বাংলা অনুবাদ–অ্যা গেম অফ থ্রোনস -৩

টিউন বিভাগ সমগ্র
প্রকাশিত

রয়েস তার কথা শুনলো বলে মনে হয় না।সে তার চিরাচরিত আধ-বিরক্ত,আধ অমনোযোগী ভঙ্গীতে গভীর মনে অন্ধকার হয়ে যাওয়া দেখতে থাকলো।রয়েস এর সাথে যথেষ্ট সময় কাটানো উইল বুঝতে পারলো যে সে যখন এই ভাবভঙ্গী ধরে,তাকে না ঘাঁটানোই ভালো।“আমাকে আবার বলো উইল কি দেখেছিলে তুমি,বিস্তারিত,কিচ্ছু বাদ দিও না।”নাইটস ওয়াচ এ যোগদানের পূর্বে উইল ছিলো একজন শিকারি,সত্য বলতে উইল ছিল একজন পোচার(অবৈধভাবে যারা জন্তু জানোয়ার শিকার করে)। ম্যালিস্টার গোত্রের লোকেরা তাকে হাতেনাতে ধরে যখন সে তাদের শিকার করা হরিণের চামড়া ছাড়াচ্ছিলো।উইল এর সামনে দুটো রাস্তা খোলা ছিল,হয় নাইটস ওয়াচ এর কালো গাউন চড়াও বা একটা হাত হারাও। তবে জঙ্গলের মধ্যে কেও উইলের মত নিঃশব্দে চলতে সক্ষম ছিলো না, উইল এর এই গুণ বুঝে উঠতে ওয়াচ এর সদস্যদের সময় লেগেছে অল্পই।


“ক্যাম্প টা আর দুই মাইল সামনে,ওই পাহারসারির নিচে,একটা ছোট নদীর ঠিক পাশে,”বলল উইল।“আমার সাহসে যতটা কুলিয়েছে আমি গিয়েছি।তাদের আটজন আছে,নারী পুরুষ উভয়।তবে আমি কোন শিশু দেখতে পাইনি।

তারা পাথরের সাথে ঠেস দেয়া আশ্রয় বানিয়েছিলো।বরফে যদিও এতক্ষণে সব ঢেকে গেছে,তবে আমি বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলাম তখন।কোন আগুন জ্বলছিল না,তবে আগুন জ্বালানোর স্থান,রসদ সবই ছিলো সেখানে।কেও নড়ছিলো না।লম্বা সময় ধরে দেখেছি আমি।কোন জীবিত কখনো এত স্থির পড়ে থাকতে পারে না।”
“তুমি কি কোন রক্ত দেখেছিলে?” “হুম,না,”উইলের উত্তর। “কোনো হাতিয়ার?’’ “কিছু তলোয়ার,কিছু তীর।এক লোকের একটা কুঠার ছিল। ভারী,দুমুখো, ভয়ঙ্কর এক লৌহাস্ত্র।এটি ছিলো মাটিতে, ঠিক তার হাতের পাশে।”

“তুমি কি শরীরগুলোর অবস্থান চিহ্নিত করেছিলে?” উইল অসংলগ্ন মনে উত্তর দিলো, “হ্যা,এক দম্পতি পাথরের গায়ে ঠেস দিয়ে বসে আছে। তাদের বেশিরভাগ মাটিতেই,পড়ে আছে।” “বা ঘুমাচ্ছে,”রয়েস মতামত দিলেন।

“পড়েই আছে,”উইল জোর করল। “একটা আয়রনউড গাছের ওপরে এক মহিলা আছে,শাখা প্রশাখার মধ্যে আধ-লুকায়িত।চোখ দূরে নিবিষ্ট”উইল হাসলো, “আমি জানতাম সে আমাকে দেখেনি।কিন্তু যখন কাছে গেলাম,দেখলাম সেও বাকিদের মত অনড়।”উইল এর মত মানুষও কেপে উঠলো।
“তোমার কাঁপুনি ধরেছে,তুমি ভীত?”রয়েসের জিজ্ঞাসা।
“সামান্য ” উইল বিড়বিড় করে বলল, “ঠাণ্ডা বাতাস,প্রভু।

তরুণ রয়েস তার ধূসর পোশাকধারী সৈনিক এর দিকে ঘুরলেন।

বরফ মোড়ানো পাতাগুলো তাদের পাশ দিয়ে উড়ে গেলো আর রয়েস এর বিশাল ঘোড়াটি সন্ত্রস্থ হয়ে নড়তে থাকলো। “তোমার কি মনে হয় গ্যারেড,এই মানুষগুলোকে কে হত্যা করলো?”স্যার রয়েস জিজ্ঞেস করলেন অন্যমনস্কভাবে,তিনি তার পোশাক ঠিক করতে লাগলেন।
“ঠাণ্ডা,”গ্যারেড উত্তর দিলেন লৌহদৃঢ় বিশ্বাস এ। “আমি গেলো শীতে লোকেদের জমে যেতে দেখেছি,আর তার আগের শীতে,যখন আমি বালক ছিলাম।সবাই ৪০ ফুট গভীর বরফের কথা বলে,আর বলে কিভাবে ঠান্ডা বাতাস উত্তর থেকে বয়ে আসে,কিন্তু আসল শত্রু কিন্তু ঠাণ্ডা।

এ উইলের চেয়েও নিশ্চুপে আসে।প্রথমে আসে কাঁপুনি, দাঁতে দাঁত লেগে যায়,তুমি মিষ্টি ওয়াইন আর উষ্ণ আগুনের স্বপ্ন দেখতে থাকো। শীত জ্বলে,পোড়ে,আক্ষরিক অর্থেই। ঠান্ডার মত কিছুই জ্বলে না। কিন্তু কিছুক্ষণের জন্যই। এরপর এটা ভেতরে ঢোকে আর ভেতর থেকে তোমাকে ভরে ফেলে,কিছুক্ষন পর, তোমার আর লড়ার শক্তি অবশিষ্ট থাকে না।এই সময় ঘুমিয়ে যাওয়া বা শুধু বসে পড়াই সহজতর।

শুনেছি শেষ দিকে নাকি কোনও ব্যথাও অনুভূত হয় না।প্রথমে তুমি দূর্বল হয়ে ঘোরের মধ্যে চলে যাও,সব যেন আবছা হয়ে যেতে থাকে,এরপর সব যেন শুধু পতন, হালকা উষ্ণ দুধের সাগরে শুধু ডুবতে থাকা, শান্ত,নীরব।”
“ দারুণ বাকপটুতা, গ্যারেড,”স্যার ওয়েইমার এর টিউমেন্ট, “কখনো ভাবি নি তোমার ভেতরে এমন কিছুও আছে।”
“আমার ভেতরে ঠাণ্ডাও ছিলো,প্রভু”,গ্যারেড তার মাথার আবরণী সরালেন,স্যার ওয়েইমার দেখতে পেলেন সেই ক্ষত যেখানে গ্যারেড এর কান দুটো ছিলো।

“দুই কান, পায়ের তিনটা আঙ্গুল, আর বাম হাতের তর্জনী,আমি ঠিক পার পেয়ে গেছি। আমার ভাই কে আমরা পেয়েছিলাম,ওয়াচ এ, দায়িত্বস্থলে, বরফে জমা, মুখে একটা স্মিত হাসি।”
স্যার ওয়েইমার অবজ্ঞাভরে বললেন, “তোমার আরও বেশী গরম পোশাক পড়া উচিত,গ্যারেড।”
গ্যারেড ক্রোধভরা দৃষ্টিতে তাকালেন।

তার কানের কোটর এর আশপাশ লাল হয়ে উঠলো যেখান থেকে মায়েস্টার(জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গ,চিকিতসক,পরামর্শদাতা,সকল বুদ্ধিজীবী) অ্যয়েমন তার কানদুটো কেটে নিয়েছিলেন। “দেখা যাবে কত গরম পোশাক এ তুমি সাজতে পারো যখন শীত আসে। ”

Level 0

আমি জাহিম ফাওয়াদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস