বৈজ্ঞানিক ভ্রান্তিবিলাস (দ্বিতীয় পর্ব)–বহুল প্রচলিত বৈজ্ঞানিক ভুল ধারণা-১

[‘বৈজ্ঞানিক ভ্রান্তিবিলাসে’র প্রথম পর্বে কয়েকটি অবিশ্বাস্য বৈজ্ঞানিক ভুল ধারণা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত নয়। তবে দুনিয়াজুড়ে এসব ভুল বৈজ্ঞানিক তত্ত্বে বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা একেবারে কমও নয়। দ্বিতীয় পর্বে ধারাবাহিকভাবে এমন কয়েকটি বৈজ্ঞানিক ধারণা নিয়ে আলোচনা করব, যা বেশির ভাগ মানুষই ভুল জানেন।]

বিবর্তনবাদ অনুসারে মানুষ বানর থেকে এসেছে—এরকম ধারণা আমাদের প্রায় সবারই। অনেকে আবার এমন প্রশ্নও করে, যদি বানর থেকে মানুষ হয়ে থাকে, তবে জীবজগতে এখনও বানর আছে কীভাবে? নাকি সব বানর মানুষ হয় নি? তাছাড়া মানুষ বিবর্তিত হয়ে ভবিষ্যতে কি আবার বানর হয়ে যাবে? বেশির ভাগ মানুষই বিবর্তনবাদ সম্পর্কে এরকম ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাসী। আর ‘বানর থেকে মানুষ’ তত্ত্বটি প্রচারের জন্য চার্লস ডারউইনকেই অভিযুক্ত করা হয়। অথচ ডারউইন কিন্তু বর্তমান কালের বানরকে মানুষের পূর্বপুরুষ বলে দাবি করেন নি। তাহলে তিনি কী বলেছিলেন?

ডারউইন ১৮৫৯ সাথে প্রকাশিত তাঁর ‘On the Origin of Species’ গবেষণাগ্রন্থে জীবজগতের বিবর্তন তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন। তবে এ বইয়ে তিনি মানুষের বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেন নি। ‘The Descent of Man’ (১৮৭১) নামক পরবর্তী গবেষণাগ্রন্থে তিনি মানব বিবর্তনতত্ত্ব সম্পর্কে তাঁর ধারণা প্রকাশ করেন। তাঁর এই বিবর্তনতত্ত্ব অনুসারে মানব প্রজাতি এবং বর্তমানে বিদ্যমান বড় নরবানর (great apes) শ্রেণীভুক্ত শিম্পাঞ্জি, বনোবো, গরিলা ও ওরাংউটান প্রজাতি আদ্যিকালে একই পূর্বপুরুষ (common ancestors) থেকে পরস্পর আলাদাভাবে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে অনেক ধাপে বিবর্তিত হয়ে আজকের অবস্থায় এসেছে। বিবর্তনের ধারায় মানুষ ও নরবানরের উক্ত প্রজাতিগুলো জীবজগতে আজ পর্যন্ত টিকে থাকলেও বিলুপ্ত হয়ে গেছে তাদের সেই পূর্বপুরুষেরা।

ডারউইন বিবর্তনবাদের প্রথম প্রবক্তা নন। তবে তিনিই প্রথম জীবজগতের বিবর্তনকে ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’ নামক তত্ত্বের সাহায্যে ব্যাখ্যা করেন, যা পরবর্তীকালে অসংখ্য বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রামাণ্য বিবেচিত হয়েছে। প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব অনুসারে জীবজগতের যে প্রজাতি প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকা ও বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে বেশি সুবিধা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, সেই প্রজাতিই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে এবং অন্যরা বিলুপ্ত হয়ে যায়। আর এই টিকে থাকার লড়াইয়ে অনুকূল শারীরিক বৈশিষ্ট্য অর্জন এবং পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে তা জীনগতভাবে স্থানান্তরের লক্ষ্যে জীবপ্রজাতিগুলো সময়ের সাথে বিবর্তিত হয়।

আধুনিক ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে উদঘাটিত হয়েছে বানর নয়, বরং জীনগত দিক থেকে মানুষের সবচেয়ে কাছাকাছি প্রজাতি হচ্ছে শিম্পাঞ্জি। তার মানে এই নয় যে, বর্তমান কালের শিম্পাঞ্জি থেকে মানুষের উৎপত্তি হয়েছে। তবে বিবর্তন তত্ত্ব অনুসারে আদিতে মানুষ ও শিম্পাঞ্জির পূর্বপুরুষ একই ছিল—যদিও আধুনিক মানব প্রজাতি ও শিম্পাঞ্জি প্রজাতির সাথে সেই একক পূর্বপুরুষের প্রজাতির শারীরবৃত্তীয় পার্থক্য ছিল বিশাল। আনুমানিক ছয় মিলিয়ন বছর আগে উক্ত একক পূর্বপুরুষের প্রজাতি থেকে শিম্পাঞ্জি প্রজাতি ও মানব প্রজাতি বিবর্তনের মাধ্যমে দুটি আলাদা শাখায় ভাগ হয়ে গিয়েছিল। একইভাবে মানুষ ও শিম্পাঞ্জির একক পূর্বপুরুষের শাখাটি থেকে প্রায় আট মিলিয়ন বছর আগে গরিলা প্রজাতি এবং তের মিলিয়ন বছর আগে ওরাংউটান প্রজাতির শাখা আলাদা হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং বানর কিংবা নরবানর থেকে মানুষের বিবর্তন এবং নরবানর ও মানুষের একক পূর্বপুরুষ থেকে মানুষের বিবর্তন এক কথা নয়।

শিম্পাঞ্জি প্রজাতি থেকে আলাদা হওয়ার পর পরই আধুনিক মানব প্রজাতির উৎপত্তি হয়েছিল—এমনটি ভাবলেও ভুল হবে। কারণ এর পরও মানুষের পরবর্তী পূর্বপুরুষ প্রজাতিটি আরও অনেকগুলো প্রজাতিতে ভাগ হয়ে গিয়েছিল এবং এদের মধ্য থেকে এক বা একাধিক প্রজাতি ধাপে ধাপে আরও অনেকবার বিবর্তিত হয়ে আজকের মানব প্রজাতির উৎপত্তি হয়েছে। অবশ্য বিবর্তনের এই পর্যায়ের ধাপগুলোর ধারাবাহিকতা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। তবে দিন দিন যতই নতুন নতুন তথ্যপ্রমাণ আবিষ্কৃত হচ্ছে, মানব বিবর্তনের অতীতচিত্রটি ততই পরিষ্কার হচ্ছে।

এটি ঠিক যে, জীবজগতের বিবর্তন তথা মানুষের উৎপত্তি নিয়ে বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের একটা বড় বিরোধ বিদ্যমান। ঈশ্বর-কেন্দ্রিক সৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসীদের পক্ষে ডারউইনের বিবর্তনবাদ মেনে নেওয়া কষ্টকর। ডারউইন যখন তাঁর প্রাকৃতিক নির্বাচনভিত্তিক বিবর্তন তত্ত্ব প্রকাশ করেছিলেন, তখন তা ছিল তাঁর নিজস্ব পর্যবেক্ষণলব্ধ ফলাফলমাত্র। সে আমলে উন্নত প্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক গবেষণার সুযোগ ছিল না। পরবর্তীকালে, বিশেষ করে আধুনিক যুগে বিবর্তন তত্ত্বের গবেষণায় রেডিওকার্বন ডেটিং সহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রত্নতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, জীনতত্ত্বসহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সম্মিলিত জ্ঞানের বহুমাত্রিক সমাহার ঘটেছে। এর ফলে একসময় যে তত্ত্ব ছিল ডারউইনের একক, সীমিত গবেষণার ফলাফল—সেই বিবর্তনবাদই এখন বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর দিনে দি্নে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আধুনিক বিজ্ঞান এই তত্ত্বের সপক্ষে এমন সব তথ্যপ্রমাণ হাজির করছে, যা জ্ঞান ও যুক্তির আলোকে এক কথায় উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

বিবর্তনবাদ ডারউইনের একটি যুগান্তকারী তত্ত্ব। অন্তত এখন পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কষ্টিপাথরে এই তত্ত্বের সত্যতা যাচাইকৃত ও প্রমাণিত। তবে ভবিষ্যতে কখনও যদি নতুন তথ্যপ্রমাণের আলোকে এই তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হয়, তবে তা হবে আরও বেশি যুগান্তকারী ঘটনা। কারণ এর ফলে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার প্রতিষ্ঠিত বিশাল জ্ঞানরাজি নিঃসন্দেহে ওলট পালট হয়ে যাবে। সেই সম্ভাবনা কতটুকু?

আমার ব্লগ দেখুন

Level 0

আমি নেটপোকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 5 টি টিউন ও 79 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি নেটপোকা বলছি...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

আমি বিবর্তন বাদে বিশ্বাস করিনা তবে ধর্মের কারনে নয়

    আচ্ছা, ঠিক আছে। তবে বিজ্ঞান বিশ্বাসের বিষয় নয়, তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তে পৌঁছার বিষয়।

ভাল লাগলো… চালিয়ে যান। 😀
এ নিয়ে আমারও একটা টিউন আছে।
https://www.techtunes.io/tech-talk/tune-id/49269/

    আপনার টিউনটি প্রিয়তে নিলাম। সময় করে পড়ব। আমার টিউনটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আপনার লেখাতে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ কোথায়, তা তো বোঝা গেল না। এভাবে ছবি এঁকে কি কোন কিছু প্রমাণ করা যায়!

[শিম্পাঞ্জি প্রজাতি থেকে আলাদা হওয়ার পর পরই আধুনিক মানব প্রজাতির উৎপত্তি হয়েছিল—এমনটি ভাবলেও ভুল হবে। কারণ এর পরও মানুষের পরবর্তী পূর্বপুরুষ প্রজাতিটি আরও অনেকগুলো প্রজাতিতে ভাগ হয়ে গিয়েছিল এবং এদের মধ্য থেকে এক বা একাধিক প্রজাতি ধাপে ধাপে আরও অনেকবার বিবর্তিত হয়ে আজকের মানব প্রজাতির উৎপত্তি হয়েছে।]

আপনি জানলেন কী করে! একটি প্রজাতি থেকে আরেকটি প্রজাতি কীভাবে আলাদা হয়? ১৩ মিলিয়ন বছর আগে ওখানে কী ছিল? সেখানে থেকে কী করে দুই প্রজাতিতে বিভক্ত হলো? তারা কী কী প্রজাতি ছিল?

    আপনাকে কে বলল, আমি বিবর্তন তত্ত্ব প্রমাণ করার জন্য এই পোস্ট দিয়েছি? আপনি কি আমার পোস্টটি ঠিকমত পড়েছেন? বিবর্তন তত্ত্বের প্রমাণ দেওয়া আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য ছিল না। আমি শুধু বিবর্তন তত্ত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, তার মধ্যে একটি নিয়ে খুবই সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি। বিবর্তন তত্ত্ব একটি সুবিশাল বিষয়। এই ছোট পোস্টে তার সব কিছু আলোচনা করা সম্ভব নয়। সে চেষ্টাও আমি করি নি।

    আর বিবর্তন তত্ত্ব/সৃষ্টি তত্ত্ব সম্পর্কে আপনার ধারণার কথা আমি জানি। আপনার কিছু কিছু পোস্ট আমি পড়েছি। ক্রিয়েশনিজম আদৌ বিজ্ঞান নয়। এটি একটি বিশ্বাস মাত্র, যা বৈজ্ঞানিকভাবে সর্বজন-স্বীকৃত নয়। অন্যদিকে আধুনিক যুগের বিজ্ঞানীদের একশজনের মধ্যে প্রায় নিরান্নব্বই জনের কাছেই বিবর্তনবাদ একটি গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব, ক্রিয়েশনিজম নয়। আর তাদের কাছে এই তত্ত্বের গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তি নিশ্চয়ই অন্ধ বিশ্বাস নয়, বরং বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রাপ্ত সিদ্ধান্ত। যদি ভাবেন ডারউইন নামক এক ব্যক্তি একটি তত্ত্ব দিল এবং বাকি সবাই চোখ বন্ধ করে তা মেনে নিল, তবে তা নিতান্তই হাস্যকর ধারণা। তাছাড়া ক্রিয়েশনিস্টগণ বিবর্তন তত্ত্ব সম্পর্কে যেসব প্রশ্ন বা সন্দেহ উত্থাপন করে, বিবর্তন তত্ত্বের মধ্যেই তার প্রতিটির উত্তর বিদ্যমান। ইন্টারনেটে খুঁজলে পাবেন।

    যদি বলেন, শতকরা নিরান্নব্বই জন বিজ্ঞানী ভুল এবং একজন বিজ্ঞানী (?) সঠিক, তাহলে আমার বলার কিছু নেই। ধন্যবাদ।

    আমি প্রশ্ন করেছি আপনার লেখা নিয়ে। অথচ আমার লেখাতে আপনি ক্রিয়েশনিজম কোথায় পেলেন? অপ্রাসঙ্গিক আক্রমণ হয়ে গেল না? কোথাও যদি কিছু বলেও থাকি তাহলে সেখানে যেয়ে খণ্ডন করুন, নইলে প্রমাণ ছাড়া এভাবে অপ্রাসঙ্গিকাভবে কিছু বললে কেউই বুঝবে না, বরঞ্চ আমার সম্পর্কে ভুল ধারণা হবে।

    [অন্যদিকে আধুনিক যুগের বিজ্ঞানীদের একশজনের মধ্যে প্রায় নিরান্নব্বই জনের কাছেই বিবর্তনবাদ একটি গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব, ক্রিয়েশনিজম নয়।]

    প্রথমত, এই পরিসংখ্যান কোথা থেকে পেয়েছেন? দ্বিতীয়ত, বিবর্তন বলতে অনেক কিছুই বুঝায়। তারা কী ধরণের বিবর্তনে বিশ্বাস করেন তা কি আপনি জানেন? তৃতীয়ত, বিজ্ঞানে কিংবা সত্য-মিথ্যা নির্ণয়ে মেজরিটি বলে কোন কথা নেই। এক সময় শতভাগ বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষ পৃথিবীকে সমতল, স্থির, ও সৌরজগতকে ভূ-কেন্দ্রিক ভাবত। কিন্তু তাদের বিশ্বাস ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

বিবর্তনবাদ পুরোই মনগড়া একটা বিষয় এই বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই।কয়েকটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা দেখান যেটা দিয়ে প্রমান করা গেসে বিবর্তনবাদ আসলেই সত্য। 🙄

    "বিবর্তনবাদ পুরোই মনগড়া একটা বিষয় এই বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই।" আপনার যেহেতু কোন সন্দেহ নাই, সেহেতু আপনাকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দেখাতে গিয়ে আমি বেগার খাটব কেন? আপনি আপনার বিশ্বাস নিয়েই থাকুন। ধন্যবাদ।

ডারউইন মরার পর বানরদের বিবর্তন বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বানরগুলো আর মানুষ হচ্ছে না। বরং মানুষই ‍দিনে ‍দিনে বানর হয়ে যাচ্ছে। দৈনিক পত্রিকাগুলো ঘাটলে এর চাক্ষুষ প্রমাণ পাবেন ==========>

    ৩ মিলিয়ন বছরের বিবর্তনের তুলনায় ৩০০ বছরের (যেসকল পত্রিকার কথা বলছেন সেগুলোর প্রকাশ শুরু হয়েছে সম্ভবত এরকম রেঞ্জেই) তুলনা করতে গেলে অনেক বেশি সাহস প্রয়োজন। ধন্যবাদ।

thanx for ur inform

visit and earn money

http://friendsearner.blogspot.com/

অজ্ঞতা থেকে সৃষ্ট ভ্রান্ত ধারনা বশে আমরা বিজ্ঞান থেকে দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছি। এ ধরনের টিউন অজ্ঞতা দূর করতে সহায়ক হবে।

    ঠিক বলেছেন। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

বিজ্ঞানের সমালোচনা বিজ্ঞানভিত্তিক হওয়া উচিত।

    একমত। কিন্তু আমরা তা করি না। ধন্যবাদ।

বিবর্তন বাদ সম্পর্কে তেমন কিছু জানিনা তবে বিজ্ঞানের কোন বিষয় প্রমানসহ প্রকাশ করেল তার বিশ্বাস যোগ্যতা থাকে ।
পানির অনুতে অক্সিজেন আর হাইড্রোজেন আছে তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত হওয়ার পরই সেটা বিশ্বাসে পরিনত হয়েছে ।
বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণের উপর বিশ্বাস হয় কিন্তু বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞান হয় না ।

    "বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণের উপর বিশ্বাস হয় কিন্তু বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞান হয় না।" – আপনার এই কথার সাথে আমি একমত। বিবর্তন তত্ত্বটি যদি ডারউইন কিংবা তাঁর পরবর্তী অসংখ্য বিজ্ঞানীর শুধু বিশ্বাসের ব্যাপার হত, তবে তা আধুনিক বিজ্ঞানের জগতে এমন সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা পেত না। বরং আমি আমার লেখায় বলেছি, আধুনিক বিজ্ঞান বিবর্তন তত্ত্বের সপক্ষে এমন সব তথ্যপ্রমাণ হাজির করছে, যা জ্ঞান ও যুক্তির আলোকে এক কথায় উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সবচেয়ে বড় কথা হল, বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যপ্রমাণ দ্বারা তত্ত্বটির সত্যতা যদি প্রমাণিত না হত, তবে তা বহু আগেই বাতিলের খাতায় জমা হত। কিন্তু তা হয় নি, বরং যতই দিন যাচ্ছে, ততই এ তত্ত্বের ভিত্তি আরও সুপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রাণিবিজ্ঞানের প্রতিটি পাঠ্য বইয়ে এ তত্ত্ব অন্তর্ভুক্ত এবং বিশ্বের প্রায় সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ তত্ত্ব পড়ানো হয়। এ তত্ত্ব ভ্রান্ত হলে নিশ্চয়ই এভাবে জ্ঞানবিজ্ঞানের জগতে স্থান করে নিতে পারত না। বিজ্ঞান কেবলমাত্র বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে কোন কিছু গ্রহণ করে না। বরং যদি করত, তবে বিজ্ঞান আজ এতদূর আসতে পারত না। আধুনিক বিজ্ঞানের সকল সুবিধা আমরা ভোগ করছি, অথচ বিজ্ঞানের এই মৌলিক বৈশিষ্ট্যটাই যদি আ্মরা অস্বীকার করি, তবে সেটিও এক ধরণের বিশ্বাস হারানোর পাপ।

    এটি ঠিক যে, আমাদের মত সাধারণ মানুষের পক্ষে এ তত্ত্ব মেনে নেওয়া খুব কঠিন। বিশেষ করে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে বিবর্তন তত্ত্বের একটা বড় সংঘাত রয়েছে। তবে আমার কেন জানি মনে হয়, এ সংঘাত আপাত ও সাময়িক এবং ভবিষ্যতে কোন এক সময় এই সংঘাত থাকবে না। ধর্মীয় সৃষ্টিতত্ত্ব এবং বিবর্তনবাদ ভিত্তিক সৃষ্টিতত্ত্বের মধ্যে একটা 'মিসিং লিংক' রয়েছে, যা মানুষ এখনও খুঁজে পায় নি। এটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত।

    আপনি বিবর্তন তত্ত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে ইন্টারনেটে অনেক ম্যাটেরিয়াল্‌স পাবেন। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ।