অনলাইনে আসলে আয় হয় কিভাবে?

Level 12
কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সকলেই আল্লাহর রহমতে অনেক অনেক ভালো আছেন। আপনাদের কি কখনো মনে হয়েছে যে ইন্টারনেট থেকে কিভাবে আয় করে? ইন্টারনেটে যে আমরা ভিডিও, গান, মুভি এবং বিভিন্ন ব্লগ দেখে থাকি সেখানে তারা কিভাবে আয় করে? বন্ধুরা আজকের এই টিউনে আমি সেসব প্রশ্নের উত্তরই আপনাদেরকে বলার চেষ্টা করব।

ছোটবেলায় প্রথমে আমরা যখন আমাদের হাতে স্মার্টফোন কিংবা একটি বাটন মোবাইল পেয়েছিলাম তখন হয়তোবা আমরা বাজারের কোন গান ডাউনলোড এর দোকানে গিয়ে পছন্দের মুভি কিংবা গান মেমোরিতে লোড করে নিয়ে আশাকরি। এসব বিষয়গুলো কিন্তু আমাদের বর্তমান দৈনন্দিন জীবনে একেবারে মিশে গিয়েছে এবং এগুলোকে একটি সাধারণ ঘটনাই মনে হয়।

এসব কথা আমাদের মাথায় চলে আশাকরি তখন আমাদের মধ্যে সকলেরই হয়তোবা এটাই মাথায় ছিল যে ইন্টারনেটে কিভাবে আয় হয়।

ইন্টারনেট থেকে কিভাবে আয় হয় এ বিষয়টি যদি আপনি প্রথম থেকে জেনে থাকেন তবে অন্য কথা। আমাদের মধ্যে যারা বর্তমান সময়ে ইউটিউব ফেসবুক ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি তাদের মধ্যে অনেকে হয়তো বা সর্বপ্রথম ইন্টারনেট বলতে বুঝতেন গুগলকে অথবা ফেসবুককে। ইন্টারনেট ব্যবহার করার শুরুতে আমরা হয়তো বা প্রথমে ব্যবহার করেছি কোন বাটন ফোন। ‌ যেখানে আমাদের টুজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে গুগলে কোন কিছু সার্চ করলে সেটির ফলাফল চলে আসতো। তখনই আমরা ধরে নিতাম যে ইন্টারনেটে এসব তথ্য গুলো হয়তোবা গুগল স্টোর করে রেখেছে।

অর্থাৎ, গুগলে যে আমরা এসব বিষয়গুলো লিখে সার্চ করছি এবং সেখান থেকে প্রতিনিয়ত সেসব প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাচ্ছি সেগুলো নিশ্চয়ই গুগল নিজে লিখেছে। কিন্তু আমরা বর্তমানে দেখতে পাই ইন্টারনেটে আসলে সকল তথ্যগুলোই আমাদের মতই কোন না কোন ব্যক্তি রেখেছে এবং সেগুলো তাদের স্বার্থের বিনিময়ে। আপনি যদি প্রথমেই বিষয়টি জেনে থাকেন তবে ভিন্ন কথা। তো বন্ধুরা আজকের এই টিউন টি হয়তোবা অনেক দীর্ঘ হতে চলেছে। তবে আজকের এই টিউনে অনলাইনে আয় হওয়ার প্রত্যেকটি বিষয় কে সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

অনলাইনে আয় হওয়ার এসব প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে অবশ্যই টিউনটি মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকুন। আর সেই সঙ্গে আপনি যদি আমার এই টিউন এর নতুন হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই উপরের ফলো বাটন এ ক্লিক করে রাখুন। যাতে করে আমার নতুন কোন টিউন প্রকাশিত হলে আপনার হোমপেজে সর্বদা থেকে যায়। চলুন তবে আজকের টিউনটি শুরু করা যাক।

অনলাইন থেকে কিভাবে আয় হয়ে থাকে?

দেখুন, আমরা যারা প্রথমে ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু করেছি তারা হয়তো বা প্রথমে ফেসবুক ব্যবহার করেছি। যেখানে ফেসবুক বলতে আমরা বুঝতাম নিজের ছবি টিউন করা এবং সেটিতে বেশি বেশি Like আনার। এভাবে করে আমরা শুধুমাত্র আমাদের ছবিই না, বরং আমরা আমাদের বন্ধুদের ছবিতে নিয়মিত Like, Comment করতাম। এছাড়া কাজের ফাঁকে আমাদের কোন কিছু জানার প্রয়োজন পড়লে গুগলে গিয়ে সার্চ করে সেটি খুঁজে নিতাম। আর এটিকেই আমরা ভাবতাম ইন্টারনেট‌।

তবে হ্যাঁ, এটিই হচ্ছে ইন্টারনেট; তবে ফেসবুকে যে আমরা বিভিন্ন ভিডিও ছবি কিংবা অন্য কোন Post করছি সেখানে আমার দিকে কোনো অর্থ দেওয়া হচ্ছে না। বরং, এতে শুধুমাত্র আমাদের ইন্টারনেট বিল খরচ হচ্ছে। আমরা ফেসবুকে যেসকল ছবিগুলো Post করি সেখানে আমাদের কোনো অর্থ দেওয়া হয় না। ‌যেখানে আমরাও চাই না যে আমাদের প্রোফাইলের জন্য কোনো অর্থ দেওয়া হোক। আমরা শুধুমাত্র আমাদের বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য ফেসবুককে ব্যবহার করে থাকি।

তবে ফেসবুকের মতো অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোতে কিন্তু সবাই এরকম ভাবে Like পাবার জন্য Post করে থাকে না। যেখানে আমাদের ফেসবুকে কোন কিছু Post করার উদ্দেশ্য থাকে সেই Post-এ বেশি বেশি Like পাবার, সেখানে অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম গুলোতেও কি শুধুমাত্র Like পাবার জন্য Post করে থাকে? এর উত্তর হবে না। বরং পরিশ্রম করে তাদের ভিডিও এবং নিজের লেখা কোথাও ছাড়ার উদ্দেশ্য থাকে সেখান থেকে একটি অর্থ উপার্জন করার। এসব জায়গায় কেউ মানব সেবা করার জন্য আপনাকে কোন ভিডিও দিচ্ছে না; তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক ভিডিও রয়েছে যেগুলো কোনো স্বার্থ ছাড়াই আপনাকে বিনামূল্যেই দেখানো হচ্ছে।

ইউটিউব কিংবা ফেসবুকে যদি কোন ভিডিও আপনাকে কোন স্বার্থ ছাড়াই দেখানো হয় তবে সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু এসব জায়গায় সবাই কিন্তু মানব সেবা করার জন্য আসে না। অর্থাৎ, সবাই বিনামূল্যে আপনাকে ভিডিও কিংবা কোন Post দিচ্ছে না। ‌বরং এখানে আপনার থেকে কিছু না কিছু হলেও তারা আয় করছে কিংবা অন্য কোনো স্বার্থে তা ব্যবহার করছে। মোট কথা বলতে গেলে অনলাইন প্লাটফর্মে তারা কোনো না কোনোভাবে আয় করে থাকে।

কিন্তু আমরা যখন প্রথমে ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু করি তখন আমরা হয়তো বা এটি বুঝতেই পারতাম না যে কিভাবে আসলে অনলাইন থেকে আয় করা যায়। ‌মূলত অনলাইনে আমরা যে সমস্ত বিষয় গুলো দেখতে পারি সবকিছুই অর্থ উপার্জনের জন্য। অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রেই মানুষ আয় করার জন্য তাদের অভিজ্ঞতার ভিডিও, ব্লগ দিয়ে থাকে। মনে রাখবেন, পৃথিবীতে কেউ কিন্তু কোন কাজ ফ্রিতে বর্তমানে করে দিতে চায় না। সর্বক্ষেত্রে তাদের একটি স্বার্থ জড়িয়ে থাকে।

বর্তমানে আপনি যেই টিউনটি দেখছেন এখানেও আমি এই টিউনটি করেছি আমার স্বার্থের জন্য। অর্থাৎ, এই টিউনটি এর মাধ্যমে আমি অর্থ উপার্জন করবো। যেখানে আমি আপনাকে বিভিন্ন টিপস এন্ড ট্রিকস দিব অথবা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান জানিয়ে দেবো এবং সেখান থেকে আমি আয় করব। আর ইন্টারনেটে এভাবেই সবাই আয় করে থাকে। কিন্তু ইন্টারনেটে আয় করার প্রক্রিয়াটি একে অপরের চাইতে ভিন্ন হতে পারে।

যেমন ধরুন, বর্তমানে আমি যেই টিউনটি করেছি সেখানে এই টিউনটির মাধ্যমে আমাকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দেওয়া হবে। আর এজন্যই কিন্তু আমি এই প্ল্যাটফর্মের এজন্য আমার অভিজ্ঞতার কথা কিংবা আরো অন্যান্য বিষয়গুলো আপনাদের জন্য লিখেছি। এখানে এই টিউনগুলোতে যদি শুধুমাত্র জোসস কিংবা আপনাদের মন্তব্য শুনার জন্য লিখতাম তাহলে আমি এতটা আগ্রহের সঙ্গে লিখতে পারতাম না। যেখানে হয়তো বা শুধুমাত্র কয়েকটি টিউন করেই আমি আর লেখার প্রতি আগ্রহ হতাম না। কিন্তু বর্তমানে যে আমাকে প্রতিটি টিউনের জন্য অর্থ দেওয়া হচ্ছে এজন্যই আমি টেকটিউনস এর জন্য প্রতিনিয়ত লিখে চলেছি।

ঠিক একই রকমভাবে আমরা বর্তমানে ইউটিউবে কিংবা ফেসবুকে যেসব ভিডিও দেখতে পারি সেগুলোর প্রায় সমস্ত গুলি তৈরি করা হয় তাদের অর্থ উপার্জন করার জন্য। এখানে ভিডিও শেয়ার করার মাধ্যমে প্রত্যেকটি ইউটিউবার আয় করে থাকে। একইভাবে ব্লগ সাইট কিংবা কারো তৈরি অ্যাপ এর মাধ্যমে আয় করে থাকে। ইউটিউবে কিংবা ফেসবুকে এসব মাধ্যমে তারা কিভাবে আয় করে সে বিষয়গুলোই এবার আলোচনা করব। এবার আপনারা জানতে পারবেন ইন্টারনেটে আয় করার আদ্যোপান্ত।

ইন্টারনেটে আয় কিভাবে হয়?

আমরা তো এটাই সকলেই বুঝতে পারলাম যে ইন্টারনেটে সকলেই কাজ করে অর্থ উপার্জনের জন্য। যেখানে ইউটিউবের জন্য ভিডিও তৈরি করা, ব্লগ সাইটের জন্য লেখা এবং ফেসবুকে ভিডিও শেয়ার করার উদ্দেশ্য থাকে সেখান থেকে ইনকাম করার। আর এই প্রত্যেকটি সেক্টর থেকে আলাদা আলাদাভাবে একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের আয় আশাকরি না কেন সেখানেই বিজ্ঞাপণ চলে আসে।

আর এই বিজ্ঞাপনই হচ্ছে অনলাইনে আয় করার প্রধান মাধ্যম। তবে অনলাইনে আয় করার বিষয়টিকে আমি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করার কথা বলছি না। ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিষয়টি নিয়ে টিউন এর একটি পর্যায়ে আলোচনা করা হবে। অনলাইনে কোন একটি কনটেন্ট, সেটি হতে পারে ভিডিও কিংবা কোন ব্লগ; এসব থেকে আয় হয়ে থাকে বিজ্ঞাপণ প্রদর্শনের মাধ্যমে। আমরা বর্তমানে যখন ইউটিউবে কোন ভিডিও দেখতে চাই সেখানে অনেক বিজ্ঞাপণ চলে আসে, আর এই বিজ্ঞাপণ দেখানোর মাধ্যমেই মূলত একজন ভিডিও নির্মাতা সেই ভিডিও থেকে আয় করে।

ইউটিউব এর ক্ষেত্রে কোন চ্যানেলের ভিডিও তে বিজ্ঞাপণ এর মাধ্যমে আয় করার জন্য সেই চ্যানেলটিকে অবশ্যই মনিটাইজেশন পেতে হবে। আর একটি ইউটিউব চ্যানেল কে মনিটাইজেশন পাবার জন্য কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া রয়েছে। যে শর্ত মধ্যে একটি হচ্ছে, সেই চ্যানেলটিতে অবশ্যই সর্বশেষ এক বছরের মধ্যে 1000 সাবস্ক্রাইবার এবং 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে। যেই শর্তটি বর্তমানে প্রযোজ্য রয়েছে। এছাড়া একটি ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন পাবার জন্য অবশ্যই সে চ্যানেলের ভিডিও গুলো কে কপিরাইট মুক্ত হতে হবে।

এক্ষেত্রে যদি সেই চ্যানেলের কোন ভিডিওতে কপিরাইট স্ট্রাইক থাকে তবে সে চ্যানেলটিকে মনিটাইজেশন এনাবেল করে দেওয়া হবে না। এছাড়া ইউটিউব এর গাইডলাইন এর বাইরে যদি কোন ভিডিও করা হয় সে ক্ষেত্রেও সেসব চ্যানেলকে মনিটাইজেশন দেওয়া হয় না। অর্থাৎ, এসব চ্যানেল বিজ্ঞাপণের মাধ্যমে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারে না। যেমন ধরুন না ইউটিউবে কোন ধরনের পর্ন ভিডিও অথবা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কোন ভিডিও আপলোড করা যায় না। যদি ইউটিউবে এই ধরনের ভিডিও গুলো সাময়িকভাবে আপলোড করা যায়, কিন্তু সেটি ইউটিউব থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয়।

এছাড়াও ইউটিউব এর গাইডলাইন এর বিরুদ্ধে রয়েছে এমন কোন টাইটেল, ট্যাগ, ডেস্ক্রিপশন ইত্যাদি ভিডিওতে দেখা করা যায়না। যাইহোক, ইউটিউব থেকে বিজ্ঞাপণের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য অবশ্যই সেই কনটেন্ট ক্রিয়েটর কে তাদের গাইডলাইন অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে নিজের কোনো অভিজ্ঞতা ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে ইউটিউব ক্যারিয়ার শুরু করা যেতে পারে। তবে ইউটিউব থেকে শুধুমাত্র যে বিজ্ঞাপণের মাধ্যমে আয় হয় বিষয়টি তা নয়। বরং ইউটিউব থেকে আরো অন্যান্য পদ্ধতিতেও আয় করা যায়।

এখানে শুধুমাত্র আমি ইউটিউব এর কথা বলছি না। বরং ইউটিউব ফেসবুক এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম গুলোতে একই পদ্ধতিতে আয় করা সম্ভব। বিজ্ঞাপণ এর এই বিষয়টি চলে আসলে শুধুমাত্র যে ইউটিউব এর ভিডিও তে বিজ্ঞাপণ দেখানো হয় তা নয়। বরং বর্তমানে ফেসবুকের ভিডিওতে ও বিজ্ঞাপণ দেখার মাধ্যমে একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর করে থাকে। যদিও কিছুদিন আগেও facebook-এ ভিডিও তৈরি করার জন্য কোন অর্থ দেওয়া হতো না।

বর্তমানে একটি ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপণ দেখানোর মাধ্যমেও আয় করা সম্ভব। আমরা ইদানিং হয়তোবা ফেসবুকের অনেক ভিডিওতে বিজ্ঞাপণ দেখতে পাচ্ছি, যেরকম বিজ্ঞাপনগুলো পূর্বে দেখানো হতো না। পূর্বে ফেসবুকে যেসব বিজ্ঞাপণ দেয়া হতো সেগুলো থাকতো আলাদা। এক্ষেত্রে ফেসবুক ব্যবহার করার সময় কোন একটি ভিডিওর নিচে বিজ্ঞাপণ থাকতো, যেগুলোকে একটি ভিডিওর মতোই মনে হতো। যেখানে কোন একটি চ্যানেলে মনিটাইজেশন না থাকলেও সেই ভিডিওর নিচে আমরা ভিডিও আকারে অন্য একটি বিজ্ঞাপণ দেখতে পেতাম।

কিন্তু বর্তমানে একটি ফেসবুক পেজে মনিটাইজেশন চালু করা থাকলে সেক্ষেত্রে ভিডিওর মাঝেই বিজ্ঞাপণ চলে আসে; যেমনটি আমরা বর্তমানে ইউটিউবে দেখতে পারি। ফেসবুকে যে শুধুমাত্র আমরা এতদিন Like, Comment করতাম বিনামূল্যে, সেখানে আজ আমরা জানতে পারলাম যে ফেসবুকের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। ফেসবুকে শুধুমাত্র নিজস্ব বা ব্যক্তিগত প্রোফাইল এর ক্ষেত্রে কোন অর্থ দেওয়া হয় না। যেখানে বর্তমানে একটি ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপ উভয়ের ক্ষেত্রে মনিটাইজেশন চালু করার ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে সেই গ্রুপের মালিক এবং সেই পেজের মালিক Post করে মনিটাইজেশন চালু করার মাধ্যমে তার Post থেকে আয় করে।

আমরা ফেসবুকে যেসব ভিডিও কিংবা গ্রুপ গুলো দেখতে পারি তারা কিন্তু আমাদেরকে বিনামূল্যেই এই সার্ভিস দিচ্ছে না। বরং তারাও এখান থেকে কিছুটা পরিমানে আয় করছে যদিও এটা সামান্য হতে পারে।

আর এভাবে করেই বিভিন্ন ব্লগ সাইট এবং আমরা যে সমস্ত অ্যাপ ব্যবহার করে থাকি তারা সবাই আমাদের থেকে আয় করতে থাকে। আমরা যেসব ব্লগ সাইটে ভিজিট করি সেখানে ও বিভিন্ন বিজ্ঞাপণ দেখানো হয়। ‌ এবার বিজ্ঞাপণে ক্লিক করার মাধ্যমে সেই চ্যানেলের মালিক বা সেই ওয়েবসাইটের মালিক এর মালিক আয় করে থাকে। তবে এবার প্রশ্ন হতে পারে যে, যেসব অ্যাপ আমাদের কাছ থেকে কোনো অর্থ নেয় না এবং সেসব অ্যাপ এ কোন ধরনের বিজ্ঞাপণ ও দেখানো হয় না তারা কিভাবে আয় করে থাকে?

এক্ষেত্রে তারা আয় করে সাবস্ক্রিপশন ফি এর মাধ্যমে। আপনারা অনেক অ্যাপে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন তাদের পরিপূর্ণ সেবা ব্যবহার করতে হলে মাসিক কিংবা বাৎসরিক অর্থ পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে। এসব অ্যাপ এর অর্থ উপার্জন করার প্রক্রিয়াটি থাকে এরকম, যেখানে আপনাকে বিজ্ঞাপণ দেখানোর না হলেও সাবস্ক্রিপশন ফি এর মাধ্যমে তারা আপনার থেকে অর্থ আয় করবে।

তবে আমাদের এমন মনে হতে পারে যে আমরা তো তাদের অ্যাপ কোন সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়ে ব্যবহার করছি না। বরং আমরা সেসব অ্যাপগুলোর যেটুকু ফ্রি সেবা রয়েছে আমরা শুধুমাত্র সেটুকুই ব্যবহার করি, তবে এখান থেকে তাদের লাভ হয় কিভাবে? দেখুন, আপনি যদি তাদের প্রিমিয়াম সেবা ব্যবহার না করেন তবে অন্য একজন হয়তোবা তাদের সেবা ব্যবহার করবে। এখানে প্রথম থেকেই যদি তারা সেই অ্যাপটিকে ব্যবহার করার জন্য সাবস্ক্রিপশন ফি চাপিয়ে দিত তবে আপনি হয়তো বা সেই অ্যাপটি ব্যবহারই করতেন না। এক্ষেত্রে যদি কোনো গ্রাহক তাদের সেবা ব্যবহার করে নাই দেখে তবে তারা কিভাবে বুঝবে যে এই অ্যাপে কি ধরনের সেবা থাকতে পারে।

এক্ষেত্রে তারা আপনার মত আরো কিছু গ্রাহককে তাদের কিছু সেবাকে ফ্রি করে দিয়েছে; যাতে করে আপনি তাদের সেবার প্রতি আগ্রহী হতে পারেন। আর এভাবে করে হয়তো বা কয়েক শত কিংবা কয়েক হাজার এর মধ্যে কোন একজন গ্রাহক তাদের সেবাগুলোকে ব্যবহার করবে। এভাবে করে যদি তারা কিছু গ্রাহক পেয়ে যায় তবে বিজ্ঞাপণ থেকে যে আয়টি হত, সেই অর্থটি তারা এখান থেকেই তুলে নিতে পারবে।

এই প্রক্রিয়াটি আপনি বিভিন্ন টেলিকম এর সিম বিক্রির ক্ষেত্রে দেখতে পাবেন। যেখানে সিমের মেলায় একটি সিমে 10 থেকে 20 টাকায় বিক্রি করা হয় কিন্তু সেই সিমে কয়েক জিবি ইন্টারনেট এবং সেই টাকার চাইতেও বেশি টাকা লোড করে দেওয়া থাকে। এখানে কিন্তু আপনাকে সিমের মূল্য চাইতে বেশি পরিমানে দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু এক্ষেত্রে কি তাদের লোকসান হবে? এর উত্তর হবে না। বরং আপনি যদি কিছুদিন সিমটি ব্যবহার না করেন তবে পরবর্তীতে তো সেটি ব্যবহার করবেন।

সিম কোম্পানিকে সাময়িক আপনার কাছে লোকসান করলেও পরবর্তীতে আপনার থেকে সেই টাকাটা তুলে নিতে পারবে। আর যদি এমন হয় যে আপনি সেই সিমটি ব্যবহার আর নাই করেন তবে আপনার মত আরো অন্যান্যরা হয়তোবা সেটি ব্যবহার করবে। এ ক্ষেত্রে শতকরা হয়তোবা 10 জন লোক সেই সিমটা আর ব্যবহার করবেন না, কিন্তু বাকি 90% লোক সেটি ব্যবহার করার কারণে তাদের কাছ থেকে সেই টাকাটি তারা তুলে নিতে পারবে। এখানে কিন্তু তাদের আর লোকসান থাকলো না। আর এভাবে করেই বিভিন্ন অ্যাপ আপনাকে ফ্রিতে সার্ভিস দিলেও অন্যান্য জনের কাছ থেকে সেই টাকাটা তুলে নিতে পারবে।

এছাড়া বর্তমানে অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলোতে বিজ্ঞাপণ দেখানোর মাধ্যমে তারা আয় করে। বর্তমানে এরকম অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলোতে ঠিকই বিজ্ঞাপণ দেখানো হয়, কিন্তু সেখানে আলাদা করে প্রিমিয়াম ভার্সন ও রয়েছে। আর সে যদি প্রিমিয়াম ভার্সনটি কিনে নেয় তবে সেখানে বিজ্ঞাপণ দেখানো হবে না এবং অন্যান্য সব সুবিধা দেওয়া হবে এরকম সব শর্ত দেওয়া থাকে। তো, এসব প্রক্রিয়াটি মূলত তাদের আয় করার উপায়। এছাড়া অন্য উপায় ও তারা আয় করতে পারে।

যেমনটি বর্তমানে কোন ওয়েবসাইটের কথা আছে যদি বিবেচনা করেন তবে অনেক ক্ষেত্রে আপনি অনেক ওয়েবসাইটে কোনো বিজ্ঞাপণ দেখতে পাবেন না। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই ওয়েবসাইটটি আপনার কুকিজ গুলো সংগ্রহ করছে। আপনি যে অনলাইনে বিচরণ করছেন সেই তথ্যগুলো আপনার ব্রাউজারের কুকিজে সংরক্ষিত থাকে। আপনি সেই ওয়েবসাইটে গিয়ে কোন বিষয়ে বেশি ইন্টারেস্ট দেখাচ্ছেন এবং কোন ব্লগে গিয়ে সেই লেখা টি বেশি সময় ধরে পড়ছেন ইত্যাদি সমস্ত বিষয়গুলো আপনার ব্রাউজার কুকিজ সংগ্রহ করে। কোন একটি ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপণ দাতা প্রতিষ্ঠান গুলো কুকিজ স্থাপন করে।

যেখানে আপনার ডেটা গুলোকে third-party কোন ওয়েবসাইটের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার মাধ্যমে তারা কাজ করে। এবার সেই third-party প্রতিষ্ঠানটি সেই তথ্যগুলো কে কাজে লাগাবে আপনাকে বিজ্ঞাপণ দেখানোর কাজে। আপনি অনেক ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখবেন যে সেখানে কোনো বিজ্ঞাপণ নেই, বরং সেই ওয়েবসাইটে তারা নিজেদের পণ্যগুলোই বিক্রি করছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও তারা আপনার আগ্রহের তালিকাটি তাদের কাছে জমা করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আপনাকে অন্য প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপণ দেখানোর কাজে।

আমরা বর্তমানে সকলেই জানি যে, কোন একটি বিজ্ঞাপণ দেওয়া হয় মূলত সেই প্রতিষ্ঠানের কোন পণ্য বা সেবাকে মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য। কিন্তু আমরা যদি তাদের পণ্যগুলো কেনার জন্য তাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি; সে ক্ষেত্রেও তারা আপনার আগ্রহের তালিকাটি তাদের কাছে জমা করবে এবং তারা যদি কোন প্রতিষ্ঠান কাছে বিজ্ঞাপণ দিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে তাদের কাছে সেই তথ্যটি হস্তান্তর করবে। অর্থাৎ, আপনি তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে যে বিষয়টি নিয়ে বেশি অনুসন্ধান করেছেন সে তালিকাটি তারা করে নিবে। এরপর আপনি যদি ফেসবুকে যান তবে সেখানে আপনি তাদের সেই পণ্যটির বিজ্ঞাপণ দেখতে পাবেন। যে বিষয়টি আপনারা হয়তোবা আপনাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় লক্ষ্য করে থাকবেন।

এখানে উদাহরণ দেওয়ার এক পর্যায়ে আমি হয়তোবা অন্য লাইনে চলে গিয়েছি। যাইহোক, এসব বিষয়গুলো মূলত তাদের আয় করার পর্যায়েই পড়ে। যেখানে অনলাইনে বিচরণ করার ক্ষেত্রে সর্বদা সবাই একেকটি পদ্ধতিতে আয় করার চিন্তা করে। যেখানে কোন একটি ওয়েবসাইট আপনার ব্রাউজার আপনার ব্রাউজিং কুকিজ গুলো নিয়ে ফেসবুক কিংবা গুগলের কাছে দিয়ে দিলো এবং তারা আপনাকে সেই অনুযায়ী বিজ্ঞাপণ দেখালো। এখানে ফেসবুক আয় করছে আপনাকে বিজ্ঞাপণ দেখানোর মাধ্যমে এবং সেই প্রতিষ্ঠান আয় করছে সেই পণ্যটি আপনার কাছে বিক্রি করার মাধ্যমে।

এখানে উভয় ব্যক্তি কিন্তু আয় করছেন। যেখানে আয় করার মোট ব্যক্তি রয়েছে তিনজন। যেখানে যে প্রতিষ্ঠানটি বিজ্ঞাপণ দিচ্ছে সে আয় করছে তার পণ্যটি বিক্রির মাধ্যমে, ফেসবুক কিংবা ইউটিউব আয় করছে বিজ্ঞাপণ দেখানোর মাধ্যমে এবং সেই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আয় করছে তার ভিডিওতে কিংবা ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপণ আসার কারণে। যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি কোন না কোনভাবে এই ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে আয় করছে। ইন্টারনেট থেকে বিজ্ঞাপণ দিয়ে আয় করার পাশাপাশি অন্যান্য মাধ্যমেও আয় করা সম্ভব।

অনলাইন প্লাটফর্ম এ বিজ্ঞাপণ দিয়ে আয় করার প্রক্রিয়াটি একটি সাধারণ ধারণা মাত্র। যেখানে বিজ্ঞাপণ ছাড়া ও বিশাল পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারে কোন একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর। যেমনভাবে ইউটিউবে কিংবা ফেসবুকে আমরা যেসব ভিডিও দেখতে পাই সেখানে অনেক ভিডিওতে আমরা কোন বিজ্ঞাপণ দেখতেই পাই না। এসব ভিডিওর মধ্যে অধিকাংশই থাকে তাদের নিজেদের প্রোডাক্ট বিক্রি করা কিংবা অন্য কোন উপায় আয় করার। তবে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক এ রকমই কয়েকটি পদ্ধতি যেগুলোর মাধ্যমে অনলাইনে বিজ্ঞাপণের বিপরীতে আয় করা যায়।

১. নিজের পণ্য বিক্রি

অনলাইন প্লাটফর্ম এ যে শুধুমাত্র অন্যের প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপণ দেখানোর মাধ্যমে আয় হয় ব্যাপারটি তা নয়। বরং অন্য কারো প্রোডাক্ট বিক্রি করার চাইতে নিজের কোন প্রোডাক্ট ও আমরা বিক্রি করতে পারি। আর এজন্য অবশ্যই সেই প্রোডাক্টটি সম্বন্ধে আমাদেরকে লিখতে হবে অথবা ভিডিওতে বলতে হবে। আর এজন্য চাই নিজের প্রোডাক্ট সম্বন্ধে গুণগান করা। এরকম অনেক ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুকে অনেক পেজ দেখতে পাবেন যেখানে তারা তাদের নিজেদের কোন প্রোডাক্ট থাকে বা তাদের সেবার কথা প্রচার করার মাধ্যমে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে।

এভাবে করে কেউ যদি চায় যে অন্য কারো প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপণ তার পেজে কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে না দিয়ে শুধু তার প্রোডাক্ট এর প্রচারই সে করবে, তবে সে সেটিও করতে পারে। আর এভাবে ফেসবুকে আমরা যেমন নিজেদের কোন ছবি Post করে থাকি এবং সেখানে আমরা বেশি বেশি Like এবং ভালো ভালো Comment পাওয়ার, ঠিক এই প্রক্রিয়াটি কাজে লাগতে পারে অনলাইনে নিজের পণ্য বিক্রি করার কাজে। যেখানে আমাদের ভিডিওতে কিংবা ব্লগে বিজ্ঞাপণ বাদ দিয়ে যদি শুধুমাত্র বিক্রি করাই উদ্দেশ্য থাকে তবে এজন্য অবশ্যই আমাদের ভিডিও গুলো তে পজেটিভ Like ও Comment থাকতে হবে।

আর এভাবে করেই অনলাইনে বিজ্ঞাপণ দেখানো ছাড়া নিজের পণ্য বিক্রির মাধ্যমে আয় করা যায়। যে প্রক্রিয়াটি আমাদের ভিডিও কিংবা ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপণ দেখিয়ে আয় করার চাইতে ও অনেক বেশি পরিমাণে লাভ এনে দেয়। যেখানে আমাদের কোন ভিডিওতে বিজ্ঞাপণ দেখিয়ে কোন একটি বিজ্ঞাপণে ক্লিক করার মাধ্যমে সামান্য কিছু অর্থ আসতো সেখানে যদি নিজের কোনো পণ্য বিক্রি করা যায় তবে সেখানে অনেক পরিমাণ লাভ থাকবে বিজ্ঞাপণ দেখানোর বিপরীতে। এছাড়া আমরা একই সঙ্গে আমাদের ভিডিও কিংবা ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপণ এবং নিজেদের পণ্য বিক্রি করতে পারি।

২. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়

যদি আমাদের ভিডিওতে কিংবা ব্লগ সাইটে আমরা নিজেদের কোনো পণ্য বিক্রি না করে এবং বিজ্ঞাপণ ও না দেয়ার মাধ্যমে আয় করি তবে এক্ষেত্রে আমরা অন্যের পণ্যকে বিক্রি করতে পারি। এমন হতে পারে যে আমাদের নিজের কোন প্রোডাক্টে নেই, সে ক্ষেত্রে আমরা অন্যের প্রোডাক্ট এর লিংক যদি আমাদের ভিডিওতে কিংবা ব্লগ সাইটের দেই তবে প্রতিটি পণ্য বিক্রির মাধ্যমে আমরা কমিশন নিতে পারি। যে প্রক্রিয়াটিকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে একজন ইউটিউবার কিংবা ব্লগার তার কন্টেন্ট থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ আয় করে।

যদি কেউ ইউটিউবে, ফেসবুকে, কিংবা ওয়েবসাইটের জন্য কিছু তৈরি করে তবে সেখানে সেগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোন প্রোডাক্ট এর লিংক দিতে পারে। যেমন কোনো একজন ব্যক্তি মাইক্রোফোন নিয়ে রিভিউ ভিডিও তৈরি করল। এবার সেই ব্যক্তি যদি তার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও ডেসক্রিপশন এ সেই পণ্যটির এফিলিয়েট লিংক দিয়ে দেয়া হবে সেটিতে ক্লিক করে যদি কেউ সেই পণ্যটি কেনে, তবে এখান থেকে সে নির্দিষ্ট হারে কমিশন পাবে। যেমনভাবে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান 'বিডি শপ' এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করার সুযোগ করে দিচ্ছে।

কোন ব্যক্তি যদি এফিলিয়েটে লিংকে ক্লিক করার মাধ্যমে সেই পণ্যটি কেনে, তবে সেই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সেখান থেকে যে কমিশন পাবেন সেটির মাধ্যমেই মূলত তার আয় হবে। এভাবে করে একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর বিজ্ঞাপণ এর চাইতেও অনেক বেশি পরিমাণে টাকা আয় করতে পারে। তো বন্ধুরা, এটি ছিল অনলাইনে আয় করার একটি মাধ্যম।

৩. স্পন্সরশিপ থেকে আয়

ডিজিটাল প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপণ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং নিজের পণ্য বিক্রির পাশাপাশি স্পনসরশিপ ভিডিওর মাধ্যমে অনেক ইউটিউবার বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকে। যেখানে বিজ্ঞাপণ থেকে মাত্র কিছু টাকা আয় হয়, সেখানে স্পন্সর এর মাধ্যমে অনলাইন প্লাটফর্ম এ একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর তার চাইতে বেশি পরিমানে আয় করে। স্পনসর্শিপ হচ্ছে ভিডিও এর মাঝে কোন একটি প্রতিষ্ঠানের কোন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে বিজ্ঞাপণ এর মত করে বলে দেওয়া।

আপনি এরকম অনেক সময় দেখে থাকবেন ইউটিউব ভিডিওতে যেখানে ভিডিও এর কোন একটি পর্যায়ে কোন একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে কিছু গুণগান করে মূল ভিডিওতে চলে যায়। যেখানে ভিডিওর মাঝে বলা সময়টুকু থাকে কয়েক সেকেন্ডে মাত্র। কিন্তু এই কয়েক সেকেন্ডের জন্য একটি ইউটিউবার লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। আর এভাবে করেই একজন ইউটিউবার ইউটিউব থেকে আয় করতে পারে। কিন্তু স্পন্সর ভিডিও শুধুমাত্র ইউটিউব এর জন্যই তৈরি হয়না।

বরং ইউটিউব এর পাশাপাশি অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম এর জন্য স্পন্সর এর মাধ্যমে কাজ করা। যেখানে এটি হতে পারে ফেসবুক, টিকটক, লাইকি কিংবা অন্য কোন প্ল্যাটফর্ম। বর্তমানে আমরা এসবের সমস্ত জায়গায় স্পন্সর এর কথা শুনতে পারি। যেখানে কোনো একটি ভিডিওর মাঝে কোন একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য সম্পর্কে গুণগান করা হয়।

সাধারণভাবে যেখানে বিজ্ঞাপণ থেকে একটি ইউটিউব চ্যানেলে আয় হয় তার চাইতেও অধিক পরিমানে আয় হয়ে থাকে স্পন্সর এর মাধ্যমে। কোন একটি চ্যানেলের ভিডিওতে স্পন্সরশিপ পেতে হলে অবশ্যই সে চ্যানেল টিকে অনেক জনপ্রিয় হতে হয়। আর একটি চ্যানেল অধিক সাবস্ক্রাইবার এবং জনপ্রিয়তা বেশি হলে সেখানে স্পন্সর ভিডিও দেওয়ার জন্য অর্থের পরিমাণ ও বেড়ে যায়। একটি স্পন্সর ভিডিও এর জন্য কোন একটি চ্যানেল কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত চার্জ করতে পারে।

উপরের এসব ছিল অনলাইনে বিভিন্ন কন্টেন্ট তৈরি করার মাধ্যমে আয় করার পদ্ধতি। যেখানে অনলাইনে যদি আমরা কোন কনটেন্ট পাবলিস্ট করি সেখানে আমরা বিভিন্নভাবে আয় করতে পারি। তবে এর বাইরেও ও আমরা অনলাইনে আয় করে থাকি। যে পেশাকে বলা হয় ফ্রিলান্সিং। ফ্রিলান্সিং হলো একটি মুক্ত পেশা। চলুন তবে অনলাইনে আয় করার এই ফ্রিল্যান্সিং সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।

ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইনে আয় কিভাবে হয়?

আমরা যখন পড়াশোনা করি তখন অভিভাবক এবং শিক্ষকেরা আমাদেরকে এটা বোঝাই যে, তুমি যদি ভালো করে পড়াশোনা করো তবে ভালো একটি চাকরি করতে পারবে। যেখানে আমরা চাকরি বলতে বুঝি ধরাবাঁধা সময়ে আমাদেরকে অফিসে উপস্থিত হতে হবে এবং সেখানে অফিসের বসের অধীনে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। যেখানে আমাদের নির্ধারিত সময় থাকবে, যেমনঃ সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত। যেটি থাকবে আমাদের প্রতিদিনের রুটিন। আর এভাবে করে চলবে আমাদের কর্মজীবন।

কিন্তু এই ধরাবাঁধা নিয়মের বাইরে যদি আমরা কিছু করতে চাই তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই চাকরি বাদ দিতে হবে। যেখানে এর সমাধান হতে পারে হয়তোবা ব্যবসা করা। কিন্তু ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই আমাদেরকে বাহিরে যেতে হবে এবং আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সে কাজটি করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যেই হচ্ছে যে, চাকরির মত ধরাবাঁধা নিয়ম থেকে বেরিয়ে আশাকরি এবং ব্যবসা বাদ দিয়ে যদি ঘরে বসেই আয় করা যায় তাহলে ব্যাপারটি কেমন হয়?

ধরাবাঁধা নিয়মের মধ্যে থেকে চাকরি এবং ব্যবসাকে বাদ দিয়ে যদি আমরা অনলাইনে কাজ করি তবে সেটিকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। যেটিকে আমরা মুক্ত পেশা ও বলে থাকি। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, কম্পিউটারের সাহায্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে অন্যের কাজ করে দেওয়াকে ফ্রিলান্সিং বলে। এখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা সকল কাজই হবে ডিজিটাল ভাবে। যেখানে প্রথাগত কাজের মতো কাজের মতো কাজ শ্রমের প্রয়োজন পড়ে না।

কেউ যদি কোন কাজে দক্ষ হয়ে থাকে তবে সেই ব্যক্তি ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন থেকে তার কাজকে খুঁজে নিবে। যেমন ধরুন আপনার একটি কাজের জন্য টিউনার বানানো দরকার। এবার আপনাকে নিশ্চয় বাজারের কোন ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাছে গিয়ে সেটির ডিজাইন করে নিতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে যদি আপনি এখানে ভালো কোন ডিজাইনার খুঁজে না পান কিংবা খুঁজে পেলেও তারা আপনার থেকে যদি বেশি চার্জ করে তবে আপনি কি করবেন? আর এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি তখন বাজারের অন্যান্য দোকানে খোঁজ করবেন।

কিন্তু এই একই কাজটি যদি আপনি দেশের অন্য প্রান্তের একজনার কাছ থেকে তার চাইতেও কম দামে করে নিয়ে সেটাকে আপনার ইমেইলে নিয়ে নেন তবে ব্যাপারটি কেমন হয়। নিশ্চয় এই বিষয়টি অনেক ইন্টারেস্টিং হবে। আর এভাবে করে আপনি যদি প্রতিনিয়ত অন্য একজনের কাছ থেকে সেই কাজটি আপনার এলাকার বাজারমূল্য চাইতে কম দামে করে নেন তবে এক্ষেত্রে আপনি অনেক লাভবান হবেন। ঠিক একইভাবে যদি অন্য কেউ আপনার থেকে কাজটি করে নেয় তবে সেটিই হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং।

যেখানে আপনি অর্থের বিনিময় অন্য একজনকে তার কাজ করিয়ে দিচ্ছেন। এখানে হয়তোবা তার ক্ষেত্রে লাভ থাকছে কিংবা সে তার প্রয়োজন অনুসারে আপনার কাছ থেকে কাজটি করে নিচ্ছে। আর এভাবে করে আপনি যদি ঘরে বসে কম্পিউটারের সাহায্যে অন্য একজনের কাজ করে দিয়ে তার থেকে অর্থ চার্জ করেন তবে এটিই হবে আপনার জন্য ফ্রিল্যান্সিং এবং আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার। এভাবে করে ঘরে বসে একজন লোক ইন্টারনেটের সাহায্যে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের লোকের কাজ করে দিতে পারে।

আর ইন্টারনেটে এভাবে করে কাজ করে দেবার জন্য রয়েছে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস। ‌ যেখানে কাজ করার ক্ষেত্রে আপনি কি পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা দেয়া হবে। ধরুন, আপনি যদি অনলাইনে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কাজটি নিতেন এবং কাজটি সম্পাদন করার পর তাকে সেটি ডেলিভারি করতেন; তবে পরবর্তীতে সে যদি আপনাকে অর্থ পরিশোধ না করে তবে ব্যাপারটি কেমন হবে? এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার তাকে ধরার উপায় থাকবে না। আর এজন্যই ইন্টারনেটে অনেক মার্কেটপ্লেসে আপনার পূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন।

বর্তমানে অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেমন Freelancer.com, Upwork.com, Fiverr.com ইত্যাদি। এসব মার্কেটপ্লেসগুলোতে যোগ্যতার ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অনেক কাজ পাওয়া যায়। ‌ যে ব্যক্তি যে কাজে দক্ষ শেষ এই কাজটি বেছে নিয়ে এখান থেকে করতে পারে। ‌এরমধ্যে যেমন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ইত্যাদি। এসব কাজগুলো করে একজন ব্যক্তি ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসে কাজ করে টাকা আয় করতে পারে।

তো বন্ধুরা, আমি আশা করছি আপনারা ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন যে অনলাইনে কিভাবে আয় হয়ে থাকে। আপনার কাছে যদি এই টিউনটি ভালো লেগে থাকে তবে জোসস করবেন। দেখা হবে আগামীর কোন টিউন ইনশাআল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম।

Level 12

আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 333 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 60 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।

“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস