পৃথিবীর অনিন্দ্য সুন্দর প্রানীর মধ্যে অন্যতম একটি প্রজাপতি

পৃথিবীতে থাকা অনিন্দ্য সুন্দর প্রানী গুলোর মধ্যে প্রজাপতি অন্যতম। ফুলে ফুলে উড়ে বেড়ানো এই পতঙ্গটি প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুনে। আমাদের চারপাশের পরিবেশে থাকা ঘাস, ফুল ও ছোট ছোট গাছের ডালে পুরো বছর জুড়েই এদের দেখা পাওয়া যায়। পৃথিবীতে প্রায় ১৮ হাজার প্রজাতির প্রজাপতি আছে। প্রজাতি ভেদে ভিন্নতা রয়েছে এদের ডানার রং এবং গায়ের আকারের।

পতঙ্গটির দেহকাণ্ডের মধ্যে দুই জোড়া ডানা ও তিন জোড়া খণ্ড খণ্ড পা আছে। খাবার খোঁজার ব্যাপারে এই পায়ের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। মানুষের খাবারের স্বাদ গ্রহনের রিসেপ্টর জিহ্বাতে থাকলেও প্রজাপতির এই রিসেপ্টর থাকে পায়ে। তাই তারা পায়ের মাধ্যমেই খাবারের স্বাদ নেয়। এছাড়াও নারী প্রজাপতির ডিম পাড়ার ক্ষেত্রে পা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। প্রজনন মৌসুমে তারা এক গাছ থেকে অন্য গাছে উড়ে বেড়ায় এবং পা দিয়ে গাছের নির্দিষ্ট অংশে আঘাত করতে থাকে। এরপর সেখান থেকে নিসৃত রস পায়ে থাকা কেমোরিসেপ্টরের মাধ্যমে পরীক্ষা করে। ফলাফল ইতিবাচক হলে তবেই সেখানে ডিম দেয় তারা। এভাবেই পতঙ্গটি পায়ের মাধ্যমে আদর্শ খাবার বা ডিম দেওয়ার জায়গা খুঁজে বেড়ায়। তবে প্রজাপতি ছাড়াও ঝিঁঝিঁ পোকা এবং পঙ্গপালের পায়েও একই ধরনের রিসেপ্টর বিদ্যমান।

মজার ব্যপার হলো প্রজাপতির লার্ভা বা ক্যাটারপিলার শক্ত খাবার খেতে পারলেও পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতি শুধুমাত্র তরল খাবার গ্রহন করে। কারন লার্ভা অবস্থায় চিবানোর জন্য ম্যান্ডিবল থাকলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে সেটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। তাই চাবানোর ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে।
এদের মূল খাবার হলো ফুলের মধু। নরম ফল বা গাছ থেকেও খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে। মুখে থাকা নলের মতো শুঁড় দিয়ে এসব তরল খাবার গ্রহণ করে। এর বাইরেও গরমকালে কর্দমাক্ত ডোবা এবং ভেজা বালি থেকে পানি পান করতে দেখা যায়। যা তাদের দেহের খনিজ লবণের চাহিদা পূরন করে। এই বৈশিষ্ট্যটি পুরুষ প্রজাপতির মধ্যে বেশি দেখা যায়। ধারণা করা হয় এই পানি তাদের যৌন সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

প্রজাপতি শীতল রক্ত বিশিষ্ট প্রানী হওয়ায় এদের জীবন চক্রের উপর আশেপাশের পরিবেশ অনেক প্রভাব ফেলে।
অতিরিক্ত ঠান্ডায় এরা উড়তে পারে না। ৮০-১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রাকে প্রজাপতির জন্য আদর্শ মনে করা হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডায় এরা গাছপালা ও পাথরের উপর আশ্রয় নেয়। এই সময়ে তারা শিকারের সহজ লক্ষ্যে পরিণত হয়। প্রজাপতির দৃষ্টিশক্তি খুব ক্ষীন। এরা ১০-১২ ফুটের বেশি দূরত্বে থাকা কোন জিনিস খুব ভালো ভাবে দেখতে পারে না। তবে মানুষ দেখতে পারেনা এমন আল্ট্রা ভায়োলেট রে দেখার সক্ষমতা রয়েছে তাদের।

শিকারীর হাত থেকে বাচতে প্রজাপতির সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছদ্মবেশ। আত্মরক্ষার জন্য এরা ডানার রং ও নকশার সাথে মিলিয়ে আশ্রয়স্থল খুঁজে সেখানে লুকিয়ে পড়ে।
অত্যন্ত সুন্দর এসব প্রজাপতির জীবনকাল খুবই অল্প। একটি পূর্ন বয়স্ক প্রজাপতি মাত্র ১ থেকে ২ সপ্তাহ বেচে থাকে। তবে অল্প কিছু প্রজাপতি রয়েছে, যাদের জীবনকাল আরো দীর্ঘ হয়ে থাকে। এদের জীবনচক্রে ডিম, লার্ভা, পিউপা, এবং পূর্নাঙ্গ প্রজাপতি এই চারটি ধাপ রয়েছে।

Level 0

আমি মোঃসাখাওয়াৎ স্মরণ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস