
কেন ইমু ব্যবসার সুযোগ তৈরি করছে?
ইমু (IMO) মূলত একটি ফ্রি কল ও মেসেজিং অ্যাপ। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি বাংলাদেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে। আজকের দিনে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ যেমন জনপ্রিয়, ইমুও তেমনি এক বড় প্ল্যাটফর্ম।
বাংলাদেশে ইমু এত জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হলো:
প্রায় প্রত্যেক পরিবারের অন্তত একজন ইমু ব্যবহারকারী আছেন। মানে এখানে কোটি কোটি সক্রিয় ইউজার প্রতিদিন লগইন করে। আর এত বড় সংখ্যক ব্যবহারকারী মানেই ব্যবসার সুযোগ বিশাল।
ধরুন, আপনি অনলাইনে কাপড় বিক্রি করতে চান। যদি ফেসবুকে শুরু করেন, সেখানে প্রচুর প্রতিযোগিতা পাবেন এবং বিজ্ঞাপণ খরচ করতে হবে। কিন্তু ইমুতে আপনি সরাসরি কন্টাক্ট লিস্টে প্রোডাক্ট শেয়ার করলে মানুষ দেখবে, প্রশ্ন করবে, এমনকি অর্ডারও করতে পারে।
অন্যদিকে, অনেক ছোট ব্যবসায়ী যেমন – অনলাইন রিচার্জ, ডিজিটাল কার্ড বিক্রি, সফটওয়্যার/অ্যাপ সাবস্ক্রিপশন, টিউটোরিয়াল কোর্স ইত্যাদি – এগুলোও ইমুর মাধ্যমে সহজে বিক্রি হচ্ছে।
অর্থাৎ, ইমুতে ব্যবসা মানে শুধু ফ্রি কল নয়, বরং এক নতুন দিগন্ত। যারা ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করতে চান, তাদের জন্য ইমু একেবারে আদর্শ প্ল্যাটফর্ম।
ইমুতে ব্যবসা করার অনেক সুবিধা রয়েছে, যা অন্য কোনো সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম বা মার্কেটপ্লেসের তুলনায় অনেক বেশি সহজ ও দ্রুত ফল দিতে পারে। বিশেষ করে যারা নতুন উদ্যোক্তা বা ছোট ব্যবসায়ী, তাদের জন্য এই প্ল্যাটফর্ম খুবই কার্যকর। এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা বিশদে আলোচনা করা হলো।
ইমু ব্যবহার করে আপনি প্রায় কোনো খরচ ছাড়াই প্রচারণা করতে পারেন। ফেসবুক বা ইউটিউবের বিজ্ঞাপণ খরচ অনেক বেশি হতে পারে, আবার প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। কিন্তু ইমুতে আপনার কন্টাক্ট লিস্ট এবং গ্রুপের মাধ্যমে পণ্য বা সার্ভিসের তথ্য শেয়ার করলে কোনো টাকা খরচ করতে হয় না।
ধরুন, আপনার কাছে ২০০ জন কন্টাক্ট আছে। আপনি প্রতিটি কন্টাক্টকে পণ্যের ছবি, দাম, এবং ছোট বিবরণ পাঠাতে পারেন। এতে কেবলমাত্র কয়েক মিনিটে প্রচার হয়ে যায়।
আপনি চাইলে এই মেসেজগুলো গ্রুপ টিউন বা চ্যানেল টিউন আকারে দিতে পারেন, যাতে একই বার্তা একসাথে অনেক মানুষ দেখবে।
ইমুতে বিক্রি করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, কাস্টমারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়। চ্যাট, ভয়েস কল বা ভিডিও কলের মাধ্যমে আপনি কাস্টমারের সাথে পরিচিত হতে পারেন।
বাংলাদেশে ইমুর ব্যবহারকারী সংখ্যা কোটি কোটি। শুধু ঢাকায় নয়, দেশের যেকোনো শহর বা গ্রামে কেউ ব্যবহার করে।
এর মানে হলো, আপনার পণ্য যদি লোকাল বা ন্যাশনাল হিসেবে টার্গেট করতে চান, ইমু আপনাকে সেই সুযোগ দিচ্ছে।
নতুন ব্যবসায়ী সহজেই নতুন কাস্টমার পেতে পারেন।
যারা নতুন শুরু করছেন বা বড় বাজেট নেই, তাদের জন্য ইমু একেবারে আদর্শ।
বড় ই-কমার্সে পণ্য লিস্ট করতে হলে কমপক্ষে বিজ্ঞাপণ, ডেলিভারি এবং স্টক ম্যানেজমেন্টের খরচ লাগে।
কিন্তু ইমুতে শুরুতে ছোট পরিসরে কাজ করা যায়। ধরুন, ২০–৩০টি প্রোডাক্ট দিয়ে শুরু করা যায়, যা নিয়মিত গ্রাহক ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট।
ইমু ব্যবহারকারীরা সাধারণত আপনার পরিচিত বা তারপরিচিতদের মধ্যেই থাকে। অর্থাৎ, আপনি স্থানীয় কাস্টমারদের সহজেই ধরতে পারেন।
ঢাকায় একটি ছোট রিচার্জ বা গিফট কার্ড বিক্রি করতে চাইলে আপনি আপনার কন্টাক্ট লিস্টে থাকা বন্ধু, পরিবার, সহকর্মীদের মাধ্যমে সহজেই বিক্রি করতে পারেন।
এছাড়া, গ্রুপ বা চ্যানেল তৈরি করে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে যুক্ত করতে পারেন।
ইমুতে লেনদেন বা যোগাযোগ অনেক দ্রুত হয়।
নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চিন্তা হলো ঝুঁকি। ইমুতে ছোট পরিসরে শুরু করলে ঝুঁকি খুব কম থাকে।
ইমুতে ব্যবসা করার সুবিধাগুলো বিশেষভাবে নতুন উদ্যোক্তা ও ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক কার্যকর। বিনামূল্যে প্রচারণা, সরাসরি যোগাযোগ, বিশাল ইউজার বেস, স্থানীয় মার্কেট টার্গেটিং এবং কম ঝুঁকি – এগুলো মিলিয়ে ইমু হতে পারে এক নতুন ব্যবসার প্ল্যাটফর্ম।
ইমুতে সফলভাবে বিক্রি শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া খুব জরুরি। অনেকেই হুট করে শুরু করে ব্যর্থ হয়, কারণ তারা গ্রাহক, পেমেন্ট বা ডেলিভারির সঠিক প্রস্তুতি নেয় না। এখানে ধাপে ধাপে দেখানো হলো কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
পণ্য বা ব্র্যান্ডের লোগো ব্যবহার করতে পারেন।
সংক্ষিপ্তভাবে কি বিক্রি করছেন এবং যোগাযোগের মাধ্যম লিখুন।
ব্যবহারকারী যখন আপনার প্রোফাইল দেখবে, তাদের প্রথম ইম্প্রেশন গুরুত্বপূর্ণ।
একটি আলাদা বিজনেস গ্রুপ বা চ্যানেল তৈরি করুন যেখানে আপনার সমস্ত পণ্য আপডেট থাকবে।
ইমুতে পণ্য দেখানোর জন্য ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করুন।
কাস্টমারের প্রশ্নের দ্রুত উত্তর দিতে নিয়মিত অনলাইন থাকুন।
প্রথমে কম প্রোডাক্ট দিয়ে শুরু করুন, যেন ঝুঁকি কম থাকে।
ধীরে ধীরে গ্রাহক বৃদ্ধি পেলে প্রোডাক্ট সংখ্যা বাড়ান।
প্রথমে শুধু মোবাইল রিচার্জ এবং কিছু গ্যাজেট বিক্রি করুন।
পরবর্তীতে হেডফোন, পাওয়ার ব্যাংক, স্মার্টওয়াচ যুক্ত করুন।
সফল ব্যবসার জন্য প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই ধাপগুলো মানলেই আপনি ইমুতে সহজেই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন এবং ঝুঁকি কম থাকবে।
আমি জান্নাতুল খাতুন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 31 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি মোছা:জান্নাতুল খাতুন, চুয়াডাঙ্গা জেলার বাংলাদেশ থেকে। আমি একজন ফ্রিল্যান্স লেখক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর। ডিজিটাল কনটেন্ট, আর্টিকেল এবং সৃজনশীল লেখা তৈরি করতে পারদর্শী। আমি মানসম্পন্ন কাজ প্রদান করতে এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ক্লায়েন্টদের সন্তুষ্ট রাখতে উৎসাহী।