“ইসলাম ও আধুনিক প্রযুক্তি: মিল, সুযোগ এবং আমাদের করণীয়”
-
ইসলাম ও আধুনিক প্রযুক্তি: মিল, সুযোগ এবং আমাদের করণীয়
বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই তথ্য পাই, যোগাযোগ করি, ব্যবসা করি এমনকি ধর্মীয় জ্ঞানও অর্জন করি। প্রশ্ন হলো—আমাদের প্রিয় ধর্ম ইসলাম কি প্রযুক্তির সাথে বিরোধপূর্ণ? না কি এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ?
এই টিউনে আমরা জানবো:
☞ইসলাম কীভাবে প্রযুক্তির সাথে খাপ খায়
☞প্রযুক্তিকে ইসলামের পথে ব্যবহারের কিছু উপায়
☞সচেতন থাকার কিছু দিকনির্দেশনা
-
ইসলাম ও জ্ঞানচর্চা: প্রযুক্তির ভিত্তি
ইসলামের প্রথম ওহি ছিল—“ইকরা” অর্থাৎ পড়।
এটি শুধু ধর্মীয় বই পড়ার আহ্বান নয়, বরং জ্ঞান আহরণের দিকেই ছিল প্রথম নির্দেশনা।
> “তুমি বলো, যারা জানে ও যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে?” – (সূরা যুমার: ৯)
প্রযুক্তি হলো জ্ঞানেরই আধুনিক রূপ। একজন মুসলিম যদি প্রযুক্তি শিখে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করে, তাহলে তা ইবাদত হিসেবেও গণ্য হতে পারে।
-
প্রযুক্তিকে ইসলামি দৃষ্টিকোণে ব্যবহার করার ৫টি উপায়:
১. কোরআন-হাদীস শিক্ষা:
বর্তমানে অসংখ্য ইসলামিক অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে যেখানে বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, হাদীস ব্যাখ্যা, ফিকহের প্রশ্নোত্তর সহজে পাওয়া যায়।
২. দাওয়াহ:
ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক কিংবা ব্লগ—সবই ইসলাম প্রচারের প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। “like, comment, share” দিয়েও ইসলামের বার্তা ছড়ানো যায়।
৩. আত্মউন্নয়ন:
ইসলামে সময়ের মূল্য অনেক। এখন অনেক Productive App আছে যা সময় ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করে। যেমন: ToDo List, Reminder, Habit Tracker ইত্যাদি।
৪. হারাম থেকে দূরে থাকার জন্য প্রযুক্তি:
বিভিন্ন ফিল্টার, স্ক্রিন টাইম কন্ট্রোল বা ইসলামিক মোবাইল OS ব্যবহার করে অনলাইনের ফিতনা থেকে বাঁচা যায়।
৫. ইসলামিক ব্যবসা ও ইনকাম:
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং, ইসলামিক প্রোডাক্টসের ই-কমার্স বা ইসলামি কনটেন্ট তৈরি করে আয় করা সম্ভব—যা হালালও, উপকারীও।
-
প্রযুক্তির ফিতনা: কিছু সতর্কতা
ইসলাম যেমন প্রযুক্তিকে সমর্থন করে, তেমনি এর অপব্যবহার থেকে দূরে থাকার নির্দেশও দেয়:
সময় নষ্ট করে এমন গেম, সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি
অশ্লীলতা, গীবত, অপবাদ ছড়ানো
মিথ্যা খবর বা ইসলাম বিরোধী কনটেন্ট ছড়ানো
> “যে কেউ একটি ভালো কাজের দাওয়াত দেয়, সে তার পুরস্কার পাবে। আর যে কেউ মন্দ কাজে আহ্বান জানায়, সে তার গুনাহও পাবে। ” – (সহীহ মুসলিম)
-
আমাদের করণীয়:
১. প্রযুক্তিকে হালাল কাজে ব্যবহার করা
২. নিজের স্ক্রিন টাইম ও কনটেন্টের দিকে সচেতন থাকা
৩. দাওয়াহ ও নলেজ শেয়ারের কাজে সক্রিয় হওয়া
৪. ইসলামিক ইনোভেশন ও অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে আগ্রহী হওয়া
৫. অন্যদেরও প্রযুক্তির হালাল ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া
-
শেষ কথা:
প্রযুক্তি নিজে ভালো বা খারাপ নয়—আমরা যেভাবে ব্যবহার করি সেটাই মূল বিষয়। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো—প্রযুক্তিকে দ্বীনের কাজে লাগানো, নিজের উন্নয়ন করা, অন্যদের উপকার করা।
আসুন, ইসলামিক চেতনায় প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আমরা ভবিষ্যতের জন্য এক সুন্দর পথ তৈরি করি।
-
আপনার মতামত ও প্রশ্ন থাকলে টিউমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। এই টিউন যদি উপকারী মনে হয়, শেয়ার করুন।
– Islamitech
আমি ইব্রাহীম খলিল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 সপ্তাহ 5 দিন যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একজন প্রযুক্তিপ্রেমী ও ইসলামিক জ্ঞানসন্ধানী। প্রযুক্তিকে ইসলামের আলোকে ব্যবহার করে মানুষকে উপকারে আনা ও হালাল উপায়ে জ্ঞান ছড়ানোই আমার লক্ষ্য। টেকনোলজি, শিক্ষা ও নৈতিকতার সংমিশ্রণে লিখতে ভালোবাসি।