বাংলাদেশের বাইক এর ১৩ তম পর্বে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম । আজ আমরা যে বাইকটির সম্পর্কে জানব সেটি হল বাজাজেরই একটা নতুন বাইক , যেটা খুব দ্রুতই বাংলাদেশে আসতে যাচ্ছে , বাজাজ ডিসকভার ফেয়ারড । এটা বাজাজের একটা নতুন চমক । কারণ আগে বাজাজের একটা ১৫০ সিসির ডিসকভার বাইক বাজারে ছিল যেটার সাথে ডিসকভার ১২৫ বা ১০০ এর কোন পার্থক্য করা যেত না এবং যার পারফরমেন্সেও ১৫০ সিসি বাইকের তুলনায় খুব ভাল ছিল না । সেটার পর বাজাজের ডিসকভার ১৫০F  এর আকাশ পাতাল পার্থক্য । এটার স্টাইলিশ বডি , ভিন্ন ধরনের হেডলাইট , বসার সিট , ইন্জিন সবকিছুই আগের ডিসকভার ১৫০ কে তুচ্ছ করে নিজের আত্মপ্রকাশ করেছে । তো চলুন আজ আমরা এই বাইকটি সম্পর্কে খুটিনাটি সবকিছূ জেনে নিই ।

ওভারভিউ :

স্টাইলিং এর দিক থেকে বাজার ডিসকভার বরাবরই একটা বস বাইক । সুন্দর মাসকিউলার ফুয়েল ট্যঙ্ক এবং সুন্দর ছোটভাট হেডলাইট এটাকে একটা সুন্দর ভিউ দিয়েছে । বাইকের ফুয়েল ট্যাংকের উপর সুন্দর থ্রিডি লোগো বাইকটির স্টাইল আরও সুন্দর করে তুলেছে । বাইকটির একটা এনালগ স্পীডোমিটার ও একটা এনালগ ফুযেল ইনডিকেটার রয়েছে যেটা ডিসকভার বাইকের আগের ঐতিহ্যই ধরে রেখেছে । বাইকটি একটু চিকন যেটা শহরে রাইডিং এর জন্য খুবই উপকারী

ইন্জিন :

বাইকটিতে রয়েছে একটি ১৪৫ সিসির এয়ার কুলড ইন্জিন । এই ইন্জিনটা ১৪.৩ বিএইচপি শক্তি ও ১২.৭ N/m টর্ক উৎপন্ন করতে পারে । এটির ডিজিটাল সিডিআই সিস্টেমের ইনগিশন সিস্টে রযেছে । ইন্জিনের সিলিন্ডার সংখ্যা একটি। বাইকটিতে একটি ৫ স্পীড গিয়ারবক্স রয়েছে । বাইকের ইন্জিনটি আপনার কাছে মোটেই অসুবিধা মনে হবে না এবং এটি অনেক হাই স্পীডেও কোন ভাইব্রেট করে না । ইন্জিনের শব্দ এতটাই কম যে মোটামুটি স্পী চলার সময় আপনি এর ইন্জিনের শব্দ শুনতেও পাবেন না । বাইকটি ৬০ কি.মি/ঘন্টা স্পীড তুলতে টাইম নেয় মাত্র ৫ সেকেন্ড । এটার টপ স্পীড ১১৫ কিলোমিটার/ঘন্টা । ডিসকভার ফেয়ারের গিয়ারবক্সটা অন্যান্য ডিসকভারের ভার্সনগুলো থেকে অনেক বেশী স্মুথ ।এটা কিক ও সেলফ উভয় সিস্টেমেই স্টার্ট করা যায় ।

চাকা ও ব্রেকিং :

ডিসকভার ফেয়ার বাইকটির চাকাটি হল ১৫০ এর জন্য মোটামুটি পারফেক্ট । তবে আমি এর থেকে পালসার বা অন্যান্য ১৫০ বাইককেই এগিয়ে রাখব । এক্ষেত্রে ডিসকভার ১৩৫ অনেক এগিয়ে ডিসকভার ১৫০ থেকে । এর চাকার সাইজ হল ১৭ ইন্চি । বাইকটির সামনের চাকায় একটি 80/100-17 সাইজের ও পেছনের চাকায় 100/90-17 সাইজের টায়ার রয়েছে । বাইকটির টায়ারগুলো টিউবলেস । ব্রেকিং এর দিক থেকে এটি অন্যান্য বাইকের সাথে তাল মিলিয়েছে । এর সামনের চাকায় ডিস্ক ও পেছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক রয়েছে । সামনের ডিস্কে সাইজ ২৪০মিমি. এবং পেছনের ব্রেকের সাইজ ১৩০ । বাইকটি ৬০ কিমি./ঘন্টা থেকে ২০ মিটারের মধ্যেই থামতে পারে । বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেম মোটামুটি ভালই বলা যায় । ব্রেকিং সিস্টেমটা চাকার সাথে একমদমই পারফেক্ট বলে আমার মনে হয়েছে ।

ডাইমেনশন, ওয়েটও জ্বালানী  :

বাইকটির মোট ওজন ১৩২ কেজি । বাইকটির মোট দৈর্ঘ ২০৩৮মিমি. যেটাকে একটু বেশীই বলা যায়। এর ওভারঅল হাইট হল ১০৭০মিমি. যেটা যেকোন ১৫০ বাইকের জন্য স্বাভাবিক । । আর লম্বা হুইলবেস এবং বেশ উচ্চতা বাইকটিকে একটা খুবই মজবুত লুক দিয়েছে । বডিতে বেশী কিট ইউজ না করার কারণে বাইকটিকে অনেক ফ্রেশ ও ছিমছাম লাগে অনেকটা । বাইকের সামনের দিকটা অনেকটা ডিসকভার 125ST  এর মত । বাইকটির ফুয়েল ট্যাঙ্কে মোট ১০ লিটার তেল ধরে এবং রিজাভৃ ট্যাঙ্কে তেল ধরে ১.৯ লিটার  ।  ডিসকভার ফেয়ার ১ লিটার পেট্রলে ৫৫-৬০ কিলোমিটার যেতে পারে যেটা ১৫০ বাইকের ক্ষেত্রে অনেক । এটা আপনাকে জ্বালানীর দিক থেকে অনেক সেভ করবে এবং সেই সাথে ভাল পারফরমেন্সও দিবে   ।

ইলেকট্রিক্যাল :

বাইকটির হেডলাইটটি আমার কাছে ডিসকভার ১২৫ST  এর মতই লেগেছে তবে এটা একটু সাইজে বড় বলে মনে হয় । বাইকটিতে একটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারী রয়েছে । এই বাইকটির আরেকটি নতুন সংযোজন হল হ্যালোজেন লাইট যেটা বাজাজের ম্যাক্সিমাম বাইকে দেখা যায় না । এর হেডলাইটে একটা ৩৫ ওয়াটের লাইট রয়েছে এবং টেইল লাইটে ২১ ওয়াটের মাল্টি রিফ্লেক্টর টাইপের লাইট রয়েছে । বাইকটির টার্নিং লাইটটা অন্যান্য ভার্সনের থেকে বেশ স্টাইলিশ ।

সব মিলিয়ে বলা যায় বাইকটি একটা ১৫০ বাইক হিসেবে পারফেক্ট এবং বাজাজের অন্যান্য বাইকের তুলনায় অনেক বেমী স্টাইলিশ ও টেকনোলজি যুক্ত । এটা বাংলাদেশে আসলে এর দাম জানা যাবে । আশা করা যায় বাইকটির দাম অন্যান্য ১৫০ এর তুলনায় একটু হলেও কম হবে । এই বাইকটির সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারেন bikebd.com এ ।

বাংলাদেশের বাইক সম্পর্কে তথ্য ও লেটেস্ট আপডেট পেতে চোখ রাখুন bikebd.com এ । এবং বাংলাদেশের মোটরসাইকেলের প্রাইস সম্পর্কে জানতে চোখ রাখুন Motorcycle Price in Bangladesh