হোস্টিং কি? হোস্টিং কেনার আগে আমাদের কি কি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে?

অনেকেই ডোমেইন কি তা জানেন কিন্তু হোস্টিং কি তা জানেন না। যারা জানেন না তারা অনেকেই ভাবেন যে ডোমেইন ও হোস্টিং একই জিনিস বা একটা কিনলে দুটাই পাওয়া যাই। মূলত ডোমেইন ও  হোস্টিং দুটাই ভিন্ন যা পৃথকভাবে টাকা দিয়ে কিনতে হয়। সেক্ষেত্রে ডোমেইন কিনতে হলে তার জন্য অবশ্যই একটি হোস্টিং কিনতে হবে।

 

ওয়েব হোস্টিং হল স্টোরেজ  যে স্টোরেজটা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি থেকে কিনতে হয়। কোম্পানির নিজের জন্য  যে ওয়েব সাইট টা তৈরি করে, সেই ওয়েব সাইটের প্রয়োজনীয় তথ্য একটি কম্পিউটারের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা থাকে,  যা ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সকলের সামনে তুলে ধরা হয়।

নিচে আমরা কয়েকপ্রকার ওয়েব হোস্টিং সম্পর্কে জানব-

 

শেয়ার্ড হোস্টিং : শেয়ার্ড হোস্টিং হল একই সার্ভারে একইসাথে একাধিক মানুষের হোস্টিং শেয়ার করাকে বোঝায়। শেয়ার্ড হোস্টিং এর সুবিধা হল হোস্টিং বা সার্ভারের সকল দায়িত্ব বহন করে  হোস্টিং প্রদানকারী। এমনকি সকল সিকিউরিটি থেকে শুরু করে সকল প্রকার সমস্যার সমাধান করে থাকে।

 

রিসেলার হোস্টিং: রিসেলার হোস্টিং হচ্ছে হোস্টিং ব্যবসা সহজ উপায়। এখানে একজন রিসেলার অন্য হোস্টিং প্রদানকারী থেকে হোস্টিং ক্রয় করে  নিজের ইচ্ছামত প্যাকেজ তৈরি করে বিক্রয় করে।

 

ভিপিএস হোস্টিং: vps এর পুর্ন রূপ হল Vertual Private Server। ভিপিএস সাধারনত একটা ডেডিকেটের সার্ভার যা কয়েকজনকে ভাগ করে দেওয়া হয়। এখানে ডেডিকেটেড সার্ভারের মতই নিজের ইচ্ছামত যে কোন সফটওয়্যার ইন্সটল দেওয়া যায়।

 

ডেডিকেটেড সার্ভার: ডেডিকেটেড সার্ভার একটি ব্যয়বহুল সার্ভিস। যেখানে ব্যবহারকারী নিজের ইচ্ছামত অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে বা সফটওয়্যার  ইন্সটল করে থাকে।

 

ক্লাউড  হোস্টিং:  ক্লাউড  হোস্টিং হল সাধারণত আমরা যখন কোন ওয়েবসাইট  হোস্ট করি তখন সেটা একটি সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে।  কিন্তু ক্লাউড  হোস্টিং এর ক্ষেত্রে  অনেকগুলা সার্ভারে সেভ থাকে। এবং সেখান থেকে ইউজারের কাছে পৌছায়।

 

এসকল হোস্টিং কিনতে হলে আমাদের যে সকল করনীয় লক্ষ করতে হবে তা নিম্মরুপ দেওয়া হল:

১.ব্যান্ডউইথ : একটি সার্ভার  থেকে কম্পিউটারে প্রতি সেকেন্ডে কত পরিমান ডাটা প্রেরিত হয় তাকে  হোস্টিং ব্যান্ডউইথ বলে। সাধারণত সকল হোস্টিং কোম্পানিগুলাতে হোস্টিং এর উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হোস্টিং প্যাকেজের সাথে নির্দিষ্ট  পরিমাণমত ব্যান্ডউইথ দিয়ে থাকেন।  যেমন: 30 GB Bandwidth, 40 GB Bandwidth, 50 GB Bandwidth, 120 GB Bandwidth। এজন্য আপনার কোম্পানির জন্য কত টুকু ব্যান্ডউইথ কিনা উচিত তার সুবিধার জন্যে জানা দরকার, উদাহরনস্বরূপ : আপনার ওয়েবসাইটে ৬ টি ওয়েবপেজ আছে, প্রতি ওয়েব পেইজ এর সাইজ ১০০ kb, এবং ভিজিটরের পরিমাণ ৬০০ জন। সেক্ষেত্রে ব্যান্ডউইথ  দরকার হবে, (৬০০*৬*১০০)=৩৬০০০০, ৩৬০ MB। তাই আনুপাতিক হিসাবের চেয়ে একটু বেশি ব্যান্ডউইথ কিনতে হবে।

২. বাজেট : বাজেটের উপর নির্ভর করে হোস্টিং কিনতে হবে। কম বাজেটের  মধ্যে কিনতে হলে অবশ্যই সেই  হোস্টিং সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে। যেমন টাকা পরিশোধ করবেন তেমনি সার্ভিস পাবেন। বাজেটের উপর নির্ভর করে সার্ভিস টি মানসম্মত হবে। অতএব,  হোস্টিং কিনতে হলে  অবশ্যই বাজেটের উপর লক্ষ রাখরে হবে।

৩. ডিস্ক স্পেস :   ওয়েব সাইটের জন্য কতটুকু  ডিস্ক স্পেস লাগবে তা হিসাব করে নিতে হবে। না হলে দেখা গেল প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কেনা হলে অযথা টাকা  নষ্ট হবে। এছাড়া ডাটা স্টোরেজর জন্য  আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এস এসডি। এটি হার্ডড্রাইভ থেকে প্রায় ২০ গুন ফাস্ট এবং ব্যবসার সফলতার জন্য এস এসডি কার্যকারী এবং নির্ভরযোগ্য। তাই হোস্টিং কিনতে হলে এসব বিষয়ের উপর লক্ষ রাখতে হবে।

 

৪. মানিব্যাক গ্যারান্টি : মানিব্যাক গ্যারান্টি হোস্টিং এর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হোস্টিং কেনার আগে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সার্ভিসটি ভাল না লাগলে আপনি মানিব্যাক পেতে পারেন। এই অফারটি সাধারনত সকল কোম্পানি দিয়ে থাকে। তাই সার্ভিসটি কেনার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে কোম্পানি মানিব্যাক গ্যারান্টি দিচ্ছে কি না।

৫. প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক অবস্থা :  হোস্টিং কেনার সময় কোম্পানির সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে ভালভাবে যাচাই করতে হবে যে তাদের সার্ভিসগুলা বৈধ কিনা বা চোরাই কিনা। কোম্পানির রিভিউগুলা দেখতে হবে যে তাদের সার্ভিস সম্পর্কে তাদের গ্রাহকদের মতামত কেমন।

৬. সাপোর্ট :  হোস্টিং কেনার আগে সার্ভিসের সাপোর্ট সম্পর্কে জানতে হবে। কোম্পানির সাপোর্ট কত টুকু তা নিশ্চিত হওয়াটা খুবই জরুরি, তা না হলে যখন  আপনার সার্ভার ডাউন হবে তখন তার সমস্যা সমাধানের জন্য উত্তর পেতে দেরি হলে আপনাকে অনেক ভিজিটর হারাতে হবে। এজন্যই আপনাকে আগে জানতে হবে কোম্পানি কি কি ম্যাধমে সাপোর্ট দিয়ে থাকে এবং সাপোর্টের টাইম কেমন।

৭. আপটাইম : একটি ওয়েব সাইটের লোডিং স্পীড ঠিক রাখার জন্য ৯৯.৯৯% সার্ভার আপটাইম থাকবে কি না এ বিষয়য়ে লক্ষ রাখতে হবে। ওয়েব হোস্টিং এর জন্য আপটাইম  গ্যারান্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

৮. কন্ট্রোল প্যানেল :   হোস্টিং  কোম্পানি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কন্ট্রোল প্যানেলের ভূমিকা অপরিসীম। কিছু হোস্টিং কোম্পানিরা আছে যারা কন্ট্রোল প্যানেল তাদের  গ্রাহকদের না দিয়ে নিজেদের কাছে রেখে দেয় তাই হোস্টিং কেনার আগে কোম্পানি থেকে কন্ট্রোল প্যানেলের সকল তথ্য উইজার নাম, পাসওয়ার্ড জেনে নেওয়া উচিত।

 

৯. ই-মেইল সুবিধা : হোস্টিং -এ ই-মেইল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই আপনাকে  হোস্টিং প্রোভাইডার

থেকে স্প্যাম সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে জানা উচিত কারণ আপনার সাইটে যখন কোন স্প্যাম জনিত সমস্যা দেখা দিবে তখন তারা এ বিষয়ে আপনাকে পর্যাপ্ত সুবিধা দিতে বাধ্য।

 

১০.ব্যাকআপ :  ওয়েব সাইটে ব্যাকআপের ডাটা নিরাপত্তার জন্য  ব্যাকআপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভাল হোস্টিং কোম্পানিগুলোতে  সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়মিতভাবে তাদের সার্ভার  ব্যাকআপ করাসহ রিমোট সার্ভারের বাবস্থা  রেখে থাকেন, যাতে হ্যাকিং এর শিকার হলেও মূল্যবান তথ্য সুরক্ষিত থাকে। আর হোস্টিং কেনার আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে। কোম্পানির ব্যাকআপ যদি না থাকে তাহলে সেই সার্ভিস না নেওয়াই  ভাল।

 

উপরিউক্ত, বিষয়য়গুলা বিবেচনা করার সাথে সাথে আমাদের একটি ভাল হোস্টিং প্রদানকারীর সম্পর্কে যাচাই করতে হবে, যদি আপনি আপনার অনলাইনে ব্যবসার সফলতা চান। কারণ একটি ভাল হোস্টিং প্রদানকারীই দিতে পারে একটি ভাল মানের সার্ভিস।

 

MyLightHost- web hosting service provider  দীর্ঘদিন ধরে তার গ্রাহকদের উন্নত মানের হোস্টিং সেবা প্রদান করে আসছে। এটি স্বল্প মূল্যে ভাল হোস্টিং সেবার পাশাপাশি ভাল কাস্টমার সাপোর্ট এবং  ৯৯.৯৯% আপটাইম গ্যারান্টি দিয়ে থাকে।

 

Level 2

আমি ছায়া ইয়াসমীন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ছায়া ইয়াসমিন । একজন Brand Promoter -MyLightHost( web hosting service provider)


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস