অজানাকে জানি [পর্ব-০২] :: কিভাবে বালু থেকে গ্লাস বানানো হয়? Glass making Process?

Level 4
শিক্ষার্থী, ইস্টার্ণ রিফাইনারী মডেল হাই স্কুল, চট্টগ্রাম

আস্সালা মুআলাইকুম, প্রিয় বন্ধুরা আশাকরি সবাই ভালো আছেন। “অজানাকে জানি” আজকের পর্বে আমরা জানতে চলেছি কিভাবে বালু থেকে গ্লাস বানানো হয়? (Glass making Process In Bangla?)

আমরা সকলেই জানি কাচ বালু থেকে বানানো হয়। কিন্তু আমরা কি কখনো এটা দেখেছি কিভাবে বালু থেকে কাঁচ বানানো হয়? আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের বালু থেকে গ্লাস তৈরির সম্পূর্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাবো। তো চলুন শুরু করা যাক.


কাচ কি? (What Is Glass?)
কাচ হলো বহুবিধ ব্যবহারিক, প্রযুক্তিগত এবং আলংকারিক প্রয়োগসমৃদ্ধ অ-স্ফটিক স্বচ্ছ নিরাকার কঠিন বস্তু। জানালা, টেবিল সামগ্রী, আলোকবিজ্ঞান ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাচ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত গলিত অবস্থা থেকে দ্রুত শীতলীকরণের মাধ্যমে কাচ তৈরি করা হয়, তবে আগ্নেয়গিরির কাচ মূলত প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়।

 

কাঁচ উৎপাদনের কাঁচামাল (Materials For Glass Production)

বালি(কোয়ার্টজ), সোডিয়াম কার্বোনেট, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট, বিভিন্নধরনের রন্জক পদার্থ ইত্যাদি।

 

এক নজরে কাঁচ উৎপাদনে সংঘটিত রাসায়নিক বিক্রিয়া (Chemical Reactions In Glass Production)

  1. Na₂CO₃+SiO₂ -> Na₂SiO₃+CO₃
  2. CaCO₃+SiO₂ ->CaSiO₃+CO₂
  3. Na₂CO₃+CaCO₃+6SiO₂ -> Na₂O.CaO.6SiO₂+2CO₂

 
বালু থেকে কাচ তৈরির প্রক্রিয়া? (Glass making Proces?)
আগেই বলে রাখি কাচ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো সাধারণ কাচ। এই ধরনের কাজ আমরা সাধারনত গৃহস্থলীর কাজে ব্যবহার করে থাকি। যেমন: চায়ের কাপ, জানালার কাচ, কাচের বাটি ইত্যাদি।

আরেকটি হলো স্পেশাল কাজের জন্য ব্যবহৃত কাচ। এই কাচ সাধারনত ল্যাবরেটরিতে এক্সপেরিমেন্টের কাজে কিংবা বুলেট প্রুফ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

তবে ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা সাধারন কাজের ব্যবহার করে থাকি তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলে সাধারন কাচ তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাবো।

কাচ তৈরির প্রধান কাচামাল হচ্ছে বালু। কিন্তু এটি যেমন তেমন বালু হলে হবে না। কমপক্ষে ৯৯ ভাগ সিলিকন রয়েছে এইরকম বালু দিয়ে কাচ তৈরি করা হয়। কাচ তৈরির জন্য প্রথমে একটি মিশ্রন তৈরি করা হয়। এই মিশ্রনে ৭৫% বালু, ১৫% সোডা অ্যাশ ও ১০% চুন ব্যবহার করা হয়। তারপর এই মিশ্রনটি মেশিনের সাহায্যে মিহি করা হয়।

এবার পুরনো কিছু কাছের টুকরা রিসাইকেল করার জন্য তৈরিকৃত মিশ্রনটির সাথে মিক্স করানো হয়। সেই সাথে এই ভাঙ্গা কাচের টুকরো গুলো তৈরিকৃত মিশ্রনটির সাথে ভালোভাবে মেল্ট হতে সাহায্যে করে। এরপর এই সকল মিশ্রনকে ১৪০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় গলানো হয়।

অতিরিক্ত তাপমাত্রায় এই মিশ্রনটি একদম গলে যায় এবং লিকিুইডে পরিণত হয়ে যায়। এরপর এই লিকুইড একটি ট্যাংকে ঢেলে দেওয়া হয়। ট্যাংক থেকে গলিত কাঁচকে বিভিন্ন ছাচে ঢেলে প্রয়োজনীয় আকৃতি প্রদান করা হয়। আকৃতি প্রদানের পর গলিত কাচগুলোকে শীতলতম তাপমাত্রায় দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখা হয়। ধীরে ধীরে শিতল হয়ে স্বচ্ছ, শক্তিশালী ও সুষম ঘনত্বের কাচ সামগ্রী পাওয়া যায়। এই পদ্ধতিকে অ্যানিলিং বা পাইন দেয়া বলে।

যদি কোন কাচের বিশেষ কোন উপাদান যোগ করার প্রয়োজন হয় তাহলে প্রক্রিয়াটিচলাকালীন সময়ে এই কাজটি সম্পূর্ন করা হয়। যেমন: রঙিন কাচ বানানোর জন্য মেটাল অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। আলাদা আলাদা রঙের জন্য আলাদা মেটাল অক্সাইডের প্রয়োজন হয়। এবং সবশেষে কাচগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার ও পালিশ করে বাজারজাত করা হয়। আর এভাবেই সম্পূর্ন হয় কাচ বানানো প্রক্রিয়া (Glass making Process)।

ধন্যবাদ এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলটি পড়ার জন্য। পরবর্তী এই আরো কিছু লিখব সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

Level 4

আমি মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। শিক্ষার্থী, ইস্টার্ণ রিফাইনারী মডেল হাই স্কুল, চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 8 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

Assalamu alaikum everyone. I'm Mohammad Habib Ullah. I'm a learner. I love to learn something new and sharing this with others.


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ভাই অনেক সুন্দর লিখা