
বাংলাদেশের বাইক এর ২২ তম পর্বে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম । আশা করি সবাই ভাল আছেন । আগের পোষ্টগুলোতে অনেক বাইকের রিভিউ সহ অনেক কিছূ লিখেছি । আজ একটু আলাদা ষিয় নিয়ে লিখব । আমাদের আজকের বিষয় হল একটা মোটরসাইকেল ইন্জিন কীভাবে কাজ করে । আমরা অনেকেই বাইক রাইড করি এবং ভাল রাইডারও , কিন্তু হয়ত অনেকে এই টেকনিক্যাল বিষয়গুলো জানে না । তাই আসুন আজ আমরা জেনে নিই একটা মোটরবাইকের ইন্জিন কীভাবে কাজ করে ?
বর্তমানে যে মোটরবাইকগুলো বাজারে আছে তার ১০০% ই হল ৪ স্ট্রোক ইন্জিন । এই ইন্জিনের সাথে কোন কারের ইন্জিনের কোন পার্থক্য নেই । বাইকের ইন্জিন যেভাবে কাজ করে , একটা কারের ইন্জিনও সেই ভাবে কাজ করে । যেহেতু এগুলো ৪ স্ট্রোক ইন্জিন , তাই বুঝতেই পারছেন এই ইন্জিনের সম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন হয় ৪ টি ধাপে । তো চলুন জেনে নিই কভিাবে এই ইন্জিনগুলো কাজ করে ।

একটা বাইকের ইন্জিনে মূলত ২ ধরণের হতে পারে । Combustion Engines (ICE), এবং Spark Ignition (SI) ইন্জিন । এই ইন্জিনগুলোতে মূলত নীচের ১০ টি পার্টস থাকে যেগুলোর দ্বারা ইন্জিনটি পরিচালিত হয় । সেগুলো হল :
• Piston
• Cylinder Block
• Cylinder Head
• Connecting Rod
• Crankshaft
• Crankcase
• Rocker Arm
• Camshaft
• Plug
• Valve.
ইন্জিনটির কাজ করার ধাপ গুলো আমরা একে একে ক্লিয়ার করব । তবে চলুন , শুরু করা যাক ।
মূলত এই ধরণের ইন্জিন গুলোতে একটা দহন বা প্রজ্বলন কক্ষ বা চেম্বার থাকে যেখানে ইন্জিনের মূল কাজ হয়ে থাকে । এই বিষয়ে আমরা পরে আলোচনা করব । এই ধাপে ইন্জিনের ভালবগুলো খুলে যায় এবয পিষ্টনগুলো নীচের দিকে নেমে যায় , ফলে বাতাস ও জ্বালানীর একটা মিশ্রন দহনকক্ষে প্রবেশ করে ।

এই ধাপে ভালবগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং দহন কক্ষের আয়তন অনেক কমে আসে ফলে জ্বালানী ও বাতাসের মিশ্রন খুবই চাপে থাকে । এরপর পিষ্টনগুলো তাদের কাজ শুরু করে , মানে উপরের দিকে উঠে এসে এই মিশ্রনকে আরও আয়তনে কমিয়ে ফেলে । এই পর্যায়ে জ্বালানী ও বাতাসের মিশ্রণের আয়তন তাদের মূল আয়তনের তিন ভাগের এক ভাগ করে ফেলে ।

ইন্জিন ওয়ার্কের এই ধাপে এই জ্বালানী ও বাতাশের মিশ্রণকে একটি স্পার্ক প্লাগ দ্বারা আগুন ধরিয়ে দেওয় হয় । এই সময় ২ টি ভালবই বন্ধ থাকে এবং মিশ্রণটি প্রচন্ড সংকুচিত থাকে ।

এই ধাপে মিশ্রণে আগুন ধরে যাওয়ার ফলে প্রচন্ড বিষ্ফোরণের সৃষ্টি হয় এবং পিষ্টন প্রচন্ড গতিতে বাইরের দিকে সরে যায় এবং ভালব দুটি খুলে যায় । ফলে আবারও জ্বালানী ও বাতাসের একটা মিশ্রণ দহনকক্ষে প্রবেশ করে ।

এভাবে বারবার পিষ্টন ওঠা নামা করার ফলে এটা ক্রাঙ্কশ্যাফটকে অন্দোলিত করে , এবং এটি পিষ্টনের ওঠানামার গতিকে বাইকের চাকার ঘূর্ণন গতিতে রূপান্তর করে । এভাবে এই ঘূর্ণন গতি বাইকের পেছনের চাকার উপর এপ্লাই হয় এবং চাকাটি ঘুরতে শুরু করে ।
এই হল একটি ফোর স্ট্রোক ইন্জিনের কার্যকৌশল । যারা সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের স্টুডেন্ট তারা ক্লাস ৯-১০ বা ইন্টারমিডিয়েটে এই প্রণালীটি পড়ে থাকবেন । ফিজিক্স বইতে এই প্রক্রিয়াটি অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং প্রশ্নটা বেশ ইমপর্ট্যান্ট ও ছিল (!) ।
একটা ইন্জিনের সি বা ক্যাপাসিসি ডিরেক্টলি এর ইন্জিনের দহন কক্ষের আয়তনের সাথে সমনুপাতিক । মানে , একটা ইন্জিনের দহনকক্ষ যত বড় হবে , ইন্জিনটি তত পাওয়ারফুল হবে । এই দহনকক্ষের সবোর্চ্চ আয়তন হতে পারে ১৫০০ কিউবিক সেন্টিমিটার [cubic centimeters (cc)] এবং সর্বনিন্ম হতে পারে ৫০ কিউবিক সেন্টিমিটার [cubic centimeters (cc)] । এটার সাথে আবার বাইকের ফুয়েল ইফিসিয়েন্সিরও একটা বিষয় আছে । যে বাইকের দহনকক্ষ যত বড় , সেই বাইক এর ইন্জিন স্বাভাবিক ভাবেই বেশী জ্বালানী ব্যাবহার করতে পারবে এবং ভাল পারফরমেন্স দিতে পারবে । এই কারণেই বেশী সিসির বাইকের বা কোন ভাল ইন্জিনের বাইকের জ্বালানী একটু বেশীই লাগে । আর যে বাইকের ইন্জিনের দহনকক্ষ ছোট অর্থাৎ কম সিসির বাইক , সেটা জ্বালানী যেমন কম ইউজ করে তেমনই পারফরমেন্সও একটু খারাপ দেয় ।
সৌজন্যে : বাইক বিডি
আমি বাইক বিডি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 74 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
valo laglo