কাহিনী-২

সজীব শহরে আসলো ওর বাবার সাথে। এসেই কলেজের সব ভর্তির কাজ সেরে ওরা চললো হোস্টেলের দিকে। হোস্টেল কলেজের চেয়ে একটু দূরে, কলেজ থেকে হোস্টেলে যেতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় লাগে। হোস্টেলের একজন প্রধান আছে  মানে সুপারভাইজার যিনি হোস্টেলের সবকিছু নিজের তদারকিতে রাখেন। অনেক নিয়ম-কানুন যেমন: ধূমপান করা নিষেধ, সকালে ভোরে উঠতে হবে, রাতে ১০ টার মধ্যে হোস্টেলে ফিরে আসতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আর এইসব নিয়মের জন্যই বাবা-মা তাদের সন্তানদের সৎ পথে রাখার কথা ভেবে এই হোস্টেলটা বেঁছে নিয়েছে। হোস্টেলে ভর্তির কাজ শেষ করার পর সজীবের বাবা চলে গেল। ওর একটু কষ্ট হলো কিন্তু কষ্টের চেয়ে আনন্দের পরিমাণটাই বেশি। ও ওর রুমে গেল। ওখানে আরো ২জন ছেলে আছে, ওর সমবয়সী। এক রুমে ৩জন। খাবার হোস্টেল থেকেই দেবে তাই তার জন্য এক্সট্রা টাকা দিতে হয়। সজীবের রুমটা ভালোই বড়, এক পাশে একটা বড় জানালা আছে আর রুমের মধ্যে দুইটা খাট। রুমে এখন কেউ নেই। সজীব ওর জিনিসপত্র গোছাচ্ছে, একটা ছোটরকমের খাট, টেবিল আর অনেকগুলো বই-খাতা মানে পড়াশোনার সরঞ্জাম। একটু পরেই একটি ছেলে এসে রুমে ঢুকেই বিছানাতে শুয়ে পড়লো।
ছেলে : ওহ নতুন তুমিই এখানে এসেছ?
সজীব : হুম, আমি সজীব। তোমার নাম কি?
ছেলে : আমি রাব্বি।
এইভাবে কথা বলতে বলতে জানা গেল রাব্বি অনেক বড়লোক পরিবারের ছেলে। ওর বাবা একজন বড় অফিসার, ওর মা নেই। শুধু একটা বড় বোন আছে রিমা, ওদের ১ বছরের সিনিয়র। আর রাব্বি বলল এখানে আরেকটা ছেলে থাকে নাম সাকিব। সাকিবের সাথে কারো বন্ধুত্ব নেই, ও নিজের মতো থাকে কারো সাথে কথা বলে না আর সবসময় নিজেকে সবার থেকে আড়াল করে রাখে। সব মিলিয়ে এই নতুন পরিবেশে সজীবের ভালই লাগছে। আগামীকাল প্রথম কলেজে যাবে, অনুভূতিটাই আলাদা। অনেক ভালো লাগছে ওর। এখানে ওর পরিচিত  কেউ নেই, মাঝে মাঝে অনেক একা লাগে।
পরের দিন সজীব কলেজে চলল রাব্বির সাথে। হোস্টেল থেকে বেরিয়ে বড় রাস্তা দিয়ে হাঁটা শুরু করল ওরা। ৫মিনিট হাঁটার পর সামনে একটা ব্রিজের সামনে এলো ওরা। ব্রিজের একধারে সাকিব বসে থেকে ডায়েরিতে কি যেন লিখছে।
রাব্বি : সাকিব প্রতিদিন এইভাবে এইখানে বসে কবিতা লেখে।
সজীব: প্রতিদিনই? অন্য কোথাও যায় না? ক্লাসে বসেই তো লিখতে পারে।
রাব্বি : ক্লাসে অনেক ঝামেলা, সবাই এসে ওর কবিতা শুনতে চায়।
সজীব: কবিতা তো অন্যকে শোনানোর জন্যই তো লেখা হয়, তাইনা?
রাব্বি : তা ঠিক। কিন্তু ও নিজের কবিতা নিজের কাছেই রাখে, কারো সাথে শেয়ার করে না।
সজীব: তাহলে তো একে বলা যায় পাঠকবিহীন কবি!

কলেজে গিয়ে আরো অনেকের সাথে পরিচিত হলো সজীব। বিশাল বড় কলেজের মাঠ। একদিকে ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে, আরেকদিকে ফুটবল আর অন্য আরেকদিনে ব্যাডমিন্টন খেলার জায়গা। সবার হাতেই ফোন। সজীবকেও ওর বাবা ফোন কিনে দিয়েছে আসার সময়, সাথে একটা সিম কার্ড আর মেমোরিও দিয়েছে কিন্তু কলেজে ফোন নিয়ে আসা যাবে না। যারা স্নাতক পড়ছে তাদের ফোন নিয়ে আসার অনুমতি আছে।

Level 1

আমি মোছাঃ মাহিয়া খাতুন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস