আমাদের মোবাইল ফোন যেভাবে কাজ করে !!!

আমরা যে মোবাইল ফোন টা দিয়ে কথা বলি সেটা কিভাবে আমাদেরকে একজনের সাথে আরেক জনকে সংযোগ করে দেয়। তাহলে আসুন শুরু করা যাক। মোবাইল ফোন ঠিক কবে থেকে শুরু হল তা ঠিক করে বলা মুশকিল। তবে প্রথম যে দুটি টেকনলজি এর পূর্বপুরুষ তা হল রোডিও ও টেলিফোন। এই দুটির সংমিশ্রন ও আধুনিক রুপই হল আজকের মোবাইল ফোন।গ্রাহাম বেল আবিষ্কার করেন টেলিফোন ১৮৭৬ সনে এবং এর ১৮ বছর পরে ১৮৯৪ সনে মার্কনি আবিষ্কার করেন রেডিও।
মোবাইল ফোন এর আগে যারা মোবাইল কমিউনিকেশন এর জন্য গাড়িতে রেডিও ফোন অনেকে ব্যবহার করতো। কিন্তু এটির সাইজ অনেক বড় হওয়াতে সহজে হাতে করে ঘুরে বেড়ান যেতনা। আর সাধারণত তা ২৫ টি মাত্র চ্যানেলের মাধ্যমে সেন্ট্রাল এন্ট্যানে এর সাথে যোগাযোগ করতো। তার মানে, রেডিও ফোন এর ট্রান্সমিশন ক্ষমতা ৪০ থেকে ৫০ মাইলের মত হতে হত। আর চ্যানেল সংখ্যা
কম হওয়ার কারণে এক সাথে অনেকে ব্যবহার করতে পারতোনা। এবার দেখা যাক বর্তমান মোবাইল ফোন কিভাবে কাজ করে। বর্তমানে একটি শহর বা জায়গাকে মোবাইল কম্পানি অনেকগুলি সেল (Cell) এ ভাগ করে নেয়। সাধারণত প্রতিটি সেল ১০ বর্গমাইলের সমান ও ষষ্ঠভূজ হয়ে থাকে আর প্রতিটি সেলে একটি বেস ষ্টেশন থাকে। আর প্রতিটি সেলে ৮০০ টি Frequency তে কথা বলা যায়। যদিও মোবাইল ফোনে কথা বলার জন্য একটি শহরে অনেকগুলি টাওয়ার প্রয়োজন কিন্তু বর্তমানে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা খুব বেশী হবার কারণে এর খরচ কম হয়ে যায় ও ব্যবসায়ীক ভাবে
সফল হয়। প্রতিটি শহরে একটি সেন্ট্রাল অফিস থাকে যা বেস ষ্টেশন বা টাওয়ার গুলির সাথে যোগাযোগ রাখে। এই সেন্ট্রাল অফিসগুলিকে Mobile Telephone Switching Office (MTSO) বলে। সেল মোবাইল ফোন ও বেস ষ্টেশন Low powere transmissins ব্যবহার করে। ফলে মোবইল ফোন অল্পক্ষমতা সম্পনড়ব ব্যাটারি দিয়ে চলতে পারে, যার ফলেই আজকের মোবাইল ফোন এত ছোট আকার হয়েছে এবং ভবিষ্যতে হয়ত আরো ছোট হবে।

যখন আমরা মোবাইল অন করি তখন এটি কন্ট্রোল চ্যানেলের মাধ্যমে SID (System Indentification Code) গ্রহণ করে এবং তা মোবাইল ফোনের ভিতরের এর সাথে মিলিয়ে দেখে। এছাড়া এটি MTSO এর সাথেও যোগাযোগ রাখে। সেন্ট্রাল অফিস মোবাইল ফোনের অবস্থান একটি ডাটাবেস এ রাখে। অর্থাত্‍ আপনি শহরের ফিতরে কখন কোন সেলে থাকছেন তা সেন্ট্রাল অফিস এর ডাটাবেসে থাকে। যখনই কেউ আপনাকে ফোন করে তখন এই সেন্ট্রাল অফিস তার ডাটাবেস থেকে বাহির করে আপনি কোন টাওয়ারের কাছাকাছি আছেন এবং সেই টাওয়ার থেকে আপনার মোবাইলের ফ্রিকিয়েন্সিতে যোগাযোগ করে দুইজনের সাথে যোগাযোগ করে দেয় এবং আপনি কথা বলতে পারেন।
মোবাইল ফোনের আরেকটি বড় সুবিধা হল আপনি গাড়িতে কিংবা অন্য কিছুতে চলমান থাকলেও কথা বলতে পারবেন। আপনি যখন কথা বলতে বলতে একটি সেল থেকে অন্য একটি সেলের দিকে এগুতে থাকেন তখন বর্তমানে ব্যবহার করা টাওয়ারটি থেকে দূরত্ব বেড়ে যাবার কারণে অন্য টাওয়ারটির সাথে সংযোগ স্থাপন করে, এর ফলে আপনি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে গেলেও
নির্বিঘেড়ব আপনার কথোপথন চালিয়ে যেতে পারেন। আপনারা একটু খেয়াল করলেই দেখবেন টাওয়ারের উপরে সাদা লম্বা লম্বা চারটা বক্স এর মত আছে কোনটা সোজা,কোনটা একটু সামনের দিকে হেলানো আবার কোনটা পিছনের দিকে হেলানো। আমাদের মোবাইলে যে ফ্রিকোয়েন্সি আমরা পাই সেটা ঐ সাদা বক্স থেকেই আসে। সেগুলি একেকটা একেকদিকে হেলানো এর কারণ হল যেটা সামনের দিকে হেলানো সেখানে মোবাইল ইওজার বেশি আর যেটা সোজা সেখানে ইওজার মোটামোটি আর যেটা পিছনে হেলানো সেখানে ইওজার কম। আর সাদা গোল গোল ছোট বড় কিছু বস্তু রয়েছে সেগুলির কাজ হল এক টাওয়ার থেকে আরেক টাওয়ারে ফ্রিকোয়েন্সি আদান প্রদানের জন্য। মোবাইল দেখতে ছোট হলে কি হবে এক মুহুর্তের মধ্যে এত কিছু করে ফেলতে পারে কারন এর ভিতরে রয়েছে DSP(Digital Signal Processor) এর কারণেই আজকের মোবাইল এত স্মার্ট হয়েছে!

আরেকটা কথা না বললেই না সেটা হল মোবাইল ফোন ডুপ্লেক্স চ্যানেল (Duplex channel) ব্যবহার করে। আপনি হয়তোবা ওয়াকিটকি যা পুলিশ সার্জেন্টরা ব্যবহার করে এই ওয়াকিটকি সিঙ্গেল চ্যানেল ব্যবহার করে। যার ফলে শুধু মাত্র কথা বলা কিংবা শোনা সম্ভব। এক সাথে দুইজনেই কথা বলা ও শোন সম্ভব নয় যেমন ওয়াকিটকি তে সার্জেন্টরা কথা বলা শেষ করে ওভার শব্দটি বলে, তা শুনে অপর পক্ষ তখন কথা বলে কিন্তু মোবাইল ফোনে ডুপ্লেক্স চ্যানেল ব্যবহার করার কারণে আপনি ফোনের মতই এক সাথে কথা বলতে ও শুনতে পারেন।
More Information: Best Info Blog

Level 0

আমি মুহাম্মাদ ইউসুফ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 131 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমার নাম "ইউসুফ"। আমি একজন নতুন ব্লগার । তেমন ভাল কিছু লেখার অভিজ্ঞতা কম কিন্তু চেস্টা করছি । সুযোগ পেলে আমার ব্লগটিতে http://infozone24.com একটু ঢু মেরে আসবেন, প্লীজ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ভাইয়া ভালো লিখেছেন । সুন্দর টিউন । তবে কিছু ইমেজ ব্যাবহার করলে আরও বেশি সুন্দর হত । পরবর্তী টিউন এর অপেক্ষায় রইলাম ।
আর হ্যাঁ , আমার মতে টিউন টি “কী কেন কীভাবে” – এই সেকশান এ করা উচিৎ ছিল ।

Level 0

অনেক কিছু জানতে পারলাম।
ধন্যবাদ সুন্দর টিউনের জন্য ।

ভালই লিখেছেন কিন্তু সামান্য কিছু ছবি/গ্রাফ দিয়ে বোঝালে নন-ইঞ্জিনিয়ার দের বুজতে সুবিধা হতো

valo tune
tnxx

Level 0

Great ! বাঁচতে হলে জানতে হবে…