
কবুতরও দুধ দেয়। কবুতরের দুধ কী, কীভাবে তৈরি হয়, এতে কী কী পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং কবুতরছানার জন্য এর গুরুত্ব কতটা জানুন এই তথ্যবহুল আলোচনায়।
প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণীর মধ্যেই লুকিয়ে আছে কিছু না কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য। ঠিক তেমনই কবুতরের মধ্যেও রয়েছে এক আশ্চর্যজনক এক বৈশিষ্ট্য, যার নাম "কবুতরের দুধ"। নাম শুনে অনেকেই ভাবেন এটি হয়তো স্তন্যপায়ী প্রাণীর দুধের মতো, কিন্তু আসলে তা নয়। এটি একটি বিশেষ পুষ্টিকর পদার্থ, যা কবুতরের ফসল (Crop) থেকে তৈরি হয় এবং সদ্যোজাত ছানার জীবনে
কবুতরের দুধ কী?
কবুতরের দুধ হলো এক ধরনের ঘন, সাদা, আধা-তরল খাদ্য, যা কবুতরের মা-বাবা দু'জনেই উৎপাদন করতে সক্ষম। ডিম ফোটার পর প্রথম ৭-১০ দিন পর্যন্ত কবুতরছানা শুধুমাত্র এই দুধ খেয়ে বেড়ে ওঠে। তাই একে প্রকৃতির এক বিরল ও বিস্ময়কর সৃষ্টি বলা হয়।
উৎপাদন প্রক্রিয়া
কবুতরের "ফসলের আস্তরণ থেকে বিশেষ কোষ ভেঙে গিয়ে এই দুধ তৈরি হয়। হরমোন এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, শুধু মাদি নয়, "পুরুষ কবুতরও সমানভাবে কবুতরের দুধ উৎপাদন করতে পারে"।
প্রস্তুতিঃ
১) ব্রয়লার মুরগির খাদ্য ১০ গ্রাম।
২) ফুল সিদ্ধ ডিমের কুসুম ২-৩ গ্রাম সমান।
৩) ২ মিলি কম চর্বিযুক্ত
৪) ৬ মিলি ভুট্টার তেল।
৫) ৫ মিগ্রা ক্যালসিয়াম কার্বোনেট।
৬)২ ড্রপ কড-লিভার তেল।
৭) ১ ড্রপ ভিটামিন ই
৮) এক গ্রামের (১/১০) ভাগ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স
৯) ৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি
পদ্ধতিঃ
বিশ মিলিগ্রাম ফুটানো পানি সহ একটি ব্লেন্ডার মধ্যে সব উপাদানগুলি মিশ্রিত করুন। খাওয়ানোর আগে চামড়াতে সহ্য হয় এমন হালকা তাপমাত্রায় গরম করুন। একটি প্লাস্টিকের পাত্রে বাতাস নিরোধ করে ফ্রিজে সংরক্ষন করুন ও প্রতিবার খাওয়ানোর আগে সেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গরম করুন। তবে আপানি যদি অভিজ্ঞ না হন বা এগুলো তৈরির ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ থাকে তাহলে এটি না করাই উত্তম। সেক্ষেত্রে বাজারে বাইরের বেবি ফুড পাওয়া যায় বর্তমানে বাংলাদেশে হ্যান্ড ফিডিং ফর্মুলা নামে একটি বাচ্চা কবুতর ও পাখিদের খাবার বের করেছে সেটি তৈরি করে কুসুম গরম অবস্থাতে খাওয়াতে হবে। আরও মনে রাখতে হবে ১২ দিন পরও কেউ যদি হ্যান্ড ফিড করাতে চান তাহলে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন সেই খাবার কুসুম গরম অবস্থাতে একটু লবন মিক্স করে দেয়া হয়। মনে রাখতে হবে বাচ্চা ফুটার পর থেকে ১০-১২ দিন পর্যন্ত কবুতর তার বাচ্চাদের কে কর্পমিল্ক খাওায় তাই এই অবস্থাতে তাদের কে অন্য কোন খাবার খাওয়ানো বিপদ জনক। একটা বাচ্চা কে কম খাওালেই তারা ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। আর নানা ধরনের খাবার খাওয়াতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। এদেশে রোগে যত না কবুতর মারা যায় তার থেকেও বেশি মারা যায় ভুল চিকিৎসা ও ভুল সিদ্ধান্তের কারনে। তাই সঠিক জ্ঞান অর্জন করুন ও আপনার প্রিয় কবুতর ও তার বাচ্চাদের কে সঠিক ভাবে পালন করুন।
কবুতরের দুধের পুষ্টিগুণ
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, কবুতরের দুধ অত্যন্ত পুষ্টিকর।
এতে থাকেঃ-
✅ উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ফ্যাট
✅ অ্যান্টিবডি, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
✅ প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ
কবুতরের দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা বাচ্চাদের দ্রুত বৃদ্ধি ও শারীরিক শক্তি অর্জনে সহায়তা করে। এই দুধে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন (যেমনঃ ভিটামিন A, B, C, এবং E) ও খনিজ (যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম) উপস্থিত থাকে, যা শরীরের নানা কার্যক্রমে সহায়তা করে। কবুতরের দুধে নানা প্রকারের এমিনো অ্যাসিড থাকে, যা দেহের কোষ পুনঃনির্মাণ এবং শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক হরমোন, যা বাচ্চাদের দেহের বৃদ্ধি এবং শারীরিক উন্নতিতে সহায়তা করে।
কবুতরের দুধ হজমে সহায়ক এবং পেটের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, বিশেষত যারা পেটের সমস্যা ভুগছেন। কবুতরের দুধে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণ, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটি শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে দীর্ঘদিন সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এসব উপাদান মিলে নবজাতক ছানাকে দ্রুত বড় হতে সহায়তা করে।
কবুতরের দুধের গুরুত্ব
দ্রুত বৃদ্ধি: কয়েক দিনের মধ্যেই কবুতরছানা চোখে পড়ার মতো বড় হয়ে ওঠে।
উভয় অভিভাবকের ভূমিকা: মা-বাবা দুজনেই সমানভাবে দুধ খাওয়ায়, যা পাখিজগতে বিরল।
শুধু কবুতর নয়, আরও কিছু পাখি যেমন ঘুঘু, ফ্লেমিঙ্গো ও কিছু জলচর পাখি একই ধরনের দুধ উৎপাদন করতে পারে। এটি প্রাণিজগতে একটি বিশেষ অভিযোজন প্রক্রিয়ার উদাহরণ, যা বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার বিষয়। কবুতরের দুধ প্রকৃতির এক বিস্ময়কর উপহার। এটি দেখতে সাধারণ হলেও এর ভেতরে লুকিয়ে আছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ ও বৈজ্ঞানিক রহস্য। কবুতরের সন্তান লালন-পালনে এর ভূমিকা অপরিসীম। এ কারণে কবুতরের দুধ শুধু পাখির জীববিদ্যায় নয়, বরং প্রকৃতির বৈচিত্র্য বোঝার ক্ষেত
আমি কোরাইশ মিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 মাস 1 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
"জ্ঞানার্জনের জন্য একটি উন্মুক্ত মন প্রয়োজন, একটি পূর্ণ পাত্রের মতো নয়" - এপিজে আব্দুল কালাম
অসাধারাণ একটি লেখা।