আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস ওয়েবসাইটের নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। স্বাগতম সবাইকে মাদারবোর্ড কি এবং মাদারবোর্ড এর কার্যকারিতা নিয়ে নতুন আরো একটি টিউনে। বর্তমান সময়ে কম্পিউটার চিনি না এমন মানুষের সংখ্যা খুব কমই আছে। এই কম্পিউটারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশের নাম হল মাদারবোর্ড। মাদারবোর্ড ছাড়া কম্পিউটারের অস্তিত্ব পাওয়া একেবারেই মুশকিল। তাই আমাদের সকলের উচিত কম্পিউটারের মাদারবোর্ড সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করা। মাদারবোর্ড (Motherboard) হচ্ছে একটি প্রধান বোর্ড যা একটি কম্পিউটার বা অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মূল অঙ্গ। এটি বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক কমপোনেন্টগুলিকে একীভূত করে এবং তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।
মাদারবোর্ডে মূলত প্রসেসর, মেমরি, ভিডিও কার্ড, সাউন্ড কার্ড, নেটওয়ার্ক কার্ড, মাউস, কিবোর্ড এবং অন্যান্য কম্পিউটারের সকল ডিভাইসের সাথে সংযুক্ত থাকে। এটি কম্পিউটারের সেন্ট্রাল ন্যূরাস সিস্টেম হিসাবে কাজ করে এবং অন্য অংশগুলির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে। মাদারবোর্ডের প্রধান কার্যকারিতা হচ্ছে কম্পিউটারের সমস্ত কম্পোনেন্টগুলির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা, কম্পিউটারের শক্তি, ক্লক এবং প্রসেসিং ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা, এবং মেমরি এবং ডাটা ট্রান্সফারে কার্যক্রম সক্রিয় রাখা। এটি কম্পিউটারের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। একটি ভাল মাদারবোর্ড হাই-পারফরম্যান্স প্রসেসর, স্পিড, নেটওয়ার্ক সংযোগ, এবং স্টোরেজ সমর্থন সহ একটি আদর্শ কম্পিউটার বানানো বা আপগ্রেড করতে ব্যবহৃত হয়। আমার মনে হচ্ছে বিষয়টি অনেকেই হয়ত ভালোভাবেই বুঝতে পারেনি, তো চলুন এবার আমরা নিচে কম্পিউটারের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশ মাদারবোর্ড সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা করি!
মাদারবোর্ড হল একটি কম্পিউটারের প্রধান প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড (PCB)। আপনি মাদারবোর্ডকে কম্পিউটারের সেন্ট্রাল কমিউনিকেশন ব্যাকবোন কানেক্টিভিটি পয়েন্টও বলতে পারেন, যার মাধ্যমে সমস্ত উপাদান এবং বাহ্যিক পেরিফেরালগুলি সংযুক্ত থাকে। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন যে একটি ডিভাইস যা সমস্ত সরঞ্জামকে সংযুক্ত করে, যা সমস্ত উপাদানকে একত্রে সংযুক্ত রাখে, তাকে মাদারবোর্ড বলে। মাদারবোর্ড কম্পিউটারের সমস্ত অংশকে পাওয়ার এবং একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়। কিন্তু বর্তমানে মাদারবোর্ডে অনেক পরিবর্তন এসেছে, যার মধ্যে অনেক ফিচার যোগ করা হয়েছে, যার কারণে কম্পিউটারের সক্ষমতা এবং আপগ্রেড করার ক্ষমতা অনেকাংশে বেড়েছে।
মাদারবোর্ড কম্পিউটারের মেরুদণ্ড, এটি এমন একটি লিঙ্ক যাতে সমস্ত উপাদান একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে। এটি একটি হাব হিসাবে কাজ করে, যার মাধ্যমে কম্পিউটারের অন্যান্য ডিভাইসগুলি সংযুক্ত থাকে। মাদারবোর্ড ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ফর্মেশনে আসে। প্রধানত, এটি একটি PCB (প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড) যা কম্পিউটারের বিভিন্ন উপাদান ধারণ করে যাতে কম্পিউটারটি কার্যকরী হতে পারে। সিপিইউ, র্যাম, হার্ড ডিস্কের পাশাপাশি টিভি কার্ড, গ্রাফিক্স ইত্যাদি উপাদান সবকিছু মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত করা হয়। বিদ্যুৎ সাপ্লাই ঠিকভাবে পেলে মাদারবোর্ড নিজেই এই গগুলো পরিচালনা করতে পারে।
মাদারবোর্ড আবার main board, লজিক board, সিস্টেম board, base board, নামেও পরিচিত। ১৯৮১ সালে রিলিজ হওয়া আইবিএম (IBM) পারসোনাল কম্পিউটারের মাদারবোর্ডকেই কম্পিউটার জগতের প্রথম মাদারবোর্ড বলা হয়। সেই সময়ে আইবিএম কোম্পানি এই মাদারবোর্ডের নাম রেখেছিল প্লানার। এরপর বিভিন্ন কোম্পানি মাদারবোর্ড তৈরির কাজ শুরু করে। বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের মাদারবোর্ড পাওয়া যায়।
বাজারে বিভিন্ন প্রকারের মাদারবোর্ড পাওয়া যায় বর্তমান সময়ে। এক একটা মাদারবোর্ড এক একটা কাজে পারদর্শী। বর্তমান সময়ে প্রতিটা মানুষের নিজস্ব চাহিদা আছে। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী মাদারবোর্ড ডিজাইন করা হয়ে থাকে। এতে করে মানুষ তার জন্য কোন মাদারবোর্ড উপযোগী সহজেই বুঝতে পারে, এবং নিজের প্রয়োজন মত মাদারবোর্ড বেছে নিতে পারে। মাদারবোর্ডের ব্যবহার আকার ও ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
তবে এই বিভিন্ন প্রকারভেদের মধ্যেও মাদারবোর্ড এর বিভিন্ন গঠনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। মাদারবোর্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় গঠনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুইটি মাদারবোর্ডের গঠন হলো:
যে মাদারবোর্ডগুলোতে বিভিন্ন উপকরণ এবং ডিভাইস সংযোগ করার জন্য port ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে Integrated Motherboard বলে। এইসব মাদারবোর্ডে কোন port নষ্ট বা ড্যামেজ হলে সেটিকে সহজে খুলে নিয়ে চেঞ্জ করা যায়। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ পিসিতে এই মাদারবোর্ড গুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এই মাদারবোর্ডগুলোর জনপ্রিয়তা এবং চাহিদা অনেক বেশি।
যে সব মাদারবোর্ডে, বিভিন্ন ডিভাইস কানেক্ট করার জন্য port ব্যবহার করা হয় না, সেই ধরনের মাদারবোর্ড কে Non-Integrated Motherboard বলা হয়ে থাকে। এই টাইপের মাদারবোর্ডগুলোতে সিপিইউ ও RAM এর মত ডিভাইসগুলিকে, Solder করা হয়। এবং নষ্ট বা ড্যামেজ হলে এগুলিকে চেঞ্জ করা যায় না। এমন পরিস্থিতিতে পুরো মাদারবোর্ডটিকেই চেঞ্জ করে ফেলতে হয়। এই মাদারবোর্ড এর ব্যবহার অনেকটা ব্যয়বহুল।
তবে এখানেও আবার রয়েছে কিছু ভিন্নতা। মাদারবোর্ড এর বিভিন্ন কার্যক্রম এবং এর সংযুক্ত ছোট ছোট জিনিসগুলোর উপর ভিত্তি করে মাদারবোর্ডকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। এতে খুব সহজেই বোঝা যায় কোন মাদারবোর্ডটি কোন কাজের জন্য উপযুক্ত। উক্ত কাজের জন্য উপযুক্ত মাদারবোর্ডটি কিনলে কোন কোন ফিচার পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কেও খুব ভালোভাবে ধারণা লাভ করা যায়। তো চলুন আর বেশি কথা না বলে এবার আমরা মাদারবোর্ডকে যে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে সেই তিনভাগ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত জেনে নিই।
ডেস্কটপ মাদারবোর্ড বর্তমান সময়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের মাদারবোর্ড হল সবচেয়ে মৌলিক ধরনের মাদারবোর্ড।
ল্যাপটপে যে মাদারবোর্ড ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে ল্যাপটপ মাদারবোর্ড বলে। এই মাদারবোর্ডের সাহায্যে ল্যাপটপের বিভিন্ন অংশ সংযুক্ত করা যায়।
এই ধরনের মাদারবোর্ড গুলো সার্ভারের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়। এই গুলো খুবই উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাদারবোর্ড হয়ে থাকে। এই মাদারবোর্ডগুলি অনেক বেশি দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়। এই ধরনের মাদারবোর্ডে অনেক বেশি স্লট এবং কানেক্টর যুক্ত থাকে।
আজকের টিউনে যারা শুরু থেকে এইখান পর্যন্ত পড়ে আসছেন আশাকরি তারা সকলে মাদারবোর্ডের কার্যক্রম সম্পর্কে খুব ভালোভাবেই বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন। বন্ধুরা, এবার আমাদের সময় এসেছে মাদারবোর্ডের ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে কাজ সম্পর্কে জেনে নেওয়ার। নিম্নের এই পর্বে আমরা জানবো মাদারবোর্ডের বিভিন্ন অংশের কাজ সম্পর্কে। কারণ মাদারবোর্ডের কাজগুলো সম্পর্কে যদি আমরা জেনে নেই তাহলে আমাদের সকলেরই খুব সহজেই বুঝতে সুবিধা হবে যে, একটি কম্পিউটারের জন্য মাদারবোর্ড কতটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তোর চলুন এবার আমরা মাদারবোর্ডের বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত জেনে নেই।
মাদারবোর্ড সব কম্পিউটারের মেরুদণ্ডের কাজ করে, যেখানে কম্পিউটারের অন্যান্য যন্ত্রাংশ যেমনঃ সিপিইউ, র্যাম, রম এবং হার্ড ডিস্ক ইনস্টল করা থাকে। এক কথায় কম্পিউটারের সকল যন্ত্রাংশ মাদারবোর্ডের সাথে যুক্ত থাকে।
বিদ্যুৎ ছাড়া সব কিছুই অচল। মাদারবোর্ডের মাধ্যমে কম্পিউটারের সকল উপাদানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
মাদারবোর্ড একটি কমিউনিকেশন হাবের মতো কাজ করে। যেটার মাধ্যমে সমস্ত পেরিফেরাল গুলো সংযুক্ত থাকে। মাদারবোর্ড এর মাধ্যমে সমস্ত পেরিফেরাল গুলো নিজেদের ভিতরে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারে, এবং সাথে মাদারবোর্ড ডেটা ট্র্যাফিক পরিচালনা করে।
মাদারবোর্ডে শুধুমাত্র রিড মেমরি থাকে, যেটা কম্পিউটার বুট করার জন্য প্রয়োজনীয় BIOS। সহজভাবে বলতে গেলে, কম্পিউটারটি মাদারবোর্ডের সাহায্যে স্টার্ট হয়।
পৃথিবীতে প্রতিটি জিনিস তৈরি হওয়ার পিছনে অনেক ইতিহাস লুকিয়ে থাকে। আমাদের সকলেরই উচিত জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ সে সমস্ত জিনিসের ইতিহাসগুলো জেনে নেওয়া। কারণ জানার জন্য জ্ঞান বাড়ে আর জ্ঞান একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। তাই আমাদের সকলের উচিত প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জিনিস গুলো সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা। তাহলে আর দেরি না করে চলুন নতুন আরো একটি জিনিস হিসেবে মাদারবোর্ডের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা যাক। বর্তমান সময়ে ব্যবহৃত মাদারবোর্ড গুলো অনেক উন্নত। কিন্তু আগের সময়ে ব্যবহৃত মাদারবোর্ডগুলো এতটা উন্নত ছিল না। প্রথম মাদারবোর্ডটি ছিল প্ল্যানার ব্রেডবোর্ড যেটা 1981 সালে IBM কোম্পানি প্রথম তৈরি করেছিল।
এই মাদারবোর্ড খুব বেশি উন্নত প্রযুক্তির ছিল না। 1984 সালে, আইবিএম নতুন প্রযুক্তির সাথে অ্যাডভান্স মাদারবোর্ড তৈরি করেছিল। এই মাদারবোর্ডটি সব ধরনের ডেস্কটপে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত ছিল। তবে বর্তমান সময়ে আগের তুলনায় অনেক বেশি কার্যক্ষমতা সম্পন্ন এবং শক্তিশালী মাদারবোর্ড বিভিন্ন কোম্পানি তৈরি করেছে। সে সকল কোম্পানিকে অনেক অনেক ধন্যবাদ যারা আমাদের আজকের এই ডিজিটাল বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে শুধুমাত্র একটি শক্তিশালী কম্পিউটারের মাধ্যমে। তো চলুন এবার আরেকটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক আগের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মাদারবোর্ডগুলোর কতটা শক্তিশালী এবং ক্ষমতা সম্পন্ন আর সেই সকল ক্ষমতা সম্পন্ন মাদারবোর্ডগুলোকে কবে, কখন, কীভাবে তৈরি করা হয়েছিল
কম্পিউটার অপারেট করার জন্য মাদারবোর্ডের গুরুত্ব অনেক। মাদারবোর্ডের প্রধান কাজ কম্পিউটারের মাইক্রো চিপ ধরে রাখা এবং অন্য সব যন্ত্রাংশকে একত্রে সংযুক্ত করা। যে সকল যন্ত্রনাংশ কম্পিউটারকে চালাতে এবং কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, সেগুলো মাদারবোর্ডের একটি অংশ অথবা যেকোনো স্লট বা পোর্টের সাথে সংযুক্ত থাকে। মাদারবোর্ডের আকৃতি এবং বিন্যাসকে ফর্ম ফ্যাক্টর বলা হয়। এই ফর্ম ফ্যাক্টরের সাহায্যে, মাদারবোর্ড কীভাবে ডিজাইন করা যায় তা নির্ধারণ করা হয়। এতে কম্পিউটারে মাদারবোর্ড গুলো তুলনামূলকভাবে আগের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং কার্য ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যাইহোক, অনেকগুলি নির্দিষ্ট ফর্ম ফ্যাক্টর রয়েছে, যা ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যান্ডার্ড মাদারবোর্ড তৈরি করা হয়। বাজারে অনেক ধরনের মাদারবোর্ড পাওয়া যায়। মাদারবোর্ড সাধারণত বিভিন্ন রকমের ইউজারের প্রয়োজন অনুযায়ী তৈরি করা হয়। মাদারবোর্ড বিভিন্ন নির্মাতা কোম্পানি তৈরি করে থাকে। তাই অনেক সময় এগুলো বিভিন্ন ধরনের CPU এবং মেমরি সমর্থন করতে পারে। এজন্য অনেক ভেবেচিন্তে মাদারবোর্ড নির্বাচন করতে হবে, সব মাদারবোর্ড সব ধরনের উপাদান সমর্থন করে না। এজন্য নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক মাদারবোর্ড নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মাদারবোর্ডের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল সকেট যা CPU ধারণ করে। বিভিন্ন বোর্ডের জন্য বিভিন্ন সকেট সংযোগ প্রয়োজন এবং সমস্ত প্রসেসরের পিন এক নয়। এই মাদারবোর্ডে কোন মডেলের প্রসেসর লাগাতে হবে তা সার্কিট বোর্ডের এই সকেট থেকে জানা যাবে।
যে কোন মাদারবোর্ডের লেআউটকে ফর্ম ফ্যাক্টর বলা হয়। এই ফর্ম ফ্যাক্টর দেখায় যে, বিভিন্ন উপাদান মাদারবোর্ডের কোথায় কোথায় স্থাপন করা উচিত। ফর্ম ফ্যাক্টর একটি কম্পিউটারের নকশার মত কাজ করে। যদিও ফর্ম ফ্যাক্টরের অনেক স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে।
আপনার ব্যবহৃত মাদারবোর্ড এর উপর নির্ভর করবে আপনি আপনার কম্পিউটারে কত পরিমাণ এবং কোন ফরম্যাটের RAM ব্যবহার করতে পারবেন। সাধারণত বোর্ডের মেমরি সীমিত থাকে যে তারা কত পরিমাণ RAM সমর্থন করবে। তবে সবচেয়ে ভালো হবে যদি আপনি এমন একটি বোর্ড নেন যা আপনার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি RAM সমর্থন করে যাতে আপনি পরে এটি আপগ্রেড করতে পারেন। বর্তমানে RAM স্লট যুক্ত মাদারবোর্ডের জনপ্রিয়তা এবং চাহিদা অনেক।
চিপসেট কম্পিউটারের ভিতরের ডেটা এক অংশ থেকে অন্য অংশে স্থানান্তর করে। এটি একটি মেরুদণ্ডের মতো, যা মাইক্রোপ্রসেসরকে কম্পিউটারের অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত করে। একটি কম্পিউটারে এর দুটি অংশ থাকে, একটি নর্থব্রিজ এবং অন্যটি সাউথব্রিজ। কম্পিউটারের সকল যন্ত্রাংশ এই চিপসেটের সাহায্যে CPU এর সাথে যোগাযোগ করে। চিপসেটকে কম্পিউটারের প্রাণ বলা হয়ে থাকে। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির চিপসেট পাওয়া যায়।
কম্পিউটারে বাস মানে এমন একটি উপায় যেটার মাধ্যমে যেকোনো সার্কিটের একটি উপাদান অন্যটির সাথে সংযুক্ত করা হয়। সব ধরনের বাসের গতি মেগাহার্টজ (MHz) এ পরিমাপ করা হয়। সেই বাসের ভেতর দিয়ে কত ডাটা পার হতে পারে তা এর স্পিড থেকেই জানা যায়। বাস যত ভালো হবে, তত দ্রুত এবং বেশি ডাটা ট্রান্সফার করা সম্ভব হবে। আপনার কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধি করতে হলে অবশ্যই ভালো বাস যুক্ত মাদারবোর্ড কিনতে হবে।
এক্সপানশন স্লট হল হার্ডওয়্যার যুক্ত করার অপশন, যাতে আমরা মাদারবোর্ডে অতিরিক্ত উপাদান যোগ করতে পারি। আপনাকে যদি ভবিষ্যতে আপনার সিস্টেম আপগ্রেড করতে হয় তবে আপনাকে অবশ্যই এটি সম্পর্কে জানতে এবং ভাবতে হবে। আপনার কাছে যত বেশি অতিরিক্ত স্লট থাকবে, তত বেশি উপাদান আপনি এর সাথে সংযুক্ত করতে পারবেন। বর্তমানে অতিরিক্ত স্লট এবং কানেক্টর যুক্ত মাদারবোর্ডের চাহিদা প্রচুর।
আপনি কি ভাবছেন? মাদারবোর্ড শুধুমাত্র একটি যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি, মাদারবোর্ড কি শুধুমাত্র একটি যন্ত্রের নাম? না! একদমই নয়। একটি মাদারবোর্ডকে সম্পূর্ণ শক্তিশালী এবং কার্যক্ষমতা সম্পন্ন করার জন্য অনেকগুলো সার্কিট বা যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়। একটা মাদারবোর্ডে বিভিন্ন রকম অংশ থাকে। সব অংশ মিলিয়েই একটা মাদারবোর্ড স্বয়ং সম্পন্ন হয়। আকার ব্যবহার ও গঠনের উপরে মাদারবোর্ড সাইজ নির্ভর করে। মাদারবোর্ডের প্রতিটা অংশের আলাদা আলাদা নাম ও ভিন্ন ভিন্ন কার্যকারিতা আছে। মাদারবোর্ডের বিভিন্ন অংশের নামগুলো জানা থাকলে, সহজেই মাদারবোর্ড বিভিন্ন সমস্যা নির্ধারণ করা যায়, এবং সেই সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়। নিম্নে মাদারবোর্ডের বিভিন্ন অংশের নাম গুলো দেওয়া হল।
মাদারবোর্ডের পোর্ট, নামটি অনেকের কাছেই হয়ত ঘাবড়ে ফেলার মত হয়ে গেল। হা হা হা বন্ধুরা চিন্তায় কোনো কারণ নেই, আমি আছি মানে আজ সব কিছুই জানতে পারবেন। মাদারবোর্ডের পোর্ট বলতে কানেক্টিং প্লাগ কে বোঝাই। মাদারবোর্ড এর সাথে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কে (যেমন: মনিটর, প্রিন্টার মাউস, কিবোর্ড, সাউন্ড সিস্টেম ইত্যাদি) সংযুক্ত করার জন্য বিভিন্ন রকম পোর্ট অথবা পিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একটা পোর্টের আকার আকৃতি অন্যটা থেকে সাধারণত আলাদা হয়। পোর্ট এর এই ভিন্ন ভিন্ন রকম আকৃতি দেখে, সহজেই বোঝা যায় কোনটা কোন কাজের জন্য ব্যবহার করতে হবে। নিচে বিভিন্ন রকম পোর্ট সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো।
এক্সট্রা মডেম এবং পুরোনো মাউস কানেক্ট করতে এই port ব্যবহার করা হয়।
এই port মাধ্যমে স্ক্যানার এবং প্রিন্টারকে মাদারবোর্ড এর সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয়।
যত রকম ইউএসবি ডিভাইস আছে (যেমন- মাউস, কিবোর্ড, পেনড্রাইভ, ইত্যাদি) এই পোর্ট এর মাধ্যমে কানেক্ট করা হয়।
মনিটরকে কম্পিউটারের সাথে কানেক্ট করার জন্য এই পোর্ট ব্যবহার করা হয়।
ইন্টারনেট ক্যাবল সংযুক্ত করার জন্য এই পোর্ট ব্যবহার করা হয়।
মাদারবোর্ড এ বিদ্যুৎ সাপ্লাই করার জন্য এই পোর্ট ব্যবহার করা হয়। মাদারবোর্ড সেই বিদ্যুৎ এর সাথে সংযুক্ত থাকা অন্য ডিভাইস গুলিতে পৌঁছে দেয়।
হেডফোন, মাইক্রোফোন এবং স্পিকার লাগানোর জন্য এই পোর্ট ইউজ করা হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ের মাদারবোর্ডে একাধিক এ ধরনের পোর্ট থাকে।
যেহেতু আজকের পোস্টটি আমাদের কম্পিউটারের মাদারবোর্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ হলো সেহেতু আপনাদের সকলের মনে একটি সাধারণ প্রশ্ন আসতে পারে। অনেকে এবার প্রশ্ন করতে পারেন যে, জনপ্রিয় মাদারবোর্ড কোম্পানিগুলো কোনগুলো? কোথায় থেকে মাদারবোর্ড কিনলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে অথবা আসল জিনিস পাব? এমন প্রশ্ন অনেকের মনে আছে। এই প্রশ্নটির উত্তর দিয়ে দিব। তবে বাজেটের দিক থেকে অবশ্যই ভালো এবং খারাপ দিকগুলো নিয়ে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে। বাজারে বিভিন্ন রকম মাদারবোর্ড কোম্পানি আছে। একেকটা কোম্পানি একেক রকম মাদারবোর্ড তৈরি করে থাকে। এক কোম্পানি মাদারবোর্ড থেকে অন্য কোম্পানির মাদারবোর্ডের বৈশিষ্ট্য কিছুটা ভিন্নতা থাকে। আবার কিছু কোম্পানিকে দেখা যায় এক কোম্পানি থেকে আর কোম্পানির প্রতিযোগিতামূলক কারণে কম বাজেটের মধ্যেই সার্ভিস একটু ভালো প্রদান করে থাকে।
প্রতিটা কোম্পানি কোন বিশেষ দিকে ফোকাস করে মাদারবোর্ড নির্মাণ করে। যেমন, গ্রাফিকস এর কাজের জন্য এক ধরনের মাদারবোর্ড আবার গেমার দের জন্য আরেক ধরনের মাদারবোর্ড নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে কিছু কোম্পানি মাদারবোর্ড নির্মাণের জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আপনি সেই সমস্ত জনপ্রিয় মাদারবোর্ড বিক্রেতাদের কাছ থেকে মাদারবোর্ড নিশ্চিন্তেই কিনে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনি নকল প্রোডাক্ট পাবেন না অথবা যেমন ফিচার উল্লেখ করা আছে তেমন ফিচারগুলো নেই এমন সমস্যার সম্মুখীন কখনোই হবে না। তবে ভালো জিনিসের দাম একটু বেশিই হয় এই জিনিসটি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। নিম্নে জনপ্রিয় কিছু কম্পিউটারের মাদারবোর্ড তৈরির কোম্পানির নাম উল্লেখ করা হলোঃ
উপরে বর্ণিত বিষয় গুলো বিবেচনা করে আপনি একটি মাদারবোর্ড বেছে নিতে পারেন। যে কোনো মাদারবোর্ড কেনার আগে আপনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ভালো করে জেনে এবং বুঝে নিবেন। তারপর আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী মাদারবোর্ড কিনবেন। আপনি যদি এ বিষয়গুলো বিবেচনা না করে মাদারবোর্ড ক্রয় করেন, তাহলে আপনার উপকারের চেয়ে অপকারিতাই বেশি হবে। এজন্য মাদারবোর্ড নির্বাচনের ক্ষেত্রে সব সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আর সব সময় চেষ্টা করবেন বাজেট যতই হোক একটু ভালো জিনিস নেওয়ার। তাহলে আশাকরি আপনার স্বপ্ন পূরণে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে এগিয়ে যেতে পারবেন।
মাদারবোর্ড কি এবং মাদারবোর্ড এর কার্যকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় আশা করছি আপনি নতুন অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারলেন। মাদারবোর্ড একটি কম্পিউটারের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ তা আশাকরি আপনি বুঝতে পারলেন। একটি ভালো কার্যক্ষমতা সম্পূর্ণ কম্পিউটার বানাতে হলে অবশ্যই আপনাকে ভালো কনফিগারেশন দিয়ে কম্পিউটার বানাতে হবে। আর আপনি যখন আপনার শখের কম্পিউটারের জন্য ভালো কনফিগারেশন ব্যবহার করতে চাইবেন তখন অবশ্যই আপনাকে একটি ভালো কার্যক্ষমতা সম্পূর্ণ মাদারবোর্ড বাছাই করা নিয়ে ভাবতে হবে।
কারণ মাদারবোর্ড এর কার্যক্ষমতা ভালো না থাকলে মাঝে মাঝেই আপনার কম্পিউটারে পাওয়ার অন-অফ হওয়ার সমস্যা করবে। এমন সময় দেখা যাবে কম্পিউটারে ম্যামুরি অথবা হার্ডডিস্ক লাইন পাবে না। এমনও হতে পারে কয়দিন পরপর আপনাকে উইন্ডোজ সেটয়াপ করতে হবে। এছাড়াও একটি নিম্ন মানের মাদারবোর্ড আপনার কম্পিউটার ব্যবহারের সময়টাকে একদম খারাপ করে ফেলবে৷ তাই অবশ্যই আপনাকে একটি ভালো কোয়ালিটিফুল মাদারবোর্ড বাছাই করতে হবে৷ এছাড়াও মাদারবোর্ড কি এবং মাদারবোর্ড এর কার্যকারিতা! নিয়ে আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে তা অবশ্যই টিউমেন্ট করে জানাবেন। আমি যতটা পারি আপনাদের সাহায্য করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ!
তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, মাদারবোর্ড কি এবং মাদারবোর্ড এর কার্যকারিতা! আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।
আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।