গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কি? সহবাসের কত দিন পর গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ বোঝা যায়

Level 3
৩য় সেমিস্টার, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাভার

একটি নারীর জন্য জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি হলো গর্ভধারণ। একজন নারীর জীবনে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে তার জন্য এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে দাড়ায়। কারণ, এটি তার জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো সাধারণত সহবাসের কতদিন পর দেখা দেয়, তা নির্ভর করে বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর। যেমন, নারীর পিরিয়ডের নিয়মিততা, ডিম্বাণুর পরিপক্কতা, শুক্রাণুর কার্যকারিতা ইত্যাদি।

এই স্বাস্থ্য বিষয়ক টিউনে আমরা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা এও জানব যে, সহবাসের কতদিন পর গর্ভধারণের লক্ষণ বোঝা যায়।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণসমূহ
গর্ভধারণের লক্ষণসমূহ সাধারণত সহবাসের দুই সপ্তাহ পর থেকে দেখা দেয়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি আরও আগে বা পরেও দেখা দিতে পারে।

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

পিরিয়ড মিস হওয়া: গর্ভধারণের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো পিরিয়ড মিস হওয়া। সাধারণত সহবাসের দুই সপ্তাহ পর থেকে পিরিয়ড মিস হতে পারে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে পিরিয়ডের আগেই গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

বমি বমি ভাব: গর্ভধারণের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব। সাধারণত সকালে ঘুম থেকে উঠে বমি বমি ভাব বেশি হয়। তবে, দিনের যেকোনো সময় বমি বমি ভাব হতে পারে।

স্তনের পরিবর্তন: গর্ভধারণের প্রথম দিকে স্তনের আকার, রঙ এবং গঠনে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। স্তন ফুলে যায়, ব্যথা হতে পারে এবং নিপল গাঢ় বর্ণের হতে পারে।

ঘন ঘন প্রস্রাব: গর্ভধারণের প্রথম দিকে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সমস্যা হতে পারে।

ক্লান্তি: গর্ভধারণের প্রথম দিকে ক্লান্তিভাব বেশি হতে পারে।

মাথা ঘোরা: গর্ভধারণের প্রথম দিকে মাথা ঘোরা হতে পারে।

যোনিপথে রক্তপাত: গর্ভধারণের প্রথম দিকে যোনিপথে হালকা রক্তপাত হতে পারে। এটি ইমপ্লান্টেশন রক্তপাত নামে পরিচিত।

গর্ভধারণের লক্ষণগুলোর মধ্যে উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলো সবচেয়ে সাধারণ। তবে, কিছু ক্ষেত্রে মৌখিক গন্ধ, খাবারে অরুচি, মুখে প্রচুর লালা, প্রচুর গ্যাস, ক্ষুধামন্দা সহ শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির লক্ষণও দেখা দিতে পারে।

গর্ভধারণের লক্ষণ দেখা দিলে একজন নারীর উচিত অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা। ডাক্তার একটি প্রেগন্যান্সি পরীক্ষা করে গর্ভধারণের নিশ্চিত করতে পারেন।


গর্ভাবস্থায় শরীরের প্রভাব 
গর্ভাবস্থায় নারীর শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনগুলির মূল কারণ হল হরমোনগত পরিবর্তন। গর্ভাবস্থায় Progesterone, Estrogen, ও hCG নামক হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই হরমোনগুলি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকলাপকে পরিবর্তন করে।

গর্ভাবস্থায় শরীরের উপর উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলির মধ্যে রয়েছে:

  1. গর্ভাবস্থায় জরায়ু, স্তন, পেশী এবং হাড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। জরায়ু গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমশ বড় হতে থাকে। স্তনগুলি দুধ তৈরির জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করে। পেশীগুলি শক্তিশালী হয়ে ওঠে যাতে সন্তানের ওজন সহ্য করতে পারে। হাড়ের সংযোগস্থলগুলি নরম হয়ে যায় যাতে সন্তান জন্মের সময় জরায়ু সহজে প্রসারিত হতে পারে।
  2. গর্ভাবস্থায় হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন হয়। যেমন, বমি বমি ভাব, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথা, ইত্যাদি। এছাড়াও, গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের ফলে অনেক নারীর মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে।
  3. গর্ভাবস্থায় কিছু কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, প্রস্রাবে প্রোটিন ইত্যাদি।

গর্ভাবস্থায় শরীরের উপর এই পরিবর্তনগুলি স্বাভাবিক। তবে, যদি কোনও নারীর গর্ভাবস্থায় কোনো অস্বস্তি বা সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

গর্ভাবস্থায় শরীরের উপর প্রভাবগুলির মধ্যে কিছু পরিবর্তন স্থায়ী হয়, যেমন স্তনের আকার বৃদ্ধি। তবে, বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলি সন্তান জন্মের পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
সহবাসের কত দিন পর গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ বোঝা যায়
সহবাসের পর গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলি সাধারণত ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে প্রকাশ পায়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলি ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যেও প্রকাশ পেতে পারে।

গর্ভধারণের লক্ষণগুলি নির্ভর করে গর্ভধারণের সময়কালের উপর। গর্ভধারণের প্রথম দিকে, হরমোনগত পরিবর্তনের ফলে বমি বমি ভাব বা বমি, স্তনের ব্যথা, ক্লান্তি ইত্যাদি লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে। গর্ভধারণের পরবর্তী দিকে, জরায়ু এবং গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধির ফলে পিঠে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে।

গর্ভধারণের সঠিক নিশ্চিতকরণ কেবলমাত্র প্রেগন্যান্সি টেস্টের মাধ্যমে করা সম্ভব। সাধারণত মাসিক মিস হওয়ার প্রথম দিন থেকে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা যেতে পারে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসতে পারে। তাই, যদি মাসিক মিস হওয়ার পরেও প্রেগন্যান্সি টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসে তাহলে কয়েকদিন পর আবার টেস্ট করা যেতে পারে।

যদি আপনি গর্ভধারণের লক্ষণগুলি অনুভব করেন তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Level 3

আমি এম আর শাকিল। ৩য় সেমিস্টার, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাভার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।

প্রযুক্তির নতুন নতুন বিষয়াদি জানতে ও শিখতে আমার ভালো লাগে। যেটুকু শিখতে পারি তা অন্যদের সাথে শেয়ার করতেও ভালো লাগে। তাই আমি নিয়মিত প্রযুক্তি বিষয়ক ব্লগ টেকটিউনসে লেখালেখি করি। আমার লেখালেখির উদ্দেশ্য হলো প্রযুক্তির প্রতি মানুষের আগ্রহ ও জ্ঞান বৃদ্ধি করা। আশা করি আমার লেখাগুলো আপনাদের প্রযুক্তি সম্পর্কে নতুন কিছু...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস