শরীরের অবাঞ্ছিত কালো দাগ দূর করার সেরা ৫ টি উপায়

Level 4
Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর

আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস এর নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে। আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। বন্ধুরা আজকাল আমাদের প্রায় ৯০% মানুষের একটাই কমন সমস্যা শরীরের বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্ছিত কালো দাগ। এই কালো দাগগুলো মূলত হাত, পা, গলা, চোখের কোটায়, হাতের কনুই ইত্যাদি কমন জায়গা গুলোতে অনেক বেশি দেখা যায়। শরীরলের এই অবাঞ্ছিত দাগগুলোর জন্য আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। আমরা ভীষণ চিন্তায় পড়ে যাই। কীভাবে শরীরের এই অবাঞ্ছিত কালো দাগ গুলো দূর করা যায়। আমরা অনেকেই এই কালো দাগ দূর করার জন্য গোসলের সময় জাল দিয়ে শরীর ঘষা দিই।

অনেকেই তো আবার এই কালো দাগ দূর করার জন্য শরীরে ঝামা বা ইট দিয়ে ঘষাঘষি করি কিন্তু কোন কাজ হয় না উলটো আরো ইট দিয়ে ঘষার কারণে শরীরের ত্বক ছুলে যায়। যার ফলে সেই জায়গা পোরার মতো হয়ে আরো কালো হয়ে যায়। আমরা সব দিক থেকেই হতাশ হয়ে যাই। লজ্জায় লোকসমাগম এড়িয়ে চলি। তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের এই বিষয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে কালো দাগ দূর করণের সেরা কয়েকটি টিপস্ দিবো। টিপস্ গুলো কিন্তু ১০০% কাজের টিপস্। তবে এই কাজে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে। কারণ আমরা সবাই জানি দৃঘ্য দিনের ত্বকের দাগ সহজে উঠে না। তবে নিয়মিত পরিচর্যার ফলে আপনার ত্বক থেকে কিংবা হাত, পা, গলা, চোখের কোটা সহ সব জায়গার অবাঞ্ছিত সব কালো দাগ দূর হবে। তাই আমার আজকের এই টিউনটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিবেন। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

১. দুধ কিংবা দুধের স্বর ব্যবহার

শরীরের অবাঞ্ছিত কালো দাগ দূর করণে দুধ কিংবা দুধের স্বর ব্যবহারের অধিক কার্যকরী প্রমাণ পাওয়া যায়। আপনার শরীরের যে কোন জায়গার কালো দাগ দূর করতে সবার প্রথম আপনি যে স্থানের কালো দাগ দূর করতে চান সেই স্থানটি ঠান্ডা পানি দ্বারা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন। মনে রাখবেন কালো স্থান টি পরিষ্কার করার জন্য কোন রকম সাবান ব্যবহার করা যাবে না। সাবান ছাড়াই শুধু ঠান্ডা পানি ব্যবহার করে শরীরের কালো স্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিবেন। তারপর কাচা দুধ। যা জ্বাল করা হয় নি কিংবা চুলায় গরম করা হয়নি এমন কাচা দুধ নিবেন। পরিমাণ মতো।

আপনার কালোস্থান কতটুকু ঠিক ততটুকু স্থানে কতটুকু দুধ লাগতে পারে এমন একটি ধারণা করে একটি পরিষ্কার বাটিতে কাচা দুধ নিবেন। তারপর চামচ দিয়ে সেই কাচা দুধ আপনার শরীরের কালো স্থানে অল্প অল্প করে ঢেলে দিন আর আপনার হাতের আঙুল দিয়ে সেই সমস্ত কালো জায়গায় কাচা দুধ গুলো ছড়িয়ে দিন তারপর আস্তে আস্তে হাত দিয়েই ঘষতে থাকুন। তারপর ২০-২৫ মিনিট ঘষতেই থাকুন। ঘষা শেষ হলে ঠান্ডা পানি দিয়ে সেই স্থান টি ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।

দুধের স্বর ব্যবহারঃ

প্রথমে আপনি একটি পাতলে দুধ শিদ্ধ করে নিল বা জ্বাল দিয়ে নিন যাতে দুধে স্বর পরে যায়। তারপর দুধ ঠান্ডা হতে দিন স্বর পরার জন্য। যখন দুধ সম্পূর্ণ ঠান্ডা হবে তখন শুধু দুধের স্বর টুকু আলাদা করে একটি বাটিতে নিন। তারপর আপনার শরীরের কালো স্থানটি ঠান্ডা পানি দ্বারা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এবার আপনার কালো স্থানে দুধের স্বর লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট কালো স্থানটি মালিশ করতে থাকুন। এভাবে নিয়মিত দুধ কিংবা দুধের স্বরের ব্যবহারে আপনার ত্বকের কালো স্থানের পরিবর্তন অবশ্যই লক্ষ করবেন। হয়ত আপনার কালো দাগটি তাড়াতাড়ি উঠে যাবে না তবে আপনাকে নিয়ম মেনে ২-৩ মাসের মতো ধৈর্য ধরে ব্যবহার করলে অবশ্যই আপনার শরীরের কালো দাগ দূর হবে।

২. কালো দাগ দূর করণে সুতার ব্যবহার

কালো দাগ দূর করণে সুতার ব্যাপক হারে ব্যবহার এর প্রমাণ পেয়ে যাবেন। বিশেষ করে যারা নিয়মিত পার্লারে যাতায়াত করে তারা অবশ্যই জানবেন যে পার্লারে সুতা দিয়ে মুখ ম্যাসেজ করা হয়। কারণ মুখ থেকে অবাঞ্ছিত কিছু দাগ সাথে সাথে দূর করলে চমৎকার ফলাফল দেয় এই সুতা ম্যাসেজ। প্রথমে আপনি চিকন শক্ত একটি সুতা নিন। অনেকটাই টোটা সুতার কিংবা শেলাই মেশিনে ব্যবহার হয় এমন চিকন আর শক্ত সুতা নিন। তারপর আপনার মুখে, কিংবা যেখানে কালো দাগ রয়েছে সেই স্থানটি ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দ্বারা ধুয়ে নিবেন তারপর সেই পানি গুলো মুছবেন না।

অর্থাৎ আপনার ত্বকের কালো স্থানটি ভেজাই রাখবেন। তারপর সেই ভেজা স্থানটি ভেজা ভাবেই ৩-৪ মিনিট রেখে দিবেন যাতে আপনার ত্বকের ময়লা গুলো অনেকটা নরম হয়ে যায়। তারপর আপনার সেই চিন সুতা দুই পার্শ্বে ধরে সুতার মাঝ ভাগটা দিয়ে শরীরের কালো স্থানটিতে ভালো করে ঘষুন। এভাবে ৫/৭ মিনিট ঘষতে থাকুন। ফলে আপনার ত্বকের ভিতরে ময়লা অবধি দূর হয়ে যাবে এইভাবে আপনি ১ মাস নিয়মিত সুতা ব্যবহার করে ঘষলে আপনার ত্বকের কালো দাগের অনেকটাই পরিবর্তন লক্ষ করতে পারবেন।

৩. শীতকালীন ভ্যাসলিন ব্যবহার

শরীরের অবাঞ্ছিত কালো দাগ দূর করণে ভ্যাসলিন ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ কালো দাগ ভ্যাসলিন দ্বারা ম্যাসেজ করে অনেক দ্রুত দূর করা যায়। প্রথমে আপনি দোকান থেকে মেয়াদ আছে এমন একটি ভ্যাসলিন কিনে আনুন। চেনার উদ্দেশ্য বলছি আমরা শীতকালীন ঠোঁট ফাটা রোধ করতে যে ভ্যাসলিন ব্যবহার করি সেটি দোকান থেকে কিনে আনবেন। তারপর একটি বাটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিবেন। তারপর আপনার যতটুকু প্রয়োজন হতে পারে ততটুকু পরিমাণ ভ্যাসলিন বাটিতে নিন। তারপর আপনার শরীরের যে স্থানে কালো দাগ সেই স্থানটি ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলুন।

মনে রাখবেন সাবান ব্যবহার করে ধোয়া একেবারেই নিষিদ্ধ শুধুমাত্র ঠান্ডা পানি ব্যবহার করে ধুয়ে নিবেন। তারপর একটি পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে নিবেন। তারপর আপনার শরীরের কালো স্থানটিতে অল্প অল্প করে ভ্যাসলিন লাগিয়ে ম্যাসেজ করতে থাকুন। এভাবে মোট ২০-২৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর একটি জাল নিন হালকা পাতলা একটি জান নিন, একটি জ্বাল নিয়ে বেশি জোরেও না আবার বেশি আসতেও না স্বাভাবিক একটু জোরে ভ্যাসলিন লাগানো অবস্থায় কালো দাগের উপর জাল দিয়ে ঘষে ঘষে ভ্যাসলিন গুলো পরিষ্কার করুন। যাতে ত্বকেও ঘষা লাগে। এইভাবে ১ মাস নিয়মিত ভ্যাসলিন ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের কালো দাগের অনেক পরিবর্তন লক্ষ করবেন।

৪. টকদই এর ব্যবহার

শরীরের অবাঞ্ছিত কালো দাগ দূর করলে টকদই এর ব্যাপক নাম রয়েছে। তবে শুধুমাত্র শুধু বানান সঠিক নয় টকদই ব্যবহার করেই উপকার পাবেন না এর সাথে আপনাকে অয়েল অথবা ক্যাস্টার অয়েল ব্যবহার করতে হবে। প্রথমে একটি ছোট বাটি নিন তারপর বাটেকটিউনস ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। তারপর সেই বাটিতে প্রয়োজন অনুযায়ী টকদই ও সাথে অয়েল অথবা ক্যাস্টার অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। তারপর মিশ্রণটিকে ভালোভাবে কিছুক্ষণ নাড়াতে থাকুন যাতে একটি ভালো পেস্ট তৈরি হয়।

তারপর আপনার ত্বকের কালো দাগটি ভালোভাবে পানি দ্বারা পরিষ্কার করে নিবেন। মনে রাখবেন সাবান ছাড়া ত্বক ধুয়ে নিবেন। তারপর সেই টকদই এর পেস্ট আপনার ত্বকের কালো স্থানটির উপর অল্প অল্প লাগাতে থাকুন আর ম্যাসেজ করে থাকুন। এভাবে প্রতিদিন মোট ১৫-২০ মিনিট ম্যাসাজ করতে থাকুন। তারপর একটি পাতলা কাপড় দিয়ে কালো দাগের উপর থেকে পেস্ট গুলো মুছে পরিষ্কার করুন। তারপর আবারো কালো স্থানটি ঠান্ডা পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে ১৫-২০ দিন নিয়মিত ম্যাসেজ করলেই আপনার ত্বকের কালো দাগের অনেক পরিবর্তন লক্ষ করবেন। কারো কারো এই ১৫-২০ দিনেই কালো দাগ রিমুভ হয়ে যাবে।

৫. কালো দাগ দূর করণে পেঁপের ব্যবহার

আপনার শরীরের কালো দাগ দূর করতে আপনি সহজে পাওয়া যায় এমন একটি জিনিস এর মধ্য পাঁকা পেঁপে কে বেছে নিতে পারেন কারণ পাঁকা পেঁপে ব্যবহারে অনেক তাড়াতাড়ি কালো দাগ দূর হয় এমন অনেকের মুখেই শোনা যায়। প্রথমে আপনি একটি পাঁকা পেঁপে চক করে কেটে নিন। তারপর জুস বানানোর ব্লেন্ডার দিয়ে পাঁকা পেঁপে ফালি বা চককে জুস করে ফেলুন। তারপর জুস গুলো একটি বাটিতে নামিয়ে নিন। তারপর বাটির মধ্য সামান্য পরিমাণ কাচা দুধ ঢেলে দিবেন। এবার কিছুক্ষণ চামচ দিয়ে মিশ্রণ টিকে ভালোভাবে নাড়িয়ে নিবেন। তারপর আপনার হাতের বা পায়ের যে স্থানে কালো দাগ আছে সেই স্থানটি সাবান ছাড়া শুধুমাত্র ঠান্ডা পানি দ্বারা ধুয়ে নিবেন।

তারপর একটি পাতলা কাপড় দিয়ে ভেজা স্থানটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন। তারপর আপনার বানানো সেই দুধ দিয়ে পাঁকা পেঁপের পেস্ট টি আপনার ত্বকের কালো স্থানে ভালোভাবে ম্যাসেজ করতে থাকুন। এভাবে মোটামুটি ২০ মিনিট ম্যাসেজ করতে থাকুন। তারপর পাতলা কাপড় বা টিশু পেপার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিন। এভাবে ১ মাস নিয়মিত পাঁকা পেঁপের পেস্ট ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের কালো দাগ দূর হবে ইনশাআল্লাহ।

তো বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের টিউন। হাতে পায়ের অবাঞ্ছিত কালো দাগ দূর করলে সেরা ৫ টি প্রাকৃতিক উপায়। আশাকরি টিউন টি আপনাদের ভালো লেগেছে। প্রতিদিন টেকনোলজি বিষয়ক নতুন নতুন টিপস এন্ড ট্রিক নিয়ে আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইটে TrickNew দেখা হবে পরবর্তী টিউনে ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর টেকটিউনস আর সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ।

Level 4

আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 39 টি টিউন ও 28 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস