১১টি Amazing অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ যেগুলো আপনার স্মার্ট ফোনের ব্যবহার পাল্টে দিবে!

টিউন বিভাগ মোবাইলীয়
প্রকাশিত
জোসস করেছেন
Level 12
কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা

আজকের এই টিউনে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য সবচাইতে আশ্চর্য জনক কিছু অ্যাপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যেগুলো প্রতিদিন ডিভাইসে ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার ডিভাইসের সাধারণ অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেন।

গুগল প্লে স্টোরে এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে, যা আসক্তিকর গেম থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব অ্যাপ। যেসব অ্যাপ গুলোর মধ্যে থেকে কিছু অ্যাপস আপনার জন্য তেমন সুবিধা এনে দিতে না পারলেও কিছু কিছু অ্যাপ রয়েছে, যেগুলো আপনার ফোনকে কাস্টমাইজ করার এক দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। যে সব অ্যাপগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি স্মার্ট-ফোন ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা কে অনেকটা পাল্টে দিতে পারেন।

গুগল প্লে স্টোরে এমন আরও অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলো আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করার পদ্ধতি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যে, আপনি যে ব্রান্ডের ফোন ব্যবহার করেন বা যে ফোনটি ব্যবহার করেন, সেই ফোনে তেমন কোনো ফিচার থাকে না। এক্ষেত্রে আপনি আপনার ফোনের নতুন নতুন ফিচার যোগ করার জন্য গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে অ্যাপ খুঁজে থাকেন। যেসব অ্যাপগুলোর মধ্য থেকে কিছু অ্যাপ রয়েছে যেগুলো আপনার ফোনের ইন্টারফেস কে আরও কিছুটা উন্নত করে, আপনার ফোনের সাধারণ কাজ গুলোকে আরো কিছুটা স্বয়ংক্রিয় করে তোলে এবং এতে করে আপনার ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেমকে আরো বেশি উন্নত করে তোলে। এভাবে করে কোন একটি ফিচার আপনার ফোনে না থাকলেও আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করে আলাদাভাবে আপনার ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেমে ফিচার যোগ করে নিতে পারেন।

চলুন তবে আজকের এই টিউনে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য কিছু আশ্চর্যজনক অ্যাপ দেখে নেয়া যাক।

১. লিনকেট ব্রাউজার (Lynket Browser)

Lynket Browser

মনে করুন, আপনি কোন তথ্য খোঁজার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অথবা ইন্টারনেটে খোঁজ করছেন। এক্ষেত্রে সে সময় আপনাকে অবশ্যই ব্রাউজারে অনেকগুলো ট্যাব ওপেন করতে হতে পারে। অথবা অন্য কোনো কারণে হয়তোবা ব্রাউজারে গিয়ে আপনাকে অনেকগুলো ট্যাব ওপেন রেখে কোন কিছু খুঁজতে হতে পারে। আপনি যদি কম্পিউটার ব্যবহার না করে থাকেন, তবে মোবাইলে ইন্টারনেটের অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করার জন্য অবশ্যই আপনাকে ব্রাউজারের অনেকগুলা ট্যাব চালু রাখতে হবে। আর এক্ষেত্রে একটি ট্যাব থেকে অন্য একটি ট্যাব ওপেন করার মাধ্যমে আপনি কাজটি খুব সহজেই করতে পারবেন।

লিনকেট ব্রাউজারের মাধ্যমে আপনি এমনি কাজ করতে পারবেন, তবে এটি একটু ভিন্নভাবে। যদিও গুগল ক্রোম এবং অন্যান্য সকল ব্রাউজার দিয়ে একাধিক ট্যাব ওপেন করে সেগুলো দিয়ে কাজ করা যায়। লিনকেট ব্রাউজারের মাধ্যমে আপনি ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেকগুলো ওয়েব পেজ খুলতে পারেন এবং এগুলোকে চাইলে ভাসমান অবস্থায় আপনার মোবাইলের স্ক্রিনের উপর রাখতে পারেন। আপনি মেসেঞ্জার থেকে যখন কারো সঙ্গে চ্যাটিং করেন এবং চ্যাটিং করতে করতে মেসেঞ্জার থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন আপনি নিশ্চয় ডিসপ্লের উপর সেই ব্যক্তির ছোট্ট একটি প্রোফাইল আইকন দেখতে পান Chat head আকারে এবং সেখানে ক্লিক করার মাধ্যমে মেসেঞ্জারে না গিয়েও আপনি চ্যাটিং করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনি কোন একটি কাজ করতে করতে সেসব একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে Chat head-এ ক্লিক করে কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি এই কাজটি করতে পারেন একটি ব্রাউজারে এবং এখানে ব্যক্তির পরিবর্তে যদি সেগুলো হয় বিভিন্ন ওয়েবসাইট, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হয়? নিশ্চয় এক্ষেত্রে ব্যাপারটি আপনার কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয় হবে। আর এই কাজটি আপনি করতে পারছেন লিনকেট ব্রাউজারের এর মাধ্যমে।

এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলের থাকা বিদ্যমান ব্রাউজার এর সাথে কাজ করে এবং আপনি যখন যে লিংকটিতে ক্লিক করেন তখন সেই পেজটিতে অনেক দ্রুত গতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লোড। এক্ষেত্রে এই ব্রাউজারে আপনার লিংকটি ওপেন করার জন্য AMP বা Accelerated Mobile Page সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এই ব্রাউজারের এমন ব্যবস্থাটি আপনি ফেসবুকের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল ফিচারে ও দেখতে পান। যেখানে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর কোন একটি লিঙ্ক এ ক্লিক করলে, সেই লিংকটি অনেক দ্রুত গতিতে ওপেন হয়।

লিনকেট ব্রাউজারের সবচাইতে বড় বৈশিষ্ট্য হলো যে, এটিতে কোন একটি ওয়েব পেজকে আর্টিকেল মোডে পড়া যায়। যার ফলে কোন একটি আর্টিকেল অনেক সুন্দরভাবে রিডার মোডে লোড হয়।

Lynket Browser

Official Download @ Lynket Browser

২. পপআপ উইজেট ৩ (Popup Widget 3)

Popup Widget 3

আপনার মোবাইলের সেরা Android Widget এর সত্যিই অনেক দরকার রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি যদি অনেকগুলো Android Widget একসঙ্গে ব্যবহার করতে থাকেন, তবে এটি খুব দ্রুতই আপনার হোমস্ক্রীন কে একেবারে এলোমেলো করে দিতে পারে এবং দেখা যাবে আপনার ফোনকে এটি অনেক ধীর গতির করে দেবে। কেননা অনেকগুলো Widget চালু করে রাখলে, এটি আপনার ফোনে অ্যাপ ইন্সটল করার মতোই একটি জায়গা নিয়ে থাকে।

এক্ষেত্রে Popup Widget 3 দ্বারা আপনি খুব সহজেই এই কাজগুলোকে সহজ করতে পারেন। আমরা দেখে থাকি, Android Widget গুলো বেশিরভাগ-ই অনেক জায়গাজুড়ে অ্যান্ড্রয়েড হোমস্ক্রীনে থাকে। এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করা থাকলে Android Widget গুলোকে আপনার মোবাইলের হোম স্ক্রিনে 1×1 আইকনে পরিণত করবে, যেটি সাধারণত স্বাভাবিক অ্যাপের সাইজ। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে আপনি যখন সেই আইকনটিতে ক্লিক করবেন, তখন আপনি দেখতে পারবেন যে, এটির ভেতরে কি রয়েছিল।

এভাবে করেই অ্যাপটি আপনাকে Widget এর সুবিধা দিয়ে আপনার ফোনের পারফরম্যান্সে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে, বরং আপনার ফোনকে আরো কিছুটা গতিশীল করে তোলে। আবহাওয়ার জন্য Weather Widget চালু করার মাধ্যমে আপনি আবহাওয়ার অ্যাপটি সম্পূর্ণ চালু না করে ও Weather Widget এর মাধ্যমে দেখতে পারেন।

আপনার মোবাইলে যদি অনেক ধরনের অ্যাপ ইন্সটল করা থাকে, তবে আপনি Android Widget-এ গেলে সেসব অ্যাপের অনেক Widget দেখতে পাবেন। আপনার যদি মনে হয়, সেসব অ্যাপগুলোর Widget আপনার মোবাইলের হোম পেজে রাখার দরকার রয়েছে, তবে আপনি এগুলোকে হোমপেজে রেখে এই অ্যাপটির মাধ্যমে এগুলোর আইকন ছোট করে আনতে পারেন।

Popup Widget 3

OfficialDownload @ Popup Widget 3

৩. নোটপিন (Notepin)

notepin

প্রতিদিন আমাদেরকে অনেক কাজ করতে হয় এবং কোন কোন কাজের কথা পরবর্তীতে করার জন্য আমাদেরকে মনে করেও রাখতে হয়। এক্ষেত্রে অনেক কর্ম ব্যস্ততার ভিড়ে আমাদের হয়তোবা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের কথা আর মনে থাকে না। আর এসময় আপনি যদি মোবাইল চালাতে থাকেন, তবে কখন যে আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো পার করে দিয়েছেন, তারও তো কোন হিসাবই থাকেনা। কিন্তু এমন যদি হয় যে, আপনার সামনে কোন একটি অ্যাপ বারবার সেই কাজের কথা মনে করিয়ে দিবে?

এক্ষেত্রে সেই অ্যাপটি হতে পারে নোটপিন অ্যাপ। নোটপিন অ্যাপটি আপনার এমন কিছু উপকার করবে যে, আপনি হয়তো বা ভাববেন কেন ইতিমধ্যেই আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই অ্যাপটি ছিলনা। সোজা কথায় এই অ্যাপটির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলা যায় যে, এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি কোন নোট করলে, সেগুলোকে আপনার মোবাইলের বিজ্ঞপ্তি প্যানেলে পিন করে রেখে দেওয়া যায়।

এই অ্যাপটির ব্যবহার কিন্তু মোটেও জটিল নয়। আপনি সাধারণ নোটপ্যাড অ্যাপ এর মত এই অ্যাপটিতে গিয়ে কোনো একটি কাজের কথা মনে করে রাখার জন্য Title এবং Description লিখে সে গুলোকে Pin করে দিলে, সেগুলো আপনার বিজ্ঞপ্তি প্যানেলে প্রদর্শিত হবে। এক্ষেত্রে আপনি আলাদা আলাদা বিষয়গুলোকে আপনার বিজ্ঞপ্তি প্যানেলে প্রদর্শন করার জন্য প্রত্যেকটি ভিন্ন ভিন্নভাবে লিখে সেগুলোকে পিন করে সিলেক্ট করে দিতে পারেন। আপনি যখন কোনো একটি কাজের কথা লিখে সেটিকে পিন করে দিবেন, তখন এটি আপনার Notification বারে সবসময় প্রদর্শিত হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি এটিকে Unpinned করেন।

সবচাইতে মজার ব্যাপার হলো, আপনি যদি সমস্ত Notification মুছে দেবার জন্য Clear notification-তেও ক্লিক করেন, তবুও এটি Notification বার থেকে চলে যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সেই লেখাটিকে আনপিন করছেন। আর এক্ষেত্রে আপনি যখন কিছুক্ষণ পর পর কোন কাজের জন্য নোটিফিকেশন বার চেক করতে যাবেন, তখন অবশ্যই আপনার সেই কাজের কথা মনে হবে। অতএব বলা যায় যে, এটি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা কে আশ্চর্যজনকভাবে পরিবর্তন করে দিতে পারে এবং এটি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য একটি আশ্চর্যজনক অ্যাপ। যে অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি আপনার সময়ের যথাযথ ব্যবহার করতে পারেন এবং এতে করে আপনার সব কাজ সঠিক সময়েই হবে।

Notepin

Official Download @ Notepin

৪. ম্যাক্রোড্রয়েড (MacroDroid)

MacroDroid

আমরা তো প্রতিদিন মোবাইলে অনেক কাজ করে থাকি। কিন্তু আমরা যেসব সাধারণ কাজগুলো মোবাইল চালানোর ক্ষেত্রে করে থাকি, এসব কাজগুলো কে আমাদের নিজেদেরকেই করতে হয়। এসব কাজগুলোর মধ্যে যেমনঃ কলেজে গিয়ে মোবাইলকে সাইলেন্ট মোড করা, মোবাইলে ভিডিও গেম খেলার সময় ব্রাইটনেস বাড়িয়ে দেওয়া এবং ফোনকে সাইলেন্ট করা ইত্যাদি বিষয়। কিন্তু প্রতিদিনের এসব কাজগুলো যদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যায়, তাহলে ব্যাপারটি কেমন হয়? এক্ষেত্রে ব্যাপারটি আপনার কাছে নিশ্চয় অনেক বেশি আকর্ষণীয় হবে।

আপনার প্রতিদিনের কাজ গুলোকে অটোমেশন করার জন্য ম্যাক্রোড্রয়েড জনপ্রিয় একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ। আমার অভিজ্ঞতা মতে, আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এতদিন যে সমস্ত অ্যাপস গুলোকে ব্যবহার করেছেন, সেসব অ্যাপ গুলোর মধ্যে থেকে এই অ্যাপটি সবচাইতে সেরা হবে। আপনার ফোনে যে সমস্ত ফিচার ইতিমধ্যেই যুক্ত করা রয়েছে, তার চাইতে এই অ্যাপটি আপনাকে আরো অনেক বেশি ফিচার যুক্ত করে দিতে পারে, যেগুলো আপনার ধারণারও বাইরে। ম্যাক্রোড্রয়েড অ্যাপটি আপনার ফোনটিকে একেবারেই স্বয়ংক্রিয় করে তুলতে পারে। যদিও এই টিউনের মাঝে এই অ্যাপটির সম্পূর্ণ বর্ণনা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়, কিন্তু তবুও আমি এই অ্যাপটি সম্পর্কে আপনাকে কিছুটা হলেও ধারনা দেবার চেষ্টা করছি।

এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি এমন কিছু জটিল কাজকে অবিশ্বাস্য-ভাবে খুব সহজেই করতে পারেন। যেমন ধরুন, আপনি চাচ্ছেন যে, পাবজি গেম খেলার জন্য সেই অ্যাপস এর ভেতরে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার মোবাইলের ব্রাইটনেস বাড়িয়ে যাবে এবং সে সময় আপনার মোবাইলে Do not disturb মোড চালু হবে। আবার আপনি যখন সেই অ্যাপ থেকে বেরিয়ে এসে কলেজে যাবেন, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবার আপনার মোবাইলটি সাইলেন্ট মোডে চলে যাবে। এসব কিছু স্বয়ংক্রিয়ভাবে করার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করতে হবে এবং আপনাকে সামান্য কিছু কাজ করে এগুলোকে সেট করতে হবে।

এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করা হয়ে গেলে, আপনাকে শুধুমাত্র কোন একটি কাজ করার জন্য সেটিং কনফিগার করতে হবে। অর্থাৎ, আপনি যে কাজটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যে পদ্ধতিতে করতে চাচ্ছেন, সেটি সেট করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি কোনো একটি লোকেশন বা এরিয়া সিলেক্ট করে দেন, যেখানে গিয়ে আপনার মোবাইলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাইলেন্ট মোডে চলে যাবে, তাহলে আপনাকে একটি মাইক্রো তৈরি করতে হবে। এরপর আপনি সেই জায়গাটি সিলেক্ট করে, তারপর সেখানে আপনার মোবাইলটি কি কি আচরণ করবে, সেটি সিলেক্ট করে দিলে, আপনার মোবাইলটি সে অনুযায়ীই কাজ করবে।

এছাড়া কোন একটি অ্যাপ এর ভিতরে গিয়ে আপনার মোবাইলের ব্রাইটনেস এবং ভলিউম কিরকম হবে সেটিও আপনি সেট করে দিতে পারেন। এভাবে করে ভলিউম একেক জায়গায় একেক রকম করার জন্য আপনাকে হেড-ফোন ও ব্যবহার করা লাগতে পারে। আর এতে করে আপনি সূক্ষ্মভাবে প্রত্যেকটি কাজের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়তা নিয়ে আসতে পারেন।

আপনি নিশ্চয় প্রতি রাতে আপনার ফোনটিকে প্রায় সময়ই এয়ারপ্লেন মোডে রেখে ঘুমান। কিন্তু প্রতিদিন এভাবে করে Airplane mode-এ রেখে ঘুমানোর কথা যদি আপনার মনে না থাকে? তবে আপনি এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন ম্যাক্রোড্রয়েড অ্যাপটিকে। যে অ্যাপটি আপনার মোবাইলকে ঠিক রাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে Airplane mode-এ নিয়ে যাবে। এছাড়া ম্যাক্রোড্রয়েড অ্যাপটি আরও অনেক বেশি ব্যবহার রয়েছে, যেসব বর্ণনাগুলো আপনাকে এই টিউনের মাঝে সম্পূর্ণ দেওয়া সম্ভব নয়।

আমি চেষ্টা করব আগামীর কোন টিউনে এই অ্যাপটির বিভিন্ন ফিচার নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে সম্পূর্ণ টিউন করার। আপনি এই অ্যাপটির মাধ্যমে এমন সব ম্যাক্রো তৈরি করতে পারেন, যেগুলোর মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনে আপনার ইচ্ছার সূক্ষ্ম প্রতিফলন ঘটবে। এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনে কোন একটি ম্যাক্রো তৈরি করার মাধ্যমে এটি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে এবং এটি আপনার অনেক জটিল কাজকে সহজ করে দেয়।

MacroDroid

Official Download @ MacroDroid

৫. আইএফ টি টি টি (IFTTT)

IFTTT

আপনারা উপরের ধাপে ম্যাক্রোড্রয়েড সম্পর্কে জেনে আসলেন। যেখানে ম্যাক্রোড্রয়েড অ্যাপ আপনার মোবাইলকে অটোমেশন করার কাজে ব্যবহার হয়। কিন্তু এটি শুধুমাত্র আপনার মোবাইলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু আপনি যদি এর চাইতে আরো বেশি অ্যাডভান্স কিছু নিয়ে কাজ করতে চান, তবে আইএফটিটেকটিউনস (IFTTT) হতে পারে আপনার জন্য সেরা পছন্দ। ম্যাক্রোড্রয়েড আপনার ফোনকে অনেকটা অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয়তা করতে নিখুঁত ভাবে কাজ করে, ঠিক তেমনি ভাবে IFTTT বিভিন্ন ওয়েব পরিষেবা গুলোকে অটোমেশন করার কাজে ব্যবহার হয়।

আইএফটিটেকটিউনস (IFTTT) অ্যাপে Applets তৈরি করার মাধ্যমে দুইটি ইন্টারনেটভিত্তিক পরিষেবাকে এক সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারবেন। এখানে এই কথাটি বুঝতে আপনার হয়তোবা কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। সমস্যা নেই, আমি আপনাকে এই বিষয়টি সম্পর্কে একটু বিস্তারিত আলোচনা করছি।

মনে করুন, আপনি ফেসবুকে কোন একটি Post করলেন। এবার আপনি পরবর্তীতে যদি ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্মে একই Post করতে চান, তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে অতিরিক্ত সময় নিয়ে সেই Post টিকে পাবলিষ্ট করতে হবে। কিন্তু এমন যদি হতো যে, আপনি ফেসবুকে সেই Post টি শেয়ার করার পর পর সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্যান্য প্লাটফর্মে ও Post হয়ে যেত? এক্ষেত্রে এটি আপনার কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং আপনার জন্য সময় সাশ্রয়ী হত। আর আপনার এই কাজটি করে দেবার জন্যই রয়েছে আইএফটিটেকটিউনস (IFTTT)।

এছাড়া আপনি যদি মনে করেন যে, ফেসবুকে কোন বন্ধু আপনাকে ট্যাগ করলে সেই ফটোগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে Dropbox-এ গিয়ে জমা হবে, তবে এটিও আপনি করতে পারেন আইএফটিটেকটিউনস (IFTTT) এর মাধ্যমে। আপনার স্মার্ট ডিভাইস কে নিয়ন্ত্রণ করতে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারে টিউন করতে, গুগল ক্যালেন্ডারে আপনার কোন কাজের জন্য এসএমএসের সতর্কবার্তা পেতে, অথবা কোন কিছু কেনার ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের পণ্যগুলোর দাম কমার ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি পেতে আপনি অবশ্যই IFTTT ব্যবহার করতে পারেন। আপনি এই অ্যাপটি ইন্সটল করে আপনার ডিভাইসে চালু করার পর আপনি সত্যিই অনেক বেশি আশ্চর্য হয়ে যাবেন। কিভাবে আপনার এত সব কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যাচ্ছে।

যেমন, আপনার যদি ভুলে যাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে এবং সেজন্য আপনি যদি প্রতিবছর আপনার প্রিয় বন্ধুদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা মেসেজ করতে ভুলে যান, তবে আপনি IFTTT কে ব্যবহার করতে পারেন। এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি সেই বন্ধুদের নাম্বারে আগে থেকেই প্রতিবছরের সেই তারিখের জন্য মেসেজ তৈরি করে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে সেই সেসময় যদি আপনার মোবাইলে এই অ্যাপটি ইন্সটল করা থাকে, তবে সেই তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের কাছে মেসেজ চলে যাবে। এক্ষেত্রে আপনাকে আর কিছুদিন পরপর বন্ধুদের জন্য জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা লিখতে হবে না। সারা জীবনের জন্য একবার লিখলেই যথেষ্ট, তবে মেসেজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে অবশ্যই প্রতিবছর আপডেট করতে পারেন।

তবে এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে শুধুমাত্র ইন্সটল করে রাখলেই কাজগুলো হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই এসব কাজের জন্য সেটিং করতে হবে। আপনি একই কাজগুলো আপনার মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে ও করতে পারেন অথবা তাদের ওয়েবসাইট থেকেও করতে পারেন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসব কাজগুলো কে করার জন্য আপনাকে যে সব সেটিং করতে হবে, সেগুলো আমি এই টিউনে দেখাতে পারছি না। সেক্ষেত্রে আপনাদেরকে আমার আগামী টিউনের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে।

যদিও এই অ্যাপটির এমন সব অসংখ্য ফিচার রয়েছে, যেগুলো আপনাকে একটি টিউনের মাঝে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমি যদি শুধুমাত্র এই অ্যাপটি দিয়ে করা স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম এর কথা বলি, তবে টিউনটি অনেক বেশি দীর্ঘ হয়ে যাবে।

IFTTT

Official Download @ IFTTT

৬. Full-screen Gestures

Full Screen Gestures

বর্তমানের নতুন ভার্সনের অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন গুলোতে Gesture নিয়ন্ত্রণ করার অনেক ভালো উপায় রয়েছে। তবে এটিকেও অনেকে আবার অনেক বেশি সীমিত মনে করতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের প্রয়োজন হতে পারে আরও বেশি অ্যাডভান্স লেভেলের Gesture নিয়ন্ত্রণ। আমাদের ব্যবহৃত স্মার্ট-ফোনগুলোতে ডিফল্ট ভাবে যে বাটনগুলো থাকে, সে গুলোকে চাইলেই নিজের ইচ্ছামত পরিবর্তন করে নেওয়া যায় না। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সামান্য কিছুটা পরিবর্তন করে নেবার মত সুবিধা থাকে।

যেমন, আমরা যদি মোবাইল দিয়ে কোন একটি পৃষ্ঠাতে গিয়ে আবার পূর্বের পৃষ্ঠাতে ফেরত আসতে চাই, তবে এক্ষেত্রে আমাদেরকে মোবাইলের নিচের Back বাটনে ক্লিক করতে হয়। আর এক্ষেত্রে আমরা মৌলিক ন্যাভিগেশন বাটন এর বাইরে কোথাও ক্লিক করে ফেরত আসতে পারি না। আর যাদের মোবাইলে ডিসপ্লের উপরে ন্যাভিগেশন বার গুলো থাকে, তারা এক্ষেত্রে অনেক সময় এটিকে বিরক্তিকর অথবা বেশি ঝামেলা মনে করতে পারে। ডিসপ্লের উপর ন্যাভিগেশন বার থাকাতে ঝামেলা মনে হওয়ার কারণ হচ্ছে, বর্তমানের বেশিরভাগ স্মার্ট-ফোনগুলোতে ন্যাভিগেশন বার গুলো ডিসপ্লের ডানে-বামে Swipe করার মাধ্যমে দেওয়া থাকে। আর আপনি যদি এসব সুবিধা যুক্ত স্মার্ট-ফোন গুলোকে দেখেন, তবে আপনার মোবাইল চালানোর ক্ষেত্রে ফিচারের দিক থেকে এটিকে কিছুটা কম মনে হতে পারে।

Full screen Gestures অ্যাপটি আপনার এই সমস্যার সমাধান করবে। এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি ডিসপ্লের বামে, ডান এবং নিচের প্রান্ত বরাবর হাতের ইশারায় কাজ করতে পারবেন। এবং এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি প্রত্যেকটি প্রান্তে দুইটি করে ফাংশন সেট করে কাজ করতে পারবেন। অর্থাৎ, একদিকে ছোট সোয়াইপ এর জন্য একটি ফাংশন এবং দীর্ঘ সোয়াইপ এর জন্য আরেকটি ফাংশন যোগ করতে পারবেন। আপনার ফোনে ডিফল্ট ভাবে থাকা ন্যাভিগেশন বার গুলোকে যদি হাইড করা যায়, তবে আপনি সেটি বন্ধ করে রেখে, এই অ্যাপটির মাধ্যমে ন্যাভিগেশন এর সকল কাজ করতে পারেন।

তবে আপনার ফোনে ন্যাভিগেশন বার থাকলেও সমস্যা নেই। এক্ষেত্রে আপনি এই অ্যাপটি ব্যবহার করলে অতিরিক্ত কিছু সুবিধা পাবেন। আপনি কি Notification Bar দেখার জন্য উপর থেকে নিচের দিকে সোয়াইপ করতে পছন্দ করেন না? তাহলে আপনি Full screen Gestures অ্যাপের মাধ্যমে নিচের থেকে উপরের দিকে সোয়াইপ করার মাধ্যমে Notification Bar কে আনতে পারেন। এছাড়া আপনি যে কোন দিক থেকে Swipe করার মাধ্যমে যেকোনো কিছু নিজের ইচ্ছামত সেট করতে পারেন।

এক্ষেত্রে Swipe করার মাধ্যমে ভলিউম নিয়ন্ত্রণ করতে, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করতে, ফ্লাশ লাইট নিয়ন্ত্রণ করা সহ আরো কিছু কাজ করতে Full screen Gestures কে ব্যবহার করতে পারেন। যে অ্যাপটি আপনার এ সবকিছু খুব সহজেই করে দিতে সক্ষম।

Full Screen Gestures

Official Download @ Full Screen Gestures

৭. মাইটিটেক্সট (MightyText)

MightyText

দৈনন্দিন আপনার কাজ গুলোকে আরো বেশি সহজ করার জন্য MightyText অ্যাপটি অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা মোবাইলে যখন হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করি, তখন হোয়াটসঅ্যাপ মোবাইল অ্যাপে ব্যবহার করার পাশাপাশি আমরা এটিকে কম্পিউটারে ওয়েবের সঙ্গেও কানেক্ট করতে পারি। এক্ষেত্রে আমরা একই সঙ্গে মোবাইলে এবং কম্পিউটারে ওয়েব এর সাহায্যে হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারি। কিন্তু যদি আপনি আপনার মোবাইল দিয়ে এসএমএস করতে পছন্দ করেন, তবে এক্ষেত্রে একইসঙ্গে মোবাইল এবং কম্পিউটার থেকে মেসেজ করা কিন্তু সম্ভব হয় না। আর তখন একই সঙ্গে মোবাইলে মেসেজ করা এবং কম্পিউটারে কোন কাজ করা আপনার জন্য কিছুটা ঝামেলার এবং বিরক্তিকর মনে হতে পারে।

কিন্তু আপনি যদি আসলেই এসএমএস করতেই বেশি পছন্দ করে থাকেন, তবে আপনার জন্য MightyText থেকে এসএমএস করা একটি অপরিহার্য অ্যাপ হয়ে দাঁড়ায়। মাইটিটেক্সট এমন একটি অ্যাপ, যেটির মাধ্যমে আপনি এই ঝামেলা পূর্ণ কাজকে খুব সহজেই করতে পারেন। অ্যাপটির সুবিধা নিয়ে এই টিউনে আমি আপনাকে কিছুটা ধারনা দেবার চেষ্টা করবো।

MightyText একটি ব্রাউজার এক্সটেনশন। যেটির মাধ্যমে আপনি আপনার পিসি, ম্যাক বা লিনাক্স কম্পিউটারের সাথে Syncs করে আপনার স্মার্ট-ফোনকে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করে কম্পিউটার থেকেই এসএমএস গুলোকে সম্পূর্ণ অ্যাক্সেস করতে পারেন। এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র আপনার ফোনের মেসেজ গুলো কে কম্পিউটার থেকে অ্যাক্সেস করাই নয়, বরং আপনার ফোনের আরো অনেক কাজগুলোকে আপনি কম্পিউটার দ্বারাও করতে পারেন। যেখানে MightyText অ্যাপটির মাধ্যমে কোন একটি ম্যাসেজ আপনি কম্পিউটার থেকেই দেখতে পারেন এবং কম্পিউটার থেকেই সেটির উত্তর দিতে পারেন।

এখানে সব থেকে মজার ব্যাপার হলো, কম্পিউটার থেকে আপনি সেই মেসেজটি রিপ্লাই দিলেও, সেটি আপনার সেই মোবাইল থেকেই সেন্ড হবে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে কম্পিউটার থেকে কোন ধরনের চার্জ কাটবে না বা অপর-প্রান্তের ব্যক্তি কিছুই বুঝতে পারবে না। এছাড়া আপনি এই অ্যাপটির মাধ্যমে কম্পিউটার থেকেই কাউকে কল করতে পারবেন। আর কম্পিউটারে MightyText অ্যাপ ব্যবহার করে কাউকে কল করলে, অপর-প্রান্তের ব্যক্তির কাছে আপনার মোবাইলের নাম্বারটিই প্রদর্শিত হবে। MightyText অ্যাপ ব্যবহার করে শুধুমাত্র কল দেওয়া কিংবা এসএমএস দেখাই নয়, বরং আপনি আপনার মোবাইলে তোলা ছবিগুলো কেও কম্পিউটারে থেকে অ্যাক্সেস করতে পারেন।

এছাড়া আপনার সেই মোবাইলে যেসব Contacts list এর নাম্বার গুলো রয়েছে, Call history এবং সমস্ত মেসেজ ইত্যাদি সমস্তই দেখতে পাবেন। তবে এই অ্যাপটি বিনামূল্যের ভার্সনে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে মাসিক কিছু সীমা রয়েছে। তবে আপনি যদি অনেক বেশি Heavy user হয়ে থাকেন, তবে আপনি এটির প্রিমিয়াম ভার্সন ব্যবহার করতে পারেন।

MightyText

Official Download @ MightyText

৮. ইউনিভার্সাল কপি (Universal Copy)

Universal Copy

আমাদের কিন্তু বিভিন্ন কাজে অনেক ওয়েবসাইট থেকে অনেক আর্টিকেল অথবা লেখাকে কপি করার প্রয়োজন হতে পারে। আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কপি এবং পেস্ট করে থাকি, যতক্ষণ পর্যন্ত এটি কাজ করতে থাকে। তবে কিছু কিছু অ্যাপ রয়েছে, যেগুলোর ভেতরে কোন লেখাকে কপি করা যায় না। এছাড়া এরকম অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে, যেসব ওয়েবসাইট থেকেও কোনো আর্টিকেল কপি করা যায় না। এক্ষেত্রে এই বিষয়টি আমাদের কাছে অনেক বেশি হতাশাজনক লাগে।

তবে এতদিন হয়তোবা আপনার কাছে এই বিষয়টি অনেক হতাশাজনক ছিল। কিন্তু বর্তমানে আপনি Universal Copy ব্যবহার করার মাধ্যমে, যে কোন অ্যাপ থেকে প্রায় যেকোনো কিছু কপি এবং পেস্ট করতে পারবেন। এমনকি Universal Copy ব্যবহার করার মাধ্যমে কোন একটি ছবি থেকেও টেক্সট কপি করতে পারবেন। এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলের সিস্টেম এর সঙ্গে জুড়ে গিয়ে কাজ করবে। এজন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, অ্যাপটিকে অবশ্যই আপনাকে Accessibility থেকে অনুমতি প্রদান করতে হবে।

আপনি এই অ্যাপটিকে একবার অনুমতি প্রদান করলে, এটি আপনার মোবাইলের বিজ্ঞপ্তি প্যানেলে বা Notification Bar-এ একটি নোটিফিকেশন আকারে প্রদর্শিত থাকবে। এর পরবর্তীতে আপনি যখন কোনো একটি অ্যাপে গিয়ে অথবা কোন ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি লেখাকে কপি করতে চাইবেন, তখন বিজ্ঞপ্তি প্যানেলে প্রদর্শিত সেই লেখাতে ক্লিক করবেন এবং তারপর দীর্ঘ প্রেস দিয়ে সেই লেখাকে কপি করতে পারবেন।

আমরা অনেক সময় বিভিন্ন অ্যাপ থেকে অনেক লেখাকে কপি করতে চাই। কম্পিউটারে যদিও প্রায় সমস্ত লেখা কপি হয়। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, যখন মোবাইল থেকে কোন লেখাকে দীর্ঘ সময় প্রেস করে ধরে থাকলেও কপি হয়না। যেমন ধরুন, ইউটিউব থেকে আপনি কোন একটি ভিডিওর ডেসক্রিপশন সম্পূর্ণভাবে কপি করতে চাইছেন। কিন্তু কম্পিউটার দিয়ে এটি সহজ ভাবে করা গেলেও, মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে এটি করা কিন্তু সম্ভব নয়‌।

ইউটিউব থেকে কোন ভিডিওর ডেসক্রিপশন মোবাইল দিয়ে কপি করতে হলে অবশ্যই ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি Universal Copy অ্যাপটিকে ব্যবহার করেন, তবে আপনি এই কাজটি অ্যাপ থেকেও সহজভাবেই করতে পারবেন। এভাবে করে যেকোনো জায়গা থেকে ইউনিভার্সাল কপি অ্যাপটি ব্যবহার করে সমস্ত লেখাগুলো কপি করতে পারবেন, যা সত্যিই অনেক অসাধারণ ব্যাপার।

Universal Copy

Official Download @ Universal Copy

৯. Sesame

Sesame

Sesame মোবাইল অ্যাপ টি সার্চ করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক শর্টকাট তৈরি করতে পারে। এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনার ব্যবহৃত সর্বাধিক অ্যাপগুলোকে খুব সহজেই আপনি অ্যাক্সেস করতে পারবেন। অর্থাৎ, বর্তমানে আপনি যে সময়ে কোন কিছু ওয়েব থেকে অনুসন্ধান করছেন অথবা আপনার মোবাইলের কাজগুলোকে করছেন, এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি সেই কাজগুলোকে আরো দ্রুততার সঙ্গে করতে পারবেন। আর এজন্য আপনাকে প্রত্যেকটি অ্যাপের জন্য শর্টকাট তৈরি করতে হবে। এই অ্যাপটি এতই ভালো যে, আপনার কাছে Sesame অ্যাপটি সর্বাধিক ব্যবহৃত অ্যাপে পর্যন্ত হতে পারে।

Sesame অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি কোন একটি কি-ওয়ার্ড টাইপ করে, সেটি দিয়ে সমস্ত মাধ্যমে এক ক্লিকেই অনুসন্ধান করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ মনে করুন, আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে ফেসবুক অ্যাপ ডাউনলোড করতে চান। এক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই প্রথমে চলে যাবেন গুগল প্লে স্টোরে এবং সেখানে গিয়ে ফেসবুক অ্যাপের নাম লিখে সার্চ করবেন। কিন্তু আপনি যদি Sesame অ্যাপটি ব্যবহার করে থাকেন, তবে এই অ্যাপের সার্চ বারে গিয়ে Facebook লিখলে, আপনার সামনে নিচে কয়েকটি অ্যাপের আইকন চলে আসবে। এবার আপনি ফেসবুক লেখাটি দিয়ে কোন প্লাটফর্মে সার্চ করতে চাচ্ছেন, সেই অ্যাপ এর উপরে ক্লিক করলে, সরাসরি সেই প্লাটফর্মে আপনার লেখাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুসন্ধান হবে।

এক্ষেত্রে আপনি যদি Facebook লিখে প্লে স্টোরের উপর ক্লিক করেন, তবে আপনাকে প্লে স্টোরে নিয়ে গিয়ে ফেসবুক অ্যাপ টি দেখাবে। আর এক্ষেত্রে আপনি যদি Facebook লিখে ইউটিউব আইকন এর উপর ক্লিক করেন, তবে আপনাকে ইউটিউবে ফেসবুকে লিখে অনুসন্ধান করে সার্চ ফলাফল এনে দিবে। Sesame অ্যাপটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন অ্যাপের শর্টকার্ট, যেমনঃ স্পটিফাই এর মত অ্যাপ গুলোর শর্টকাট তৈরি করার মাধ্যমে খুব সহজেই অ্যাপের বিভিন্ন বিষয় গুলোকে অ্যাক্সেস করতে পারবেন।

এই অ্যাপটি বিভিন্ন অ্যাপের মধ্যে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের শর্টকাট তৈরি করে। আপনার স্মার্টফোনকে ব্যবহার করে দৈনন্দিন কাজ গুলোকে আরো বেশি সহজ এবং দ্রুত করতে, দ্রুত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে, অথবা আপনি যদি দ্রুত পছন্দের খেলার লাইভ স্কোর জানতে চান, তবে এই অ্যাপটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র একটি ক্লিক করে সেগুলোকে করতে পারেন। যার ফলে আপনার সময় এবং শ্রম দুটোই অনেক হ্রাস পাবে।

Sesame

Official Download @ Sesame

১০. নোভা লঞ্চার (Nova launcher)

Nova Launcher

আপনার ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড ফোনটিকে সবদিক থেকে কাস্টমাইজ করার সর্বোত্তম উপায় হল একটি নতুন Launcher মোবাইলে ইন্সটল করা। তবে প্লে স্টোরে অনেক ধরনের Launcher পাওয়া যায় এবং এসবের মধ্যে থেকে আপনার ক্ষেত্রে নতুন কোন Launcher বেছে নেওয়ার পছন্দ ভিন্নও হতে পারে। তবে এসব অসংখ্য Launcher এর মধ্য থেকে Nova launcher সর্বোত্তম হতে পারে।

এই অ্যাপটি সাইজে অনেক ছোট, দ্রুত, স্থিতিশীল এবং ব্যাপকভাবে কাস্টমাইজ যোগ্য। অর্থাৎ, এই Launcher ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ইউজার ইন্টারফেস কে ব্যাপকভাবে কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এই লঞ্চারটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করার পর এটির ডিফল্ট সেটিং যদিও অনেক সুন্দর এবং নিখুঁত, তবে Nova Launcher-এ ডিফল্ট সেটিং এর বাইরে আরও কিছু সেটিং রয়েছে, যেগুলো আপনি জানেন না। তবে Nova Launcher থেকে ডিফল্ট সেটিং এর বাইরে অতিরিক্ত সেটিং সেট করলে, আপনার ইউজার ইন্টারফেস আরও বেশি আকর্ষণীয় হতে পারে।

Nova Launcher সেটিং থেকে আপনার মোবাইলের বিভিন্ন অ্যাপের আইকন পরিবর্তন থেকে শুরু করে যেকোনো Widget এর আকার পরিবর্তন করতে পারেন। Nova Launcher এর মাধ্যমে Gesture নিয়ন্ত্রণ করার অনেক দারুণ ব্যবস্থা রয়েছে। এই লঞ্চার ব্যবহার করে Gesture সেটিং থেকে অনেক শর্টকাট যুক্ত করা যায়, Nova Launcher দিয়ে মোবাইলের বিভিন্ন ফাংশনে ট্যাপ এবং সোয়াইপ করার মাধ্যমে বিভিন্ন ফাংশন যুক্ত করা যায়। এছাড়া আপনার মোবাইলের আরো এরকম অনেক কাস্টমাইজেশন করতে পারবেন Nova Launcher এর মাধ্যমে।

আপনি যদি আপনার স্মার্টফোনটিকে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনি Nova Launcher এর Gesture সেটিং গুলোকে পরিবর্তন করে নিজের ইচ্ছামত সেগুলোকে সেট করতে পারেন। যার মাধ্যমে আপনার ডিভাইসটি কিভাবে ব্যবহার হবে, সেটি আপনি নিজে থেকে নির্ধারণ করতে পারেন। Nova Launcher-এ রয়েছে অসংখ্য কাস্টমাইজেশন এর সুবিধা। এখানে আপনি মোবাইলের অ্যাপের সাইজ পরিবর্তন, নাম পরিবর্তন করা সহ অনেক কাস্টমাইজেশন সুবিধা পাবেন। যে ব্যাপারটি আপনাকে Nova Launcher ব্যবহার করতে অনেক বেশি আকৃষ্ট করবে।

এখানে আমি আপনাকে আরো একটি কথা বলি। ‌আর তা হচ্ছে, আপনি যদি কম বাজেটের ফোন ব্যবহার করে থাকেন, তবে অবশ্যই সেই ফোনের ইউজার ইন্টারফেস আপনাকে তেমনটা সন্তুষ্ট করতে পারবে না। এক্ষেত্রে আপনি যখন অন্য কোন ফোন দেখেন, তখন অবশ্যই আপনার সেই ফোনের প্রতি আগ্রহ জন্মে। এবার আপনি যদি Nova Launcher অ্যাপটিকে ব্যবহার করেন এবং এটির সঠিক কাস্টমাইজ করেন, তবে দেখবেন যে, আপনার ফোনটি ও তাদের ফোনের মত প্রিমিয়াম হয়ে গিয়েছে। বিশ্বাস না হলে আপনি একবার Nova Launcher কে ব্যবহার করেই দেখুন না।

Nova Launcher

Official Download @ Nova Launcher
Official Download @ Nova Launcher Prime

১১. সুপার স্ট্যাটাস বার (Super Status Bar)

Super Status Bar

অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সমস্ত সেটিং প্রায় সর্বদা কাস্টমাইজ যোগ্য হয়েছে। অনেকে তার ফোনের বিভিন্ন সেটিংস কে কাস্টমাইজ করলেও, বেশিরভাগ মানুষ নোটিফিকেশন বার বা স্ট্যাটাস বার কে উপেক্ষা করে চলে। অর্থাৎ, মানুষ তার ফোনের Status Bar-কে কাস্টমাইজ করার ক্ষেত্রে ততটা গুরুত্ব দেয় না। তবে অনেকে এটি করতে চাইলেও হয়তোবা করতে পারেন না, কেননা সেই অ্যাপ এর ভেতরে হয়তোবা Status Bar-কে কাস্টমাইজ করার সুবিধা নেই। তবে অবশেষে Super Status Bar অ্যাপটি আপনার জন্য এটিও পরিবর্তন করে দিতে পারে।

Super Status Bar অ্যাপটির মাধ্যমে, আপনি আপনার মোবাইলের স্ক্রিনের উপরের দিকে Swipe করে আপনার মোবাইলের ব্রাইটনেস অথবা ভলিউম লেভেল আপনার ইচ্ছামত Adjust করে নিতে পারেন। এছাড়া আপনার ফোনে আসা মেসেজ এবং অন্যান্য বিজ্ঞপ্তি গুলোকে আপনার নিজের মতো করে সাজাতে বা কনফিগার করতে পারেন। এছাড়া এই অ্যাপটি দিয়ে আপনি Battery life একটি রেখার মাধ্যমে উপরের নোটিফিকেশন বারে দেখতে পারেন, অথবা আপনি নোটিফিকেশন বারের সমস্ত ডিজাইনকেই একেবারে পরিবর্তন করে দিতে পারেন।

আপনার ব্যবহৃত স্মার্টফোনটির Status Bar যদি আপনার পছন্দ না হয়ে থাকে অথবা এটিকে যদি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ফোনের মত না মনে হয়, তবে আপনার জন্য Super Status Bar অ্যাপটি। এক কথায় বলতে গেলে, আপনার মোবাইলের Status Bar-কে নিজের ইচ্ছামত কাস্টমাইজ করার জন্য এটি হতে পারে সর্বোত্তম। এই আপ টির ভিতরে এমন সব ফিচার রয়েছে, যা সত্যিই অনেক আশ্চর্যজনক। তবে অ্যাডভান্স কাস্টমাইজেশন করার জন্য আপনার ডিভাইসকে Rooted হতে হবে এবং তাহলেই আপনি পাবেন, আরো কিছু উন্নত কাস্টমাইজেশন সুবিধা। যার কারণে Super Status Bar অ্যাপ, আমাদের আজকের এই টিউনের আশ্চর্যজনক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ গুলোর মধ্যে একটি।

Super Status Bar

Official Download @ Super Status Bar

উপরের এসব দুর্দান্ত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস

উপরে আলোচনা করা আশ্চর্যজনক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ গুলো আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহার করার অভিজ্ঞতাকে একেবারেই পরিবর্তন করে দিতে পারে। যে সব অ্যাপগুলো ব্যবহারে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন এর ব্যবহার আরো বেশি সহজ করে তোলে এবং আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোকে আরো দ্রুত খুঁজে পেতে সাহায্য করে। এসব অ্যাপ গুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার প্রয়োজনীয় কাজটি খুব সহজে এবং স্বল্প সময়ে হয়ে যাবার কারণে আপনার কাছে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার হয়ে উঠবে আরও বেশি মজাদার। যাইহোক, উপরে আলোচনা করা এসব অ্যাপগুলোকে আপনি একবার ট্রাই করে দেখতে পারেন

Level 12

আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 333 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 60 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।

“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ধন্যবাদ প্রয়োজনীয় অ্যাপস গুলো শেয়ার করার জন্য৷