ফোন পছন্দের ব্যাপারটি অবশ্যই বয়সের উপর নির্ভর করে। একই সাথে পেশার উপরও। বাচ্চারা সেইসব লোকের ফোন বেশি পছন্দ করে যাদের ফোনে পর্যাপ্ত পরিমাণে গেমn থাকে। আপনি ছাত্র। সারাদিন কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করতে হয়। আপনি অবশ্যই এমন ফোন কিনতে চাইবেন যেগুলোতে দীর্ঘক্ষণ চার্জ থাকে। একবার একটা ৩ সিমবিশিষ্ট ফোন কিনতে গিয়েছিলাম।
গিয়ে দেখি তার দোকানে ৩ সিমবিশিষ্ট ফোনগুলো শেষ হয়ে গিয়েছে। শেষ ফোনটা কিনেছেন তারই পরিচিত একজন ইট ভাটার মালিক অর্থাৎ ব্যবসায়ী। তাই, বয়স ও পেশাভেদেই বেশিরভাগ লোকজন ফোন পছন্দ করেন। এই যে ধরুন, আপনি যুবক। আপনি চাইবেন সকল দিক দিয়ে কোন ফোনটা সবচেয়ে ভালো। ভালো গান শোনা যাবে, ভালো কথা বলা যাবে, ভালো মুভি দেখা যাবে, ভালো ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে, ভালো চার্জ থাকবে ইত্যাদি। অথচ, সদ্য বার্ধক্যে উপনীত আপনার বাবা ও মা'র ফোনের পছন্দ সম্পর্কে বক্তব্য হলো,
বিজ্ঞাপনগুলোতে সাধারণত যুবক বয়সের ছেলেমেয়েদের জন্য যেসব ফোন, সেগুলোকে বেশি দেখানো হয়। এরপরই দেখানো হয় সবচেয়ে সস্তা বা কমদামী ফোনগুলোর বিজ্ঞাপণ। কিন্তু ঐ বার্ধক্যে উপনীত হওয়া লোকগুলোর জন্য কোনো ফোনের বিজ্ঞাপণ হয় না। কিন্তু ঐ বাবারা এই সবচেয়ে সস্তা ফোনই ব্যবহার করে। এক কথায় 'হাজার-বারোশো' বা 'হাজার দুয়েক' টাকার।
আপনি যেখানে ২০-৩০ হাজার টাকার ফোন ব্যবহার করেন সেখানে আপনার বাবা এত কমদামী ফোনগুলোর কোনো একটিই ব্যবহার করেন। তবে অনেকের চোখেই এটা শোভা পায় না। তাই, বাবার প্রতি সম্মান রেখেই হয়তো সিম্পল ফাংশনবিশিষ্টই তবে একটু মুটামুটি দাম দেখে, সেরকম কোনো ব্র্যান্ডের ফোনই কিনে দিতে চান। তাই আজ কথা সেইসব ফোনগুলো নিয়ে। যে ফোনগুলোর কথা বলবো সেগুলো দামের পাশাপাশি অন্যান্য প্রায় সবদিক দিয়েই সুবিধাজনক। তো চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক সেই বাবাদের জন্য তৈরি হওয়া কিছু ফোন।
পারফেক্ট একটা সাইজের ফোন হলো এই মটো ই৪। আর সেইসাথে এর সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করাও বেশ সহজ। আপনাকে কোনো বেগই পেতে হবে না। এমনকি আপনি গুগল প্লে-স্টোর থেকে সফটওয়্যারও ইন্সটল করতে পারবেন এই ফোন দিয়ে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এর দামটা। আপনি মাত্র $১৩০ ডলার (প্রায় ১০, ৫০০ টাকা) খরচ করেই ফোনটি লুফে নিতে পারেন। আপনি যদি আমাজন-এর প্রাইম গ্রাহক হন তাহলে আপনি ফোনটি মাত্র $১০০ ডলারেই পেতে পারেন।
এই ফোনে রয়েছে ৫ ইঞ্চি এইচ ডি ডিসপ্লে সাথে ফোর-কোর প্রসেসর এবং ২ জিবি মেমরি বিশিষ্ট র্যাম যাতে প্রায় মুটামুটি সবই করা যাবে। পেছনে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা ও সামনে রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। তাই বেশ ভালোমানের ফটোই তুলতে পারবেন বাবারা। আর সেই সাথে এসডি কার্ড লাগানোর জায়গাও আছে। তাই স্পেস শেষ হবার ভয় নেই। সেই সেইসাথে ফটোগুলো শেয়ারও করা যাবে খুব সহজে।
অ্যান্ড্রয়েড ৭.১.১ এ রয়েছে দারুন সব অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচার যার মাধ্যমে স্ক্রীন বড় করে দেখা যাবে ও সেই সাথে রয়েছে লেখা থেকে ভয়েস রিডার। যা আপনাকে অন্ধকারেও ফোন ব্যবহারে সাহায্য করবে। এছাড়াও রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার যার মাধ্যমে আপনি আপনার ম্যাসেজ ও ব্যাংকিং তথ্যগুলো নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পারবেন। এছাড়াও মটো ই৪ ফোনটি পানি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না আর সেইসাথে স্ক্রিনও স্ক্র্যাচ-রেজিস্ট্যান্ট যাতে কোনো প্রকার দাগ পড়বে না। আর তাই চাবি, কয়েনের সাথে একই পকেটে থাকলেও দাগ পড়ার কোনো চান্সই নেই।
আবারও বলছি। আমাদের সমাজে একটি দল আছে যারা শুধুমাত্র তাদের বন্ধু ও পরিবারের সাথেই যোগাযোগ রাখেন না, সেইসাথে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসাবও রাখতে হয়। আর অনেকে ফেইসবুকও ব্যবহার করতে চান। এ সবকিছু মিলিয়ে Moto E4-ই সেরা।
মুটামুটি সব ধরনের সুবিধা আছে, সেইসাথে আপনি ফোনটি বাইরে যেকোন জায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন। এর সাইজও পারফেক্ট যে কারণে আপনি কানে ধরাও সহজ। আর এতে আছে ডুয়েল মাইক্রোফোন আর রয়েছে একটি নয়েজ রিমুভ করার ফিচার যে কারণে আপনি অপরপ্রান্তের প্রতিটা কথাই বুঝতে পারবেন।
মটোরোলা'র সফটওয়্যারগুলোও ব্যবহারের দিক থেকে বেশ সহজ। আর প্লে-স্টোর আপনাকে দেবে দুই মিলিয়নেরও বেশি অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ। $১৩০ ডলারে বাবার জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সবকিছু পাওয়া সত্যিই দারুণ একটা ব্যাপার।
অনেকগুলো ফিচারের মধ্যে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেল পেছনের ক্যামেরা আর সেই সাথে রয়েছে এস ডি কার্ড স্টোরেজ। এটি তৈরি হয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসর দিয়ে। এই ফোনটি সাশ্রয়ী মূলত ভেরিজন ব্যবহারকারীদের জন্য। আর তাদের জন্য এর মূল্যও প্রায় অর্ধেক। মাত্র $৪০ ডলার (প্রায় ৩, ৩০০ টাকা)। এছাড়াও মটো জি প্লে-তে রয়েছে ২৮০০ এম এ এইচ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি রিমুভেবল ব্যাটারি।
আসুস জেনফোন ৩ ম্যাক্স কেনা মানে হলো যেন একটা পোর্টেবল ব্যাটারি কেনা। তাও আবার এটি কেনা যাবে মাত্র $১২৫ ডলারে (প্রায় ১০, ৩০০) টাকায়। এর পেছনের ক্যামেরা ১৩ মেগাপিক্সেল ও সেই সাথে রয়েছে ৫.২ ইঞ্চি বিশিষ্ট এইচ ডি ডিসপ্লে। সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হলো এর ব্যাটারি হলো ৪, ১০০ এম এ এইচ। চার্জ নিয়ে তাই আপনাকে দুশ্চিন্তাও করতে হবে না। এছাড়াও ৩০ দিনের স্ট্যান্ডবাই সুবিধা আছে। তাই, চার্জ ১০%-এ নামলেও সুপার সেভিং মোডের কারণে ৩৬ ঘন্টা পর্যন্ত স্ট্যান্ডবাই সুবিধা পাবেন।
শুধু তাই নয়, এর সাথে একটি ক্যাবলও রয়েছে যার সাহায্যে এই ফোনটিই পাওয়ার ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে। আর আপনি অন্য যেকোন ফোন চার্জ করতে পারবেন আপনার এই ফোন দিয়ে। এছাড়া্ও এর ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ক্যামেরা বাটন হিসেবেও কাজ করে। তাই আপনাকে ফটো তোলার জন্য স্ক্রীন না চাপলেও হবে।
পরিশেষে, টেকটিউনস হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার এক সুবিশাল প্ল্যাটফর্ম। প্রতিনিয়তই থাকবেন নতুন নতুন জ্ঞানের মধ্যে। জানবেন অজানাকে। তবে হ্যাঁ। শুধু জেনেই বসে থাকবেন না। এই জ্ঞানগুলো ছড়িয়ে দিন তাদের নিকট যাদের কাছে এই টিউনগুলো পৌঁছানো সম্ভব হয় না। জ্ঞান নিজের কাছে রাখার জিনিস না। ছড়িয়ে দিন আশেপাশে যারা আছে সবার মাঝে। প্রযুক্তিকে ভালবাসুন, প্রযুক্তির সাথে থাকুন। টেকটিউনসের সাথে থাকুন।
আজকের মতো এ পর্যন্তই। সামনে আবারও হাজির হবো নতুন কোনো তথ্য নিয়ে। আর টিউনটি কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। টিউন বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে টিউমেন্ট বক্সে প্রশ্নটি করুন। এছাড়াও ফেইসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ফেইসবুকে আমি: Mamun Mehedee
আমি মামুন মেহেদী। Civil Engineer, The Builders, Bogra। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 92 টি টিউন ও 360 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি আপনার অবহেলিত ও অপ্রকাশিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ।
ভাই panco.itel এই ফোন গুলা কেমন জানাবেন। টিউন করার জন্য ধন্যবাদ।