গ্রামীণফোনের স্মার্ট প্রতারণা অতঃপর আমার ধরা খাওয়া!

টিউন বিভাগ খবর
প্রকাশিত

বন্ধুরা, আজ আমি আপনাদের সাথে গ্রামীণফোনের একটি অভিনব প্রতারণা এবং আমার ধরা খাওয়ার গল্প শেয়ার করব।

গত মে মাস জুড়ে রেডিও, টিভি ও পত্রিকায় প্রচারিত ও প্রকাশিত ব্যবহারের ভিত্তিতে ১০০০ টি আকর্ষণীয় স্মার্টফোন জিতে নেয়ার গ্রামীণফোনের লোভনীয় বিজ্ঞাপনের ফাঁদের পড়ে আমি তাদের উক্ত ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করি। ক্যাম্পেইনের শর্ত ছিল এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে ১০০ টাকা বা তার বেশি টাকার লোকাল ভয়েস কল করলে সর্বোচ্চ ব্যবহারের ভিত্তিতে ১০০০ জন ব্যবহারকারী পাবে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ফোর, গ্যালাক্সি এস থ্রি, গ্যালাক্সি নোট টু, সনি এক্সপেরিয়া জেড ও নোকিয়া লুমিয়া ৯২০ সহ ১০০০ টি আকর্ষণীয় স্মার্টফোন। এছাড়া প্রতিদিনের সর্বোচ্চ ৩ জন ব্যবহারকারী (লোকাল ভয়েস কল) পাবে ৩ টি করে গ্যালাক্সি এস ফোর। প্রতিদিনের বিজয়ীদের ক্ষেত্রে একবারের বিজয়ী দ্বিতীয়বারের জন্যে বিবেচিত হবে না। তবে ক্যাম্পেইন শেষে সর্বোচ্চ ব্যাবহারের ভিত্তিতে ১০০০ টি স্মার্টফোন জেতার সুযোগ তার জন্যেও প্রযোজ্য থাকবে। সঙ্গে ছিল ১০০ টি জিপি-জিপি ফ্রি এসএমএস। এই ফ্রি এসএমএস গুলি দেয়ার কথা ছিল জুন মাসে এবং স্মার্টফোন দেয়ার কথা ছিল জুলাই মাসে।

একদিনের সর্বোচ্চ ৩ জন ব্যবহারকারীর একজন হবার লক্ষ্যে গত ২৯ মে,১৩ ইং তারিখে আমি সারাদিন অবিরাম (২৪ ঘন্টা) কথা বলে প্রায় ৩ হাজার টাকার লোকাল ভয়েস কল ব্যবহার করি। প্রতিদিনের বিজয়ীদের ক্ষেত্রে একবারের বিজয়ী দ্বিতীয়বারের জন্যে বিবেচিত হবে না বিধায় আমি ২৯ মে তারিখের বিজয়ীদের নাম জানতে গ্রামীণফোনের কাষ্টমার ম্যানেজারের (মি. মোহাইমিনুল) সঙ্গে ৩০ মে সন্ধ্যায় অনলাইনে চ্যাট করি। তিনি বললেন প্রতিদিনের বিজয়ী ৩ জন নয়, মাত্র ১ জন। তিনি বিষয়টি জানেন না বলে আমি চ্যালেঞ্জ করলে কিছুক্ষণের মধ্যে আমি অনলাইন চ্যাট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি।

এরপর আমি তাদের কাষ্টমার সার্ভিস (১২১) এ ফোন করি। এবারের কাষ্টমার ম্যানেজার (মি. জুম্মাতুস) আমাকে জানান যে, প্রতিদিনের বিজয়ীদের জন্য কোনো পুরস্কারই নেই। কেবলমাত্র সারা (মে) মাসের সর্বোচ্চ ১০০০ জন ব্যবহারকারী পাবেন ১০০০ টি স্মার্ট ফোন। আমি তাকে বিষয়টি জেনে কথা বলতে বললে সে আমাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে বলেন এবং বেশ কিছুক্ষণ পর সে আগের মতোই জানান যে, প্রতিদিনের জন্য কোনো বিজয়ী নেই। আমি বললাম, আপনি তো কিছুই জানেন না, আপনার নামটা বলুন। তার নামটা জেনে নিয়ে আমি ফোনটা রেখে দেই।

এর কয়েক ঘন্টা পর গ্রামীণফোনের কাষ্টমার সার্ভিস (১২১) থেকে আমার কাছে একটি কল আসে। প্রথমেই তিনি আগের কাষ্টমার ম্যানেজারের (মি. জুম্মাতুস) পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থণা করেন এবং প্রতিদিনের ৩ জন করে বিজয়ীর বিষয়টি আমাকে নিশ্চিত করেন। এবার আমি ২৯ মে তারিখের বিজয়ীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আমাকে জানান ইতমধ্যেই নাকি ৩ জন বিজয়ীর মোবাইলে এসএমএস করে ২৯ মে তারিখের ফলাফল জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি ২৪ ঘন্টার লোকাল ভয়েজ কল ব্যবহার করেও কেন এসএমএস পেলাম না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি বিজয়ী হননি তাই এসএমএস পাননি। তার কথা শুনে আমি অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়ি।

অতঃপর আমি স্ব-শরীরে তাদের কাষ্টমার সার্ভিস সেন্টারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। সেন্টারে যাওয়ার আগে ১ জুন সন্ধ্যায় আমি পুনরায় তাদের কাষ্টমার সার্ভিস (১২১) এ ফোন করি। এবারের কাষ্টমার ম্যানেজার (একটি মেয়ে) আমাকে জানান যে, প্রতিদিনের বিজয়ী কিংবা একমাসের বিজয়ী কাউকেই এ পর্যন্ত ফলাফল জানিয়ে কোনো এসএমএস করা হয়নি। আমি আগের ম্যানেজারের কথা বললে তিনি তার পক্ষ থেকে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন। আমি কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে ফোন রেখে দেই এবং কাষ্টমার সার্ভিস সেন্টারে না গিয়ে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।

ক্যাম্পেইনের শর্তানুসারে জুন মাসে আমার মোবাইলে ১০০ টি ফ্রি এসএমএস আসার কথা ছিল। কিন্তু ২৩ জুন তারিখ পর্যন্ত কোনো এসএমএস না পেয়ে আমার মনে ক্ষীণ সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে। অতঃপর আমি ২৩ জুন তারিখে গ্রামীণফোনের মতিঝিল সেন্টারে গিয়ে ফ্রি এসএমএস এবং হ্যান্ডসেটের ব্যাপারে জানতে চাইলে এবারের কাষ্টমার ম্যানেজার (মি. রেজা) এসএমএসের ব্যাপারে আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। আর হ্যান্ডসেট বিজয়ীদের জুলাই মাসে এসএমএস করে জানানো হবে বলে তিনি জানান। পুরস্কার প্রদানের ব্যাপারে আমি কিছুটা সন্দেহ প্রকাশ করলে তিনি জানান যে, এখানে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তাদের এই সেন্টার থেকেই অতীতে অনেক পুরস্কার দেয়া হয়েছে এবং এবারের বিজয়ীদের অনেককেই এখান থেকে পুরস্কার দেয়া হবে। তার ভাষ্যমতে, আমি ইচ্ছা করলে পুরস্কার বিতরণের সময় সেখানে উপস্থিত থেকে স্ব-চক্ষে দেখেও আসতে পারি। তার কথা শুনে আবারও আমি কিছুটা আশ্বস্ত হলাম। উল্লেখ্য,  ২৩ জুন তারিখে লিখিত অভিযোগ দাখিলের পর ২৬ জুন তারিখে আমার মোবাইলে ১০০ টি ফ্রি এসএমএস (৩ দিন মেয়াদ) আসে। যদিও এই এসএমএস আমার কাছে কোনো গুরুত্ব বিষয় নয়।

এরপর আমি পুরস্কার বিতরণের দৃশ্য স্ব-চক্ষে দেখে আসতে এবং হ্যান্ডসেটের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে গত ৭ জুলাই,১৩ ইং তারিখে আবারও গ্রামীণফোনের মতিঝিল সেন্টারে উপস্থিত হই। এবারের কাষ্টমার ম্যানেজারের (মি. হানিফ) কাছে হ্যান্ডসেটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান যে, তাদের এখান থেকে কাউকেই কোনো হ্যান্ডসেট দেয়া হয় নাÑ এসব দেয়া হয় হেড অফিস থেকে। দুর্ভাগ্য বশতঃ ২৩ জুন তারিখের কাষ্টমার ম্যানেজার (মি. রেজা) ৭ জুলাই,১৩ ইং তারিখে উপস্থিত ছিলেন না। থাকলে দু’জনকে তখনই মুখোমুখি করতে পারতাম। এবার আমি ২৯ মে তারিখে এবং মে মাসের লোকাল ভয়েস কল ব্যবহারের ভিত্তিতে আমার অবস্থান কততম সেটি জানতে চাইলাম। এ বিষয়ে তিনি আমাকে আগের ম্যানেজারের মতই একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বললেন। আমার লিখিত অভিযোগ তৈরিই ছিলÑ অতঃপর আমি আমার দ্বিতীয় লিখিত অভিযোগটি তার কাছে জমা দিলাম।

দ্বিতীয় লিখিত অভিযোগের সূত্র ধরে গত ৯ জুলাই সকালে গ্রামীণফোনের কাষ্টমার সার্ভিস (১২১) থেকে আমার কাছে একটি কল আসে। এবারের কাষ্টমার ম্যানেজার আমাকে জানান যে, হ্যান্ডসেট বিজয়ীদের জুনের মাঝামাঝি সময়ে এসএমএস করে ফলাফল জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি বললাম, গত ২৩ জুন তারিখে মতিঝিল সেন্টারের ম্যানেজার (মি. রেজা) বললেন ফলাফল জানানো হবে জুলাই মাসে। আর আপনি এখন বলছেন জুনের কথা। আপনাদের কথাবার্তাই তো সন্দেহজনক। আপনারা এতগুলো স্মার্টফোন আদৌ গ্রাহকদের দিচ্ছেন কি দিচ্ছেন না সেটাই তো বুঝতে পারছি না। এই পুরস্কারগুলো কবে-কোথায়-কখন দেয়া হবে আপনি কিছু বলতে পারেন? তিনি বললেন, জুলাই মাসেই একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবার হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে এবং অবশ্যই মিডিয়ায় কাভারেজ পাবে। আমি এবার ২৯ মে তারিখে এবং মে মাসের লোকাল ভয়েস কল ব্যবহারের ভিত্তিতে আমার অবস্থান কততম সেটি জানতে চাইলাম এবং ফ্রি এসএমসের জন্যে প্রযোজ্য হওয়ার সত্ত্বেও আমার নামটি বাদ পড়েছিল এটিও তাকে স্মরণ করিয়ে দিলাম। তিনি আমার বিষয়টি পুনরায় খতিয়ে দেখতে বেশ কিছুটা সময় চেয়ে নিয়ে কলটি রেখে দিলেন। বিকেলে সেই কাষ্টমার ম্যানেজার আবারও আমাকে ফোন করলেন এবং যথারীতি জানিয়ে দিলেন আমি পুরস্কার পাইনি। আমি বললাম, প্রত্যেক প্রতিযোগীতায় জয় পরাজয় আছে- সেটা আমি মেনে নিচ্ছি। আপনি শুধু এটুকু বলেন যে ২৯ মে তারিখের বিজয়ী কারা, তাদের স্কোর কত এবং আমার স্কোরই বা কত? তখন তিনি বললেন যে, তারা এক গ্রাহকের তথ্য আরেক গ্রাহককে দেন না। আমি বললাম, আমি যাদের কাছে হেরে গেছি তাদের আমি অভিনন্দন জানাতে চাই এবং তারা আসলেই পুরস্কার পেয়েছেন কিনা সেটাও যাচাই করে দেখতে চাই। এবার তিনি আমার কথার জবাব দিতে না পেরে তার সিনিয়র ম্যানেজারের কাছে কলটি হস্তান্তর করলেন।

সিনিয়র ম্যানেজারের কাছে ২৯ মে তারিখের বিজয়ী এবং আমার অবস্থান জানতে চাইলে তিনিও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করেন। আমি বললাম, আপনারা সত্যিই সত্যিই পুরস্কার দিচ্ছেন কিনা কিংবা আমার মতো সবাইকে বিজয়ী হননি বলে না করে দিচ্ছেন কিনা সেটা আমি কিভাবে বুঝব? এবার তিনি আবারও নিশ্চিত করলেন যে, এত বড় একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অবশ্যই মিডিয়ায় কাভারেজ পাবে। এবার আমি বললাম যে, তাহলে আমি আজ থেকে প্রধান প্রধান জাতীয় দৈনিক এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় চোখ রাখব। আর কোথাও যদি এ সংক্রান্ত নিউজ বা কাভারেজ না পাই তবে আমি কিন্তু নিজেই মিডিয়ার লোকজন নিয়ে আপনাদের কাছে চলে আসব। এবার তিনি আমার বিষয়টি পুনরায় খতিয়ে দেখতে আবারও সময় নেন এবং আজ পর্যন্ত তিনি আমাকে আর কল করেন নি।

আমি প্রধান প্রধান জাতীয় দৈনিক এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় চোখ রাখার পাশাপাশি প্রতিদিন তাদের কাষ্টমার সার্ভিস (১২১) এ প্রতিদিন অন্ততঃ একবার করে ফোন করার সিদ্ধান্ত নিলাম। কবে-কোথায়-কখন পুরস্কারগুলি দেয়া হবে সে ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখার জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জুলাই বিকেলে গ্রামীণফোনের কাষ্টমার সার্ভিস (১২১) এ ফোন করি। এবারের কাষ্টমার ম্যানেজার (মি. জাহিদ) আমাকে জানালেন যে, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই তাদের বিভিন্ন কাষ্টমার সার্ভিস সেন্টার থেকে সকল বিজয়ীদের পুরস্কার দিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি বললাম, আমি তো জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই অর্থাৎ গত ৭ জুলাই তারিখে আপনাদের অন্যতম বড় একটি কাষ্টমার সার্ভিস সেন্টারে (মতিঝিল সেন্টার) গিয়েছিলাম। সেদিন সেখানে আমি একটি লিখিত অভিযোগও পর্যন্ত দিয়ে এসেছি। মতিঝিল সেন্টার (মি. হানিফ) বলেছে তাদের ওখান থেকে কাউকে কোনো পুরষ্কার দেয়া হয়নি। পুরস্কার দেয়া হবে হেড অফিস থেকে। আর আপনি বলছেন জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে কাষ্টমার সার্ভিস সেন্টার থেকে পুরস্কার দেয়ার কথা! এবার তিনি কোনো জবাব দিতে পারলেন না। আমি আমার ফলাফল এবং অবস্থান জানতে চাইলে তিনি তাদের হেড অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে ফোনটি রেখে দেন। কিন্তু হেড অফিসে কার সঙ্গে কোন ডিপার্টমেন্টে যোগাযোগ করব এ বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছুই বলেন নি।

গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের কারো তথ্যের সঙ্গে কারো তথ্যে কোনো মিল খুঁজে না পেয়ে অতঃপর গত ১৪ জুলাই,১৩ ইং তারিখে পুনরায় তাদের মতিঝিল সেন্টারে স্ব-শরীরে উপস্থিত হই। মতিঝিল সেন্টারের কাষ্টমার ম্যানেজার (সুপ র্ণা) আমাকে জানান যে, ক্যাম্পেইনের ফলাফল এখনও জানানো হয়নি এবং পুরষ্কারের হ্যান্ডসেটও বিতরণ করা হয়নি। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে আমাকে বিভ্রান্ত করার কারণে এবং আমার সঠিক ফলাফল জানতে আমি তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। কিন্তু অভিযোগ দাখিলের সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগের জবাব দেয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত আমার সঙ্গে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার যোগাযোগ করা হয়নি।

লিখিত অভিযোগের জবাব না দেয়ার কারণ জানতে গত ২১ জুলাই,১৩ ইং তারিখে আমি আবারও গ্রামীণফোনের মতিঝিল সেন্টারে যাই। পুরো এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আমার লিখিত অভিযোগের জবাব না দেয়ার কারণ জানতে চাইলে এবারের কাষ্টমার ম্যানেজার (মি. মাকসুদ) আমাকে জানান যে, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ২৪ জুলাই,১৩ ইং তারিখে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আর মে মাসের হ্যান্ডসেট বিজয়ীদের পুরস্কারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান যে, মতিঝিল সেন্টার থেকে কোনো বিজয়ীকেই এখন পর্যন্ত কোনো হ্যান্ডসেট প্রদান করা হয়নি। এরপর আমি তাদের প্রতিশ্রুত ২৪ জুলাই,১৩ ইং তারিখে আমার লিখিত অভিযোগের জবাবের জন্যে অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু দুখঃজনক হলেও সত্যি যে, পর পর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত আমার সঙ্গে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ করেনি।

যোগাযোগ না করার কারণ জানতে সর্বশেষ ২৮ জুলাই তারিখে আমি আবারও মতিঝিলের গ্রামীণফোন সেন্টারে যাই। এবারের কাষ্টমার ম্যানেজার (শায়লা) কম্পিউটারে রেকর্ড দেখে নিয়ে আমাকে জানালেন যে, ২৪ তারিখে আমার মোবাইলে অসংখ্যবার চেষ্টা করেও নাকি আমাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। আমি বললাম, ফোনে আমাকে না পাবার কোনো কারণ নেই। কারণ, ২৪ তারিখে আমার মোবাইল ২৪ ঘন্টাই চালু ছিল এবং আমি নিজেও সারাদিন আপনাদের ফোনের অপেক্ষায় ছিলাম। এমন কি নামাজের সময়েও ফোন বন্ধ না রেখে বরং সাইলেন্ট করে রেখেছি। তবুও আপনাদের রেকর্ডে যেহেতু লেখা আছে আমাকে ফোনে পাওয়া যায়নি, সেহেতু আমি ধরেই নিলাম যে আমাকে পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে আমার অভিযোগের জবাবটিও নিশ্চয়ই আপনাদের রেকর্ডে লেখা থাকার কথা। লিখিত জবাবটি বলুন আমি শুনি। এবার তিনি কী জবাব দিবেন তা বুঝতে না পেরে ২৪ তারিখে আমার সঙ্গে যার যোগাযোগ করার কথা ছিল তার কাছে ফোন করলেন।

বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে তিনি আমার কাছে আমার কাছে জানতে চাইলেন যে, আমি আসলে কী জানতে চাই। আমি বললাম, ২৯ মে তারিখে আমি ২৪ ঘন্টা অবিরাম কথা বলেছি। বলতে গেলে একশ’ নম্বরের পরীক্ষায় আমি ১০০ টি পশ্নেরই সঠিক উত্তর দিয়েছি। অথচ আপনারা বলছেন যে আমি বিজয়ী হইনি। সেক্ষেত্রে আমি এই ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। ব্যবহারের ভিত্তিতে ঐদিন আমার অবস্থান কততম সেটি জানতে চাই এবং ঐদিনের তিনজন বিজয়ী কারা কারা সেটিও জানতে চাই। আমি পরাজিত প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানাতেই চাই। এবার তিনি বললেন যে, তারা এক গ্রাহকের তথ্য আরেক গ্রাহককে দেন না। আর কেউ যদি বিদেশে কল করে ২৪ ঘন্টা কথা বলে থাকে সেক্ষেত্রে তারাই প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছে। আমি বললাম, আপনি তো আপনাদের ক্যাম্পেইনের শর্ত সম্পর্কে কিছুই জানেন না। ক্যাম্পেইনের শর্তে বিদেশের কল প্রযোজ্য ছিল না, ছিল শুধু লোকাল ভয়েস কলের কথা। এবার তিনি আমার কথার আর কোনো জবাব দিতে না পেরে আমার আরও কোনো অভিযোগ থাকলে তা লিখিত আকারে জমা দিতে বলেন। তার কথামতো আমি আরো একটি লিখিত অভিযোগ তার কাছে জমা দেই। ৮ আগষ্ট তারিখের মধ্যে আমার অভিযোগের জবাব দেয়া হবে বলে তিনি জানান। আর পুরস্কার বিতরণের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান যে, তাদের বিভিন্ন সেন্টারগুলো থেকে বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। অথচ দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও সেখানে আমি পুরস্কার বিজয়ী কাউকেই খুঁজে পাই নি। পরে বুঝলাম এটিও তাদের মনগড়া কথা।

এখন সর্বশেষ আপডেট হচ্ছে- তাদের দ্বিতীয় প্রতিশ্রুত ৮ আগষ্ট তারিখেও তারা আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। যদিও আমি অনেকটাই নিশ্চিত ছিলাম যে এবারও তারা আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করবে না। কারণ, এপর্যন্ত আমার কোনো প্রশ্নেরই সন্তোসজনক জবাব তারা দিতে পারেননি।

পুরো ঘটনা থেকে আমি এখন পুরোপুরি নিশ্চিত যে, প্রকৃতপক্ষে দামী এই স্মার্টফোনগুলি গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ কখনোই কাউকে দেয়নি এবং দেবেও না। আর যদি লোক দেখানোর জন্যে দু’একজনকে দিতেও হয় তবুও সেটা তাদের নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে বলেই আমার ধারণা। ফলাফল জানতে আমার মতো যারাই যোগাযোগ করেছে, তাদের সবাইকে একটি কথাই বলে দেয়া হয়েছে, ‘বিজয়ীদের মোবাইলে এসএমএস করে ফলাফল জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আপনি যেহেতু এসএমএস পাননি, সেহেতু আপনি পুরস্কার জিতেননি’। তাদের সবার এই একটিমাত্র বাক্য ছাড়া আর একটি বাক্যেও কারো সঙ্গে কারোর মিল আমি খুঁজে পাইনি।

 

Level 0

আমি অয়ন রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 12 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

রক্তচোষা 😐

ভাই আপনি ঠিক বলেছেন । স্মার্ট প্রতারণার ফাদে পা না দেওয়াই ভাল

এরা হচ্চে বাংলাদেশের আর এক ডেসটিনি, উনিপেটুউয়,এরা বাংলাদেশের মানুষের অনেক কষ্টে উপার্জিত অর্থ প্রলভন দেখিয়ে দিনেদুপুরে ডাকাতি করে তবুও এদের বিচার হয় না ,হায়রে আমাদের সোনার বাংলা,হায়রে স্বাধীনতা, এদের বিপক্ষে কেও কথা বলেনা ।সবাই শুধু হেফাজত,গনজাগরন মঞ্চ,বিএনপি,আওয়ামিলীগ নিয়ে বেস্ত। আগে দেশের মাটিতে এই সব বিদেশি বন্ধুদের বিচার করেন ।আমাদের দেশের উন্নয়ন এর টাকা তারা আমাদের কাছ থেকে কীভাবে নিয়ে তাদের দেশের উন্নয়ন করছে। আর এর জন্য কি আমাদের পূর্ব-পুরুষরা দেশ স্বাধীন করেছিল?মুক্তিযুদ্ধ করেছিল ,আজব বাঙালি। বলতে পারেন কেও।

এটা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব মতামত,কেও কস্ট পেয়ে থাকলে আমাকে মাফ করে দিবেন। আমি জেনেশুনে কাউও কস্ট দিতে চাই না

আপনিও ভাই বাটপার এর কথায বিশ্বাস করলেন!!!!!

গ্রামীণ ফোন অন্যান্য multinational corporate দের মতই একতা ভাম্পায়ের। আগের দিনে ছিল ইস্ট ইনডিয়া কোং… আর এখন হচ্ছে GP Co.

ফারহানুল হাসান ভাই (আপনিও ভাই বাটপার এর কথায বিশ্বাস করলেন!!!!!) কথা টা বুঝি নাই।

কেউ কি একটা ভালো পরামর্শ দিত পারেন? জিপিকে কীভাবে শায়েস্তা করতে পারি?

    Level 0

    @অয়ন রহমান: ভাই জিপিকে শায়েস্তা করা সহজ হবে না। সেটার করন আমরা অনেকেই দেখলাম, সেদিন এত লোকজনের সমাগম হল কিন্তু দেখলেন-ই ত দুই এক-টা টিভি চানেল এবং খবরের কাগজ ছাড়া কোথাও এ সমন্ধে কোন কিছু বলা বা লেখা হয়নি। আর কিভাবেই দেখবেন বা পড়বেন, টিভি চানেলেতো দেখেন-ই তাদের বিজ্ঞাপন দিতে-ই হিমশিম খেয়ে যায়, আর বিজ্ঞাপন না দিলে তাদের চলবে কিভাবে! আর খবরের কাগজেরওতো একই অবস্থা!!! পাতার পর পাতা শুধু তাদেরই বিজ্ঞাপন। কোন কোন সময়তো দেখা যায় পুরো পৃষ্ঠায় তাদের বিজ্ঞাপন…… এখন তারা কি আর দোষ দেখাবে????!!!!!!!!!!!…

      @SENAT1831: ভাই আপনারা আর কি কোন উদ্দোগ নেবেন না এ ব্যাপারে ?

      @SENAT1831: ভাই আপনি আপনি ঠিকই বলেছেন। এদেশের মিডিয়া গুলো টিকে আছে কেবলমাত্র ইউনিলিভার ও মোবাইল কোম্পানি গুলোর বদৌলতে। এদের বিরুদ্ধে এরা কেউই মুখ খুলতে চায় না। BTRC -র কাছে নালিশ করলে এরা কিছু করবে কী!?

ভাই ! বাংলাদেশে এগুলো দেখার কেউ নেই। সরকার আছে অন্য চিন্তায় ।

Level 0

গ্রামীনফোন তো বাংলাদেশে ভন্ড পিরের মতো অবস্থান করছে। এরা সজা হবে লাঠির মাধ্যমে।

কুত্তা ফোন

আমি এই গ্রামীণ সিমকে আজ থেকে বাদ দেবার চেষ্টা করব

sokal bikal bas diteci kuttader

Level 0

…… প্রকৃতপক্ষে দামী এই স্মার্টফোনগুলি গ্রামীণফোন কাউকেই দেয়নি এবং দেবেও না…যথার্থ বলেছহেন, তবে কোন একদিন সাজানো নাটক করে তারা নিজেরাই ভাগাভাগি করে নিতে পারে ।

Level 0

আপনার জন্যে দুঃখিত। আপনি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনটি (২০০৯) [http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_all_sections.php?id=1014] পড়ে দেখুন এবং একজন ভালো উকিলের সাহাজ্য নিয়ে আদালতে জান।

আমার ধারণা এই আইনের ৪৪ নং ধারা মতে আপনার (এবং আরো অনেকের) সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। ৪৪নং ধারা মতে –

|| মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করিবার দণ্ড ||
ধারা ৪৪ > “কোন ব্যক্তি কোন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন৷”

আপনি এ বিষয়ে এখানেও যোগাযোগ করে দেখতে পারেন –
“জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
১ কারওয়ান বাজার(টিসিবি ভবন-৮ম তলা), ঢাকা-১২১৫
ফোন / ফ্যাক্স: ৮৮-০২-৮১৮৯৪২৫, ৮৮-০২-৮১৮৯০৪৫, ৮৮-০২-০১৭১৩-৪৩৬৩৬০
ই-মেইল: [email protected]
http://www.dncrp.gov.bd/

আমাদের দেশের সরকারের দূর্বল রাষ্ট্রনীতির কারনে মোবাইল অপারেটে কোম্পানী গুলো প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভাবে আমাদের রক্তচুষে খায়…