ভাবনাটা এখান থেকেই শুরু, যেখান থেকে তিনি শুরু করে গেছেন!

ভাবনাটার শুরু এখান থেকেই। হ্যাঁ এখান থেকেই, যেখান থেকে তাঁরা শুরু করে গেছেন।

সেই সমস্ত মহান ব্যক্তিদের কথা কয় জন জানেন? কিংবা কয়জন জানার চেস্টা করেন? সেই সমস্ত শেকড়ের এক একজন মানুষকে নিয়েই কয়েকটা টিউন করা যায়, রচনা করা যায় এক একটা ইতিহাসের পর্ব। আজ সেই সব কয়েকজন মানুষের কথা বলতে চাচ্ছি যাদের নাম হয়তো অনেকে এই প্রথম আমার এই টিউনের মাধ্যমেই শুনে থাকবেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, কেননা আমাদেরকে অতীত শেখানো হয় না। বিজ্ঞানের সুফল ভোগেই আমরা ব্যস্ত। জানার চেস্টা করি না-- বিজ্ঞানের প্রসারে কারা কী করে গিয়েছিলো। আজকের টিউনে আপনাদের কিছু মজার তথ্য দেওয়ার চেস্টা করবো....

খুবই স্বল্পস্বরে আজকে কিছু মহান ব্যক্তিদের কথা বলি, যারা একেকজন বিজ্ঞানের উন্নতির এক একটা শেকড়...

 

সাই লুন (এফ এল সি ১০৫ এ ডি) 

  • কাগজের আবিষ্কারক

এই মহান ব্যক্তিকে সাধারন মানুষ এবং অনেক শিক্ষিত শ্রেনীর মানুষ ও চেনেনা । অথচ তার আবিষ্কৃত জিনিস সারা দুনিয়ার লোকজন ব্যবহার করছে। আরেকটা মজার ব্যপার হলো- ইতিহাসেও তার নামের তেমন কোন উল্লেখ নেই। সাই লুন ছিলেন চীনের রাজকীয় আদালতের কর্মকর্তা। ১০৫ সাল কিংবা তার সামান্য কিছু আগে কিংবা পরে তিনি কাগজ আবিষ্কার করেন। কাগজ উদ্ভাবনের পর তাকে পদোন্নতি ও অভিজাত খেতাব দেওয়া হয়। কিন্তু পরে অবশ্য প্রাসাদে যড়যন্ত্রের ফলে তিনি মানহানিকর পরিস্থিতিতে পড়েন এবং বিষ পান করে আত্মহত্যা করেন। চীনের প্রায় সকলেই তার নাম জানে।

 

গ্যালেন (১৩০-৩০০ খৃ) 

গ্যালেন

  • পরীক্ষামূলক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক।

 

চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক আর পরীক্ষামূলক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক দুটো কিন্তু আলাদা জিনিস। প্রাচীন গ্রীসিয় চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নতির সর্বোচ্চ শিহরে আরোহন করেছিলো গ্যালেনের সময় এবং তার হাত ধরেই।

গ্যালেন সর্বপ্রথম শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সেই রহস্য উদ্ধারের চেস্টা করেন। যদিও আদিকালে মানুষের দেহ কেটে গবেষণা চালানো কারো পক্ষেই সম্ভব ছিলো না। গ্যালেন অবশ্য নিজেও পারেননি। কিন্তু তিনি মানুষের পরিবর্তে ব্যবহার করেছেন বন্য জীবজন্তুর দেহ। জীবজন্তুর দেহ কেটেই তার ভিতরকার নাড়ী, রক্ত, ধমনীর অবস্থান জেনে নিয়েই মানুষের দেহ অভ্যন্তরের কথা অনুমান করে নিতেন।

আর এই সামান্যতম অগ্রসরতাই ছিল তখনকার সময়ে মস্তবড় এক দুঃসাধ্যের কাজ।

গ্যালেন জীবজন্তুর শরীরের উপর ভিত্তি করেই মানুষের শরীরের শিরাগুলো কিভাবে কাজ করে সেই ব্যাখ্যা দিতে চেস্টা করেছিলেন এবং চিত্র দিয়ে বোঝানোর চেস্টা করেছিলেন।

 

এডুইন হাবল(১৮৮৯-১৯৫৩)

 

  • প্রথম ব্যক্তি যিনি মহাবিশ্ব সম্পর্কে প্রথম গবেষণা করেছেন ও চমকপ্রদ  তথ্য প্রদান করেছেন।

 

হাবলই সর্বপ্রথম বলেছেন যে নীহারিকার সাথে ছায়াপথের কোন সম্পর্ক নেই। কেননা তখনকার সময় মানুষের ধারনা ছিলো ছায়াপথই বিশ্বের একমাত্র গ্যালাক্সি। হাবল আরেকটি কথাও বলেছিলেন এই যে পৃথক অস্তিত্ব বিশিষ্ট গ্যালাক্সি সমূহ- ওগুলো স্থির হয়ে দাড়িয়ে নেই। আমাদের হহায়াপথ থেকে ওই গ্যালাক্সিগুলো দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছে। অর্থাৎ বিশ্বব্রহ্মান্ড ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে।

 

হাবলের মৃত্যুর পর তার প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবেই মার্কিন যুক্তরাস্ট্র কর্তৃক মহাকাশে স্থাপিত একটই শক্তিশালী উপগ্রহ টেলিস্কোপের নামকরণ করা হয়েছে যার নাম- ‘হাবল টেলিসস্কোপ’. হাবল টেলিস্কোপের কল্যানেই "হাবল" নামটা অনেকের কাছেই পরিচিত।

 

 জুলভার্ণ (১৮২৮-১৯০৫ খৃ) 

 

এই ব্যক্তি হলেন এক মজার ও অদ্ভূত মানুষ। শুধুমাত্র উনাকে নিয়েই একটা টিউন করার ইচ্ছা ছিলো আমার। ওনার কল্পনা শক্তির কারনেই তিনি আজ আমাদের নিকট পরিচিত। ওনার কল্পনা শক্তির উদাহরন দেওয়া যাক-

 

‘‘উড়োজাহাজ আবিষ্কারের অর্ধশতাব্দিকাল পূর্বেই তিনি হেলিকপ্টারের কথা বলেছিলেন। রেডিও আবিষ্কারের বহু আগেই তিনি টেলিভিশনের কথা কল্পনা করেছিলেন। মানুষ যখন চাদে যাওয়ার কথা কল্পনাই করতে পারেনি, তখন এই ভদ্রলোক চাদে বসতি স্থাপনের কথা কল্পনা করেছিলেন।

একটা মজার ব্যপার হল উনি ছিলেন আমার মতো ঘরকুণো মানুষ!!!! 

তবে দুঃখের ব্যপার হলো উনি উনার শেষ জীবনে খুবই দুঃখী ছিলেন।

 

হাচিং গডার্ড (১৮৮২-১৯৪৫) 

 

রকেট নামক বস্তুটা চর্মচোক্ষে না দেখলেও এটার নাম কিংবা টিভিতে এটা দেখেনি এমন লোক পাওয়া দুস্কর। কিন্তু কয় জন জানে এই রকেটের আবিষ্কারক কেন?

জ্বী, হ্যাঁ। সর্বপ্রথম গডার্ডই রকেট ইঞ্জিন তৈরী করেন। সেটি এমন এক ধরনের ইঞ্জিন যার সাহায্যে বায়ুশুন্য পরিবেশেও যান কে পরিচালিত করা যায়।

আর তাই ওনাকে মহাশুন্য গবেষনার পথ প্রদর্শক বলা হয়ে থাকে।

গলায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

নিয়তির এক অদ্ভুত পরিহাস হলো- জীবিত অবস্থায় তিনি যোগ্য সম্মান পান নি, পাননি তার গবেষনা কার্য পরিচালনা করার মতো তেমন কোন আর্থিক সহযোগিতা। কিন্তু তার মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার তার আবিষ্কারের বিষয়টি জানতে পারে, এবং তার পরিত্যক্ত প্রকল্প পুনরুজ্জীবনের জন্য বরাদ্দ করে ১০,০০,০০০ ডলার। সেই সাথে তাকে দেওয়া হয় মরণোত্তর সম্মান। তার কর্মের প্রতি সম্মান জানিয়ে ক্লার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় গডার্ড স্মৃতি পাঠাগার।

--------------------------------------------

 

যে কয়েকজন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলাম, আসলে তাদের নিয়ে কিছুই বলা হয়নি। তবে একেবারে কিছু না জানার চাইতে অল্প কিছু জানা শ্রেয় বলেই একটু একটু করে দিয়েছি। যাতে করে আপনাদের পড়তে কস্ট না হয় আর বোরিং না লাগে!!

যাই হোক- ভালো থাকবেন।

ফেসবুকেও কিছু লেখার চেস্টা করি, অবশ্য সেটা প্রযুক্তি বিষয়ক নয়। চাইলে ফেসবুকে ঘুরে আসতে পারেন। এই যে এখানে

Level 0

আমি LIMON। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 81 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস