প্রিন্ট অন ডিমান্ড ব্যবসা কী? প্রিন্ট অন ডিমান্ড দিয়ে কি আয় করা যায়?

ডিজিটাল যুগের অন্যতম জনপ্রিয় এবং যুগান্তকারী একটি ব্যবসায়িক মডেল হলো প্রিন্ট অন ডিমান্ড (Print on Demand - POD)। আপনার যদি সৃজনশীল ডিজাইন করার প্রতিভা থাকে বা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে লেখার দক্ষতা থাকে, কিন্তু পণ্য তৈরি, মজুদ এবং শিপিংয়ের মতো জটিল প্রক্রিয়ায় যেতে না চান, তবে প্রিন্ট অন ডিমান্ড হতে পারে আপনার জন্য একটি আদর্শ সমাধান। এই মডেলে আপনি কোনো পণ্য অর্ডার আসার পরে সেটি প্রিন্ট করে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেন। ফলে আপনাকে আগে থেকে কোনো ইনভেন্টরি বা পণ্য মজুদ রাখতে হয় না।

এই আর্টিকেলে আমরা প্রিন্ট অন ডিমান্ড কী, এর মাধ্যমে কীভাবে আয় করা সম্ভব, বই প্রকাশনা থেকে শুরু করে মগ প্রিন্টিং ব্যবসার মতো ছোট ছোট উদ্যোগের বিস্তারিত আলোচনা করব।

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড কি? (What is Print on Demand?)

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড বা POD হলো এমন একটি ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া যেখানে বিক্রেতা বিভিন্ন পণ্যের (যেমন: টি-শার্ট, মগ, বই, টিউনার, ফোন কেস ইত্যাদি) ডিজাইন তৈরি করে অনলাইন স্টোরে প্রদর্শন করেন। যখন কোনো গ্রাহক সেই ডিজাইনসহ পণ্যটি অর্ডার করেন, কেবল তখনই পণ্যটি প্রিন্ট করে তৈরি করা হয় এবং গ্রাহকের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বাস্তব উদাহরণ: ধরুন, আপনি সুন্দর একটি বাংলা উক্তি দিয়ে একটি টি-শার্টের ডিজাইন করলেন। এই ডিজাইনটি আপনি একটি প্রিন্ট অন ডিমান্ড কোম্পানির ওয়েবসাইটে আপলোড করে আপনার অনলাইন স্টোরে যুক্ত করলেন। এখন, একজন ক্রেতা আপনার স্টোর থেকে ওই টি-শার্টটি অর্ডার করলে, প্রিন্ট অন ডিমান্ড কোম্পানি টি-শার্টটি প্রিন্ট করবে, প্যাকেজিং করবে এবং সরাসরি ক্রেতার কাছে পাঠিয়ে দেবে। আপনাকে শুধু ডিজাইন তৈরি এবং মার্কেটিং করতে হবে; বাকি সব প্রক্রিয়া সরবরাহকারী কোম্পানিই সামলাবে।

 

 

📘 আপনি যদি AI দিয়ে ইনকাম করতে চান, তাহলে আমার লেখা বই "AI Revolution" পড়ে দেখতে পারেন।
👉 ৯৯টি ইনকাম আইডিয়া | মাত্র ৩৯ টাকা | লিংক: https://linktr.ee/iftekharahammedsamrat

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড ব্যবসা কী?

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড ব্যবসা হলো উপরের বর্ণিত প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করা। এই ব্যবসায় আপনি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেন, যার প্রধান কাজ হলো:

  • পণ্যের ডিজাইন তৈরি করা: আকর্ষণীয় এবং চাহিদাসম্পন্ন ডিজাইন তৈরি করা।
  • অনলাইন স্টোর সাজানো: নিজের ওয়েবসাইট অথবা কোনো মার্কেটপ্লেসে (যেমন: Amazon, Etsy) পণ্যের মকআপ (Mockup) বা ডিজিটাল ছবি আপলোড করে একটি ভার্চুয়াল দোকান তৈরি করা।
  • মার্কেটিং ও প্রচার: সামাজিক মাধ্যম, বিজ্ঞাপণ বা অন্যান্য উপায়ে আপনার পণ্যের প্রচার করে গ্রাহক আকর্ষণ করা।

এই মডেলে আপনাকে পণ্য উৎপাদন, গুদামজাতকরণ বা শিপিং নিয়ে ভাবতে হয় না, যা প্রচলিত ব্যবসার একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

 

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড দিয়ে কি আয় করা যায়?

 

হ্যাঁ, অবশ্যই প্রিন্ট অন ডিমান্ড দিয়ে সম্মানজনক আয় করা সম্ভব। আপনার আয় নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর:

  • ডিজাইনের মান ও স্বকীয়তা: আপনার ডিজাইন যত আকর্ষণীয় ও মৌলিক হবে, গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার সম্ভাবনা তত বাড়বে।
  • পণ্যের মূল্য নির্ধারণ: পণ্যের উৎপাদন খরচ, সরবরাহকারীর ফি এবং আপনার লাভের অংশ (Profit Margin) মিলিয়ে একটি যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
  • মার্কেটিং কৌশল: সঠিক গ্রাহকের কাছে আপনার পণ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য কার্যকর মার্কেটিং অত্যন্ত জরুরি।

আয়ের হিসাব: ধরুন, একটি মগ প্রিন্ট করতে এবং পাঠাতে সরবরাহকারী কোম্পানি নেয় $৮। আপনি আপনার ওয়েবসাইটে মগটির দাম রাখলেন $১৫। এক্ষেত্রে প্রতি বিক্রিতে আপনার লাভ হবে $৭। দিনে যদি ১০টি মগ বিক্রি হয়, আপনার দৈনিক আয় হবে $৭০।

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড বই কিভাবে কাজ করে?

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড বই প্রকাশনা, বিশেষ করে স্ব-প্রকাশিত (Self-Published) লেখকদের জন্য একটি বিপ্লব। পূর্বে লেখকদের বই প্রকাশ করতে হলে প্রকাশনীর কাছে পাণ্ডুলিপি জমা দিতে হতো এবং নির্বাচিত হলে প্রকাশনী নিজ খরচে কয়েক হাজার কপি ছাপাতো। কিন্তু POD মডেলে:

১. পাণ্ডুলিপি ও কভার ডিজাইন: লেখক তার বইয়ের পাণ্ডুলিপি এবং কভার ডিজাইন চূড়ান্ত করেন। ২. প্ল্যাটফর্মে আপলোড: এরপর Amazon Kindle Direct Publishing (KDP)-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ফাইলগুলো আপলোড করেন। ৩. অর্ডার অনুযায়ী প্রিন্ট: যখন কোনো পাঠক অ্যামাজন থেকে আপনার বইয়ের পেপারব্যাক (প্রিন্টেড কপি) সংস্করণ অর্ডার করেন, অ্যামাজন ঠিক সেই মুহূর্তে একটি মাত্র কপি প্রিন্ট করে পাঠকের কাছে পাঠিয়ে দেয়।

এর ফলে লেখকের কোনো প্রাথমিক বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না এবং অবিক্রিত কপির কোনো ঝুঁকি থাকে না।

 

স্ব-প্রকাশনার অসুবিধা কি?

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড স্ব-প্রকাশনাকে সহজ করলেও এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে:

  • মার্কেটিং ও প্রচারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব: প্রচলিত প্রকাশনী বইয়ের প্রচারের দায়িত্ব নিলেও, স্ব-প্রকাশনায় বইটির মার্কেটিং এবং পাঠকের কাছে পৌঁছানোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব লেখকের নিজের।
  • খরচ: যদিও ইনভেন্টরির খরচ নেই, তবে ভালো মানের এডিটিং, প্রুফরিডিং এবং কভার ডিজাইনের জন্য পেশাদারদের সাহায্য নিলে বেশ ভালো পরিমাণ অর্থ খরচ হতে পারে।
  • বিশ্বাসযোগ্যতা: অনেক সময় প্রচলিত প্রকাশনীর বইকে পাঠকরা বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন। স্ব-প্রকাশিত বইয়ের ক্ষেত্রে গুণমান নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
  • ডিস্ট্রিবিউশন: প্রচলিত প্রকাশনীর মতো বইয়ের দোকানে বা লাইব্রেরিতে বই পৌঁছে দেওয়া স্ব-প্রকাশকদের জন্য কঠিন।

 

আমাজন কি আমার বই প্রিন্ট করে পাঠাবে?

 

হ্যাঁ, Amazon Kindle Direct Publishing (KDP) নামক সেবার মাধ্যমে অ্যামাজন আপনার বই প্রিন্ট করে সরাসরি গ্রাহকের কাছে পাঠাবে। আপনি যখন KDP-তে আপনার বইয়ের ডিজিটাল ফাইল আপলোড করবেন, তখন ইবুক (Kindle) সংস্করণের পাশাপাশি পেপারব্যাক (প্রিন্টেড) সংস্করণ বিক্রির অপশনও পাবেন। কোনো গ্রাহক পেপারব্যাক অর্ডার করলে, অ্যামাজন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা তাদের প্রিন্টিং ফ্যাসিলিটি থেকে বইটি প্রিন্ট করে গ্রাহকের ঠিকানায় পৌঁছে দেবে এবং আপনার অ্যাকাউন্টে রয়্যালটি জমা করে দেবে।

 

 

📘 আপনি যদি AI দিয়ে ইনকাম করতে চান, তাহলে আমার লেখা বই "AI Revolution" পড়ে দেখতে পারেন।
👉 ৯৯টি ইনকাম আইডিয়া | মাত্র ৩৯ টাকা | লিংক: https://linktr.ee/iftekharahammedsamrat

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড জব কি?

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড জব বলতে সরাসরি কোনো নির্দিষ্ট "চাকরি" বোঝায় না। এটি মূলত একটি ফ্রিল্যান্স বা উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করার সুযোগ। তবে এই ইন্ডাস্ট্রিতে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যেমন:

  • গ্রাফিক ডিজাইনার: যারা POD ব্যবসার জন্য ডিজাইন তৈরি করে দেন।
  • ই-কমার্স ম্যানেজার: যারা অন্যের POD স্টোর পরিচালনা ও মার্কেটিংয়ের দায়িত্ব নেন।
  • কপিরাইটার: যারা পণ্যের আকর্ষণীয় বর্ণনা লেখেন।
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট: যারা গ্রাহক সেবা বা অর্ডার ব্যবস্থাপনার কাজ করেন।

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ড কে দেয়? (POD সার্ভিস প্রোভাইডার)

 

বিশ্বজুড়ে অনেক কোম্পানি প্রিন্ট অন ডিমান্ড সেবা প্রদান করে। এদেরকে "POD সার্ভিস প্রোভাইডার" বা "ফুলফিলমেন্ট পার্টনার" বলা হয়। এদের কাজ হলো আপনার অর্ডার গ্রহণ করে পণ্য প্রিন্ট, প্যাক এবং শিপ করা। কিছু জনপ্রিয় POD কোম্পানি হলো:

  • Printful: উচ্চমানের পণ্য এবং নির্ভরযোগ্য সেবার জন্য পরিচিত।
  • Printify: বিভিন্ন প্রিন্ট প্রোভাইডারদের একটি নেটওয়ার্ক, যা আপনাকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়।
  • Teespring (Spring): বিশেষত টি-শার্ট এবং অ্যাপারেল পণ্যের জন্য জনপ্রিয়।
  • Redbubble: এটি একটি মার্কেটপ্লেস যেখানে আপনি শুধু ডিজাইন আপলোড করবেন, বাকি সব তারাই দেখভাল করবে।
  • Amazon Merch on Demand: অ্যামাজনের নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ডিজাইন জমা দিলে অ্যামাজন টি-শার্ট, হুডি ইত্যাদি পণ্যে তা প্রিন্ট করে বিক্রি করে।

📘 আপনি যদি AI দিয়ে ইনকাম করতে চান, তাহলে আমার লেখা বই "AI Revolution" পড়ে দেখতে পারেন।
👉 ৯৯টি ইনকাম আইডিয়া | মাত্র ৩৯ টাকা | লিংক: https://linktr.ee/iftekharahammedsamrat

কিভাবে প্রিন্ট করে টাকা আয় করা যায়?

 

প্রিন্ট করে টাকা আয় করার মূল ভিত্তি হলো সঠিক পণ্য নির্বাচন এবং আকর্ষণীয় ডিজাইন। নিচে ধাপগুলো উল্লেখ করা হলো:

১. একটি নিশ (Niche) বা নির্দিষ্ট বিষয় বাছাই করুন: যেমন - পোষা প্রাণী ভালোবাসেন এমন মানুষদের জন্য ডিজাইন, বইপ্রেমীদের জন্য উক্তি, নির্দিষ্ট কোনো পেশা বা শখের উপর ভিত্তি করে ডিজাইন ইত্যাদি। ২. ডিজাইন তৈরি করুন: Canva, Adobe Photoshop বা Illustrator-এর মতো টুল ব্যবহার করে ডিজাইন তৈরি করুন। ৩. একটি POD প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন: Printful বা Printify-এর মতো একটি প্ল্যাটফর্মের সাথে আপনার ই-কমার্স স্টোর (যেমন: Shopify) যুক্ত করুন অথবা Redbubble-এর মতো মার্কেটপ্লেসে ডিজাইন আপলোড করুন। ৪. পণ্য তৈরি ও মূল্য নির্ধারণ করুন: আপনার ডিজাইন কোন কোন পণ্যে (টি-শার্ট, মগ, ব্যাগ) প্রিন্ট হবে তা নির্বাচন করুন এবং লাভ রেখে মূল্য নির্ধারণ করুন। ৫. মার্কেটিং করুন: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্টের মতো সামাজিক মাধ্যমে আপনার পণ্যের প্রচার চালান।

 

মগ প্রিন্টিং ব্যবসা: একটি লাভজনক উদ্যোগ

 

প্রিন্ট অন ডিমান্ডের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং লাভজনক শাখা হলো কাস্টমাইজড মগ প্রিন্টিং ব্যবসা। চলুন এই ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

 

মগ বিক্রি করে কি আয় করা যায়? / মগ ব্যবসা কি লাভজনক?

 

হ্যাঁ, মগ বিক্রি করে ভালো আয় করা সম্ভব এবং এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। কারণ:

  • উপহার হিসেবে চাহিদা: জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, কর্পোরেট ইভেন্ট বা যেকোনো বিশেষ দিনে উপহার হিসেবে প্রিন্টেড মগের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
  • কাস্টমাইজেশনের সুযোগ: মানুষ নিজের ছবি, পছন্দের উক্তি বা বিশেষ কোনো ডিজাইন দিয়ে মগ তৈরি করতে ভালোবাসে।
  • কম বিনিয়োগ: POD মডেলে করলে কোনো প্রাথমিক বিনিয়োগই লাগে না। আর নিজে ছোট পরিসরে শুরু করলেও খরচ তুলনামূলকভাবে কম।

 

মানুষ কি অনলাইনে মগ কিনে?

 

অবশ্যই। বর্তমানে মানুষ উপহার দেওয়া বা নিজের ব্যবহারের জন্য অনলাইনে কাস্টমাইজড মগ প্রচুর পরিমাণে কিনছে। বিশেষ করে যারা ইউনিক এবং পার্সোনালাইজড উপহার খুঁজছেন, তাদের জন্য অনলাইন শপগুলোই প্রধান ভরসা।

 

মগের ব্যবসা কত বড়?

 

বিশ্বব্যাপী কাস্টমাইজড উপহারের বাজার বিলিয়ন ডলারের এবং এটি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এর মধ্যে প্রিন্টেড মগের বাজার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে আছে। কর্পোরেট ব্র্যান্ডিং থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত উপহার পর্যন্ত এর চাহিদা ব্যাপক।

 

মগ প্রিন্টিং ব্যবসা করতে কি কি লাগে?

 

আপনি যদি প্রিন্ট অন ডিমান্ড মডেল অনুসরণ করেন, তবে আপনার শুধু একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ হলেই চলবে।

তবে যদি নিজে প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে প্রাথমিক কিছু জিনিস লাগবে:

  • সাবলিমেশন প্রিন্টার (Sublimation Printer): সাধারণ প্রিন্টার দিয়ে এই ছাপানো সম্ভব নয়। এর জন্য বিশেষ সাবলিমেশন কালি ও প্রিন্টার প্রয়োজন।
  • সাবলিমেশন পেপার: যে কাগজে ডিজাইন প্রিন্ট করে মগে ট্রান্সফার করা হয়।
  • হিট প্রেস মেশিন (Mug Heat Press Machine): এই যন্ত্রের মাধ্যমে তাপ ও চাপ প্রয়োগ করে কাগজের ডিজাইনটি স্থায়ীভাবে মগের উপর ছাপানো হয়।
  • সাবলিমেশন কোটিং যুক্ত মগ (Sublimation Mugs): সব মগে সাবলিমেশন প্রিন্ট হয় না। এর জন্য বিশেষ কোটিংযুক্ত মগ প্রয়োজন, যা পাইকারি দরে কিনতে পাওয়া যায়।
  • হিট রেজিস্ট্যান্ট টেপ: ডিজাইন করা কাগজটি মগের গায়ে ভালোভাবে আটকে রাখার জন্য এই টেপ ব্যবহার করা হয়।

 

কোন প্রিন্টার দিয়ে টাকা আয় করা হয়?

 

মগ বা টি-শার্ট প্রিন্টিংয়ের মতো ব্যবসার জন্য মূলত সাবলিমেশন প্রিন্টার ব্যবহার করা হয়। Epson বা Sawgrass-এর মতো ব্র্যান্ডের কিছু মডেল এই কাজের জন্য বেশ জনপ্রিয়। এই প্রিন্টারগুলো বিশেষ সাবলিমেশন কালি ব্যবহার করে, যা তাপে গ্যাসীয় অবস্থায় পরিণত হয়ে পণ্যের উপর স্থায়ীভাবে বসে যায়।

 

প্রিন্টেড মগ বানাতে কত টাকা লাগে?

 

খরচ নির্ভর করে আপনি নিজে বানাচ্ছেন নাকি POD সার্ভিস ব্যবহার করছেন তার উপর।

  • POD সার্ভিস: একটি প্রিন্টেড মগের বেস কস্ট (উৎপাদন ও শিপিংসহ) সাধারণত ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা বা তার বেশি হতে পারে (আন্তর্জাতিক শিপিংয়ের ক্ষেত্রে)।
  • নিজে বানালে: একটি সাবলিমেশন ব্ল্যাঙ্ক মগের দাম পাইকারি বাজারে ৬০-৯০ টাকা, প্রিন্টিং খরচ (কালি, কাগজ, বিদ্যুৎ) প্রায় ১০-২০ টাকা। অর্থাৎ, একটি মগ বানাতে প্রাথমিক খরচ ৭০-১১০ টাকা হতে পারে। তবে এর সাথে মেশিন কেনার প্রাথমিক বিনিয়োগও মাথায় রাখতে হবে।

 

কিভাবে কাপ বা মগ প্রিন্ট করতে হয়?

 

সাবলিমেশন পদ্ধতিতে মগ প্রিন্ট করার প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ:

১. ডিজাইন প্রিন্ট: প্রথমে কম্পিউটারে করা ডিজাইনটি মিরর (উল্টো) করে সাবলিমেশন পেপারে সাবলিমেশন প্রিন্টার দিয়ে প্রিন্ট করা হয়। ২. মগে আটকানো: প্রিন্ট করা কাগজটি মগের গায়ে হিট রেজিস্ট্যান্ট টেপ দিয়ে ভালোভাবে আটকে দেওয়া হয়। ৩. হিট প্রেসিং: এরপর মগটিকে হিট প্রেস মেশিনে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় (সাধারণত ১৮০-২০০° সেলসিয়াস) নির্দিষ্ট সময়ের জন্য (সাধারণত ২-৩ মিনিট) রাখা হয়। ৪. ঠান্ডা করা: মেশিন থেকে বের করার পর মগটি অত্যন্ত গরম থাকে। এটিকে সাবধানে রেখে ঠান্ডা হতে দেওয়া হয়। ঠান্ডা হয়ে গেলেই মগটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত।

📘 আপনি যদি AI দিয়ে ইনকাম করতে চান, তাহলে আমার লেখা বই "AI Revolution" পড়ে দেখতে পারেন।
👉 ৯৯টি ইনকাম আইডিয়া | মাত্র ৩৯ টাকা | লিংক: https://linktr.ee/iftekharahammedsamrat

প্রিন্টফুল থেকে কিভাবে টাকা তুলবো?

 

Printful বা এই জাতীয় প্ল্যাটফর্ম থেকে টাকা তোলার প্রক্রিয়াটি সাধারণত সহজ।

১. পেমেন্ট মেথড সেট আপ: প্রথমে আপনার Printful অ্যাকাউন্টে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে (যেমন: PayPal বা Payoneer) যুক্ত করতে হবে। ২. স্বয়ংক্রিয় বিলিং: যখন কোনো গ্রাহক আপনার স্টোর থেকে কিছু কেনেন, তখন গ্রাহক আপনাকে পণ্যের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করেন। Printful স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে তাদের উৎপাদন খরচটি কেটে নেয়। ৩. লাভ আপনার অ্যাকাউন্টে: বাকি যে লাভের অংশটি থাকে, সেটি আপনার PayPal বা Payoneer অ্যাকাউন্টে জমা হয়। ৪. ব্যাংকে স্থানান্তর: এরপর আপনি আপনার PayPal বা Payoneer অ্যাকাউন্ট থেকে সহজেই আপনার স্থানীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করতে পারবেন।

আশাকরি, এই বিস্তারিত আলোচনাটি আপনাকে প্রিন্ট অন ডিমান্ড এবং মগ প্রিন্টিং ব্যবসা সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দিতে পেরেছে। সঠিক পরিকল্পনা ও সৃজনশীলতার প্রয়োগ ঘটালে আপনিও এই সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রটিতে সফল হতে পারেন। 🎉🚀

Level 1

আমি সম্রাট সরকার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 মাস 1 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস