ব্লগিং কি? – ব্লগিং শুরু করার টিপস

ব্লগিং কি? - ব্লগিং শুরু করার টিপস

ব্লগিং হলো আপনার মতো মানুষদের ভাবনা প্রকাশ, জ্ঞানের আদান-প্রদান এবং অর্থ উপার্জনের এক অসাধারণ মাধ্যম। যেখানে আপনি Text Content দিয়ে গোটা বিশ্বব্যাপীর মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। আর এখন পর্যন্ত গোটা বিশ্বে মোট ব্লগ সাইটের সংখ্যা প্রায় ৬০০ মিলিয়ন এরও বেশি।

এই লেখা থেকে যা জানতে পারবেন

  1. ব্লগিং কি?
  2. কেন ব্লগিং করবেন?
  3. ব্লগিং কার জন্য?
  4. ব্লগিং শুরু করার জন্য কি কি লাগবে?
  5. ব্লগিং শুরু করার টিপস

ব্লগিং কি?

সংঙ্গাঃ অনলাইনের লেখালেখি করার মাধ্যমে নিজের চিন্তা ভাবনা প্রকাশ করার মাধ্যম কে বলা হয় ব্লগিং। যেখানে একজন ব্লগার তার মনে ভেতর থাকা অভিজ্ঞতা, মতামত ও নিজের ভাবনা গুলোকে পুরো বিশ্বের মানুষের সাথে শেয়ার করতে পারবে।

উদাহরনঃ আগের দিনের মানুষেরা নিজের ভেতরে থাকা কথা গুলো ডায়েরীতে লিপিবদ্ধ করতো। আর এখনও মানুষ সেই কাজটাই করে। তবে বদলে গেছে শুধু লেখার ধরন।

কারণ, এখন আপনি অনলাইনের ‍বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ডায়েরীর মতো করে লেখালেখি করতে পারবেন। আর সেই লেখা গুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ পড়তে পারবে।

কেন ব্লগিং করবেন?

সত্যি বলতে ব্লগিং হলো এমন এক ধরনের প্ল্যাটফর্ম যাকে আপনি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন আপনি আপনার লেখার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ব্লগিং করতে পারবেন। অর্থ উপার্জন কিংবা ব্রান্ড তৈরি করার ক্ষেত্রেও ব্লগিং করতে পারবেন।

তবে বর্তমান সময়ে মানুষ যেসব কাজে অধিকাংশ সময় ব্লগিং করছে এবার আমি সেগুলো বলবো। হতে পারে এখানে উল্লেখিত যেকোনো একটি কারণে আপনিও ব্লগিং করতে চাচ্ছেন।

০১-নিজের ব্র্যান্ড তৈরি

বর্তমান বিশ্বে বেশ কিছু জনপ্রিয় ব্রান্ড আছে। তবে তার মধ্যে অন্যতম হলো, অ্যাপল, গুগল, মাইক্রোসফট, টয়োটা, মার্সিডিজ-বেঞ্জ, BMW, Honda ইত্যাদি। কখনও কি আপনার মনে এমন ব্রান্ড তৈরি করার আশা জেগেছিলো?

যদি এমন আশা থাকে তাহলে ব্লগিং হবে আপনার জন্য উপযুক্ত একটি প্ল্যাটফর্ম। যার মাধ্যমে আপনি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কাছে নিজেকে একটি ব্রান্ড তৈরি করতে পারবেন।

০২-অর্থ উপার্জন

আপনি ব্লগিং করেও নিজের সফল ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। কারণ, আপনার আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা ব্লগিং করছে। আর ইতিমধ্যে তারা অনলাইন থেকে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে ফেলেছে। কারন, ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম আপনাকে আয় করার যথেষ্ট সুযোগ প্রদান করবে।

০৩-নিজেকে প্রকাশ করা

কেউ ভালো নাচতে জানে আবার কেউ ভালো গাইতে পারে। এখন তাদের মধ্যে যারা লেখালেখি করতে ভালোবাসে তাদের জন্য ব্লগিং এর দুয়ার সর্বদাই উন্মুক্ত। যেখানে আপনি আপনার মনের ভাবকে লেখার মাধ্যমে মানুষের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।

০৪-অডিয়্যান্স তৈরি

চলমান সময়ে ফেসবুকের মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা হলো ২.৯৬ বিলিয়ন। আর গুগলের কথা তো বাদ দিলাম কারণ বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অডিয়্যান্স এর মালিক হলো গুগল। আর ব্লগিং হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি বিলিয়ন না হলেও লাখ লাখ অডিয়্যান্স তৈরি করতে পারবেন।

ব্লগিং কার জন্য?

সব কাজ সবাইকে দিয়ে হয়না, বরং একজন মানুষ সেই কাজটি করতে পারে যেটাতে তার আগ্রহ থাকে। আর ব্লগিং এর ক্ষেত্রেও আপনি একই বিষয় লক্ষ্য করতে পারবেন। কারণ আপনারা যারা নতুন ব্যক্তি হিসেবে ব্লগিং করতে চাচ্ছেন তাদের দুইটি জিনিসের দরকার হবে। যেমন,

০১-লেখালেখি করার দক্ষতা

শুনুন, ব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি হলো টেক্সট কন্টেন্ট পাবলিশ করার প্লাটফর্ম। তাই ব্লগিং করার জন্য আপনাকে লেখালেখি তে দক্ষ হতে হবে। যে দক্ষতার মাধ্যমে আপনি সকল নিয়ম মেনে নিজের লেখা দিয়ে মানুষের সাথে বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করতে পারবেন।

০২-(টাকা, সময়) ইনভেস্টমেন্ট করার সামর্থ্য

ব্লগিং এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রয়োজনে নির্দিষ্ট অর্থ ইনভেস্ট করার দরকার হয়। যেমন, ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয়। আবার যদি আপনি অন্য কোনো রাইটারকে দিয়ে কন্টেন্ট লেখান তাহলে সেটার জন্যও আপনাকে অর্থ ব্যয় করতে হবে।

তাই ব্লগিং করলে আপনার মধ্যে ইনভেস্ট করার মতো সামর্থ্য থাকতে হবে। আর টাকার পাশাপাশি আপনার হাতে ব্লগিং করার জন্য প্রচুর সময় থাকতে হবে। কারণ, ব্লগিং আজকেই শুরু করে কাল থেকেই লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন না।

কারণ, ব্লগিং হলো এমন এক ধরনের প্ল্যাটফর্ম যেখানে সবকাজ খুব ধীর গতিতে ধৈর্য্য নিয়ে করতে হয়। তাই একজন সফল ব্লগার হওয়ার জন্যও আপনাকেও এই ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।

ব্লগিং শুরু করার জন্য কি কি লাগবে?

নতুন ব্যক্তিদের কাছে ব্লগিং বিষয়টা অনেক কঠিন মনে হতে পারে। তবে যখন আপনি সম্পূর্ণ নতুন ভাবে ব্লগিং শুরু করবেন তখন আপনার যা দরকার হবে সেগুলো হলো,

  1. ডোমেইন,
  2. হোস্টিং,
  3. থিম,
  4. প্লাইগইন,
  5. কন্টেন্ট,

প্রাথমিক ভাবে উপরের এই জিনিস গুলো দিয়ে আপনি ব্লগিং এর যাত্রা করতে পারবেন। তবে পরবর্তী সময়ে কখন কি করতে হবে সেটা অবশ্যই আপনাকে ব্লগিং গাইডলাইন ফলো করতে হবে।

ব্লগিং শুরু করার টিপস

যেহুতু আপনি আমার ব্লগে এসেছেন সেহুতু এবার আমি আপনাকে ব্লগিং শুরু করার টিপস দিবো। যে গুলো আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার গড়তে অনেক হেল্পফুল হবে। যেমন,

  1. আপনার যে বিষয়ে আগ্রহ বেশি সেই বিষয়ে ব্লগ কন্টেন্ট লিখুন।
  2. ব্লগে অবশ্যই নিয়মিত লেখা প্রকাশ করবেন।
  3. SEO (Search Engine Optimization) শিখুন।
  4. সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ব্লগটির প্রচার করবেন।
  5. অন্যান্য অভিজ্ঞ/নতুন ব্লগারদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
  6. ধৈর্য ধরে নিয়মিত কাজ করবেন।

ব্লগিং করার জন্য অবশ্যই আপনার মধ্যে ধৈর্য্য থাকতে হবে। আর যদি আপনি একবার ব্লগিংকে বুঝতে পারেন তাহলে এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার পথ উন্মুক্ত হয়ে যাবে।

ব্লগিং করে অর্থ উপার্জনের উপায়

ব্লগিং করার মূল উদ্দেশ্যে যদি অর্থ উপার্জন করা হয় তাহলে ব্লগিং হবে আপনার জন্য উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম। কারণ, এই ব্লগিং সেক্টরে আপনি বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। আর বর্তমান ব্লগাররা যেসব উপায়ে সবচেয়ে বেশি ইনকাম করে সেগুলো হলো,

  1. মনিটাইজেশন /বিজ্ঞাপণ,
  2. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং,
  3. নিজস্ব পণ্য বা সেবা বিক্রি,
  4. স্পন্সারড কন্টেন্ট,
  5. পেইড প্রোমোশন,

যদিওবা অধিকাংশ মানুষ ব্লগিং থেকে মনিটাইজ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করে। তবে আপনি চাইলে আপনার পছন্দমতো উপায়ে ব্লগ থেকে আয় করতে পারবেন।

সফল ব্লগার হওয়ার গুনাবলি

  • ভালো লেখার দক্ষতা,
  • সৃজনশীলতা,
  • ধৈর্য এবং অধ্যবসায়,
  • প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান,
  • SEO সম্পর্কে জ্ঞান,

পরিশেষে লেখকের কিছুকথা

প্রিয় পাঠক, গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিকেলে আমি আপনাকে ব্লগিং শুরু করার প্রাথমিক ধারনা প্রদান করেছি। তো আপনি যদি ব্লগ সম্পর্কে আরো নতুন তথ্য পেতে চান তাহলে নিচে টিউমেন্ট করবেন। আর এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Level 0

আমি নিরঞ্জন রায়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 মাস 1 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস