অ্যাপল আইফোন ১৭ প্রো সর্বোচ্চ দাম

Level 2
১ম বর্ষ, সরকারি দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ, নবাবগঞ্জ

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাস এলেই প্রযুক্তি প্রেমীদের মাঝে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয় – কারণ আসে নতুন আইফোন। ২০২৫ সালের আলোচিত মডেল, আইফোন ১৭ প্রো, ইতিমধ্যেই আলোচনার শীর্ষে, তবে এবার ভিন্ন এক কারণে – তার দাম। এতদিন যা কল্পনা ছিল, এবার তা বাস্তব: সর্বোচ্চ কনফিগারেশনের আইফোন ১৭ প্রো এর দাম শুনলে চোখ কপালে উঠতে পারে। এই ব্লগে আমরা জানব কেন এই ফোনের দাম এত বেশি, তাতে কি নতুন ফিচার এসেছে, এবং সাধারণ একজন ব্যবহারকারীর জন্য এটি কতটা যৌক্তিক।

আইফোন ১৭ প্রো: নতুন কি এসেছে এবার?
আইফোন ১৭ প্রো শুধু আগের ফোনের আপডেট নয়, এটি অনেকটাই নতুন এক অধ্যায়। ডিজাইনে এসেছে পরিবর্তন – টাইটেনিয়াম ফ্রেম আগের চেয়েও হালকা, বেজেল আরও সরু, আর নতুন ‘মিডনাইট ব্লু’ রঙটি দারুণ নজরকাড়া।

হার্ডওয়্যারে এসেছে A19 Bionic চিপ, যা শুধু শক্তিশালী না, বরং আরও বেশি এনার্জি এফিশিয়েন্ট। ডিসপ্লেতে এসেছে মাইক্রোLED প্রযুক্তি, যা কনট্রাস্ট ও কালার অ্যাকিউরেসিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

ক্যামেরা বিভাগেও বিপ্লব এসেছে। এবার ৫এক্স অপটিক্যাল জুম, উন্নত নাইট মোড, আর ৮কে ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা – যা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য আদর্শ।

সর্বোচ্চ দাম কত হতে পারে?
আইফোন ১৭ প্রো এর সর্বোচ্চ কনফিগারেশন (১ টেরাবাইট, প্রো ম্যাক্স ভার্সন) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাম শুরু হয়েছে $1, 799। বাংলাদেশে আনঅফিশিয়ালভাবে এই দাম পৌঁছাতে পারে ২, ২০, ০০০ টাকা বা তারও বেশি। ডলার রেট, আমদানি কর, ভ্যাট ও রেজিস্ট্রেশন মিলে এই দাম আরও বাড়ে।

দাম বাড়ার প্রধান কারণগুলো কী?
অনেকেই ভাবেন অ্যাপল শুধু ব্র্যান্ড নামেই দাম নিচ্ছে, কিন্তু এর পেছনে বাস্তব কারণও আছে:

 

টাইটেনিয়াম ফ্রেম ও মাইক্রোLED ডিসপ্লে আগের তুলনায় অনেক ব্যয়বহুল।

 

AI চিপ ও সেন্সরগুলোর উন্নততর আরডি অ্যান্ড ডি (গবেষণা ও উন্নয়ন) খরচ।

 

আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মুদ্রাস্ফীতি।

 

কাস্টম হার্ডওয়্যার, যা অ্যাপল নিজেরাই ডিজাইন করে।
আইফোনের দামের পেছনে ব্র্যান্ড ভ্যালু কতটা কাজ করে?
অস্বীকার করার উপায় নেই – “অ্যাপল” নামটাই একটা ব্র্যান্ড ইমেজ বহন করে। তারা নিজেদের প্রিমিয়াম সেগমেন্টে স্থাপন করেছে বহু বছর ধরে। এটি শুধু ফোন নয়, একটি 'স্ট্যাটাস সিম্বল' হয়ে গেছে। ফলে অনেক ব্যবহারকারী বাস্তবিক প্রয়োজন নয়, বরং আত্মতৃপ্তি ও সম্মান পাওয়ার জন্যও কিনে থাকেন।

কি পাওয়া যাচ্ছে এই দাম দিয়ে?
এত দাম দিয়ে কী পাচ্ছেন – এই প্রশ্নটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

 

৬+ বছর সফটওয়্যার আপডেট, যা অ্যান্ড্রয়েড ফোনের তুলনায় দ্বিগুণ।

 

দুর্দান্ত ক্যামেরা কোয়ালিটি ও সিনেমাটিক ভিডিও অপশন।

 

নিরাপত্তা, ফেস আইডি, ও প্রাইভেসি কনট্রোল – সবই উন্নত।

 

এক্সক্লুসিভ অ্যাপস ও ইকোসিস্টেম – iCloud, Airdrop, Universal Clipboard, AirPlay ইত্যাদি।

প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডগুলোর তুলনায় অ্যাপল কতটা অগ্রগামী?
স্যামসাং S24 আল্ট্রা বা গুগল পিক্সেল ৮ প্রো এর সাথেও আইফোন ১৭ প্রো এর তুলনা চলে। অনেকক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের স্পেসিফিকেশন হয়তো কাগজে-কলমে বেশি, কিন্তু ব্যবহারিক দিক দিয়ে অ্যাপল এখনো বেশি ইউজার ফ্রেন্ডলি ও সিস্টেম অপ্টিমাইজড। অ্যাপল তার হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার সমন্বয় এমনভাবে তৈরি করে, যা প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেক স্নিগ্ধ অভিজ্ঞতা দেয়।

এই দামে ফোন কেনার যৌক্তিকতা কতটা?
প্রশ্নটা হলো, আপনি যদি শুধুই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী হন, তাহলে এই দামের ফোন আপনার কতটা কাজে আসবে? কিন্তু আপনি যদি:

 

একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর,

 

ভিডিও এডিটর,

 

সফটওয়্যার ডেভেলপার,

তাহলে এই ফোন হতে পারে আপনার “পার্সোনাল ওয়ার্কস্টেশন”।

 

অতএব, দামের যৌক্তিকতা নির্ভর করে আপনার ব্যবহারের ধরনের উপর।

বাংলাদেশে আইফোন ১৭ প্রো কেনা কতটা চ্যালেঞ্জিং?
বাংলাদেশে আইফোন কেনা সহজ নয়:

 

অফিশিয়াল অ্যাপল স্টোর না থাকায় নির্ভর করতে হয় থার্ড পার্টি ডিস্ট্রিবিউটরের ওপর।

 

কাস্টমস ডিউটি ও NBR রেজিস্ট্রেশনের ঝামেলা।

 

অনেকসময় নকল বা রিফারবিশড ফোন নতুন বলে বিক্রি হয়।

 

বিশ্বস্ত সোর্স থেকে কেনাই এখানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

বিকল্প কী হতে পারে?
সবাই তো আর ২ লাখ টাকা খরচ করতে পারবে না। তাই বিকল্প হিসেবে ভাবতে পারেন:

 

আইফোন ১৬ প্রো বা ১৫ প্রো – এখন অনেকটাই সাশ্রয়ী।

 

ভালো মানের রিফারবিশড ফোন (বিশ্বস্ত সাইট থেকে কিনলে ভালো ডিল পাওয়া যায়)।

 

বা অ্যান্ড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপ – যেমন গুগল পিক্সেল ৮ প্রো, স্যামসাং S24 আল্ট্রা – যারা কিছু ক্ষেত্রে আইফোনকে টেক্কা দিতে পারে।

উপসংহার
দাম এবং মূল্য এক নয়। অনেক সময় দাম বেশি হলেও পণ্যটি আপনার জন্য যথার্থ হতে পারে। আইফোন ১৭ প্রো এমন একটি ডিভাইস – যা শুধু ফোন নয়, একটি পার্সোনাল প্রযুক্তি অভিজ্ঞতা। তবে আপনার যদি বাজেট সীমিত হয়, বা শুধুই হালকা ব্যবহারের জন্য ফোন চান, তাহলে এত দাম দিয়ে আইফোন ১৭ প্রো কেনা অর্থনৈতিকভাবে অযৌক্তিক হতে পারে।

 

শেষ পর্যন্ত, সিদ্ধান্তটা আপনার। আপনি যদি প্রযুক্তি-ভিত্তিক বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেন, তাহলে এই ফোন আপনার জীবনে একটি মূল্যবান সংযোজন হতে পারে।

Level 2

আমি ইমন সিকদার। ১ম বর্ষ, সরকারি দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ, নবাবগঞ্জ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 26 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস