতে পারে।

এই সব পদক্ষেপের মাধ্যমে হ্যাকাররা ব্যক্তির ফোনের তথ্যে প্রবেশ করতে চেষ্টা করে। তবে, ফোনের সিকিউরিটি বাড়াতে সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

 

হ্যাকিং থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য কিছু উপায় রয়েছে:

1. *সাইবার সিকিউরিটি সচেতনতা:* সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে শিখতে হবে, যেহেতু এটি নিজের তথ্য এবং ডিভাইসের নিরাপত্তা বাড়াতে সাহায্য করে।

2. *কঠোর পাসওয়ার্ড:* দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করে এবং নির্দিষ্ট অক্ষর, সংখ্যা, এবং সিম্বলগুলি সম্মিলিত করে পাসওয়ার্ড তৈরি করা উচিত।

3. *আপডেট এবং সুরক্ষা:* অ্যাপ্লিকেশন এবং অপারেটিং সিস্টেমগুলি নিয়মিতভাবে আপডেট রাখা উচিত, যেহেতু এগুলি নতুন সিকিউরিটি সুপারিশ করে।

4. *দূরবর্তী অ্যাক্সেস:* দূরবর্তী অ্যাক্সেস সক্ষম না থাকলে অজানা ব্যক্তিদের তোমার ফোনে প্রবেশ দেওয়া থেকে বাধা দেওয়া উচিত।

5. *দুর্বলতা সনাক্ত করা:* যদি কোনও সনাক্ত দুর্বলতা থাকে, যেমন একটি অ্যাপ্লিকেশনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সনাক্ত হয়, সেটি উপেক্ষা না করা উচিত।

এই সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমরা নিজেদের তথ্য এবং ডিভাইসের নিরাপত্তা বাড়াতে পারি। তবে, সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান এবং সতর্কতা সহজেই এই প্রতিরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করে।

Level 0

আমি হৃদয় চাষা। , Individual বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 মাস 2 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 5 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

"পরিশ্রম ছাড়া কোন কিছু সাফল্য লাভ করা অসম্ভব"


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস