ইন্টারনেটের ব্যবহারের বিভিন্ন ক্ষেত্র

ইন্টারনেট হলো কম্পিউটারের একটি আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্ক। আমাদের জীবনযাপন, কাজ এবং যোগাযোগের পদ্ধতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে এটি। সূচনা থেকেই ইন্টারনেট তার তথ্য ভান্ডার প্রসারিত করেছে, চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের প্রচুর তথ্য সরবরাহ করে চলছে। এই প্রবন্ধে, যেভাবে ইন্টারনেট বিশ্বকে বদলে দিয়েছে তার কয়েকটি ক্ষেত্র নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

যোগাযোগ এবং সামাজিক নেটওয়ার্কিং:

ইন্টারনেট যোগাযোগকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটিকে দ্রুত এবং আরও আরামদায়ক করে তুলেছে। Facebook, Twitter, এবং Instagram এর মতো সামাজিক নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মগুলি মানুষকে বিশ্বব্যাপী অন্যদের সাথে যোগাযোগ করতে, সুখ-দুঃখ ভাগ করতে এবং সহযোগিতা করতে সক্ষম করে তুলেছে। ম্যাসেজিং, ইমেইল এবং ভিডিও কনফারেন্সিং ইত্যাদি অ্যাপ্লিকেশনগুলি ভৌগলিক সীমানাকে সেতুর ন্যায় করেছে।

ই-কমার্স এবং অনলাইন শপিং:

ইন্টারনেটের উন্নতির সাথে সাথে, আমরা যেভাবে কেনাকাটা করি তা একটি গুরুতর রূপান্তর ঘটেছে। Amazon, eBay, Alibaba এবং Daraz এর মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির জন্য খুচরা শিল্পে এক বিশাল বিপ্লব ঘটেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য একটি সুবিধাজনক এবং বিশ্বব্যাপী বাজার সৃষ্টিতে এসব প্ল্যাটফর্মগুলির অবদান অনেক। এখন মানুষ ঘরে বসেই যে কোনো পণ্য অর্ডার করতে পারে।

শিক্ষা এবং ই-লার্নিং:

ইন্টারনেট শিক্ষার নতুন পথ খুলে দিয়েছে। এখন বিভিন্ন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। যেমন Coursera, Khan academy এবং Udemy ইত্যাদি। এগুলোর অবদানে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই বিভিন্ন কোর্স করতে পারছে। বিভিন্ন শিক্ষকের অনলাইন ক্লাস করতে পারছে। আমরা জানি বই মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়া যায়। আবার যে কেউ চাইলে পাঠ্যপুস্তকের PDF বই ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারে।

তথ্য ও গবেষণা:

ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্যের প্রাপ্তি অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখন যে কেউ চাইলে Google এর মতো সার্চ ইঞ্জিনগুলিতে সার্চ দিয়ে তথ্য পেতে পারে।  গবেষণার ক্ষেত্রেও ইন্টারনেটে এনেছে এক বিশাল পরিবর্তন। ভার্চুয়াল ল্যাবরেটরির মাধ্যমে যে কোনো গবেষক দূর থেকেই তার গবেষণা চালিয়ে যেতে পারে। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, গণিত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা এখন আগের থেকে অনেক সহজ।

বিনোদন এবং মিডিয়া:

ইন্টারনেট বিনোদন এবং মিডিয়া ব্যবহারের জন্য একটি কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ফেইসবুক, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলি চাহিদা অনুযায়ী মুভি, টিভি শো, সঙ্গীত এবং বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করে। অনলাইন গেমিং বর্তমানে গেমিং এর একটি উন্নত রূপ। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের প্লেয়াররা একসাথে গেম খেলার মজা নিতে পারে। সারা বিশ্বের খবরাখবর মুহূর্তেই ইন্টারনেটে পাওয়া যায়।

স্বাস্থ্যসেবা এবং টেলিমেডিসিন:

ইন্টারনেট টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতি এখন নতুন মাত্রার পর্যায়ে। রোগীরা ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবহার করে দূর থেকে ডাক্তারদের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। এমন কি ডাক্তাররা দূর থেকেই অপারেশন পরিচালনা করতে পারেন।

ভ্রমণ এবং পর্যটন:

ইন্টারনেট ভ্রমণ পরিকল্পনা এবং বুকিংয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। Expedia, Booking.com, এবং TripAdvisor-এর মতো ওয়েবসাইটগুলি ফ্লাইট, হোটেল খোঁজা এবং বুকিং করার জন্য ব্যবহৃত হয়। অনলাইন ভ্রমণ নির্দেশিকা ভ্রমণকে আরও সহজ করে তোলে। তাছাড়া ম্যাপ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট স্থানে যেতে এখন আর খুব একটা সমস্যা হয় না।

সরকারি সেবা:

রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো সরকার। তাই সরকারি সেবা একটি দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষায় রাখে না। ইন্টারনেটের অবদানে সরকারী সেবা নাগরিকের দোর গোড়ায় পৌঁছে গেছে। ই-পর্চা, ই-পুঁজি, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকরণ, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি সেবা নাগরিকগণ ঘরে বসে পাচ্ছে। যেখানে অনেক সরকারি সেবা পেতে বহু দিন লাগতো এখন সেখানে কিছু দিন বা ঘন্টায় পাওয়া যাচ্ছে।

কাজেই বলা যায় যে, ইন্টারনেট ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন রনেছে। ইন্টারনেট যেমন দিন দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে, তেমনি এর ব্যবহারও ক্রমেই বহুগুণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইন্টারনেট ছাড়া একটি দিনও কল্পনা করা কঠিন। ইন্টারনেটের কিছু অপকারও রয়েছে। তবে অপকারের চেয়ে উপকারই বেশি। তাই বলা যায় ইন্টারনেট বর্তমান প্রযুক্তির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

Level 0

আমি ফারহান শাহরিয়ার জিম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস