
বাংলাদেশের বাইক এর ৩৩ তম পর্বে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম । আশা করি সবাই ভাল আছেন । আগের টিউনটাতে একজন বাংলাদেশের তৈরী বাইক ওয়াল্টন নিয়ে লিখতে বলেছিলেন । তাই আজ আমরা ওয়াল্টনের একটা লেটেস্ট আপকামিং বাইক সম্পর্কে জানব । বাইকটি হল ওয়াল্টন স্পীডো ১৫০ । এটা ওয়াল্টনের প্রথম কোন ১৫০ সিসির বাইক । ওয়াল্টনের আগে যে বাইক গুলো ছিল সেগুলো হাইয়েস্ট ১৪০ সিসি পর্যন্ত ছিল । বর্তমানে ওয়াল্টন বাংলাদেশে এই স্পীডো বাইকটি ছাড়ার কথা জানিয়েছে । তবে বাইক টি সম্পর্কে একেবারে সবকিছু ডিটেইলস এখনও পাওয়া যায় নি । যেটুকু পাওয়া গেছে সেই টুকুর ভেতরেই আমি বাইকটি সম্পর্কে এ্যানালাইসিস করে এই টিউন টি করব । তবে বাইকটি খুব শীঘ্রাু বাজারে আসছে । তখন আপনার এটা টেষ্ট করে দেখতে পারবেন । এখন আপাতত আমরা বাইকের ডিটেইলসে চলে যাই ।

বাইকটির ডিজাইনটা ওয়াল্টনের আগের বাইকগুলোর থেকে অনেকটা আলাদা । তবে এর ব্যাকপার্টের স্টাইলটার সাথে ওয়াল্টনের আগের একটা ১০০ সিসির বাইক ওয়াল্টন প্রিজম এর কিছূ মিল আছে । সামনের দিকটা অনেকটা পালাসর এর মত করার চেষ্ট করা হয়েছে । অনেকটা পালসারের মতই লাগে প্রথম দেখাতে , কিন্তু ফ্রন্ট বাইকটার ফ্রন্ট ডিজাইন ভালভাবে খেয়াল করলে দেখা যায় যে এটা একটা ইউুনক স্টাইল । ওয়াল্টন মূলত বাইকটাকে একটা রেসিং বা স্পোর্টস বাইক হিসেবে সবার সামনে রিপ্রেজেন্ট করেছে । বাইকটার লুকটাও অনেকটা স্পোর্টস বাইকের মত । এর ফুয়েল ট্যাঙ্কটা বেশ স্টাইলিশ এবং এই বাইকটিতে সামনের দিকে একটা পাখনা আকৃতির কোন একটা পার্টস এড করা হয়েছে ।ননচের দিকে ইন্জিন প্রোটেক্টর বা গার্ড টাইপের একটা পার্টস রয়েছে । বাইকটিতে “Hawk-eye” শেপেরডবল ল্যাম্প রয়েছে । এর স্পীডোমিটার , ফুয়েল ইনডিকেটার , ট্যাকোমিটার সব কিছুই ডিজিটাল এবং বেশ স্টাইলিশ এবং এগুলো মিলে বাইকটিকে একটা স্পোর্টস বাইক এর লুক দিয়েছে । বাইকটি তৈরী করা হয়েছে এ্যারোডাইনামিক স্টাইলে যেটা বাইকটিকে ফুল স্পোর্টটি একটা লুক দিয়েছে ।

বাইকটিতে একটি ১৫০ সিসির পাওয়ারফুল এয়ারকুলড ইন্জিন রয়েছে । এর ইন্জিনের মাধ্যমে সবোর্চ্চ ৮.১ (7700rpm/min) কিলোওয়াট শক্তি এবং ১১.২ N/M (5700 rpm) টর্ক উৎপন্ন করা সম্ভব । বাইকটির ইন্জিন বাংলাদেশের অন্যান্য ১৫০ এর তুলনায় একটু কম পাওয়ারফুল । তবে এর ইন্জিনটা হল BTF150 ওয়ার্ল্ড ক্লাস ব্যালান্স শ্যাফড ইন্জিন যেটার এক্সেলেরেশন পাওয়া অনেক ভাল । আপনি বাইকটি নিয়ে ৫ সেকেন্ডের ভেতরই ৬০ কিলোমিটার/ঘন্টা স্পীড তুলতে পারবেন । বাইকটির টপ স্পীড হল ৯০+ কি.মি/ঘন্টা ।বাইকটির ইন্জিনে ফুল কম্বাশন টেকনোলজি ইউজ করা হয়েছে এবং ইন্জিনের এয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমটার রেশিও অনেক ভাল । এই ইন্জিনের পিষ্টনটা খুবই হালকা ধাতু দিয়ে তৈরী করা এবং গিয়ারিং সিস্টেমটাও অনেক সফট ও ভাল । ইন্জিনের সাউন্ড কোম্পানীর রিপোর্ট অনুযায়ী বেশ ভাল এবং বাইকটি হাই স্পীডেও খুব কম সাউন্ড ক্রিয়েট করে । এটার ইন্জিন টেকনোলোজির কারণে এই বাইকটার ইন্জিন কখনও ভাইব্রেট করে না ও হাই স্পীডেও খুবই স্মুথলি চলে ।

বাইকটির চাকা দুটি বেশ মোটা এবং একটা অন্যরকম স্টাইলের । এই বাইকের পেছনের টায়ারের সাইজ 130/60- R17 এবং সামনে টায়ারের সাইজ 100/80-17 । ফলে দেখা যাচ্ছে বাইকটির চাকা দুটি বাংলাদেশের প্রচলিত বেশীরভাগ ১৫০ বাইক থেকে বেশ মোটা এবং সুন্দর একটা গোলগাল শেপের । বাইকের চাকাটি হল এ্যালয় রিমের । বাইকের চাকাগুলো টিউবলেস , ফলে এটা নিয়ে আপনার পাংচার এর সম্ভাবনা অনেক কম এবং কন্ট্রোলিং অনেক ভাল ।
বাইকের সামনের চাকায় একটা বেশ বড় সাইজের ডিস্ক ব্রেক ও পেছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক রয়েছে । বাইকের ব্রেকের সাইজ কত সেটা এখনও জানা যায় নি । তবে বাইকটির কন্ট্রোলিং বেশ ভাল হবে বলেই আশা করা যাচ্ছে ।

বাইকটির ডায়মন্ড শেপড ফ্রেম , হাইয়ার স্ট্রেন্থ এবং সিঙ্গেল মনোশক সাসপেনশন বাইকটির রাইডিংকে আরও কমফর্টেবল এবং সেফ করে তুলেছে ।এটার হাইট এবং লেন্থ সাধারণ সব বাইকের মতই । বাইকটির ওভারঅল হাইট হল ১০৯৫ মি.মি এবং ওভারঅল লেন্থ হল ১৯৫০ মি.মি । যেটা একটা স্পোর্টস বাইকের জন্য যথেষ্ট ভাল কনফিগারেশন । বাইকটির টোটাল ওজন ১২৭ কেজি যেটা একটা ১৫০ সিসি বাইকের জন্য একটা খুব্ই সাধারণ ওজন । বাইকটির ওজন একটু কম হওয়াতে আপনি বাইকটি নিয়ে অন্যান্য ১৫০সিসির বাইকের সাথে নির্দ্বিধায় রেসে যেতে পারেন । বাইকটির সামনে টেলিস্কোপিক ফর্ক এর সাসপেনশন রয়েছে যেটাও বেশ ভাল । এবং বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬৮ , যেটা অনেক বেশী , ফলে এটা নিয়ে আপনি যেকোন রোডে রাইডিং এ কমফোর্ট ফিল করবেন ।

বাইকটিতে ১৩.২ লিটারের একটা ফুয়েল ট্যাঙ্ক রয়েছে । বাইকটি বেশ ফুয়েল ইফিসিয়েন্ট ও । মূলত এটা বাংলাদেশের রোডের কথা মাথায় রেখেই তৈরী করা । তাই বাইকটিতে ১ লিটার জ্বালানীতে প্রায় ৫০-৫৫ কিলোমিটার যায় । যেটা বর্তমানে বাংলাদেশের অন্য কোন ১৫০ সিসির বাইক আপনাকে দিতে পারবে না । বাইকটি আপনার পকেটের টাকাও ঠিকঠাক পাঠাবে । বাইকটিতে ১২ ভোল্টের একটা পাওয়ারফুল ব্যাটারী রয়েছে । বাইকটির হেডলাইট হল হ্যালোজেন বাল্বের । ফলে এটা নাইট টাইম রাইডিং এর জন্যও বেশ পারফেক্ট ।
মূলত ওয়াল্টন বাইক গুলো তৈরী করে বাংলাদেশের রোডের কথা চিন্তা করেই । আর এই বাইকটিও তার ব্যাতিক্রম না । তবে বাইকটি সম্পর্কে অফিসিয়ালি খুব বেশী কিছু পাওয়া না যাওয়ার কারণে সবকিছু ভালভাবে লেখা হল না । বাইকটির সম্পর্কে লেটেস্ট আপডেট পেতে Motorcycle Price In Bangladesh পেজে চোখ রাখতে পারেন । এরা নতুন কোন বাইক লঞ্চ হবার সাথে সাথেই তার ফুল ইনফরমেশন আপডেট করে থাকে । আজ এই পর্যন্ত । আবার পরবর্তী পর্বে দেখা হবে । সেই পপর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন । ধ্যবাদ ।
আমি বাইক বিডি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 74 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।