পৃথিবীর বড় বড় টেক কোম্পানিগুলো এগিয়ে যাচ্ছে নিজেদের গতিতে। গতিটা আসলে ঠিক কেমন? খুব ধীর গতি নাকি পুরোপুরি মানব কল্পনার জগৎকে হতবাক করে দেওয়ার মতো দ্রুত? প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কি আসলেই ডলার আয় করার জন্য মানুষকে দিচ্ছে এত এত সার্ভিস, এত এত ফিচার। নাকি তাদের উদ্দেশ্য মানুষের জীবনকে সহজ আর আনন্দময় করে তোলা বিজ্ঞানেটেক র ছোঁয়ায়। নাকি এর পেছনে অন্য কারণ আর উদ্দেশ্যও জড়িত ওতোপ্রোতভাবে?
রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে লক্ষ্য করলে মোটামুটি বড় বড় টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। এটি ভূমিকা না বলে প্রভাব বলাটাই শ্রেয়। তারা কোনো রাষ্ট্রের জন্য কতটুকু বা কেমন অবদান বা প্রভাব রাখতে পারে তা এ যুদ্ধের মাধ্যমে ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায়। তবে সুদূর ভবিষ্যতে এর প্রভাবটা ঠিক কেমন হবে? এটাকি আদৌ ভালো কিছু বয়ে আনবে, নাকি পৃথিবীকে ফেলে দিবে এক মহা মুশকিলে?
রাশিয়া তার যুদ্ধকৌশল হিসেবে ইউক্রেনে তার ধ্বংসাত্নক কার্যকলাপ, হত্যা আর গ্রাম - শহর ধ্বংসের পাশাপাশি সাইবার আক্রমণ শুরু করে। ইউক্রেনের বড় বড় সরকারি, বেসরকারি আর প্রাইভেট সাইটে তারা আক্রমণ শুরু করে। যার ফলে ইউক্রেনকে সরাসরি বিপর্যস্থ হওয়ার পাশাপাশি অনলাইন জগতেও খানিকটা বেগ পোহাতে হয়।
ইউক্রেনের যখন এই করূণ মানবিক অবস্থা তখন তার ঠিক বিপরীত প্রান্তে দেখা যায়, ভগ্ন আর দূর্বল সে ইউক্রেনকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে গুগল, মাইক্রোসফট আর অ্যামাজনের মতো বড় বড় টেক জায়ান্ট কোম্পানি।
যেখানে আমেরিকা আর তার নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর মতো সংস্থা সাহায্য করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিল সেখানে টেক কোম্পানিগুলোর আবির্ভাব বরাবরই অবাক করে দেয় বিশ্বকে।
তো এখন প্রশ্ন হলো এই টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোর ভূমিকাটা কেমন ছিল। তারা এমন কী করেছিল যেটার মাধ্যমে ইউক্রেন অনেকক্ষেত্রে এগিয়ে গিয়েছিলো রাশিয়ার বিশাল সৈন্য সামন্তের চেয়ে। আরও পেয়েছিল যুদ্ধে টিকে থাকার শক্তি আর প্রেরণা।
প্রথম উত্তর হলো এসব কোম্পানি রাশিয়া কৃত সাইবার আক্রমণকে রুখে দেওয়া আর এর প্রতিকার ব্যবস্থা।
সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলের সাহায্যের পদ্ধতিটা ছিল একটু আলাদা। তারা এমন এক পদ্ধতিতে ইউক্রেনকে সাহায্য করেছিল যার মাধ্যমে রাশিয়ান সৈন্যবাহিনির নারকীয় কাণ্ড থেকে রক্ষা পেয়েছিল হাজার হাজার ইউক্রেন সাধারণ নাগরিক। এই কোম্পানিটি “Air Raid Alerts” এমন একটি অ্যাপ তৈরি করেছে যেটির মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রতিটা নাগরিক রাশিয়ান বিমান হামলা আর বোমা হামলা সম্পর্কে জানতে পারে আর সেটি পুরোপুরি বিনামূল্যে। যে পদক্ষেপটা ইউক্রেনের নাগরিকদের মানবিক দিক বিবেচনা করে নেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া তারা “প্রোজেক্ট শিল্ড” এর মাধ্যমে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ সাইটগুলোকে সাইবার আক্রমণ থেকে বাঁচিয়েছে। যেটার মাধ্যমে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ সাইটগুলো প্রোটেক্টেড ছিল।
এরপর, স্যাটেলাইট চ্যানেল আর গুগল ম্যাপের সাহায্যে ইউক্রেন রাশিয়ান সৈন্যদের অবস্থান গতিবিধি এসব অতি সহজেই পর্যবেক্ষণ করছিল। এদিকে তার ঠিক বিপরীতে রাশিয়াও ইউক্রেন সৈন্যেদের অবস্থান জেনে চালাচ্ছিল যুদ্ধের দামামা। ঠিক ওই সময়ে টেক জায়ান্ট “গুগল” কী করেছিল জানলে হতবাক হবেন। গুগলসহ আরও কয়েকটা প্রাইভেট টেক প্রতিষ্ঠান রাশিয়ানদের জন্য ট্রাফিক আপডেট ও কন্সেন্ট্রেশনের (অবস্থান জানান) মত ফিচারগুলো ডিজেবল করে দিয়েছিল বিপাকে ফেলেছিল রাশিয়ান সৈন্যদের
আমরা জানি যুদ্ধ, নির্বাচন ও পাবলিক এনগেইজিং নানান ঘটনার সাথে ইনফরমেশন বা তথ্যের গুরুত্বপূর্ণ কতটুকু। এই তথ্য পাবলিক অপিনিয়ন তৈরিতে বিরাট ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ, একটা ইস্যুতে মানুষের মধ্যে কোনো পক্ষ, দল বা দেশের যে ইমেজ তৈরি করা হয় সেটা ইতিবাচক না নেতিবাচক।
টেক কোম্পানির অন্যতম মহানায়ক মার্ক জাকারবার্গও তার কোম্পানি 'মেটা'র মাধ্যমে সহায়তা করেছিলো ইউক্রেনকে। তারা রাশিয়ার ভুল তথ্য প্রকাশ করে নিজেদের পক্ষে জনমত গঠন আর ইউক্রেনের নাগরিকদের মধ্যে ভীতি বা ত্রাশ সৃষ্টি করার বিরুদ্ধে গঠন করে “স্পেশাল অপারেশন সেন্টার”। এটার সাহায্যে বিভিন্ন রাশিয়ান চ্যানেল, নিউজ ও তথ্যপ্রকাশের নানান সাইটগুলো খুবই ভালোভাবে মনিটর করে এবং তার সত্যতা যাচাই করে।
এছাড়া এসব প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ইউক্রেনের পক্ষে জনমত গঠনে কেমন অবদান রাখছে তা একটু চোখ - কান খোলা রাখলেই উপলব্ধি করা যায়।
আমি মাঈনুল ইসলাম শাফিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
ডায়েরিতে যা ইচ্ছে লিখি।