কিভাবে একটি ছোট্ট ব্যাবসাকে বড়ো করবেন

Level 4
Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর

আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস এর নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। তো বন্ধুরা গত টিউনে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম সেরা ৩ টি লাভজনক ব্যাবসা আইডিয়া। আজ সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই নতুন আরো একটি টিউন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আজ আমরা গত টিউনের ধারাবাহিকতায় আজকে আলোচনা করবো কিভাবে একটি ছোট ব্যাবসাকে বড়ো করা যায়। কিভাবে গত টিউনের ব্যাবসা গুলোতে মেহনত করবেন আর কিভাবে সেই ব্যাবসা গুলো ছোট্ট থেকে বড়ো করবেন।

জিবনের নতুন অধ্যায় লিখতে ব্যাবসার বিকল্প কিন্তু কিছুই নেই। আপনি চাইলেই সামান্য পরিমান বা আপনার ইচ্ছামতো টাকা ইনভেস্ট করে একটি ছোট্ট থেকে বড়ো সাইজের ব্যাবসা দিতে পারবেন। ব্যাবসা করে যেরকম স্বাধিনতা পাবেন চাকরিতে তার ১% স্বাধিনতাও পাবেন না। তাই আজকাল সবার কাছে ব্যাবসা করা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

গত টিউনে যেহেতু আমি আপনাদের সেরা ৩ টি লাভজনক ব্যাবসা আইডিয়া সম্পর্কে বলেছিলাম সেই ধারাবাহিকতায় আজ যদি আপনাদের সেই ছোট ব্যাবসাকে বড়ো করার কিছু টেকনিক না বলি তাহলে তো আপনারাও বলবেন যে ভাই শুধু গর্তে ফেলে রেখে গেলো তুললো না। আপনারা যাতে এই কথা না বলতে পারেন তাই জন্যই আজকের এর টিউন।

তো আমরা প্রথমেই জানবো ব্যাবসার ক্ষেত্রে কেমন স্থান নির্বাচন করা উচিত। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে কাজের কথা আসা যাক।

১. ব্যাবসার স্থান নির্বাচন

ব্যাবসা ছোট্ট থেকে বড়ো করতে চাইলে ব্যাবসার সঠিক স্থান নির্বাচন এর বিকল্প আর কিছুই নেই। কারন আপনার ব্যাবসা স্থানটি যদি সঠিক স্থান না হয় তাহলে সেখানে অর্থ বিনিয়োগ করে লাভের থেকে লসের সংখ্যায় অনেক বেশি হবে। আপনার ব্যাবসা টি ঠিক কেমন টাইপের হবে সেই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আপনাকে স্থান নির্বাচন করতে হবে। তো যেমনঃ আপনি কসমেটিকস এর দোকান দিবেন সেক্ষত্রে আপনাকে রাস্থার সাথেই দোকানের ব্যাবস্থা করা উত্তম যাতে আপনার দোকান টি সহজেই সবার চোখে পড়ে। এতে আপনার দোকানের কেনা বেচার চাহিদা অনেক গুন বেরে যাবে ফলে আপনার ব্যাবসার লাভের পরিমান ও অনেক অংশে বেরে যাবে। তাই বলতেই হয় ব্যাবসা ছোট থেকে বড়ো করার উদ্দেশ্য আপনাকে অবশ্যই একটি সঠিক স্থান নির্বাচন করতে হবে।

২. সুন্দর ব্যবহার ও এলাকায় পরিচিতি লাভ

আপনি যদি একজন ব্যাবসায়ি হন তাহলে অবশ্যই আপনাকে সুন্দর ও মার্জনীয় ব্যবহারের অধিকারী হতে হবে। ককর্ষ ব্যবহারের লোকদের আমরা সবাই কম বেশি অপছন্দ করি। কারন কর্কষ ব্যবহারের ব্যক্তিগন কাষ্টমারের সাথে ভালো আচরন করতে পারে না। নিজেদের মাইন্ড কন্ট্রোল করতে পারে না। আপনার ব্যাবসার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন মিষ্টিভাষি সম্পুর্ন ব্যক্তি হতে হবে। এতে করে কাষ্টমারের আপনার দোকানের প্রতি চাহিদা দ্বিগুন বেরে যাবে।

এছাড়াও আপনি যদি একজন ব্যাবসায়ী হন আর যদি নতুন ছোট্ট খাট ব্যাবসা ধরে থাকেন তাহলে আপনি যতো দ্রুত চেষ্টা করুন আপনার পরিচিতি বারানোর। আপনার ব্যাবসা নিয়ে অপরিচিত লোক থেকে শুরু করে পরিচিত লোক সবার মাঝে আপনার ব্যাবসার আলোচনা প্রায় ই তুলে ধরুন। এছাড়াও রাস্তা ঘাটে কাউকে দেখা পেলে তাকে প্রথম প্রথম একটু সম্মান করুন। আপনি আগে সালাম দিন। আপনার প্রতি হাজারো মানুষের আন্তরিকতা বারান। এতে আপনার ব্যাবসার বিক্রি এবং কাষ্টমারের সংখ্যা কয়েকগুনে বাড়িয়ে তুলবে।

৩. বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ❞ এমন কথা কম ও না আবার খুব বেশিও না। মাঝা মাঝি রাখবেন। মনে রাখবেন বাকি ছাড়া কিন্তু ব্যাবসা চলে না। তাই বলে শুধু বাকিই দিবেন এমন কখনোই করবেন না। শেষে নিজের সম্বল টুকুও হারাবেন। তাই সাবধান। বাকি দিবেন তবে সামান্য। এমন লোককে বাকি দিন যার সমাজে একটা সম্মান আছে। সম্মান হারানোর ভয়ে আপনার বাকি টাকা বেশি ঘোড়াবে না। এমন লোককে কখনোই বাকি দিবেন না যার সমাজে কোন সম্মান নাই। ❝ বিদ্রঃ গরীব লোকদের এর বিষয় আলাদা ❞ আর আপনার অরজিনাল বা ইনভেষ্ট কৃত টাকা সবসময় সঠিক হিসাবে রাখবেন। এক্ষেত্রে যদি এক টাকাও বাকি থাকে সেটাও চাইতে দ্বিধা করবেন না। মনে রাখবেন এক টাকা আপনার মানে আপনার নিজের। এক গলা মাটি সারাদিন কাটলেও এক টাকা পাবেন না। সেজন্যই আপনার এক টাকা মানে আপনার এক টাকা।

৪. অপ্রয়োজনীয় খরচ

ব্যাবসার ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় খরচ পরিহার করতে হবে। যতোটা পারবেন টাকা সেভ করবেন। শুধুমাত্র যেটুকু প্র‍য়োজন সেটুকুই কেনার চেস্টার করবেন। বারতি জিনিস কিনে টাকা লোকসান করবেন না। এছাড়া ব্যাবসার টাকা দিয়ে আপমার নিজের ব্যক্তিগত বাজে কোন অভ্যাসে টাকা নষ্ট করবেন না। যেমনঃ ধরুন আপনি মদ খেতে ভালোবাসেন। ব্যাবসার টাকা এই রকম বাজে অভ্যাসে নষ্ট করবেন না। শেষে মাস বা সপ্তাহ পর দেখবেন ব্যাবসায় আপনার নিজের মুনাফা টাও কমে গেছে। এতে দিন দিন আপনার ব্যাবসায় ধস নেমে আসবে। তাই আপনার ব্যাবসার টাকা সেটা এক টাকা হলেও অপ্রয়োজনীয় ভাবে খরচ করবেন না। খুব হিসাব করে টাকা খরচ করবেন। তবেই নিজের ব্যাবসায় সফলতা ফিরে পাবেন এবং ইনশাআল্লাহ আস্তে আস্তে ব্যাবসা বড়ো হতে থাকবে।

৫. কাষ্টমারের সাথে ভালো আচরন

ব্যাবসা ও বিক্রি বারানোর সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো কাষ্টমারের সাথে ভালো আচরন করা। কথায় আছে খদ্দের দোকানের লক্ষি। তাই খদ্দের এর সাথে কখনো খারাপ আচরনে কথা বলবেন না। মনে রাখবেন সব কাষ্টমার কিন্তু ভালো মনের হয় না। অনেক কাষ্টমার আপনাকে রাগানোর মতো কথা বলবে। উল্টাপাল্টা কথা বলবে কিন্তু ভুলেও আপনি রেগে যাবেন না। মনে রাখবেন আপনি রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। ধৈর্য ধরে কাষ্টমার কে সামলান। কাষ্টমার কে বুজান যে আপনার পন্য কোয়ালিটি ভালো। সেটা নিলে তিনি ঠকবেন না। এই কথাগুলো সুন্দর পরিমার্জিত ভাষায় বুজান। তবেই কাষ্টমার আপনার প্রতি বিনয় হবে। তখন আপনার ব্যবহার এর প্রতি তারা আকৃষ্ট হয়ে যাবে। আশে পাশের দোকান বাদে প্রায় সবাই আপনার দোকানে আসতে চাইবে আপনার পন্য নিতে চাইবে। কাষ্টমারের সাথে ভালো আচরন আপনার ব্যাবসাকে চূরান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবে।

৬. কাষ্টমারের পন্য চাহিদা

নিজের ছোট্ট ব্যাবসাকে বড়ো করার লক্ষ থাকলে পন্য চাহিদার উপর গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আপনি যেখানে যে জিনিস নিয়ে ব্যাবসা করেন সেই জিনিস এর প্রতি আশে পাশের লোকজন বা পাড়া প্রতিবেশির চাহিদা কেমন সেদিকে খুব কঠোর ভাবে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ আপনি আপনার দোকানে বা ব্যাবসায় এমন পণ্য আনলেন যেই পণ্য আপনার কাষ্টমারের চাহিদা একদম কম সেই পন্য আপনার মূনাফার লসের পরিমান বেশি করবে। আপনার মুনাফা ফেলে রাখবে। আপনি ব্যাবসা করবেন মুনাফা ফেলে রাখবেন না। তাই এমন সব পণ্য আপনাকে বাছাই করে নিতে হবে যেগুলোর চাহিদা আপনার এলাকায় বেশি অথবা বেশি মানুষ কিনতে চাচ্ছে এমন সব পন্যর দিকে বেশি মনোযোগ দিন। এতে আপনার ব্যাবসার বিক্রির পরিমান অনেক অংশে বেরে যাবে। আর ব্যাবসায় বিক্রি বেশি হলে ইনশাআল্লাহ অল্প দিনেই ছোট ব্যাবসাকে বড়োতে পরিনত করা যাবে। তাই ছোট ব্যাবসাকে বড়ো করার চেষ্টায় কাষ্টমারের পন্য চাহিদার উপর করা লক্ষ রাখার বিকল্প একদম নাই।

৭. সততা নিয়ে ব্যাবসা

কথায় আছে সততাই ব্যাবসার মূলধন। আপনি যাই করেন আপনার ব্যাবসায় অবশ্যই সততা থাকতে হবে। এতে আপনার ব্যাবসা দিন দিন এম্নেই উচ্চ লেভেলে পৌছে যাবে। মনে করুন আপনি আপনার কাষ্টমারকে ওজনে কম দেন। সেটি সেই কাষ্টমার জানতে পারলো তারপর সেই কাষ্টমার অন্য একজন কে বললো। অন্যজন আবার আরেকজন কে বললো, এইভাবে পুরো এলাকা জানাজানি হলো যে আপনি পণ্য ওজনে কম দেন। লোক ঠকান, তারপর দেখবেন আপনার দোকান থেকে কিন্তু কেউ কিছু কিনতে চাইবে না। সবাই আপনাকে খারাপ চোখে দেখবে। কেউ সম্মান করবে না। সবাই আপনাকে ছোট চোখে দেখবে। কিন্তু আপনি যদি সততা নিয়ে ব্যাবসা করেন মিথ্যা না বলেন কাউকে ওজনে না দেন তাহলে আপনার এমন চরিত্রে সবাই মুগ্ধ হয়ে যাবে। তারপর আর আপনাকে কাষ্টমার খুজতে হবে না। কাষ্টমার রাই আপনার দোকান খুঁজে বের করে পণ্য কিনে নিবেন। ছোট্ট ব্যাবসাকে বড়ো করার লক্ষে সততা নিয়ে ব্যাবসা করে এর থেকে বড়ো সম্মান আপনি আর কোথাও পাবেন না।

তো বন্ধুরা এই ছিলো আমাদের আজকের টিউন কিভাবে একটি ছোট্ট ব্যাবসাকে বড়ো করা যায়। আশাকরি টিউন টি আপনাদের ভালো লেগেছে। প্রতিদিন টেকনোলজি বিষয়ক নতুন নতুন টিপস এন্ড ট্রিক নিয়ে আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইটে TrickNew দেখা হবে পরবর্তী টিউনে, নতুন কোন বিষয়ে। ততোক্ষন সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর টেকটিউনস এর সাথে থাকবেন। ধনাবাদ।

Level 4

আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 39 টি টিউন ও 28 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস