আসসালামুয়ালাইকুম টেকটিউনবাসি। আশাকরি, সকলে ভালো আছেন। বন্ধুরা, আজকে আমি আপনাদের সামনে একটা মজার বিষয় নিয়ে হাজির হয়েছি। আপনারা অনেকেই জানেন যে আমাদের মাঝে অনেকেই এমন আছি যে, মাঝে মাঝে আমরা অনেক কিছু ঠেলতে গিয়ে কষ্টের মধ্যে পড়ি, আবার অনেকেই কিছু জিনিস টানতে গিয়ে কষ্টের মধ্যে পড়ি।
ধরেন, আপনি একটা ট্রলি টানছেন। টেনে টেনে আপনি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে গেলেন। আবার কিছুক্ষণ পর, ওই একই ট্রলি ওই জায়গা থেকে আবার পূর্বের জায়গায় নিয়ে আসলেন। কিন্তু, এবার ট্রলি টেনে আনেন নি। এবার আপনি ট্রলিটা ঠেলে এনেছেন। একই কাজ, একবার টেনে আরেকবার ঠেলে করেছেন।
তো এই যে টানা বা ঠেলা, একই বস্তু ঠেলা না টানা, কোনটা করলে সুবিধা বেশি? এককথায়, কোনো বস্তু টানা অপেক্ষা ঠেলা সহজ, নাকি ঠেলা অপেক্ষা টানা সহজ? আপনাদের মধ্যে অনেকেই বলবেন, টানা সহজ। আবার অনেকেই বলবেন ঠেলা সহজ। কিন্তু, আসলে কোনটা সহজ? জানতে ইচ্ছা করছে নিশ্চয়ই? তো চলুন জেনে নিই, বিজ্ঞান কী বলে।
প্রথমে আসি ঠেলা নিয়ে। পরীক্ষার জন্য আমরা কোনো বস্তু কল্পনা করে নিই। ধরেন, একটা ট্রলি আমরা ঠেলে ১০০ মিটার দূরত্ব নিয়ে যাব। তো যাত্রা শুরু করলাম। যাত্রা শুরু করা মাত্রই আমরা ট্রলিটিকে সামনে ঠেলতে লাগবো। এই সামনে ঠেলতে গিয়ে একটা জিনিস লক্ষ্য করেছেন কী? আপনারা যখন ঠেলা শুরু করলেন, তখন কী প্রয়োগ করা হয়েছিল? যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে জানেন, তারা বলবেন, বল প্রয়োগ করা হয়েছিল।
তো এই যে বল, এটা আমরা সামনের দিকে প্রয়োগ করেছি। এই বলটা ট্রলি থেকে সামনের দিকে মাটিতে তির্যকভাবে প্রয়োগ হচ্ছে। ফলে মাটি সামনের দিকে তির্যকভাবে একটা বল পাচ্ছে। নিউটনের ৩য় সূত্র এখানে প্রযোজ্য হবে। সূত্রটা প্রায় সকলেই জানেন। প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
ফলে মাটি যে বলটা পেল, তার সমান ও বিপরীতমুখী একটা বল আমাদের প্রয়োগ করবে। আমরা বল প্রয়োগ করেছি পিছন থেকে সামনের দিকে তির্যকভাবে। ফলে মাটিও আমাদের দিকে এর সমান একটি প্রতিক্রিয়ামূলক বল দিবে। তবে দিকটা হবে বিপরীত। মাটি আমাদেরকে সামনে থেকে পিছনের দিকে তির্যকভাবে প্রতিক্রিয়া বল দিবে।
আমরা চাই সামনে এগুতে, আর মাটি আমাদেরকে পিছনের দিকে বল দিচ্ছে। যার ফলে সামনে যাওয়াটা আমাদের জন্য খুব কষ্টকর হয়। আর ঠেলতে ঠেলতে আমাদের একই দূরত্ব বেশি সময়ে অতিক্রান্ত হয়। যার ফলে সময়েরও অপচয় হয়। আর কষ্টের কথা তো বাদই দিলাম।
এবার আসি টানা নিয়ে। ধরেন, আগের ট্রলিটাই আমরা এবার টেনে ১০০ মিটার নিয়ে যাব। তো আবারও যাত্রা শুরু করলাম। যাত্রা শুরু করা মাত্রই আমরা ট্রলিটা সামনের দিকে টেনে নিয়ে যাব। আমরা সামনের দিকে ট্রলিটা নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রলিতে পিছনের দিকে মাটিতে বল প্রয়োগ হচ্ছে। ফলে আমরা বলতে পারি যে, মাটিও আমাদেরকে একটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়ামূলক বল দিবে। যেহেতু আমরা বল প্রয়োগ করেছি সামনে থেকে পিছনের দিকে, তাই মাটি একই পরিমাণ বল পিছন থেকে সামনের দিকে দিবে তির্যকভাবে।
তাহলে কী সুবিধা হচ্ছে? তাহলে আমাদের তো পায়ের দ্বারা মাটিতে প্রয়োগ করা বলের প্রতিক্রিয়ামূলক বল আছেই; উপরন্তু, আমরা ট্রলি থেকে পিছন থেকে সামনের দিকে অতিরিক্ত একটা বল পেয়ে যাচ্ছি। যার ফলে আগের পায়ের বলের সাথে এই ট্রলির অতিরিক্ত বল আমাদেরকে বেশি বেগে সামনের দিকে নিয়ে যাতে সাহায্য করবে। যার কারণে আমাদের সময় কম লাগবে। আর টানতেও ততটা কষ্ট করতে হবে না।
তাহলে বুঝতেই পারছেন, ট্রলিটা টানার সময় আপনার বল কম দিলেও চলবে, মানে আপনার শক্তি কম খরচ হচ্ছে; উপরন্তু, আপনার সময়ও বেঁচে যাচ্ছে।
আর অন্যদিকে ট্রলি ঠেলে নিয়ে গেলে আপনাকে বেশি বল প্রয়োগ করতে হচ্ছে, মানে আপনার শক্তি বেশি খরচ হচ্ছে; উপরন্তু, আপনার সময়ও বেশি লাগছে।
তাই আমরা এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, কোনো কিছু ঠেলা অপেক্ষা টানা অনেক সহজ।
আপনাদের কী মতামত?
আমি মো মিরাজ ইসলাম। ১ম বর্ষ, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 26 টি টিউন ও 25 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 7 টিউনারকে ফলো করি।
আমি মোঃ মিরাজ ইসলাম। আমি আর্টিকেল লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। এছাড়া ইউটিউবে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরিও করি। আমি টেকটিউনসে টিউন লিখে আয় করার জন্য একাউন্ট ক্রিয়েট করেছি। ধন্যবাদ।