
বাংলাদেশের বাইক এর ৩২ তম পর্বে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম । আশা করি সবাই ভাল আছেন । আজ আমারা যে বাইকটি সম্পর্কে জানব সেটা হল বাজাজ ডিসকভার ১২৫ ST । বাইকটি বাজাজের কিছূদিন আগের ডিসকভার এর একটা নতুন সংস্করণ। বাইকটি মার্কেটে আসার পর বেশ গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছে বর্তমানে । বাইকটি মূলত বাজাজ ডিসকভার ১২৫ এর একটি নিউ ভার্সনও বলা যায় । আগের ডিসকভার কে কিছুটা মোড করে নতুন করে তৈরী করা হয়েছে এই বাইকটি । বাইকটিতে চেঞ্জ এসেছে অনেক । ডিসকভার এর চিরাচরিত রূপ থেকে বেরিয়ে এসে নতুন একটা রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে এই ডিসকভার ১২৫ ST । সংযোজন ও বিযোজন হয়েছে আগের ভার্সন থেকে অনেক । অনেক কিছু নতুন করে এড হয়েছে আবার বাদ দেওয়া হয়েছে অনেক ফিচার । মূল কথা , বাজাজ ডিসকভার বলতে মানুষ যে চিরাচরিত চিরচেনা মডেলটিকে বোঝাত সেটা থেকে একটু বেরিয়ে এসেছে মডেলটি বাজারে আসার পরে । নতুন একটা লুকে আত্মপ্রকাশ করেছে বাজাজ ডিসকভার । তো , চলুন আজ দেখে নিই কী কী নতুন ফিচার রয়েছে বা এর সম্পর্কে ডিটেইলসে জেনে নিই ।

বাজাজ ডিসকভার ১২৫ST বাইকট মূরত ডিসকভার ১০০T এবং ডিসকভার ১২৫ এর একটা কমবাইন্ড রূপ । বাইকটির ফ্রন্ট লুক টা সম্পূর্ণ চেঞ্জড অন্যান্য ভার্সন থেকে । বেশ হায়েনার মত লুকের একটা হেডলাইট , সাথে মাসকিউলার ফুয়েল ট্যাঙ্ক , স্টাইলিশ ব্যাক , টেইল লাইট সবকিছু মিলিয়ে বাইকটি একটা গর্জিয়াস লুক নিয়েছে । বাইকটিতে এড হয়েছে নতুন করে সামনের চাকায় একটা ছোট্ট ডিস্ক ব্রেক যা বাইকটিকে একটা নতুন ভাব এনে দিয়েছে । এনালগ স্পীডোমিটার ও ফুয়েল ইনডিকেটর এর সাথে সুন্দর হ্যান্ডেলটা বাইকটিকে আরও সুন্দর করে তুলেছে ।সেই সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে একটা ব্যাটারী ইনডিকেটার । যারা ডিসকভার প্রেমী ছিলেন , তারা মনে হয় বাইকটি বাজারে আসার পর আরও বেশী করে ডিসকভার সিরিজের প্রেমে পড়েছেন । আর বাইকটির কালার কম্বিনেশনটাও সম্পূর্ণ চেঞ্জড । ডিসকভারের অন্যান্য ভার্সনের থেকে সম্পূর্ণ নতুন একটা কালার এসেছে এই ভার্সনে । আর বাইকটিকে দেখে অনেক হালকা ও ভাল কন্ট্রোলিং এর ববাইক ই মনে হয় । মোট কথা , প্রথম দর্শনে নজর কাড়ার মত একটা বাইক হল ডিসকভার ১২৫ST ।

বাজাজ ডিসকভার এর এই ভার্সনে ইন্জিনটাও সম্পূর্ণ চেঞ্জড । ডিসকভার সিরিজের চলমান ইন্জিনের থেকে আরও বেশী পাওয়ারফুল ও নতুন ফিচারযুক্ত ইন্জিন দেওয়া হয়েছে বাইকটিতে । বাইকটিতে একটা ১২৫ সিসির এয়ার কুলড ইন্জিন রয়েছে যেটা সবোর্চ্চ ১৩ বিএইচপি শক্তি ও ১০N/M টর্ক উৎপন্ন করতে পারে । যেটা অন্যান্য ১২৫ এর বাইকের থেকে অনেক বেশী পাওযারফুল । বাইকটির ইন্জিন হল ১ সিলিন্ডার বিশিষ্ঠ ৪ স্টো্ক ইন্জিন যেটাতে ৪ টি ভালব রয়েছে । এর ইগনিশন সিস্টেমে রয়েছে ডিজিটাল সিডিআই । বাইকটির বোর ও স্ট্রোক ও অন্যান্য ১২৫ বাইক থেকে বেশী । বাইকটিতে একটি ৫ স্পীড গিয়ারবক্স রয়েছে । বাইকটি ৬০ কিলোমিটার/ঘন্টা স্পীড তুলতে সময় নেয় মাত্র ৬ সেকেন্ড যেটা বাংলাদেশের অধিকাংশ ১৫০ এর সমান বা কাছাকাছি । এটার টপ স্পীড ও অনেক বেশী । বাইকটির টপ স্পীড পাওয়া গেছে ১১০ কি.মি/ঘন্টা ।

বাইকটির চাকার শেপ বাজাজের অন্যান্য বাইকের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা । এটার চাকার সাইজ ১৭ ইন্চি । সামনের চাকার টায়ারের সাইজ 2.75 x 17 এবং পেছনের চাকার টায়ারের সাইজ 3.00 x 17 । এর চাকা দুটি টার্ণিং এর জন্য বেশ উপযুক্ত এবং কর্নারিং এর সময় বেশ হাইস্পীডে কর্নারিং করা যায় । তবে চাকাগুলো টিউবলেস না । সেটা হলে আরও ভাল হত সবার জন্য । বাইকটির সামনের চাকায় একটা সুন্দর ছোট্ট ডিস্ক ব্রেক ও পেছনের চাকায় একটা ড্রাম ব্রেক রয়েছে । সামনের ডিস্কের সাইজ ২০০ মি.মি এবং পেছনের ড্রাম ব্রেকের সাইজ ১০০ মি.মি । বাইকটির ব্রেকিং কন্ট্রোল অন্যান্য ১২৫ সিসির বাইক থেকে বেশ ভালই বলা যায় এবং এটা ৬০ কি.মি/ঘন্টা থেকে থামতে পারে ২২ মিটারের ভেতরই । চাকাটি বেশ গ্রিপারি হবার কারণে স্লীপ কারর ও সম্ভাবনা কম ।


বাইকটি বাজাজের ডিসকভারের অন্যান্য ভার্সনের থেকে একটু ছোট । এর ওভারঅল লেন্থ ১৯৮০ মি.মি এবং হাইট ১০৭৮ মি.মি । ডিসকভার ১২৫ ST এর মোট ওজন ১২৪ কেজি । বেশ ভারী হবার কারণে বাইকটি এর টপ স্পীডেও তেমন কোন ভাইব্রেট করে না । বাইকটির সাসপেনশন সিস্টেমে ফ্রন্ট সাসপেনশন হিসেবে রয়েছে টেলিস্কেপিক ফর্ক এবং রেয়ার সাসপেনশন হিসেবে রয়েছে মনোশক হাইড্রোলিক । সাসপেনশন সিস্টেম অনেক উন্নত হবার কারনে এটা আমাদের দেশের রোডের কন্ডিশনে রাইড করার জন্য পারফেক্ট একটা বাইক বলা যায় । কারণ , মনোশক সাসপেনশন খুব কম ১২৫ সিসির বাইকেই ইউজ করা হয় ।বাইকটির রাইডিং সিটটা বেশ নীচু এবং বেশ আরামদায়ক । আর এরসাথে বাইকটির হ্যান্ডেলিং কন্ট্রোলটাও দারুণ ।

বাইকটিতে একটি সুন্দর স্টাইলশ ফুয়েল ট্যাঙ্ক রয়েছে যেটাতে ১০ লিটার জ্বালানী ধরে । এর রিজার্ভ ট্যাঙ্কে ২.৩ লিটার জ্বালানী ধরে । বাইকটি ১ লিটার পেট্রোলে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার যেতে পারে । ফলে দেখা যাচ্ছে বাইকটি বেশ ফুয়েল ইফিসিয়েন্টও যেটা আপনার পকেটকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে ।

বাইকটিতে ১২ ভোল্টের একটা বেশ শক্তিশালী ব্যাটারী রয়েছে । এর সামনে একটা ৩৫ ওয়াটের হ্যালোজেন টাইপের হেডলাইট রয়েছে এবং পেছনের দিকে রয়েছে এলইডি টেইল লাইট । এর লাইট পারফরমেন্স বেশ ভাল এবং নাইট টাইম রাইডিং ও লং ট্যুরিং এর জন্য পারফেক্ট লাইট ইন্টিগ্রেশন ।
সবমিলিয়ে বলা যায় যে বাজাজ এর ইতিহাস পাল্টে দিয়েছে বাজাজ ডিসকভার ১২৫ ST মার্কেটে এসে ।আগে ডিসকভার সিরিজের বাইকের উপর মানুষের পজেটিভ যে দৃষ্টিভঙ্গী ছিল সেটা আরও অনেক বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে এই বাইকটি বাজারে আসার পর । বাইকটি বর্তমানে বাজাজ কোম্পানী ম্যানুফ্যাকচার বন্ধ করে দিয়েছে । ফলে এটার বর্তমান দাম সহ অন্যান্য তথ্য সঠিকভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না । এই তথ্যগুলোর জন্য চোখ রাখতে পারেন Motorcycle Price In Bangladesh পেজে । পেষ্টটি ভাল লাগলে আপনদের বন্ধুদের কাছে ফেসবুক , টুইটার প্রভৃতির মাধ্যমে ।
সৌজন্যে : Bikebd.com
আমি বাইক বিডি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 74 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভাই বাংলাদেশের ওয়ালটন এর বাইক সমন্ধে লিখুন তাহলে আমরা বাংলাদেশীরা অনুপ্রানিত হতে পারি…………