চোরেরা সাবধান !!! এবার অ্যাপ ধরবে চোর!!!!!

আপনার ঘরে চোর ঢুকেছে। ফুরফুরে মেজাজে চুরির ফন্দি করছে। আপনার ফ্রিজ থেকে আপনার রান্না করা খাবার বের করে খাচ্ছে। কিন্তু এসব ঘটনা আপনি জানবেন কীভাবে? আপনি বাসায় নেই বলেই তো চোর ঘরে ঢুকেছে? তাহলে কী করে জানবেন চোরের কাণ্ডকীর্তি?

লন্ডনে বসবাসকারী আইনজীবী মিয়া নিগুইন ঠিক এভাবেই নিজের অফিসে বসে চোরকে তাঁর ঘরে ঢুকতে দেখেছেন। ঘরে ঢুকে চোর নিগুইনের পোষা কুকুরকে খাবার দিয়েছে। তারপর সে চুরির কাজে নেমে পড়ে। ততক্ষণে পুলিশের কাছে ফোন করে দিয়েছে নিগুইন। আর পুলিশ সোজা গিয়ে চোরকে ধরেছে হাতেনাতে!

চোর পালানোর আগেই বুদ্ধি বেড়েছে কীভাবে? মিয়ার ফোনে ছিল ‘ম্যানিথিং’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। ঘরের ভেতর কী অবস্থা সেটা জানতে যেই না অ্যাপটি খুললেন, তার মিনিট ১৫ পরেই টের পেলেন ঘরে দাওয়াত ছাড়াই অতিথি এসেছে!

তালা মেরে গেলেও ঘর থেকে বের হওয়ার পর দুশ্চিন্তায় থাকেন প্রায় সবাই। কিন্তু সিসিটিভি বা ইলেকট্রনিক ডোর লকের যে খরচ তা পুষিয়ে উঠতে না পারায় চোরের চিন্তা মাথায় নিয়েই কাজ করতে হয়। তাই সস্তায় যদি কাজের জিনিস পাওয়া যায় তবে মানুষ তা লুফে নেবে।

আইওএস অপারেটিংয়ের জন্য তৈরি ‘ম্যানিথিং’ অ্যাপটি  যুক্ত থাকবে আপনার ঘরে রাখা একটি ছোট ওয়েবক্যামের সাথে। অ্যাপটি চালু করলেই মোবাইলে আপনি সরাসরি ঘরে কী ঘটছে তা দেখতে পাবেন। আর সন্দেজহনক কিছু ঘটলে অ্যাপটি আপনাকে সতর্ক করে দেবে।

চাইলে আপনি আরো ক্যামেরা লাগাতে পারেন ঘরের ভেতর। এসব ক্যামেরার রেকর্ডিং জমা হবে আপনার ক্লাউড স্টোরে। অ্যাপটি যুক্ত আছে আইএফটিটিটি সেবার সাথেও। আইএফটিটিটি মানে, ‘ইফ দিস দেন দ্যাট’। অর্থাৎ বিপজ্জনক কিছু ঘটলে আপনাকে সেটা টেক্সট বা ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

‘ম্যানিথিং’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা জেমস ওয়েস্ট বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে দুই লাখ ব্যবহারকারী অ্যাপটি ব্যবহার করছেন এবং প্রতিদিন ১০ বছরের মতো ভিডিওর রেকর্ড থাকে। অ্যাপটির একটি অ্যানড্রয়েড ভার্সন তৈরির কাজ চলছে।’

‘ম্যানিথিং’ ছাড়াও এ ধরনের আরো অ্যাপ রয়েছে যেগুলো স্মার্টফোন দিয়ে ওয়েবক্যাম ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকে। বেলকিন উইমো সিস্টেমে যেমন মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরের অ্যালার্ম সেন্সর, এলইডি লাইট, বৈদ্যুতিক সুইচ আপনি বাইরে থেকে ব্যবহার করতে পারবেন। উইমোর প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিরেক্টর পিটার টেইলর বলেন, ‘ঘরে না থেকেও উইমো আপনার ঘরকে সুরক্ষিত রাখবে।’

প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বর্তমানে উইমোর মোশন অ্যাকটিভেটেড ক্যামেরা ব্যবহার করছে। অর্থাৎ ঘরের ভেতর সন্দেহজনক কিছুর অস্তিত্ব টের পেলেই চালু হয়ে যাবে ক্যামেরা। উইমো সিস্টেমও আইএফটিটিটি সেবার সাথে সংযুক্ত রয়েছে।

ঘরের ভেতর এসব ওয়েবক্যাম ব্যবহারের বড় ঝুঁকিটা হচ্ছে হ্যাকাররা। হরহামেশাই ওয়েবক্যাম হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটছে। চোর ধরতে গিয়ে উল্টো চোরের হাতেই নিজের ঘরের ভিডিও চলে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পিটার টেইলর বলেন, ‘হ্যাকিংয়ের ঘটনাগুলো সবই ঘটেছে লোকাল স্ট্রিম ব্যবহারের কারণে। ভিডিও স্টোরেজের জন্য আমরা ঝুঁকিপূর্ণ কোনো লোকাল স্ট্রিম ব্যবহার করি না।’

ম্যানিথিংয়ের জেমস ওয়েস্ট অবশ্য বেশ আত্মবিশ্বাসী। কারণ তাদের অ্যাপে এখন পর্যন্ত হ্যাকিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

অ্যাপগুলো ব্যবহারের ঝুঁকি মাথায় রাখতে ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মার্ক জেমস। তিনি বলেন, ‘এসব অ্যাপ সর্বক্ষণ আপনার ঘরের ছবি তুলছে এবং ক্লাউড স্টোরেজে জমা করছে। চাইলেই যে কেউ ক্লাউড স্টোরেজ হ্যাক করে আপনার ঘরের ছবি দেখতে পারে। যেটা মোটেই শোভন হবে না। আবার এসব অ্যাপকে সচল রাখতে হলে সারাক্ষণ আপনার মোবাইল সচল রাখতে হবে। ২৪ ঘণ্টা চার্জ থাকার মতো সামর্থ্য বলতে গেলে কোনো স্মার্টফোনেরই নেই’।

ঘরের নিরাপত্তার জন্য ওয়েবক্যাম ভালো ব্যবস্থা। কিন্তু আপনার ক্লাউড স্টোরেজের নিরাপত্তা ভেঙে গেলে এই ওয়েবক্যামেই আপনার বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে!

সৌজন্যে : www.ntvbd.com– বাংলাদেশের একমাত্র ইনফোটেইনমেন্ট পোর্টাল

Level 0

আমি তানভীর আহম্মেদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 34 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ও তাই…??

ভাল 🙂