অপটিক্যাল ইলিউশনস (চোখের ধাঁধা) [পর্ব-৪]

প্রথমেই সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। নববর্ষের এই দিনে চারিদিকে এত রং আর এত ডিজাইন - মাঝে মাঝে এদেরকে এক আনন্দময় ইলিউশনই মনে হয়।

তাই আবারও নিয়ে এলাম কিছু অপটিক্যাল ইলিউশনস। প্রথমেই ডিসক্লেইমারটা দিয়ে নেই:

এই টিউন দেখে কারও দৃষ্টিশক্তির হেরফের কিংবা কেউ যদি ইলিউশন-আক্রান্ত হয়ে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন তাহলে টিউনার দায়ী থাকবেন না। সম্পূর্ণ নিজের দায়িত্বে টিউনটি পড়ুন।

ছবির কারসাজি

নীচের বিখ্যাত "আফগান গার্ল" ছবিটির দিকে ঠায় তাকিয়ে থাকুন প্রায় এক মিনিট। এরপর দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরিয়ে নিন। আগেই বলেছি আপনার দৃষ্টিশক্তি নিয়ে আমার কিছু করার নেই।

নীচের ছবিটিতে একজনের পার্শ্বদৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন। আসলেই কি তাই। সম্পূর্ণ ছবিটি (ক্লিক করুন) দেখলে আপনার ধারণা কিন্তু পাল্টে যাবে।

নীচে একজন প্রৌঢ় ভদ্রলোকের হাসি হাসি চেহারা দেখছেন, তাই নয় কি? আচ্ছা ছবিটির কোন অস্বাভাবিকতা কি চোখে পড়ছে? ছবিটি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে (কিংবা আপনার মাথা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে - যেটা আপনার পছন্দ!) দেখুন তো।

নীচের সাদাকালো ছবিটি কি শুধুই সাদা ব্যাকগ্রাউণ্ডে কালো কিছু বৃত্ত, নাকি অন্য কিছু? মনিটর থেকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ান - সাদাকালোর বিভেদ নিয়ে বিখ্যাত একটি গান গাওয়া প্রয়াত একজন শিল্পী এখানে লুকিয়ে আছেন

মিডিয়ার হাতে রয়েছে অমিত শক্তি। কেউ তা ভালভাবে ব্যবহার করে আর কেউ বা নিয়োজিত হয় ঘৃণ্য ইয়েলো জার্নালিজমের মত কাজে। নীচের ছবিটি লক্ষ্য করুন। একটি নিষ্পাপ ছবিকে দুই ভাবে দেখানো যায়।

সোজা-বাঁকার আরও কিছু কাহিনী

দেখুন তো নীচের লাইন দুটি সোজা-সমান্তরাল কিনা। বাঁকা মনে হলেও এরা ‘পারফেক্ট প্যারালাল’

আশ্চর্য হলেও সত্যি নীচের ছবিটির লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি রেখাগুলো একে অপরের সমান্তরাল

নীচের দুই সারি কাল বর্গগুলোও কিন্তু একে অপরের সমান্তরাল। বামের দিকেরগুলো ডানেরগুলির চেয়ে নিচু নয়।

লেখালেখির খেলা

নীচের ছবিটি কি শুধুই সাদা কালো কিছু ত্রিভুজ?

একটু পেছনে গিয়ে দেখুন। কি দেখতে পেলেন? আপনি কি আসলেই টাইপ করতে করতে টাইপ-নেশায় আক্রান্ত?

নীচের ছবিতে লেখাটি পড়ুন ও বলুন এই লেখাতে কয়টি ‘এফ’ অক্ষর আছে? ৩টি পড়তে পেরেছেন তো?

আসলে কিন্তু ৬টি  ‘এফ’ আছে। আপনার জানা না থাকলে বলিঃ ‘অফ’ শব্দগুলোতেও কিন্তু ‘এফ’ অক্ষর থাকে।

পারসেপশন বা বোধ থেকে আমরা অনেক কিছুই সহজে অনুমান করে ফেলতে পারি। নীচের ছবিটি দেখুন। কি মনে হল? লেখা আছেঃ Wonders of Perception। আসলেই কি তাই? এবার একটু উপর বা নিচ থেকে তাকিয়ে প্রতিটি অক্ষর খেয়াল করুন। লেখা আছেঃ Wqndfbs qe Pfbcfptlqn

লেখাটি কি ‘বি’ নাকি ‘আনলাকি থারটিন’? নাকি দুটোই

আপনি বলবেন, এই লেখা আমি কিভাবে পড়ব? কিন্তু আপনি কিন্তু চায়নিজ বা জাপানি ভাষা না জেনেও কি লেখা আছে পড়তে পারবেন। এর জন্য আপনার ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট!

আমি কিন্তু পড়তে পেরেছিঃ বামেরটাতে লেখা আছেঃ fly, yielding, impossible, find, applying, forgotten, four, introduction, practice, falling, together, expericene

আর ডানেরটাতে আছেঃ little, bo, her, bo, peep, sheep, peep, has, and, little, lost, can

নীচের লেখাটি দেখুন। আপনি দূরে থাকলে পড়বেন দূরে, আর কাছে থাকলে কাছে। সহজ হিসাব।

নীচের ছবিটিতে কি শুধুই নীল রঙের কিছু ছড়ানো ছিটানো আকৃতি নাকি কিছু লেখা আছে। প্রতিদিন এই জিনিসটা চেক করেন, অথচ পড়তে পারলেন না? চোখদুটো একটু ছোট করে ফেলুন। এবার পড়া যায়? আপনারটা কি গুগল না ইয়াহু?

কয়টা পেন্সিল?

গুনে বলুন তো কয়টা পেন্সিল আছে? মাথা গুনে বলুন, এবার ইরেজারের দিক থেকে গুনে বলুন

রঙের খেলা

নীচের ছবিটিতে হঠাৎ তাকালে আপনি হয়তো দেখবেন বাম-মুখি কিছু হলুদ তীরচিহ্ন। আবার অনেকে কিন্তু ডান-মুখি সবুজ তীরচিহ্নগুলোও আগে দেখতে পারেন।

নীচের ছবিটি খেয়াল করুন। লাল-নীল-সবুজ আর কালো রং আছে এতে। এবার মনিটর থেকে আপনার মাথা সামনে পেছনে করুন। চারটি রঙের পরিমাণ কি বদলে যাচ্ছে?

জানি অনেকে পাগল বলবেন। কিন্তু নীচের ছবিতে বেগুনি ও সোনালী রঙের সাইন ওয়েভের ব্যাকগ্রাউণ্ড কিন্তু ‘পারফেক্ট সাদা’

নীচের ছবির মাঝখানের ক্রস চিহ্নটির দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে সাদা লিখাগুলোকে কমলা ও সবুজ রঙে দেখতে পাবেন।

নীচের ছবিতে মাছগুলো কি উঠানামা করে এগিয়ে যাচ্ছে? মোটেও নয়, এরা কিন্তু যার যার জায়গায় স্থির রয়েছে।

বেড়ে উঠা-কমে যাওয়া

নীচের ছবিটি দেখুন কেমন যেন ফুলে ফেঁপে উঠছে।

আর এই ছবিটির চারটি ডিজাইন কেমন যেন সংকুচিত হয়ে আসছে

ছোট-বড়র রহস্য

নীচের ছবির সাইনওয়েভের প্রতিটি রেখাই কিন্তু সমান

এই ছবিতে AB ও ACকে অসমান মনে হলেও তারা আসলে একই সমান।

ঘূর্ণন চমক

দেখুন তো কোনদিকে এই চাকাটি ঘুরছে? ক্লকওয়াইজ নাকি এন্টি-ক্লকওয়াইজ? নাকি দুই দিকেই?

এই ছবিতেই বা নীল বিন্দুর গোলকটি কোনদিকে ঘুরছে? দুদিকেই? তা কি করে হয়?

সবচেয়ে শেষে রয়েছে একটি চমক। নীচের ছবিটিতে ভাল করে খেয়াল করুন, আমরা প্রায় সবাই বলব বেড়ালটি ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরছে। কারণ এই সময়ে আমাদের মস্তিষ্কের ডান দিকটি কাজ করছে। আমরা যদি আমাদের মস্তিষ্কের বাম দিকটি কাজে লাগিয়ে বেড়ালটির দিকে তাকিয়ে থাকি, তাহলে একসময় মনে হবে বেড়ালটি ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরছে। এটা দেখতে পাবার জন্য, বেড়ালটির লেজের দিকে তাকিয়ে থাকুন।

সবাই নববর্ষের নতুন চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে, আমাদের দেশকে ভালবাসবেন, ভাল থাকবেন।

Level 2

আমি মোহাম্মদ ইউসুফ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 96 টি টিউন ও 1054 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আপনার পর্বগুলো খুবই দারুন হচ্ছে। ধন্যবাদ।

    আপনাকেও ধন্যবাদ ইখতিয়ার ভাই।

দেখছি আর চোখের বারটা বাজাচ্ছি !!
এতে কি ধন্যবাদ দেব ।
না থ্যাংকস দিলাম ।

    আপনাকে ধন্যবাদ হাসান ভাই। বারোটা বেজে গেলে, ইলিউশনগুলো উল্টোদিক থেকে দেখা শুরু করবেন – undo হয়ে যেতে পারে। 🙂

নীচের ছবিটিতে একজনের পার্শ্বদৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন। আসলেই কি তাই। সম্পূর্ণ ছবিটি (ক্লিক করুন) দেখলে আপনার ধারণা কিন্তু পাল্টে যাবে।

এখানে নাকটা কিন্তু পাস দিয়ে লাগানো,ভাল করে দেখেন।সম্পূর্ণ ছবিটি দেখলেও বুঝা যায়।নাকের ফুটোর দিকে তাকান তাহলে বুজতে পারবেন।

বাকি সবগুলো অসাধারন।

    sorry, ভালো করে দেখলাম।এখন মনে হয় ঠিক আছে। sorry for first comment.

    ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য…..

Level 3

দারুন না ভাই দারুন বললে ভুল হবে।ভয়ানক দারুন 🙂

    আপনাকে "ভয়ানক" ধন্যবাদ সুজন ভাই। 🙂

আমি এমনই দেখছি বিড়ালটা ঘড়ির কাটার বিপরীটে ঘুরছে।
thanks

    ও কে, তাহলে এবার একটু চেষ্টা করে দেখুন ঘড়ির কাটার দিকে ঘোরার ব্যাপারটি দেখতে পারেন কি না।
    ধন্যবাদ শোভন ভাই।

Level 0

হুম খুব সুন্দর

    ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য…

Level 0

অবাক করা কান্ড তো 🙄 😯 ।

    আসলেই অবাক করা কান্ড….ধন্যবাদ

Level New

দারুন দারুন দারুন দারুন দারুন দারুন AAAAWWWWEESOOOMMMEEE

    ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাবাবাদদদদদদদ!

মিডিয়ার হাতে রয়েছে অমিত শক্তি। কেউ তা ভালভাবে ব্যবহার করে আর কেউ বা নিয়োজিত হয় ঘৃণ্য ইয়েলো জার্নালিজমের মত কাজে। নীচের ছবিটি লক্ষ্য করুন। একটি নিষ্পাপ ছবিকে দুই ভাবে দেখানো যায়।

এই ছবিটা অসাধারণ লেগেছে। 🙂

Level 0

খুবই সুন্দর। আমি চাইনিজ লেখা পরতে পেরে খুবই আনন্দিত। চাইনিজ লেখা দেখলেই মাথা ঘুরতো, এখন থেকে এই ভাবেই চেষ্টা করব। ধন্যবাদ

    সজল ভাই, এবার তাহলে চায়নিজ খাওয়ান! 🙂
    ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

Level 0

এক কথায় অসাধারন। অনেক ধন্যবাদ, পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি

    আশা করি আরো কিছু নিয়ে আসতে পারব। টিউনে ফ্ল্যাশ ইমেজ এমবেড করতে পারলে খুব ভাল হত, জানিনা কিভাবে করতে পারব।
    ধন্যবাদ।

অসাধারণ ধন্যবাদ ।

(VERY BAD) IT IS ইলিউশন VERY GOOD IT IS TRUE

    এই কমেন্টটির একটা ছবি বানিয়ে ফেলুন না। আরেকটি ইলিউশন যোগ হবে। 🙂

কই পান এই সব জটিল জটিল জিনিস।

http://www.techvission.com

    ইন্টারনেটে পাই ভাই…এখন চিন্তা করেন যারা এগুলো বানিয়েছে তাদের মেধার কথা!
    আপনাকে ধন্যবাদ!

Level 0

নীচের ছবিটিতে কি শুধুই নীল রঙের কিছু ছড়ানো ছিটানো আকৃতি নাকি কিছু লেখা আছে। প্রতিদিন এই জিনিসটা চেক করেন, অথচ পড়তে পারলেন না? চোখদুটো একটু ছোট করে ফেলুন। এবার পড়া যায়? আপনারটা কি গুগল না ইয়াহু?
.
.
.
সব বুজলাম দেখলাম।কিন্তু এটা বুজলাম না।

    রনি ভাই, চোখদুটো প্রায় বন্ধ করে এই ছবিটির দিকে তাকালে দেখতে পাবেন লেখা আছে – মেইল বক্স। তো আপনি কি গুগল না ইয়াহু মেইল বক্স ব্যবহার করেন, সেটা জানতে চাইলাম আর কি! 🙂
    ধন্যবাদ…

বরাবরের মত ফাটাফাটি একটা টিউন 🙂

মারাত্মক সুন্দর হইতাছে ! চালাইয়া যান ! ! ! ! ! ! !

ধন্যবাদ। সবগুলিই দারুন হয়েছে। আগে কিছুটা জানতাম। কিন্তু নতুন কয়েকটা অতি চমৎকার হইছে। ৩, ১০, ১৩ এবং ১৪ নম্বর গুলি অসাধারন। যার ফলে আমি সেগুলি হার্ডড্রাইভে সংগ্রহ করে রাখছি। শেয়ার করবার জন্য ধন্যবাদ।

    আপনাকেও ধন্যবাদ এলিন ভাই।

ধন্যবাদ

এক কথায় চমৎকার! সবগুলো নিয়ে নিলাম। মাইন করিয়েন না…….

    নিয়ে নেবার জন্যই তো দেয়া..এখানে মাইন্ড করার কিছু নেই।
    আপনার ভাল লেগেছে এটাই আমার জন্য যথেষ্ট….ধন্যবাদ সুজন ভাই

জটিল

Level 0

sesh 3 ta toh anti clockwise e dekhi.. chesta korlam clockwise dekhar , hoy naa… ki korbo? naaki aamar mathai ulta :p

    না আপনার মাথা উল্টা না – শুধু একটু মনযোগ দিতে হবে। আমারও হয়নি প্রথমে – বেশ মনযোগ দিয়ে দেখলাম হলো।
    ধন্যবাদ।

Level 0

মজা পাইলাম।

13 সব সময় লাকি, আন লাকি নয়

    @তাজদীদ: ঠিক, কারও জন্য লাকি, কারও জন্য নয় – ধন্যবাদ