যেভাবে iPhone ও Android একসময়ের টেক-ওয়ার্ল্ডের দানব ব্ল্যাকবেরি BlackBerry কে হত্যা করে

টিউন বিভাগ প্রযুক্তি কথন
প্রকাশিত
জোসস করেছেন
Level 34
সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা

ব্ল্যাক-বেরি BlackBerry এর ঘটনা বা গল্পটি আসলে প্রযুক্তি শিল্পের হঠাৎ উত্থান ও পতনকে দেখিয়ে দেয়। ডিস্ক্রাপটিভ টেকনোলজি বিষয়টি এমন, যে তা অতিদ্রুত যেকোন প্রযুক্তি বাজারকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারে, যা মুহূর্তে যেমন বিলিয়ন ডলার কোম্পানি তৈরি করে ফেলতে পারে, তেমনি ধ্বংস ও করে দিতে পারে।

ব্ল্যাক-বেরি BlackBerry কয়েক বছরের মধ্যে ২০% গ্লোবাল মোবাইল মার্কেট শেয়ার থেকে প্রায় ০% শেয়ারে চলে আসে। যা আসলেই অবাক করার মত!  চলুন ব্লক-বেরির উত্থান ও পতন এবং এর পেছনের কারণ গুলো জানা যাক।

ব্ল্যাক-বেরির উৎপত্তি

ব্ল্যাক-বেরি BlackBerry এর ইতিহাস শুরু করতে আমাদের ১৯৮০ সালের কানাডাতে ফিরে যেতে হবে। ব্ল্যাক-বেরির উদ্ভব হয়েছিল কানাডার Research in Motion নামক কোম্পানি থেকে, যাদের সংক্ষিপ্ত নাম ছিল RIM। ১৯৮৮ সালে লাজারিডিস এবং ডগলাস নামক দুই ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র গতি (Motion) নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। Research and Motion নামক কোম্পানিটি প্রথম দিকে তারবিহীন যোগাযোগ নিয়ে কাজ করছিল।

১৯৯৭ সালে কোম্পানিটি প্রথম টু ওয়ে মেসেজিং পেজার ডিভাইস তৈরি করে এবং ১৯৯৭ সালে কোম্পানিটি টরেন্টো স্টক এক্সচেঞ্জে এ লেনদেন করে।

QWERTY কিবোর্ড সহ তাদের আরেকটি পেজারের নাম দেয়া হয় ব্ল্যাক-বেরি এবং তা পরবর্তীতে কোম্পানির নাম হিসাবে পছন্দ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে কিবোর্ডের বাটন গুলোর আকৃতি থেকে এই নাম দেয়া হয়। নতুন এই পেজারের ভাল দিক ছিল এতে সরাসরি ইমেইল যুক্ত ছিল। এই ফিচারটি বিজনেস ইউজারদের দারুণ ভাবে আকৃষ্ট করে কারণ তারা খুব সহজে এর মাধ্যমে ইমেইল এ এক্সেস করতে পারতো এবং এর মাধ্যমে ব্ল্যাক-বেরি তার নিজের বাজার তৈরি করতে পেরেছিল।

তাদের পরের মডেল টিতে তারা এর সাথে টেলিফোন যোগ করে দেয় যা এর আগের থেকে ভাল সাড়া ফেলে। ১৯৯০ সালে নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে আধিপত্য করা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। তখন এই প্রতিযোগিতায়, এরিকসন এবং আইবিএম ছিল সব কিছু। এমনকি অ্যাপল তাদের অ্যাপল নিউটন এবং স্টালাস দিয়েও চেষ্টা করেছিল। ব্ল্যাক-বেরি ঠিক মুহুর্তে মার্কেটকে অন্য দৃষ্টিতে দেখে এবং নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে চায়।

১৯৯০ সালের বড় বড় প্রযুক্তিবিদ ধরতে পারে নি যে ডাটা আদান প্রদানের জন্য ব্যান্ডউইথ খুবই সীমিত কিন্তু Research In Motion এর প্রতিষ্ঠাতা মাইক এটি ঠিক ধরতে পেরেছিল। তিনি ব্লাক-বেরি ডিভাইসে নতুন একটি যন্ত্র বসিয়ে দেন যা ডাটা কমিউনিকেশনের বিট গুলোকে এমন ভাবে বণ্টন করে দেয় যাতে নেটওয়ার্ক ওভার-লোড হতে পারে না। যে কাজটি করতে  অন্যরা প্রচুর পরিমাণে অর্থ আদায় করছিল ব্ল্যাক-বেরি তা সহজেই করে দেখায়। তাদের আরেকটি বড় সুবিধা ছিল তাদের কিবোর্ড, কারণ এটি গাণিতিক কাজে খুব ভাল ভাবে ব্যবহার উপযোগী ছিল।

ব্ল্যাক-বেরির সফলতার আরেকটি কারণ ছিল তাদের গ্লোবাল মার্কেটিং। ব্ল্যাক-বেরির কর্মচারীরা প্রায়ই বিভিন্ন কনফারেন্সে যোগ দিতো এবং এমন বিজনেসম্যানদের টার্গেট করতো যারা ল্যাপটপ ব্যবহার করে এবং তাদেরকে ১ মাসের জন্য ফ্রিতে ব্ল্যাক-বেরি ব্যবহার করতে দিত। বিজনেসম্যানরা তাদের ল্যাপটপ রেখে ব্ল্যাক-বেরি ব্যবহার শুরু করে যা পরবর্তীতে তাদের অভ্যস্ততায় পরিণত হয় এবং তা এক বিশাল word of mouth মার্কেটিং তৈরি করে।  একই সাথে ডিভাইসটি ব্যবসায়ী বিশ্বে জরুরী হয়ে পরে।

তখনকার সময়ে ব্ল্যাক-বেরি ডিভাইস গুলো অন্য ফোন থেকে যথেষ্ট কার্যকারী ছিল এবং ব্যবহার উপযোগী ছিল। ব্ল্যাক-বেরির সুনাম বিজনেস ক্লাস থেকে নন-বিজনেস ক্লাসেও ছড়িরে পরে এবং ব্ল্যাক-বেরি তাদেরও টার্গেট করে এবং প্রতিদিনের কাজের জন্য নতুন নতুন ফিচার যোগ করে। তাদের এই নতুন দিগন্তের প্রথম ধাপ ছিল BlackBerry Pearl। BlackBerry Pearl মাল্টিমিডিয়া ফিচার, যেমন ক্যামেরা এবং Blackberry Messenger নামে নতুন সার্ভিস নিয়ে আসে।

২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার গুলো টেক্সট মেসেজের জন্য যেখানে গতানুগতিক নিয়মে চার্জ করতো তখন ব্ল্যাক-বেরি তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে অফার করে যা বর্তমানে iMessage এবং iPhone করছে। তখনকার সময় এটা মানুষকে মেসেজ প্ল্যান লিমিটেশন থেকে মুক্তি দেয় যা কোন অংশে একটি বিপ্লবের চেয় কম ছিল না। এই উদ্ভাবন ব্ল্যাক-বেরিকে খুবই জনপ্রিয় করে তুলে যা ব্ল্যাক-বেরিকে সব জায়গায় ছড়িয়ে পরার জন্য যথেষ্ট ছিল। কোম্পানিটি তখন ২০% গ্লোভাল এবং ৫০% US মোবাইল মার্কেট শেয়ারের মালিক হয়ে যায়।

কোম্পানিটির গ্লোবাল মার্কেট পজিশন খুবই শক্ত ছিল এমনকি এটাকে টেক ওয়ার্ল্ডের দানব ও বলা হত কারণ তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে বয়স্ক চাকরিজীবী সবাই ছিল ব্ল্যাক-বেরির ব্যবহারকারী। তো এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে তাদের ভুল গুলো কি ছিল?

আইফোনের আগমন

এটা ছিল ২০০৭ যখন George W Bush ছিল প্রেসিডেন্ট, উইন্ডোজ ভিসটা নতুন আসছে বাজারে, অপর দিকে প্রথম Transformers মুভিটিও রিলিজ হয়েছে। স্টিভ জব ম্যাক-ওয়ার্ল্ড এর স্টেজে নতুন এক প্রোডাক্ট নিয়ে কথা বললেন যা নিয়ে অ্যাপল কাজ করছে। তিনি বলেছিলেন ডিভাইসটি এমন হবে যাতে এক সাথে একটি ফোন, একটি মিনি কম্পিউটার, একটি ওয়েব ব্রাউজার এবং একটি ইমেইল মেশিন যুক্ত থাকবে।

এ দিকে কানাডা থেকে ব্ল্যাক-বেরির প্রতিষ্ঠাতা মাইক ঘোষণাটি শুনেন এবং বলেন, “এটি অসম্ভব কারণ নেটওয়ার্ক সিস্টেম এটিকে বহন করতে পারবে না এবং কেউ এর প্রস্তাব জানালেও তা অযৌক্তিক”। মাইক ঠিকই ছিল, কারণ আই-ফোনের ড্রপ সমস্যা এবং মামলার কারণে এটি ঠিক মত কাজ করে নি। কিন্তু প্রাথমিক কিছু ব্যাঘাতের পরেও যখন আই-ফোন কাজ করা শুরু করল তখন মাইক ভুল বলে প্রমাণিত হল।

দুই বছরের মধ্যে আই-ফোনের মাল্টি টাচ ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন ব্যবহারকারী এবং ডেভেলপারদের এমনভাবে আকৃষ্ট করে যা বিশ্ব ব্যাপী ঝড় তুলে দেয়। সেই সময় ব্ল্যাক-বেরি তাদের মূল হুমকি বুঝতে পেরেছিল। HTC এর মত Android ফোন গুলো বাজারে প্রবেশ করছিল যা ব্ল্যাক-বেরির জন্য বাধা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বাড়িয়ে তুলেছিল। তাদের জন্য এটা একদম নতুন বিষয় ছিল কারণ আগে তাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

কোন ফিচার গুলোতে ব্ল্যাক-বেরি পিছিয়ে ছিল?

Sony Ericsson, Nokia, and Motorola থাকার পরেও তখনকার সময় ব্ল্যাক-বেরি ছিল প্রিমিয়াম মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড। এক রাতেই সব কিছু বদলে গিয়েছিল। আই-ফোন ব্ল্যাক-বেরি থেকে অনেক ভাল ফিচার নিয়ে আসে যেমন, বড় স্ক্রিন সাথে ক্যাপাসিটিভ টাচ। দুই ফোনের প্লেব্যাক আর ক্যামেরা কিছু দিক থেকে একই হলেও ব্রাউজার ফিচার দুটি ফোনে একই ছিল না। ব্ল্যাক-বেরির স্ক্রিন ছিল ছোট যাতে ইমেজ দেখতে যথেষ্ট বেগ পেতে হত অপরদিকে আই-ফোনের স্ক্রিন ছিল দ্বিগুণ। একজন ব্যবহারকারী একটি ওয়েব পেজে ব্ল্যাক-বেরি থেকে আই-ফোনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত। শুধু এই ফিচার গুলোই নয় অন্নান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে আই-ফোন ছিল বেশ ইউজ-ফ্রেন্ডলি যা দিতে ব্ল্যাক-বেরি ব্যর্থ হয়।

প্রচলিত এই বিশ্বাসের পরেও ব্ল্যাকবেরি অনেক ভাল করছিল এবং তারা তাদের ব্যবসায়কে ইন্দোনেশিয়া, ভারত এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশেও সম্প্রসারিত করতে পেরেছিল। তখনও তারা অনেক বড় একটা কোম্পানি ছিল, এমনকি  তাদের চাহিদা ধরে রাখার জন্য নতুন নতুন কারখানা তৈরি করতে হয়েছিল। যখন আই-ফোন তাদের নেটওয়ার্ক সমস্যা সমাধান করে ফেলে ওই দিকে ব্ল্যাক-বেরিও বড় স্ক্রিনের ফোন নিয়ে আসে। নতুন ফোনেও তারা তাদের QWERTY কিবোর্ডকেও কিন্তু বাদ দেয় নি যা তাদের ওই সময়ে জনপ্রিয় করে তুলেছিল।

ব্ল্যাক-বেরির মুল সমস্যাটি ছিল তারা তাদের ফিজিক্যাল ফিচার পরিবর্তন করে ওই পরিবর্তন শীল মার্কেটে ঠিকে থাকতে চেয়েছিল।

তাদের ভুল সিদ্ধান্ত কোনটি ছিল?

এখানে একটা কথা বলা দরকার যে ব্ল্যাক-বেরি কিন্তু শুরু থেকে অপারেটিং সিস্টেম চেঞ্জ করে নি। তারা খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পারল এখন তাদের জাভা অপারেটিং সিস্টেম চেঞ্জ করার সময় চলে এসেছে। তারা Q এবং X ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে নতুন একটি অপারেটিং সিস্টেম বের করার সিদ্ধান্ত নেয় কিন্তু দুর্ভাগ্য ক্রমে তাদের ডেভেলপাররা এই ল্যাঙ্গুয়েজ পছন্দ করে নি। তারা জাভা রেখে অ্যাপল আর Android অ্যাপ ডেভেলোপ করাকে বেছে নেয় কারণ এই মার্কেট গুলো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠছিল। এটাই ছিল ব্ল্যাক-বেরির জন্য সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া। তাদের স্টোরে কম সংখ্যক থার্ড পার্টি অ্যাপ থাকায় তাদের ক্রেতা সংখ্যা কমে যায় এবং অ্যাপ কেনার লোকেরও ঘাটতি দেখা দেয়।

ডেভেলপাররা তাদের অ্যাপ বানানো কমিয়ে দেয় এবং যার মাধ্যমে ব্ল্যাক-বেরি ধ্বংসের দিকে এগুতে থাকে। এক বছর পরেই এই জনপ্রিয় মোবাইল ব্র্যান্ডটি তিন নাম্বারে চলে যায়। ব্ল্যাক-বেরিকে বাঁচানোর জন্য কোম্পানিটি আবার তাদের অপারেটিং সিস্টেম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় কিন্তু এবার তারা Android অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমেই তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কে ধরতে চায়।

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাদের এই পদক্ষেপের পরেও ব্ল্যাক-বেরিকে অন্য Android ফোন থেকে আলাদা মনে হয় নি এবং তা উদীয়মান বাজারে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে নি। সুতরাং স্বভাবত তারা একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। সেই দিন গুলোতে তারা সিকিউরিটি এবং এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার নির্মাণের দিকে আগ্রহী হয়। তারা তখনো মোবাইল ফোন নিয়ে কাজ করছিল এবং সেটা ছিল মাত্র গ্লোবাল মার্কেটের ০.০৫% শেয়ার। এই কথা সঠিক যে আই-ফোন আর Android ব্ল্যাকবেরিকে শেষ করে দেয় সাথে এটাও ঠিক যে এই সুযোগটা ব্ল্যাক-বেরিই করে দিয়েছিল। তখন iPhone ও Android ছিল শীর্ষে।

ব্ল্যাক-বেরির নতুন মডেল গুলো আসলে তাদের বাজারকে বাড়াতে পারে নি তারপরেও তারা বারবার একই ফোন বানাতে থাকে। যদিও তারা তাদের ক্যামেরা কোয়ালিটি বাড়িয়েছিল এবং তাদের ফিচার গুলো উন্নত করেছিল তারপরেও তা ওই সময় তুলনামূলক ভাবে তা Android আর iPhone এর থেকে ভিন্ন কিছু ছিল না।  ব্ল্যাক-বেরি একসময় প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দেয় যাতে করে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা আরও এগিয়ে যায় এবং তাদের যখন টনক নড়ে তখন তারা আবার প্রতিদ্বন্দ্বীদের পিছু নেয়।

কোম্পানির ভেতরকার ভুল

তাদের নির্বাহী কর্মকর্তাদের আসলে কোন ভিশন ছিল না, গ্রাহকদের চাহিদার কথা না শুনে তারা তাদের নিজস্ব চিন্তা অনুযায়ী কোম্পানিকে গ্রাহকদের দিকে ঠেলে দেয়। ২০১০ সালে ব্ল্যাক-বেরির সাবেক সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিম বালসিলি বলেছিল আই-ফোনে ৩ লক্ষ অ্যাপ থাকলেও তোমার একটি অ্যাপই প্রয়োজন আর সেটা হল ইন্টারনেট ব্রাউজার। এটা তখনকার ধরাবাঁধা সংস্কৃতিকে নির্দেশ করে এবং কোম্পানির সঠিক দূরদর্শিতার অভাবে তা অবনতির দিকে চলে যায়।

কোম্পানির নেতৃত্ব বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছিল। প্রথমত তারা এটা বুঝতে ব্যর্থ হয় নন-বিজনেস গ্রাহকের সংখ্যা বেশি। দ্বিতীয়ত তারা আইফোন এবং অ্যান্ড্রয়েড থেকে নতুন ভাল অ্যাপস্টের ডেভোলপ করতে পারে নি এবং সর্বশেষ তারা এটা কল্পনা করতে ব্যর্থ হয় যে মোবাইল ফোন শুধু টেলিযোগাযোগই না, সম্পূর্ণ বিনোদনের ডিভাইস হয়ে যাবে। কার্যনির্বাহীদের টাচস্ক্রিন ডিভাইসেও কিবোর্ড নিয়ে পরে থাকাটা এটাই প্রমাণ করে যে তারা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিল আসলে বাজার কোন দিকে যাচ্ছে।

শেষ কথা

ব্ল্যাক-বেরির গল্পটি আবার আমাদেরকে প্রযুক্তি বাজারের গতিশীলতা দেখিয়ে দেয় যা যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। ভাল পণ্য দেয়ার জন্যই কিন্তু ব্ল্যাক-বেরি প্রথমে ছিল কিন্তু পিছিয়ে যাবার কারণ ছিল তারা একটা সময় গিয়ে উদ্ভাবন বন্ধ করে দেয়। আই-ফোন আসার আগে তারা তাদের নিজেদের নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল এবং ভবিষ্যৎ কল্পনা করতে পারে নি। এমনকি ২০১০ সালেও তারা অ্যাপের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে নি।

শেষ পর্যন্ত ব্ল্যাক-বেরি ছিল এমন একটি কোম্পানি যারা শীর্ষে থাকার পরেও তারা বুঝতে পারে নি কিভাবে জায়গাটা ধরে রাখতে হয়। তাদের প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পণ্য তৈরির আগ্রহ ছিল না। অ্যাপল এবং গুগল মোবাইল মার্কেটে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল। ব্ল্যাক-বেরি এই চাপটা অনুভব করে নি কিন্তু যখন করেছিল তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। সর্ব-সাফল্যে কোম্পানিটি তাদের শেয়ার হারায়।

ব্ল্যাক-বেরি এখনো মোবাইল তৈরি করে। কিন্তু তারা চাইলেই আজকের অ্যাপল হতে পারতো যদি তারা পদক্ষেপ গুলো অ্যাপলের আগে নিতে পারতো। এটা যদিও সহজ ছিল না কিন্তু তা অসম্ভবও ছিল না। আর এটাই ছিল ব্ল্যাক-বেরির উত্থান ও পতন।

Level 34

আমি সোহানুর রহমান। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 487 টি টিউন ও 200 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 110 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

কখনো কখনো প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর মত ঘটনা পুরো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস