
বাংলাদেশের বাইক এর ২৯ তম পর্বে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম । আশা করি সবাই ভাল আছেন । আজ আমরা যে বাইকটির রিভিউ দেখব সেটা বাংলাদেশের একটা রেয়ার বাইক কিন্তু প্রচন্ড হাই পারফরমেন্স বাইক । আমাদের আজকের বাইকটি হল কেটিএম ডিউক ১২৫ সিসি । বাইকটি বাংলাদেশের সব স্থানে হয়তবা পাওয়া যায় না , কিন্তু , অনেকেই বাইকটি ইউজ করেন বর্তমানে । বাইকটি অনেক হাই পারফরমেন্স বাইক । এর সর্বনিন্ম সিসির এডিশন হল ১২৫ সিসি । এছাড়া ১৫০, ২০০ বা ৩৯০ বা ৬৫০ প্রভৃতি সিসির এই বাইক বাজারে পাওয়া যায় কিন্তু বাংলাদেশে আসে না । বাইকগুলো মুলত অত্যান্ত শক্তিশালী এবং মাউন্টেন বাইক নামেও পরিচিত । বাংলাদেশের রাস্তার যে হাল , তাতে করে এই বাইকই মনে হয় বাংলাদেশের রোডের জন্য পারফেক্ট । উচু নীচু বা খুব খারাপ রোডেও বাইকটি আপনাকে ভাল পারফরমেন্স ও আরাম দিবে । তো চলুন দেখে নিই বাইকটির ফুল স্পেসিফিকেশন ।

বাইকটির পেছনের সিটটা চাকা থেকে অনেক উচু , প্রায় R15 এর মতই । এছাড়া বাইকটিতে আপনার জন্য রয়েছে সুন্দর ও আরামদায়ক একটা বসার সিট যেটাতে বসে সব ধরণের রাস্তায়ই আপনি কমফোর্ট ফিল করবেন । বাইকটির কনসোল ফুল ডিজিটাল এবং খুবই স্টাইলিশ । এর কনসোলে রয়েছে advanced instrument cluster একটা ডিজিটাল স্পীডোমিটার , ডিজিটাল ট্যাকোমিটার , ডিজিটাল ফুয়েল ও ব্যাটারী ইনডিকেটর সহ আরও অনেক কিছু রয়েছে । যেগুলো বাংলাদেশের অধিকাংশ ১৫০ সিসির বাইকেও পাওয়া যায় না । এই বাইকটির এমন কিছু ফীচার রয়েছে যেটা আপনাকে বাইকটিকে ভালবাসতে বাধ্য করবে । এর স্পোর্টি বসার সিট এবং বসে বাইকটির কন্ট্রোলিং সিস্টেম এবং কর্নারিং এর ক্ষেত্রে এটা আপনাকে এমন সুবিধা দেবে যেটা আপনি হয়তবা অন্য কোন বাইকে পাবেন না । মাটি থেকে এর সিটের উচ্চতা হল ৮০০ মিমি. যেটা আপনাকে যেটা স্পোর্টিং বাইকের লুক সহ আপনার রাইডিং এর কনফিডেন্স আরও বাড়িয়ে দেবে ।

কেটিএম ডিউক ১২৫ এ একটা ১২৪.৭ সিসির লিকুইড কুলড ইন্জিন রয়েছে যেটা সর্বোচ্চ 15 Bhp @ 10500 rpm শক্তি উৎপন্ন করতে পারে এবং এটি ম্যাক্সিমাম ১২ N/M টর্ক উৎপন্ন করতে পারে । অতএব , আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বাইকটি ১২৫ সিসির হলেও বাইকটির ইন্জিন কনফিগারেশন অনেকটা বাংলাদেশের ১৫০ সিসির বাইকের থেকে অনেক পাওয়ারফুল উন্নত । বাইকটির ইন্জন ঠান্ডা করার জন্য এক ধরণের লুব্রিকেন্ট ইউজ করা হয় যেটা বাইকের ইন্জিনকে সবসময় ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে । বাইকটিতে ফুললি ইলেকট্রিক ইগনিশন সিস্টেম রয়েছে যেটাতে ডিজিটাল টাইমিং এডজাস্টমেন্ট ফিচারও এড করা রয়েছে । এটি সিঙ্গেল সিলিন্ডারের একটা ফোর স্ট্রোক ইন্জিন । বাইকটিতে একটা ৬ স্পীড গিয়ারবক্স রয়েছে যেটা ওয়েট মাল্টি ডিস্ক ক্লাস বা মেক্যানিক্যালি অপারেটেড । বাইকটি ইলেকট্রিক ও কিক উভয় সিস্টেমেই স্টার্ট করা যায় ।

বাইকটির দুটি চাকাতেই এ্যলয় হুইল রয়েছে এবং এর টায়ারগুলো টিউবলেস টায়ার । বাইকটির টায়ারদুটি যেকোন ১২৫ সিসির বাইকের থেকে অনেকটা মোটা এবং সুন্দর সফট গ্রিপযুক্ত । এটা আপনাকে যেমন রাইডিং এ কমফোর্ট দেবে তেমনই কর্নারিংএর ক্ষেত্রেও এটা আপনাকে হাই স্পীডে সেফলি কর্ণারিং এর সুবিধা দেবে । এর সামনের চাকায় একটা ফোর পট ক্যালিপার সহ ৩০০ মিমি . এর ডিস্ক ব্রেক রয়েছে এবং পেছনের চাকাতেও সেইম টেকনোলজির ২৩০মিমি. সাইজের ডিস্ক ব্রেক রয়েছে যেটা আপনাকে ৬০ কিমি./ঘন্টা স্পীড থেকে মাত্র ১৬ সেকেন্ডের মধ্যেই বাইকটি থামাতে গ্যারান্টি দেবে ।বাইকটিতে এন্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেমও রয়েছে যেটা অত্যান্ত উন্নত একটা ব্রেকিং সিস্টেম হিসেবে পরিচিত ।

বাইকটির ফ্রন্ট সাসপেনশন হিসেবে রয়েছে আপসাইড ডাউন ফর্ক এবং রেয়ার সাসপেনশন হিসেবে রয়েছে মনোশকসাসপেনশন যেটা আপনাকে বাংলাদেশের যেকোন রোডে চলাচলের ক্ষেত্রে চরম আরাম দেবে । আসলে বাইকটির সাসপেনশন সিস্টেমটা অনেক ভাল ।
বাইকটির উপরের কনফিগারেশন দেখেই অনেকে এর পারফরমেন্স সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেছে । তারপরও কিছু কথা বলার থাকে ।বাইকটি মাত্র ৯ সেকেন্ডেই ১০০ কিলোমিটার/ঘন্টা স্পীড তুলতে সক্ষম যেটা আমাদের দেশের অধিকাংশ ১৫০ বাইক পারবে না । বাইকটির টপ স্পীড হল ১২০ কিমি./ঘন্টা যেটা একটা ১২৫ বাইকের ক্ষেত্রে বেস্ট বা এর বেশী আশা করা যায় না ।

তবে বাইকটির মাইলেজ মোটেই আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না , কারণ বাইকটি মোটেই ফুয়েল ইফিসিয়েন্ট না । এটা গড়ে প্রতি লিটারে ২৫-৩০ কিলোমিটার চলতে পারে । অবশ্য যেকোন হাই পারফরমেন্স বাইকই জ্বালানী একটু বেশীই খরচ করে । এটার ক্ষেত্রেও সেইম কেস ।
বাইকটি মুলতবেশ ছোটখাট এবং অনেক নীচু একটা বাইক । মাটি থেকে এর সিটের উচ্চতা মাত্র ৮০০ মিমি. যেখানে অন্যান্য বাইকের ক্ষেত্রে এটা ১০০০ এর উপরে থেকে থাকে । তবে বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স অনেক ভাল । বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স হল ১৭০ মিমি. । এর হুইলবেস হল 1367±15 mm যেটা বাংলাদেশের ভাঙা রাস্তায় চালানোর জন্য পারফেক্ট । বাইকটির টোটাল ওয়েট ১২৭ কেজি এবং এর ফুয়েল ট্যাঙ্কে ১১ লিটার জ্বালানী ধরে ।

সব মিলিয়ে একমাত্র মাইলেজ এর বিষয়টা বাদ দিলে বাইকটি বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে চরম একটা বাইক এবং খুব্ই হার্ডি একটা বাইক । তো , আপনার সার্মথ্যের মধ্যে পড়লে বাইকটি কিনে টেস্ট করতে পারেন ।
সৌজন্যে : Bikebd.com
আমি বাইক বিডি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 74 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভালো লাগলো ৷ এইবার প্রাইভেট কার পিক আপ এগুলো নিয়ে কিছু টিউন আশা করব