আর কতদিন নিজেকে নিজে ঠকাবেন?

ফেসবুকে অনেকের অভাব দু:খ নিয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত মেসেজ পড়তে হয়। তাদেরকে দক্ষ হতে বলি, সেটাতেও তাদের অনেক রকম আফসোসের গল্প শুনতে হয়। সেগুলো পড়ে বুঝি এসব অজুহাতগুলোই তাদের পিছিয়ে পড়ার কারন। এর আগেও এ বিষয়গুলো নিয়ে একটি  আর্টিকেল লিখেছিলাম।

লিংক: http://genesisblogs.com/featured/16145 আজকে আরও কিছু বিষয়কে উল্লেখ করে লিখছি।

tt

অজুহাত-১: ঢাকার বাইরে থেকে আমরা ঠকতেছি। ঢাকাতে না থাকার কারনে আমরা শিখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

উত্তর: কিছুদিন আগে নিশ্চিতভাবে আয় করানোর টার্গেট নিয়ে ৩০ জনকে নিয়ে ৩দিনে বিশেষ ক্লাশ শুরু করি। সেখানে একজন মহিলা ছিল যার নিজের সন্তানও রয়েছে। উনি ক্লাশগুলো করার জন্য ক্লাশের আগের দিন পাবনা থেকে রওনা দিয়ে ঢাকাতে এসে ক্লাশ করত। ক্লাশ শেষে উনি আবার ফেরত চলে যেত। একজন মহিলা যদি পারে, আর আপনি পারেননা। এটার জন্য কে দায়ি। খুজে বের করুন।

তারপরও ধরলাম, আপনি আসতে পারেননা। অনলাইনে এখন যে পরিমান রিসোর্স রয়েছে, তা দিয়ে যে কারও শিখার জন্য যথেষ্ট। যথেষ্টের চাইতেও বেশি আছে। আমার লিখা পড়েই এখন পযন্ত আমার জানামতে কমপক্ষে ৩০০জনের উপর নিজেরা অল্প পরিসরে কাজ করছেন। এরপরও মাঝে মাঝেই আমি অনলাইনেই ফ্রি শিখানোর উদ্যোগ গ্রহন করি। সেগুলো থাকে অনলাইনে থাকা আমার ফ্যানদের, যারা ঢাকার বাইরে আছেন কিংবা অর্থাভাবে কোর্স করতে পারছেননা, তাদের জন্য বিশেষ গিফট। সেগুলো কয়জন কাজে লাগিয়েছেন। এরকম একটি উদ্যোগের লিংক: http://genesisblogs.com/tutorial-2/16914  । এরপরও আফসোসগুলোর ব্যাপারে নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করুন। অনলাইনের এ যুগে ঢাকাতে না থাকার কারনে শিখতে পারছেননা, বিষয়টা কোনভাবেই আসলে গ্রহনযোগ্য হতে পারেনা। এ বিষয়ে লিখেছিলাম আগে। http://genesisblogs.com/freelancing-2/10864

অজুহাত-২: ভাই আমি গরীব। এজন্য কিছু শিখতে পারছিনা। কিছু ফ্রি শিখতে পারলে নিজের আর্থিক অবস্থাকে পরিবর্তন করতে পারতাম।

উত্তর: গতবছর ক্রিয়েটিভ আইটির পক্ষ হতে ১৩০০জনকে ফ্রি প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাদের মধ্যে ছিল গ্রাজুয়েট বেকার, ঘরের মহিলা, প্রতিবন্ধী। আপনি তখন সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেননি। সেটার জন্য কে দায়ি? এখনও চলছে স্টুডেন্টদের ক্রিয়েটিভ আইটির কোর্স ফির ৫০% ডিসকাউন্টে কোর্স করার অফার। আপনি কি সেই অফার চলে যাওয়ার অপেক্ষাতে রয়েছেন? চলে গেলেই আবার আফসোস শুরু হবে। ভাই, আমি বিশাল কোটিপতি না। এর চাইতে বেশি কিছু করার সাধ্য আমার মনে হয় সত্যি নাই। তাহলে আমাকে না খেয়ে থাকতে হবে। এ কাজগুলো করতে যেয়ে আমি নিজেরই এখন আয় নাই। আর কত করব?

তারপরও রয়েছে অনলাইনে আমার বিভিন্ন রিসোর্স (http://genesisblogs.com/author/ekram) ।  যা আপনাকে প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে। ১নং প্রশ্নে ইতিমধ্যে সেগুলো উল্লেখ করেছিও। আমি নিজে শিখেছি অনলাইনের রিসোর্স পড়ে। কোথাও কোর্স করার টাকা আমারও ছিলনা। যখন শিখেছি, তখন অনলাইনেও এত রিসোর্স ছিলনা। কেউ সাহায্য করার মতও ছিলনা। যা শিখেছি সবই গুগল সার্চ করে। এবং কোন ধরনের গাইডলাইন ছাড়াই শিখেছি। আপনাদের জন্য রয়েছে প্রচুর রিসোর্স, অনলাইনে সহযোগিতা করার মত অনেক ব্যক্তি। এরপরও যদি না পারেন, সেটার জন্য কে দায়ি?

এ গরীব লোকটির জীবনের গল্পটিও পড়ে নিন।

http://genesisblogs.com/education/15666

jackie-freelance

অজুহাত-৩: ব্যস্ততার কারনে শিখতে পারছিনা অনেক কিছু। ফ্রি থাকলে করে ফেলতাম অনেক কিছু।

উত্তর: ব্যস্ততার সংগা একেকজনের কাছে একেক রকম। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যস্ততার সংগারও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানের যুগটাই এমন যে,  আজ থেকে ১০বছর আগেও যে কাজ সম্পন্ন করা হত ৮ঘন্টাতে, এখন তা করা হয় ৪ঘন্টাতে। আগে যেখানে মানুষ দিনে পরিশ্রম করতে ৬-৮ ঘন্টা। এখন যুগটাই এমন মানুষ এখন ১২-১৪ ঘন্টা প্রফেশনাল কাজ করলেও সেটাকে অনেক কম কাজ হিসেবে ধরা হয়। আপনি কি এখনকার যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যস্ত কিনা, সেটা নিজেকে নিজে প্রশ্ন করুন। আগে যেখানে মানুষ ১০ঘন্টা ঘুমের পিছনে ব্যয় করত, এখন মানুষ ৬ঘন্টা ঘুমকেও অনেক বেশি মনে করে। এ যুগের সাথে তাল মিলাতে আপনি নিজেকে প্রস্তুত করেছেন কিনা নিজেকে প্রশ্ন করুন।

আমি নিজেকে কখনও ব্যস্ত বলতে পছন্দ করিনা। নিজেকে এভাবে বুঝাই, আমাকে আরও পরিশ্রম করতে হবে। আমি অলসতার কারনে আরও কিছু করতে পারছিনা। এভাবে নিজের ব্যস্ততাকে আমি দেখার চেষ্টা করি। ভাইরে যুগটাই এমন। এভাবে না দেখলে কিভাবে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখবেন।

আমার দেখা অনেকের মধ্যে একজনের গল্প বলছি। কাজল রেখা নামে একজন মেয়ে আছেন। উনি নিজে একটা অফিসে চাকুরি করেন, যেখানে ৬০,০০০টাকা বেতন পান। সুতরাং ব্যস্ততা কিরকম হতে পারে ধারণা করা যেতে পারে। উনি অফিসের পাশাপাশি, এম.বি.এ চালাচ্ছেন। সেই সাথে ৪ বছরে সংগীতের উপর অনার্স করছেন। আবার বিভিন্ন ছোট ছোট কোর্স করছেন ক্রিয়েটিভ আইটিতে। নিজে একটি নিউজ পোর্টাল চালাচ্ছেন। নিজের লিখা ৩টি (সম্ভবত) বই বের করেছেন। ঘরে গেলে দেখা যায় হাতে তৈরি অনেক কিছু। জিজ্ঞাসা করে জেনেছি, সেগুলো উনার নিজের হাতে করা। ঘরের রান্নাবান্নাটাও নিজেই করেন বেশিরভাগ সময়।

আমাকেও এরকমই পরিশ্রম করতে হয়। ক্যারিয়ারে শুরুতে পরিশ্রম করতে করতে একসময় খুব মারাত্নকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এবং ৩মাসের বেড রেস্টে চলে যেতে হয়। সেই পরিশ্রমের ফসল আজকের অবস্থান। জন্মগতভাবে প্রাপ্ত কোন গুনের কারনে এ অবস্থানে আসিনি। আপনিও পরিশ্রম করুন, আপনিও সফলতা পাবেন।

অজুহাত- ৪: আমি কাজ শিখেছি। কিন্তু কোন চাকুরি পাচ্ছিনা। আবার কেউ আমাকে কাজও দিচ্ছেনা।

উত্তর: কাজ শিখলেই আপনাকে কাজ দিবে এতবড় রিস্ক কেউ নিবেনা। তারমানে মনে করার দরকার নাই কাজ কম আছে। যত চাকুরি রয়েছে কিংবা আউটসোর্সিংয়ে যত কাজ রয়েছে তার তুলনাতে দক্ষ লোক ৫০% ও নাই। যারা কাজ করান কিংবা যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালান, তারা দক্ষ কর্মীর অভাবে সবসময় আফসোস করেন। বিশ্বাস করুন, এ আফসোসটা আপনার কাজ না পাওয়ার আফসোসের চাইতে অনেকগুন বেশি আফসোস।

আপনি কাজ শিখেছেন। এবার নিজেকে দক্ষ করতে হবে। এ বিষয়টা নিয়েই লিখেছিলাম আগে। লেখাটি পড়লে বিষয়টা পরিস্কার বুঝতে পারবেন।

http://genesisblogs.com/tips-2/3304

অজুহাত-৫: ভাইয়া আপনার হাতেতো অনেক কাজ থাকে। আমাদের কিছু কাজ দিয়েন।

উত্তর: এখন পযন্ত যখনই কাউকে কাজ দিয়েছি, সেখানের ৯৫% ক্ষেত্রেই সেগুলোর রেকর্ডগুলো আমাকে অনেক বি্ব্রত করেছে এবং অনেক বিপদে ফেলেছে। কিছুদিন আগের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।

আর্টিকেল রাইটার চেয়ে একটা ঘোষনা ফেসবুকে দিয়েছিলাম। সেটা যে বায়ারের জন্য সেই বায়ার সেই ঘোষনাগুলোতে কমেন্টগুলো দেখে কয়েকজনকে ফেসবুকে ইনবক্সে যোগাযোগ করেছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ২জন মেসেজের উত্তর দিয়েছিল। তাদেরকে বায়ার টেস্ট হিসেবে একটা কাজ করে দিতে বলছে। নির্দিষ্ট সময়ে ২দিন পরেও তাদের আর কোন খোজ নাই।  আবার পরে আরও কয়েকজনকে নক করেছেন, তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনই বলছে জীবনে আর কখনও ১ম বারের মত সে এ কাজটি করতে যাচ্ছে। ১ম বারের মত কাজ করতে যাচ্ছেন, তাও আবার পেমেন্টের মাধ্যমে। এরকম কারো পিছনে বায়ার কেন অর্থ ব্যয় করবে, সেটা আমার যুক্তিতে আছেনা। আপনি হলে এত বড় রিস্ক নিতেন? আবার কেউ কেউ জীবনে ১ম বারের মত কাজ করতে যাচ্ছে, সেখানেই ৫০০ শব্দের আর্টিকেল লিখতে চাচ্ছে ১০ ডলার। যেখানে সবাই সাধারণত ৫-৮ ডলারের মধ্যে কাজ করে। বায়ার দিতে চাচ্ছিল ৬ডলার, লিখাবে ১০০টার মত আর্টিকেল। সেখানে এ নতুন ওয়ার্কারদের অনেকে বায়ারকে গালি দিয়ে বিদায় দিয়েছে।

আরও অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। যাদেরকেই কাজ দেই, কাজ দেওয়ার আগে তাদের অভাব থাকে। কাজ দেওয়ার পরে তাদেরকে আর খুজে পাওয়া যায়না। বিভিন্ন ব্যস্ততা, নিজের কিংবা পরিবারের অসুখ শুরু হয়ে যায়।

freelance-business

আমি ক্যারিয়ারের শুরুতে কি করেছি সেটি শেয়ার করি। শুরুতে কাজ শিখার পর অনেকের কাজ ফ্রি করে দিছি। এখন পযন্ত যত পরিমাণ কাজ ফ্রি করেছি কিংবা করছি, সেগুলোকে হিসেবে করলে দেখা যাবে কমপক্ষে ১কোটি টাকা আরও বেশি ইনকাম করতে পারতাম। কিন্তু ফ্রি করে দিয়ে যা পেয়েছি, সেটি আজকের এ অবস্থানটা। আগে অন্যদের মাঝে নিজের দক্ষতার ব্যপারে আস্থা তৈরি করতে পেরেছি। এতদ্রুত টাকা হাতে পাওয়ার চিন্তা না করে চেষ্টা করেছি নিজের যোগ্যতাকে এমনভাবে প্রমাণ দিতে যাতে টাকা আমার পিছনে দৌড়ায়। আমাকে যাতে টাকার পিছনে ছুটতে না হয়। এ কাজটি কয়জন করতে পারছেন? পারছেন না দেখেই, একবছর আগেও শুনতাম, কাজের জন্য আপনার কান্না। এখনও সেই একই অবস্থা। অবস্থার আর পরিবর্তন হয়নি। এ অবস্থাতে পরিবর্তনের জন্য শুরুতে প্রচুর ফ্রি কাজ করেন। তাহলেই আস্তে আস্তে নিজে কাজ শিখবেন। অন্যরাও জানতে পারবে, আপনি কাজ জানেন। মানুষ সাধারণত দক্ষ, সৎ, পরিশ্রমী এবং কম লোভীদেরকেই কাজ দিতে কিংবা চাকুরিতে নিতে পছন্দ করে। আপনাকেও সেরকম প্রমাণ করুন।

আরও কিছু অজুহাত

উপরের এ আফসোসগুলোর পাশাপাশি আরও অনেক আফসোস শুনতে হয় প্রতিনিয়ত চ্যাটিং বক্সে। এ আফসোসগুলো করে আসলে খুব বেশি লাভ নাই। বাস্তব দুনিয়া আবেগ দিয়ে চলেনা। বাস্তবতাগুলো মেনে নেমে যান। জাহিদ যদি দুই পা এবং এক হাত অক্ষম থাকার পরও ফ্রিল্যান্সিং শিখে মাসে ৪০,০০০- ৫০,০০০টাকা আয় করতে পারে, তাহলে আপনি কেন পারবেননা? শুধু তাইনা, এ জাহিদ কিন্তু বসেও থাকতে পারেনা। শুধু এক হাত দিয়েই তাকে কাজ করতে হয়। এ সমস্যাগুলোকে জাহিদ নিজেকে দক্ষ না করার ব্যাপারে উছিলা ধরলে আজকে তাকেও হয়ত মসজিদির পাশে বসে ভিক্ষা করতে হত। তার ইচ্ছা শক্তি, তাকে দক্ষ করে তুলেছে। মানুষের এ শক্তিটা পৃথিবীর সবচাইতে পাওয়ার ফুল শক্তি। এ শক্তিকে কাজে লাগান। পাবেন অনেক কিছু। নিজেকে শুধু প্রশ্ন করুন, জাহিদের চাইতেও কি আপনার অক্ষমতা বেশি?

সবশেষে কিছু পরামর্শ:

নিজেকে প্রশ্ন করুন, আসলেই কি আপনার ইচ্ছা শক্তি জাহিদ কিংবা স্বপন ভাইয়ের মতই ছিল? নাকি কোন ধরনের অজুহাত এসে আপনার এ শক্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে?  সফল হতে হলে অজুহাতগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।

সফলতার জন্য কয়েকটি বিষয়কে মনে রাখুন:

পরিশ্রম করুন: প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে সফল হতে হলে।

সময়: দিনে ৫-৭ ঘন্টা করে কমপক্ষে ৬মাস একটি বিষয়ের পিছনে সময় দিন।

সেক্রিফাইস:  ভবিষ্যতের ভাল কিছুর জন্য সেক্রিফাইস করার মত মানুসিকতা রাখুন।

Level 0

আমি মোঃ ইকরাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 103 টি টিউন ও 130 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

নিজেকে অনলাইন ব্রান্ড এক্সপার্ট হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করলেও গ্রাফিকস, ওয়েবডিজাইন এবং অ্যানিমেশন বিষয়েও প্রচুর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ব্লগিংটা নেশার কারনে করি। নিজের ব্লগের লিংকঃ http://genesisblogs.com/


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 2

:3 আমাকে পারতেই হবে…ইচ্ছা শক্তি থাকতে হবে :3
ধন্যবাদ ভিইয়া লেখা পড়ে অনেক কিছুই শিখলাম…

খুভ ভালো লিখেছেন… ভাই…।

ইকরাম ভাই বস!!
একটি সুন্দর এবং গোছানো গাইডলাইন। 🙂