
বাংলাদেশের বাইক এর ৩১ তম পর্বে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম । আশা কনি সবাই ভাল আছেন । আজ আমাদের আলোচনার টপিক হল বাংলাদেশের টপ ১০০ সিসির বাইক নিয়ে । বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষই মিডল ক্লাস ফ্যামিলির । তাই , সবার পক্ষে বেশী পাওয়ারের বা হাই পারফরমেন্সের বাইক কেনা সহজ হয় না । এর মধ্যে বেশেীরভাগ মানুষই বাইক ইউজ করে থাকেন অফিসে যাওয়া আসার কাজে । যেখানে তাদেরকে বাইকের মাইলেজের দিকেও দেখতে হয় । আবার পারফরমেন্সের দিকেও তাকাতে হয় । সব মিলিয়ে , বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষের পক্ষে সব দিক বিবেচনা করে হাই পারফরমেন্সের বাইকের থেকে ১০০ সিসির বাইকই বেস্ট । কারণ , এই বাইক গুলো বেশী মাইলেজের সাথে তাদের চাহিদা অনুযায়ী পারফরমেন্সও দেয় । তাই টীম বাইকবিডি থেকে বাংলাদেশের টপ ৩ টি ১০০ সিসির বাইকের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে সব দিক বিবেচনা করে । নীচে সেটা একটু মডিফাই করে বর্ণনা করা হল । আসুন , প্রথমে দেখে নিই কোন ৩ টি বাইক এই লিস্টে রয়েছে ।

১. বাজাজ ডিসকভার ১০০
২. হিরো হোন্ডা প্যাশন প্রো
৩.টিভিএস মেট্রো
বিভিন্ন ভিউ তেকে বিবেচনা করে এই র্যাঙ্কিংটা করা হয়েছে । এটা অবশ্যই বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে করা । তো , আসুন , কেন এই বাইক ৩ টি টপে রয়েছে সেই বিষয়ে আমর জেনে নিই ।
টিভিএস এর একটা নতুন চমক হল টিভিএস মেট্রো । টিভিএস বাইকটিকে পারফরমেন্সে থেকে মাইলেজের দিক থেকে ভাল হিসেবে বেশী তুলে ধরতে চেষ্ট করেছে মার্কেটে । আর বাইকটিও মাইলেজের দিক থেকে বাংলাদেশের ভেতর এখনও বেস্ট পারফরমেন্স দিয়ে যাচ্ছে ।
টিভিএস মেট্রো বাইকটি র ফ্রন্টের লুকটা বেশ স্পাইলিশ এবং ইউনিক । হেডলাইটটা টিভিএস এর অন্য বাইকগুলোর সাথে বেশ মিল আছে । এটাতে বেশ স্টাইলিশ এনালগ স্পীডোমিটার ও ফুয়েল ইডিকেটর রয়েছে । বাইকটির বডির স্টাইলটা বেশ ছোটখাট এবং সুন্দর । বাইকটিতে ১২ ভোল্টের একটা ব্যাটারীর সাথে ৩৫ ওয়াটের একটা হেডলাইট রয়েছে ।
বাইকটিতে একটি ৯৯.৭ সিসির ৪ স্ট্রোক ইন্জিন রয়েছে যেটা দ্বারা ৭.৫ বিএইচপি শক্তি ও ৭.৫ N/M টর্ক উৎপন্ন করতে পারে । এটা একটা ১০০ সিসির বাইক হিসেবে বেশ ভাল পাওয়ারফুল বাইক । এটার টপ স্পীড হল ৮৫ কি.মি/ঘন্টা এবং এটা ১ লিটার জ্বালানীতে ৭৫-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ দিয়ে থাকে । এটাই এর মেইন বৈশিষ্ঠ । এই বাইকের মালিকের কোন সময়ই মনে হয় জ্বালানী নিয়ে চিন্তা করা লাগে না । বাইকটির ফুয়েল ট্যাঙ্কে ১৬ লিটার তেল ধরে ।
বাইকটি অন্যান্য ১০০ সিসির বাইকের তুলনায় বেশ হালকাও । এর মোট ওজন ১০৮ কেজি যেটা এর পারফর্মেন্সের উপর প্রভাব ফেলে । আপনি ড্রাগ রেসিং এর ক্ষেত্রে এই বাইকটি নিয়ে বেশ ভাল পারফর্ম করতে পারবেন ।

বাইকটির ফ্রন্ট সাসপেনশন হিসেবে রয়েছে টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক ফর্ক এবং পেছনে রয়েছে স্প্রিং লোডেড হাইড্রোলিক ফর্ক। যেটা বাংলাদেশের রোডে আপনাকে বেশ কমফোর্ট দেবে ।
সবমিলিয়ে বাইকটি বাংলাদেশের ১০০ সিসির বাইকগুলোর ভেতর টপ লিস্টে স্থান করে নিয়েছে ।
প্যাশন প্রো বাইকটিতে রয়েছে একটি নিজস্ব স্টাইলের সুন্দর হেডলাইট । এর একটি এ্যানালগ স্পীডোমিটার ও একটি ডিজিটাল ফুয়েল ইনডিকেটর রয়েছে । এটার কোন গিয়ার ডিসপ্লে স্ক্রীন নেই । আসলে হেডলাইটের টোটাল বডি তিনটি পার্টে বিভক্ত কিন্তু দেখলে একসাথে বেশ সুন্দরই লাগে । বাইকটির রয়েছে একটা সুন্দর বেশ চওড়া আরামদায়ক বসার সিট । সিটটা অন্যান্য বাইকের তুলনায় একটু চওড়া বলে এটাতে বসেও বেশ মজা পাওয়া যায় ।
বাইকটিতে রয়েছে একটি ১০০ সিসির এয়ার কুলড ইন্জিন যেটা সর্বোচ্চ ৭.২ বিএইচপি শক্তি ও ৮N/M টর্ক উৎপন্ন করতে পারে । এটার ফুয়েল ডেলিভারী সিস্টেম হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে কার্বুরেটর ।এটাতে ডিজিটাল সিডিআই সিস্টেমের ইগনিশন পদ্ধতি রয়েছে । এটির একটা ৪ স্পীড গিয়ারবক্স রয়েছে । বাইকটির ইন্জিনের সবথেকে ভাল গুন হল এটা অনেক বেশী স্পীডেও ভাইব্রেট হয় না বা কোন ধরণের সমস্যা করে না ।কারণ এটার ওজন অন্যান্য ১০০ সিসির বাইকের থেকে অনেকটা বেশী । এর মোট ওজন হল ১২১ কেজি । এটাতে ৬০ কিলোমিটার স্পীড তুলতে টাইম লাগে প্রায় ৮ সেকেন্ড । এর টপ স্পীড হল প্রায় ৯৩ কি.মি/ঘন্টা ।

বাইকটিতে রয়েছে একটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারী । এটার একটি মাল্টি রেফ্রিক্টর টাইপের হেডলাইট রয়েছে । হেডলাইটি ৩৫ ওয়াট এর । এর পেছনের ব্যাক বা টেইল লাইটটি ৫ ওয়াটের লাল রঙের বেশ স্টাইলিশ । বাইকটিতে খুবই সুন্দর হলুদ রঙের সিগন্যাল লাইট রয়েছে ।
বাইকটি জ্বালানীর দিক থেকে বেশ কৃপনই । এটাতে আপনি ১ লিটার পেট্রোলে প্রায় ৬৫-৭০ কিলোমিটার যেতে পারবেন । এর ফুয়েল ট্যাঙ্কটা বাইকের বডির সাথে একদম পারফেক্ট । সুন্দর স্টাইলিশও বটে । এর ফুয়েল ট্যাঙ্কের জ্বালানী ধালন ক্ষমতা ১৩ লীটার ও রিজার্ভ ট্যাঙ্কিতে জ্বালানী ধরে ১ লিটার ।
সব দিকে বিবেচনা করে বাইকটিকে বাংলাদেশের টপ ১০০ সিসির বাইকের লিস্টে ২ নম্বরে রাখাই যায় ।
বাইকটি বাংলাদেশের মনে হয় সবথেকে বেশী বিক্রিত বাইক । এটার কথা নতুন করে না বললেও সবার এই বাইকটির মর্ম বোঝা উচিৎ । একটা ১০০ সিসি বাইকে যা কিছূ থাকা দরকার সবই মনে হয় বাইকটিতে রয়েছে । বাইকটির স্টাইলের কথা বলতে গেলে বলতে হকে , বাজাজ ডিসকভারের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বাইকটি । দারুণ ক্লাসিক স্টাইলের সাথে সুন্দর হেডলাইট ও বডির নিখুত ফিনিশিং বাইকটিকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে । এটাতে স্টাইলিশ একটি এনালগ স্পীডোমিটার ও ফুয়েল ইনডিকেটর এবং একটা ডিজিটাল গিয়ার ডিসপ্লে স্ক্রীণ রয়েছে ।
বাইকটিতে একটি ৯৪.৬ সিসির এয়ার কুলড ৪ স্ট্রোক ইন্জিন রয়েছে যেটা সবোর্চ্চ ৭.৫ বিএইচপি শক্তি ও ৭.৮N/M টর্ক উৎপন্ন করতে পারে । এটার টপ স্পীড হল প্রায় ৯৫ কি.মি/ঘন্টা এবং বাইকটি এক লিটার তেলে প্রায় ৫৫-৬০ কিলোমিটার যায় ।এটাতে ৬০ কিমি স্পীড তুলতে আপনার টাইম লাগবে মাত্র ৯ সেকেন্ড যেটা ১০০ সিসির বাইকের জন্য যথেষ্ঠ । বাইকটির মোট ওজন হল ১১৫ কেজি ।এটাতে একটি ৫ স্পীড গিয়ারবক্স রয়েছে । এর ইন্জিনটা বেশ স্মুথলি ভাল স্পীড তুলতে পারে এবং উপযুকত যত্ন নিলে বাইকটার সাউন্ড ৫ বছরেও নতুনের মতই থাকে । বাইকটি অন্যান্য বাইকের থেকে বেশ হার্ডিও ।

বাইকটি অন্যান্য ১০০ সিসির বাইক থেকে একটু বড় সাইজের ও বটে । পেছনের সিটে ২ জন মানুষ বেশ ভালভাবেই বসতে পারে । বাইকটির হ্যান্ডেলিং কন্ট্রোল মনে হয় যেকোন ১০০ সিসির বাইককে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে । এত সুন্দর কন্ট্রোল বাংলাদেশের কোন ১০০ সিসির বাইকে নেই । বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেমটাও দারুন ।
সব মিলিয়ে বলা যায় , এটা বাংলাদেশের টপ ১০০ সিসির বাইকের লিস্টে ১ম স্থান পাবার যোগ্য ।
সৌজন্যে : Bikebd.com
আমি বাইক বিডি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 74 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সুন্দর পোস্ট, কাজে লাগবে অনেকের…