বিকাশের গোপন ৭টি ফিচার – যেগুলো বদলে দেবে আপনার মোবাইল ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা

বাংলাদেশে ডিজিটাল লেনদেনের কথা উঠলেই প্রথমেই আসে বিকাশের নাম। লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিন টাকা পাঠানো, বিল পরিশোধ, ক্যাশ আউট ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করছে বিকাশ। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো—আমাদের মধ্যে অনেকেই জানি না বিকাশে কতগুলো গোপন ফিচার আছে।

বিকাশ আরও আধুনিক হয়েছে। শুধু টাকা পাঠানো নয়, এখন আপনি QR কোড দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন, সেভিংস করতে পারবেন, এমনকি প্রতিদিনের বিল অটোমেটিক পরিশোধ করতে পারবেন।

আজকের টিউনে আমি আপনাদের দেখাবো বিকাশের ৭টি শক্তিশালী ফিচার, যেগুলো অনেকেই এখনও ব্যবহার করেন না। প্রতিটি ফিচারের সাথে থাকবে স্টেপ-বাই-স্টেপ ব্যবহার পদ্ধতি, যাতে আপনি সহজেই কাজে লাগাতে পারেন।

১: QR কোড পেমেন্ট – ঝামেলাহীন লেনদেন

আগে যখন কোনো সুপারশপ বা দোকানে যেতেন, টাকা দেওয়ার সময় ক্যাশ আউট করে চার্জ দিতে হতো। এখন আর সেই ঝামেলা নেই।

কেন QR পেমেন্ট?

  • ক্যাশ আউট চার্জ নেই
  • খুচরা টাকার ঝামেলা নেই
  • দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেন

Step-by-Step: কিভাবে QR কোড পেমেন্ট করবেন?

  1. বিকাশ অ্যাপ খুলুন
  2. হোমপেজে “QR Pay” অপশন চাপুন
  3. দোকানদারের QR কোড স্ক্যান করুন
  4. টাকার পরিমাণ লিখুন
  5. আপনার PIN দিন এবং “Pay” চাপুন

✅ টাকা সাথে সাথে দোকানদারের একাউন্টে চলে যাবে।

বাস্তব উদাহরণ

ধরুন, আপনি কোন সুপারশপ থেকে ১০০০ টাকা কেনাকাটা করলেন। আগের মতো ক্যাশ আউট করে দিলে চার্জ দিতে হতো প্রায় ১৮.৫ টাকা। কিন্তু QR কোড পেমেন্ট করলে শূন্য চার্জ।

🖼️ ছবি সাজেশন: একজন ক্রেতা মোবাইল দিয়ে দোকানের QR স্ক্যান করছে।

২: অটোমেটিক বিল পেমেন্ট – মাসের চিন্তা শেষ

কেন দরকার?

অনেক সময় বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল দিতে ভুলে যাই। এতে লেট ফি লাগে।

Step-by-Step: AutoPay সেটআপ করবেন কিভাবে?

  1. বিকাশ অ্যাপ খুলে Pay Bill এ যান
  2. আপনার সার্ভিস (যেমন DESCO / TITAS / WASA) সিলেক্ট করুন
  3. কাস্টমার আইডি দিয়ে একবার বিল যুক্ত করুন
  4. এরপর “Set as AutoPay” বেছে নিন
  5. প্রতিমাসে নির্দিষ্ট তারিখে বিকাশ আপনার হয়ে বিল পরিশোধ করবে

✅ ফলে কখনও লেট ফি হবে না।

🖼️ ছবি সাজেশন: মোবাইল স্ক্রিনে AutoPay চালু করার স্ক্রিনশট।

৩: Request Money – টাকা চাওয়ার সহজ উপায়

কেন দরকার?

বন্ধু/আত্মীয়কে টাকা ধার দিলেন, সে দিতে ভুলে গেল। এখন ফোন না করে সরাসরি রিকোয়েস্ট পাঠানো যায়।

Step-by-Step:

  1. বিকাশ অ্যাপ খুলুন
  2. Request Money অপশনে যান
  3. নাম্বার ও টাকার পরিমাণ লিখুন
  4. পাঠিয়ে দিন

✅ অপরপক্ষ নোটিফিকেশন পাবে। চাইলে সাথে সাথে টাকা পাঠিয়ে দিতে পারবে।

🖼️ ছবি সাজেশন: বিকাশ অ্যাপের “Request Money” অপশনের স্ক্রিনশট।

৪: বিকাশ সেভিংস – ব্যাংকের মতো সুদ

সুবিধা

  • ব্যাংকে না গিয়েই টাকা সেভ করা যায়
  • নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে সুদ পাওয়া যায়
  • নিরাপদ ও সহজ

Step-by-Step:

  1. বিকাশ অ্যাপ খুলুন
  2. Savings অপশনে যান
  3. দৈনিক / মাসিক সেভিংস প্ল্যান বেছে নিন
  4. টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করুন
  5. কনফার্ম করুন

✅ নির্দিষ্ট সময়ে টাকা ও সুদসহ ফেরত পাবেন।

🖼️ ছবি সাজেশন: মোবাইলে “Savings Account” সেটআপ করার স্ক্রিন।

৫: টিকেট ও অনলাইন পেমেন্ট

কী কী কেনা যায়?

  • বাস টিকেট
  • লঞ্চ টিকেট
  • এয়ার টিকেট
  • সিনেমা টিকেট
  • ইভেন্ট টিকেট

Step-by-Step:

  1. বিকাশ অ্যাপে Tickets সেকশনে যান
  2. সেবা বেছে নিন (যেমন Shohoz / Bdtickets)
  3. টিকেট বুক করুন
  4. বিকাশ পেমেন্ট দিয়ে কনফার্ম করুন

🖼️ ছবি সাজেশন: একজন মোবাইল থেকে বাস টিকেট বুক করছে।

৬: সিকিউরিটি ফিচার

কী কী আছে?

  • App Lock (PIN/ফিঙ্গারপ্রিন্ট)
  • Transaction Alert
  • PIN পরিবর্তন অপশন

Step-by-Step: PIN পরিবর্তন

  1. বিকাশ অ্যাপে লগইন করুন
  2. Settings > Change PIN এ যান
  3. পুরনো PIN দিন, নতুন PIN লিখুন
  4. কনফার্ম করুন

🖼️ ছবি সাজেশন: মোবাইল স্ক্রিনে PIN পরিবর্তনের ইন্টারফেস।

৭: ক্যাশ আউট ছাড়াই কেনাকাটা – টাকা বাঁচান

QR কোড বা Merchant Payment করলে কোনো চার্জ নেই।

এভাবে ব্যবহার করলে মাসে ২০০–৫০০ টাকা পর্যন্ত চার্জ সেভ করা সম্ভব।

🖼️ ছবি সাজেশন: একজন শপিং করছে এবং মোবাইল দিয়ে পেমেন্ট দিচ্ছে।

উপসংহার

বিকাশ এখন শুধু মোবাইল ব্যাংকিং নয়, বরং একপ্রকার ডিজিটাল ওয়ালেট। QR পেমেন্ট থেকে শুরু করে সেভিংস, টিকেট বুকিং থেকে শুরু করে AutoPay—সবকিছুই এখন হাতের মুঠোয়।

যদি এই ৭টি ফিচার কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে ২০২৫ সাল হবে আপনার জন্য আরও স্মার্ট ও ঝামেলাহীন।

Level 2

আমি জান্নাতুল খাতুন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 31 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি মোছা:জান্নাতুল খাতুন, চুয়াডাঙ্গা জেলার বাংলাদেশ থেকে। আমি একজন ফ্রিল্যান্স লেখক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর। ডিজিটাল কনটেন্ট, আর্টিকেল এবং সৃজনশীল লেখা তৈরি করতে পারদর্শী। আমি মানসম্পন্ন কাজ প্রদান করতে এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ক্লায়েন্টদের সন্তুষ্ট রাখতে উৎসাহী।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস