নতুন ক্রেডিট কার্ড নেয়ার পর যে কাজগুলো করা দরকার

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে শুরু করছি।

নতুন ক্রেডিট কার্ড নেয়ার পর যে কাজগুলো করা দরকার।
ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ড টিপস:

(১) কার্ডটি এক্টিভেট করুন

ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড যাই হোক না কেন, হাতে পাওয়ার পর পরই এটি ব্যবহারের উপযুক্ত হয়না। কার্ড ইস্যু করার পর এটি সিস্টেমে চালু হতে ১ থেকে ৩ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে। কার্ড একটিভ হলে আপনি মোবাইলে এসএমএস কিংবা ইমেইল পেতে পারেন (ইস্যুয়ারের ওপর নির্ভর করে)।

তবে সবচেয়ে ভাল হয়, যদি আপনি ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড সেবাদাতার হেল্প লাইনে ফোন করে এক্টিভেশন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেন। মোট কথা, কার্ডটি শুরুতেই এক্টিভেট করে নিতে হবে।

(২) পিন নাম্বার সংগ্রহ করুন

এটিএম বুথ এবং দোকানে POS (পয়েন্ট অব সেল) এর মাধ্যমে কেনাকাটার জন্য ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ডের পিন নাম্বার দরকার হবে। এটা সাধারণত চার সংখ্যার হয়ে থাকে। এই পিন নাম্বার গোপনীয়, যা কারো সাথে শেয়ার করা ঠিক নয়।

কার্ডের প্যাকেটের মধ্যে ভাঁজ করা কাগজে পিন নাম্বার প্রিন্ট করা থাকতে পারে। যদি না থাকে, তাহলে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর দেয়া থাকবে যেখানে ফোন করে পিন নাম্বার সংগ্ৰহ করতে হবে।

(৩) খরচ ও শর্তসমূহ জানুন

ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ওপর বিভিন্ন শর্ত ও চার্জ প্রযোজ্য হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার কার্ডটি যদি “মাস্টারকার্ড” নেটওয়ার্কের হয়ে থাকে, তাহলে “মাস্টারকার্ড” চিহ্নিত এটিএম বুথ কিংবা POS অথবা ওয়েবসাইটে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। যদি “ভিসা” নেটওয়ার্কের হয়, তাহলে ভিসা চিহ্নিত বুথ/পস ও সাইটে এটি ব্যবহার করা যাবে। তাই এ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
এছাড়া প্রতিবার বা প্রতিদিন সর্বোচ্চ কী পরিমাণ ট্র্যানজেকশন করা যাবে তাও জেনে নিন। ক্রেডিট কার্ডের মাসিক ট্রানজকেশন লিমিট খেয়াল রাখুন। অন্যথায় বিল পরিশোধ করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে পারেন।

(৪) প্রয়োজনে পাসপোর্ট এন্ডোর্সমেন্ট করিয়ে নিন

আপনি যদি বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া কার্ড দিয়ে দেশের বাইরের কোনো ওয়েবসাইট কিংবা এটিএম বুথ/POS এ লেনদেন করতে চান, তাহলে আপনার পাসপোর্টে এই কার্ডের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এন্ডোর্স করিয়ে নিতে হবে। এটা রাষ্ট্রীয় নিয়ম।

পাসপোর্ট না থাকলে এই এন্ডোর্সমেন্ট ও এ ধরনের লেনদেন আপনি করতে পারবেন না। আপনার পাসপোর্ট নিয়ে ডেবিট/প্রিপেইড কিংবা ক্রেডিট কার্ড সেবাদাতা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সেখানে এই এন্ডোর্সমেন্ট করাতে পারবেন। সাধারণত ১ বছরের জন্য এন্ডোর্সমেন্ট করানো হয়, তবে এটা অটোরিনিউ করারও সুযোগ আছে। সর্বোচ্চ কত ডলার এন্ডোর্স করানো যাবে, তারও একটা সীমা আছে, যা ব্যাংকে গেলেই জানতে পারবেন।
৫. একাউন্টের তথ্য নিরাপদে সংরক্ষণ করুন

ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড নেয়ার সময় আপনার ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যেসব তথ্য সরবরাহ করেছেন তার একটি অনুলিপি (কপি) নিজের কাছে নিরাপদে সংরক্ষণ করুন। যদি কোনোদিন কার্ড হারিয়ে যায়, কিংবা অন্য কোনো কারণে কার্ড নতুনভাবে তুলতে হয় (রিপ্লেসমেন্ট) তখন প্রাথমিক তথ্যগুলো আবার দরকার হবে।

(৬) অফারগুলো জেনে রাখুন

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পে করলে ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে। এছাড়া অনেক ক্রেডিট কার্ড আছে যেগুলো দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ট্রানজেকশন করলে কার্ডের বার্ষিক ফি মওকুফ হয়ে যায়। এসব অফার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিন। কার্ডের হেল্পলাইন এবং সেবাদাতার ওয়েবসাইটে এই তথ্যগুলো পাবেন।

(৭) কার্ডের গোপনীয়তা নিশ্চিত করুন

ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড “প্লাস্টিক মানি” নামেও পরিচিত। কারণ, এগুলো দিয়ে আপনার একাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলন বা লেনদেন করা সম্ভব।
অনলাইন ট্রানজেকশন করার জন্য কার্ডের এটিএম/POS পিন নম্বর দরকার হয়না। কার্ডের গায়ে যেসব তথ্য প্রিন্ট করা থাকে সেগুলোই যথেষ্ট, যেমন- কার্ড নম্বর, মালিকের নাম, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ এবং সিকিউরিটি নম্বর (সিভিসি নম্বর হিসেবেও পরিচিত)। সুতরাং আপনার কার্ড বিশ্বস্ত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো হাতে দেবেন না।

(৮) অনলাইন একাউন্ট

আপনার কার্ড সেবাদাতা যদি অনলাইনে ব্যালেন্স, ট্রানজেকশন ও স্টেটমেন্ট দেখার সুযোগ দেয়, তাহলে তাতে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন। এতে করে আপনি যেকোনো সময় আপনার কার্ডের স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।

(৯) প্রথম পেমেন্ট
অনলাইন পেমেন্ট যত সহজ আবার ততই কঠিন। অনেক সাইট আছে যেগুলো হুট করে একটা কার্ড দিলেই নিয়ে নেয়না। যেমন ফেসবুক ও ডিজিটাল ওশানের কথাই ধরুন। তারা অনেক সময় কার্ড মালিকের আরও কিছু তথ্য জানতে চায়। প্রিপেইড কার্ডের ক্ষেত্রে এরকম হতে দেখেছি। ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঝামেলা একটু কম।

প্রথমবার পেমেন্টের আগে আপনার কার্ডের হেল্পলাইনে কল করে জেনে নিন যে এটি এখন পেমেন্ট করার জন্য উপযোগী কিনা।

বিদেশি সাইট হলে হেল্পলাইনে জিজ্ঞেস করুন যে কার্ডে পাসপোর্ট এন্ডোর্সমেন্ট কার্যকর আছে কিনা এবং এভেইলেবল ডলার আপনার একাউন্টে আছে কিনা। সবকিছু ঠিক থাকলে পেমেন্ট পেইজে সকল তথ্য ঠিকভাবে যাচাই করে পে করুন।

বড় বড় সাইট, যেমন ফেসবুক এড এর ক্ষেত্রে একবার কোনো কার্ডের তথ্য ভুল হলে ফেসবুক পরেরবার ওই কার্ডের সঠিক তথ্যও আর বিশ্বাস করতে চায়না। সুতরাং খুব সাবধান!

(১০) কার্ড কোথায় ব্যবহার করছেন?
ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে এর তথ্যের নিরাপত্তা। দুর্বৃত্তরা চাইলে আপনার কার্ডের তথ্য চুরি করে পরে আপনার একাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে।

তাই বিশ্বস্ত সাইট/POS ছাড়া বেনামী কোনো জায়গায় কার্ড দিয়ে পেমেন্ট না করাই ভাল। এ ব্যাপারে সচেতন হোন।

আশা করি এই টিপসগুলো আপনার কাজে লাগবে। আপনি যদি এ ব্যাপারে আরো কোনো টিপস শেয়ার করতে চান, তাহলে অনুগ্রহ করে টিউমেন্টে জানান।

টেক পেইজ বিডির বাংলা টিউটোরিয়াল দেখতে পারেন।

ভিডিও  - https://youtu.be/ssXmVir38Z0

ডোমেইন এবং হোস্টিং এর জন্য ভিজিট করুন -https://www.webhostbd.com

Level 4

আমি মোঃ রাহাত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 61 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস