নাজমুল হোসেন সজিবঃ বাংলাদেশ বর্তমানে একটি উন্নয়নশীল দেশ। এ দেশ এখন অনেক দিক দিয়েই এগিয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে আধুনিক বিজ্ঞান এবং তথ্য প্রযুক্তি সবকিছু এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়। হাত বাড়ালেই এখন আমরা খুব সহজেই সবকিছু পেয়ে যাই। ই-কমার্স ব্যবসায়ে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে। এখন আমাদের দোকান বা বাজারে না গেলেও চলে, কারন অনলাইনে পণ্য অর্ডার করলেই সরাসরি বাড়িতে চলে আসছে। এতে করে আমাদের অনেক সময় ও বাঁচছে যে সময়টুকু আমরা অন্য কাজে লাগাতে পারছি। অলস মানুষের তো মহা আনন্দ ঘরে বসেই সব কেনাকাটা করতে পারছে। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে প্রসাধনী সামগ্রী, ইলেকট্রনিক্স পণ্য সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে এখানে, কি নেই বলেন? সবই আছে শুধু অর্ডার করলেই পেয়ে যাচ্ছেন।
তবে অসতর্কতা বসত পণ্য কিনলে ধোঁকা খাওয়ার সম্ভবনা আছে। কেননা দেশের সবগুলা ই-কমার্স সাইট ই বিশ্বস্ত নয়। এর মধ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীও রয়েছে, যার সল্প কিছু টাকা খরচ করে ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়েছে এবং ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের রকমারি পণ্যের মাত্রাতিরিক্ত ছাড় দিয়ে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। যাদেরকে আপনি পণ্য অর্ডার করে পেমেন্ট করে দিবেন অথচ তার ডেলিভারি পাবেন না। কারন সত্যিকার অর্থে তাদের নিজস্ব বা স্টকে কোন পণ্য থাকেনা এমনকি তাদের নেই কোন অফিস বা পার্মানেন্ট ঠিকানা। এই ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনার কাছ থেকে পণ্য বিক্রির নাম করে টাকা নেয়া, পণ্য ডেলিভারি দেয়া তাদের দায়িত্ব নয়। কেননা তারা কোন ব্যবসায়ী না, তারা হচ্ছে প্রতারক চক্র বা ধোঁকাবাজ। সাধারন মানুষকে বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এছারাও কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের পণ্য ওয়েবসাইটে দেখতে দেখাচ্ছে খুব ভালো মানের অথচ পণ্য হাতে নেয়ার পর দেখা যাচ্ছে মানসম্মত নয়। এর ফলে ক্রেতারা পরেছে চরম ভুগান্তিতে।
শুধুমাত্র ক্রেতাদের নয় এর মাশুল দিতে হচ্ছে নতুন উদ্যোগতাদেরও। বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসায়ের সফলতা দেখে অনেকেই এই ব্যবসা করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং দিনের পর দিন ই-কমার্স ওয়েবসাইট বা প্রতিষ্ঠান বেড়েই চলছে। তবে লাভ কি তাতে? যদি পণ্যই না বিক্রি করতে পারে। ক্রেতারা এখন শুধুমাত্র নাম করা যে কয়টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমনঃ কেইমু, এখনি, আজকের ডিল, প্রিয়শপ এদের কাছ থেকেই পণ্য কিনছে, কারন তাদের রয়েছে মানসম্মত পণ্য এবং ক্যাশ অন ডেলিভারি সুবিধা সহ পণ্য পরিবর্তন বা ফেরত দেয়ার সুবিধা। তাই ক্রেতারা তাদের কাছ থেকে নির্দ্বিধায় পণ্য কিনছে।
অথচ নতুন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলিকে ক্রেতারা বিশ্বাস করতে পারছেনা। কেননা তাদের তেমন জনপ্রিয়তা নেই, নেই তেমন প্রচার প্রচারণা এবং শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মত খুব বেশি সুযোগ সুবিধাও তারা দিতে পারছেনা। ফলে ক্রেতাদের মধ্যে প্রতারিত হওয়ার ভয় কাজ করছে এবং এর জন্য নতুন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্য বিক্রয় করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
তাই ক্রেতাদের উদ্দেশে বলছি; আপনারা অনলাইনে যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কিনার আগে অবশ্যই দেখবেন ক্যাশ অন ডেলিভারি(পণ্য বুঝে নিয়ে টাকা প্রদান করা) এই নিয়ম টা আছে কিনা এবং পণ্যের গুণগত মান ঠিক না থাকলে বা পছন্দ না হলে তা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা আছে কিনা। এই ২টি বিষয় নিশ্চিত হয়ে তারপর পণ্য অর্ডার করুন। অনথায় প্রতারিত হওয়ার সম্ভবনা আছে।
আর নতুন ই-কমার্স ব্যবসায়ী বা উদ্যোগতাদের কাছে আমার অনুরোধ আপনারা ক্রেতাদের কাছে অবিশ্বস্ত না থেকে বিশ্বাসযোগ্য হবার চেষ্টা করুন। ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ সুবিধা দিন এবং মানসম্মত পণ্য বিক্রয় করুন। ক্রেতাদের বুঝিয়ে দিন আপনারা প্রতারণা নয়, ব্যবসা করতে এসেছেন। আমি আপনাদের সাফল্য কামনা করছি।
লেখক- নাজমুল হোসেন সজিব, সাংবাদিক, কলামিষ্ট
প্রধান সম্পাদক বিডিটুডেস.কম
আমি সজিব খান। Founder, Bdwebsite.net বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সজিব খান একজন বাংলাদেশি ব্লগার ও সাংবাদিক। তিনি ২০১৫ সাল থেকে লেখালেখি করেন।
এই প্রতারনা শুরু থেকেই আছে, সময়ের সাথে সাথে পদ্ধতি বদলায় ।