প্রযুক্তি যে ভাবে এনিমেশন মুভি ইন্ডাস্ট্রিকে পরিবর্তন করেছে

আমাদের অনেকেই এনিমেশন মুভি বা কার্টুন ভিডিও দেখতে পছন্দ করি। বাস্তবসম্মত দৃশ্য এবং আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স এর কারনে পশু- পাখি থেকে শুরু করে সব ধরনের জীব জন্তুকে আমরা এনিমেশন মুভিতে কথা বলা বা হাটা চলা করতে দেখতে পাই। বাস্তবসম্মত দৃশ্য এবং আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স কিন্তু শুরুর দিকে ছিল না। কি ভাবে এনিমেশন মুভি ইন্ডাস্ট্রি পালটে গেল তাই জানবো আজকের এই আয়োজনে।

  • প্রথম দিকের অ্যানিমেশন:

প্রথম দিকের অ্যানিমেশন ভিডিও গুলো কম্পিউটারের কোন সাহায্য ছারাই ম্যানুয়াল ভাবে করা হত।
ছবি এবং দৃশ্যগুলি হাতে এঁকে ম্যানুয়ালি অ্যানিমেটেড করা হয়েছিল। আশ্চর্যজনকভাবে এই অ্যানিমেটেড ভিডিও গুলো মানুষ অনেক আগ্রহ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘন্টা দেখত। যাইহোক, সবকিছু একটি নতুন মোড় নিয়েছিল যখন ট্রেইলব্লেজিং প্রযুক্তির উদ্ভব হয় এবং এই প্রযুক্তি অত্যাশ্চর্য অ্যানিমেশনের জন্ম দিয়েছে যেখানে অ্যানিমেশন ভিডিও গুলো অত্যাধুনিক কম্পিউটার-সহায়তায় প্রযুক্তির সাহায্যে করা হয়েছে। এখন, অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রগুলি 3D ফর্ম্যাটে করা হয়।

  • অ্যানিমেশনে ব্যবহৃত আধুনিক প্রযুক্তি কিভাবে শুরু হলো:

অ্যানিমেশন সিনেমা তৈরি করতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যবহার গ্রহণ করা এত সহজ ছিল না কারন ম্যানুয়ালি এনিমেশন ভিডিও সৃষ্টি করতে যে সকল লোকজন জড়িত ছিল তারা সকলেই ভয় পেত যে কম্পিউটার ব্যবহার করলে তাদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হবে। যাইহোক, সময়ের সাথে সাথে মুভি নির্মাতারা কম্পিউটার প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা দেখতে শুরু করে এবং তখনই অ্যানিমেশন শিল্প একটি নতুন আকার নিতে শুরু করে।

  • অ্যানিমেশন ভিডিওতে প্রযুক্তির ব্যবহার

অগমেন্টেড রিয়েলিটি এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
আফটার ইফেক্ট/ভার্চুয়াল ইফেক্ট
লাইভ ক্যারেক্টার অ্যানিমেশন
এবং আরো

পিক্সার এবং ডিজিনি এর প্রযোজনায় টয় স্টরি মুভিটিতে প্রথমবারের মত আধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়। এই মুভি পরবর্তী অন্যান্য মুভি গুলোর জন্য পথ প্রশস্ত করে দেয় যেমন শ্রেক মুভি। বর্তমানেও টয় স্টরি এবং শ্রেক মুভি গুলোর সাফল্য কম্পিউটার জেনারেটেড (CG)এনিম্যাশন শিল্পের জন্য standard হয়ে আছে। কম্পিউটার-জেনারেটেড (CG)অ্যানিমেশন শিল্পের মান হওয়ায় অ্যানিমেশন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তি প্রয়োজনের সাথে সাথে আরো আধুনিক এবং পরিবর্তিত হয়েছে। স্পষ্টতই, একটি ভালো মানের অ্যানিমেশন তৈরি করতে প্রচুর প্রযুক্তি এবং সিস্টেমের প্রয়োজন হয়; এর ফলে অ্যানিমেশন স্টুডিও এবং ডেটা সেন্টারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই অ্যানিমেশন স্টুডিওগুলি আকর্ষণীয় অ্যানিম/অ্যানিমেশন তৈরির জন্য উদ্ভাবনী সফ্টওয়্যায়ের বিকাশ ঘটিয়েছে এছাড়াও, স্টুডিওগুলিকে সাধারণত CG নামে ডাকা হয়, যার অর্থ কম্পিউটার-জেনারেটেড স্টুডিও।
CG স্টুডিওতে, আপনি অনেক প্রযুক্তি পাবেন; এর মধ্যে রয়েছে 3D অ্যানিমেশন প্রযুক্তি এবং অন্যান্য শক্তিশালী প্রযুক্তি। এইচপি, সিসকো এবং ডেল সিজি স্টুডিওতে ব্যবহৃত বেশিরভাগ কম্পিউটারাইজড হার্ডওয়্যার সিস্টেম এবং প্রযুক্তি ডিজাইন করে থাকে।


অ্যানিমেশন শিল্পের উন্নতি এবং অগ্রগতি হয়েছে ভার্চুয়াল এবং 3D অ্যানিমেশনের মাধ্যমে। এই মাধ্যমে অ্যানিমেশনের অন্যান্য ফর্মগুলির তুলনায় মুভিতে আরও আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স এর মাধ্যমে দৃশ্যপট ফুটিয়ে তোলা যায়।

এছাড়াও, সঠিক প্রযুক্তি সফ্টওয়্যার এবং সিস্টেম ব্যবহার করে, একজন পেশাদার স্রষ্টা মুভিতে অকল্পনীয় দৃশ্য তৈরি করতে পারেন এবং একজন প্রযোজকের দৃষ্টিভঙ্গি চিত্রিত করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, একটি মুভির নাম বলা যায় সে টা হলো – লাইফ অফ পাই, একটি বাঘকে সিনেমার অন্যতম প্রধান চরিত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। এই বাঘটি আসল ছিল না বরং সম্পুর্ন রুপে ভার্চুয়াল এবং 3D এনিমেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে বানানো হয়েছিল। যাইহোক, প্রযুক্তি সফ্টওয়্যারের সাহায্যে নির্মাতারা সিনেমার উদ্দেশ্যে একটি প্রাণবন্ত বাঘ তৈরি করতে সক্ষম হন।
তদুপরি, প্রতিটি নতুন অ্যানিমেশন মুভি বেশ কিছু নতুন প্রযুক্তির আত্মপ্রকাশ করে অ্যানিমেশন শিল্প গুলো তাদের দর্শকদের বিনোদন এবং মন্ত্রমুগ্ধ করে চলছে।

বিভিন্ন কম্পিউটার অ্যানিমেশন স্টুডিও অ্যানিমেশন তৈরি করতে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। RenderMan প্রযুক্তি ভিজ্যুয়াল এফেক্ট এবং 3D অ্যানিমেশনের জন্য নিখুঁত বলে প্রমাণিত হয়েছে। কম্পিউটার অ্যানিমেশন স্টুডিওগুলি বিশেষ করে 3D অ্যানিমেশনের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হওয়ার জন্য এই প্রযুক্তিটির নিয়মিতভাবে সংশোধন করে যাচ্ছে। এটি অ্যানিমেশন স্টুডিওগুলির জন্য সেরা এবং সবচেয়ে দরকারী প্রযুক্তি হিসাবে দেখা হয়।
রেন্ডারম্যান নিম্নলিখিত ব্লকবাস্টার সিনেমাগুলির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল: টয় স্টোরি, দ্য অ্যাবিস, অনওয়ার্ড, জুরাসিক পার্ক, টার্মিনেটর ইত্যাদি।

প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধু অ্যানিমেশন ফিল্ম জগতেই ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে তা নয়। অন্যান্য চলচ্চিত্র শিল্পগুলি আরও বাস্তবসম্মত দৃশ্য এবং আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স তৈরি করতে নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে।

Level 0

আমি আরিফ মাহমুদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস