অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের জন্য কিভাবে আবেদন করবেন এবং কি কি লাগবে

জন্ম নিবন্ধন হলো একজন মানুষের প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। একটি জরিপ থেকে জানা গেছে, আমাদের দেশে বর্তমানে ১৬ কোটি জনগণের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা হয়েছে ১৫ কোটি মানুষের। অর্থাৎ এখনও প্রায় এক কোটি মানুষের এটি করা হয়নি। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা ও সতর্ক হওয়া প্রত্যেক নাগরিকের জন্য একান্ত জরুরী।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন প্রক্রিয়াঃ-

জন্ম নিবন্ধনের নির্ধারিত আবেদন ফরম (ছাপানো বা হাতে লিখা হলেও চলবে) পূরণ করে নিবন্ধকের নিকট কিছু দলিল বা প্রত্যয়নসহ গিয়ে আবেদন করতে হবে। এছাড়া অনলাইনে আবেদন করা যাবে।

যা যা লাগবেঃ- (নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির বয়স পাঁচ বছরের মধ্যে হলে)-

তথ্য সংগ্রহকারীর প্রত্যয়ন। অথবা, ইপিআই কার্ডের সত্যায়িত অনুলিপি। অথবা, সংশ্লিস্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বা উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত জন্ম সংক্রান্ত সনদের সত্যায়িত অনুলিপি। অথবা, নিবন্ধক যেরূপ প্রয়োজন মনে করেন জন্ম সংক্রান্ত সেরূপ অন্য কোন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি। অথবা, তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে নিবন্ধক কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোনো এনজিও কর্মীর প্রত্যয়ন। (নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির বয়স পাঁচ বছরের বেশি হলে)- বয়স প্রমাণের জন্য এমবিবিএস ডাক্তারের এবং জন্মস্থান বা স্থায়ীভাবে বসবাসের স্থান প্রমাণের জন্য সংশ্লিস্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর/সদস্যের প্রত্যয়ন। অথবা, বয়স ও জন্মস্থান প্রমাণের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে সংশ্লিস্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক বা তৎকর্তৃক মনোনীত শিক্ষক বা কর্মকর্তার প্রত্যয়ন। অথবা, বয়স ও জন্মস্থান প্রমাণের জন্য ইপিআই কার্ড বা পাসপোর্ট বা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা কোনো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের জন্ম সংক্রান্ত ছাড়পত্র বা উক্ত প্রতিষ্ঠান হইতে প্রাপ্ত জন্ম সংক্রান্ত সনদের সত্যায়িত অনুলিপি। অথবা, নিবন্ধক যেরূপ প্রয়োজন মনে করেন জন্ম সংক্রান্ত সেরূপ অন্য কোন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি। অথবা, তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে নিবন্ধক কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোন এনজিও কর্মীর প্রত্যয়ন। জন্ম তথ্য প্রদানকারী কারাঃ- শিশুর পিতা বা মাতা বা অভিভাবক শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের নিকট প্রদানের জন্য দায়ী থাকবেন। এছাড়া যারা কোনো ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রেরণ করতে পারবেন: ১) ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং সচিব; ২) গ্রাম পুলিশ; ৩) সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার কাউন্সিলর; ৪) ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন অথবা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিবার কল্যাণকর্মী; ৫) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেক্টরে নিয়োজিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) মাঠকর্মী; ৬) কোনো সরকারী বা বেসরকারী হাসপাতাল বা ক্লিনিক বা মাতৃসদন বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে জন্মগ্রহণের ক্ষেত্রে উহার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার অথবা ডাক্তার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা; ৭) নিবন্ধক কর্তৃক নিয়োজিত অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী; ৮) জেলখানায় জন্মের ক্ষেত্রে জেল সুপার বা জেলার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি; ৯) পরিত্যক্ত শিশুর ক্ষেত্রে সংশ্লিস্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা; নির্ধারিত অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। জন্ম নিবন্ধন কোথায় করবেনঃ- ব্যক্তির জন্মস্থান বা স্থায়ী ঠিকানা বা বর্তমানে বসবাস করছেন এমন যেকোনো স্থানের নিবন্ধকের কাছে জন্ম নিবন্ধন করানো যাবে। জন্ম নিবন্ধনের জন্য যারা নিবন্ধক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন: ১) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা সদস্য; ২) পৌরসভার মেয়র বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কাউন্সিলর; ৩) সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা কাউন্সিলর; ৪) ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা; ও ৫) বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা। অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়াঃ- অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে হলে http://bris.lgd.gov.bd/pub/?pg=application_form এই লিংকে গিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে। আপনার এলাকা কোন জোন ও কোন ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত তা জানতে এই লিংক থেকে পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারেন: http://br.lgd.gov.bd/files/Dhaka%20city%20zonal%20office.pdf বিভাগ, জেলা প্রভৃতি ধাপ পার হয়ে ওয়ার্ড পর্যন্ত নির্বাচন করার পর স্ক্রিনে একটি অনলাইন ফরম আসবে। অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফরম প্রথমে বাংলায় (ইউনিকোড) ও পরবর্তীতে ইংরেজিতে পূরণের পর প্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করতে হবে। সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করলেই আবেদন পত্রটি সংশ্লিস্ট নিবন্ধক কার্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়ে যাবে, আবেদনকারীর আর কোনো সংশোধনের সুযোগ থাকবে না। এরপর পরবর্তী ধাপে প্রিন্ট বাটনে ক্লিক করলে আবেদন পত্রের মুদ্রিত কপি পাওয়া যাবে। সনদের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে উক্ত আবেদনপত্রের মুদ্রিত কপি ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপিসহ নিবন্ধক অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন ফিঃ- শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। শিশু জন্মের ২ বছরের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন না করালে বাবা-মায়ের জন্য জরিমানা আছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কোনরকম ফি ছাড়া জন্ম নিবন্ধন করার সুযোগ দেয়া হয়। এ সময় বাড়ানো হয়েছিল ২০১০ সালের জুন পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে দেশের অধিকাংশ শিশু জন্ম নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। জুনের পর জন্মনিবন্ধনের জন্য সরকার একটি ফি ধার্য করেছে। তবে ২ বছর পর্যন্ত শিশুদের জন্মনিবন্ধন যেকোন সময় বিনা ফিতে করানো যাবে। শুধু ২ বছরের বেশি সময় পার হলে এই ধার্যকৃত ফি দিতে হবে। ধন্যবাদ #birth_certificate_verify #birth_certificate_check_online #birth_Registration_check #birth_certificate_online #birthcertificatecheckonline

ভিডিও লিঙ্কঃ- https://youtu.be/8rkn8q3jAec

Level 5

আমি Ushar। , Narayanganj। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 7 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস