অনলাইন বিজনেস করার আগে পড়ে নিন একবার!

যেকোন বিজনেস এর জন্য ইনভেস্টমেন্ট যেমন গুরুত্বপূর্ন তার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঠিক জ্ঞান থাকা। ট্রেডেশী লিমিটেড(আলিবাবা ডট কমের গ্লোবাল সার্ভিস পার্টনার)-এ দেড় বছরের মত বিজনেস ডেভলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ হিসাবে থাকায়, ছোট্ট অভিজ্ঞতা আজ শেয়ার করব, এই অনলাইন মার্কেটিং এর।

সেদিন আমার পরিচিত এক বড়ভাই আমার কাছে সাজেশন চাইল তিনি ই-কমার্স বিজনেস স্টার্ট করতে চান। তিনি ভারত থেকে কিছু প্রোডাক্ট এনে অনলাইনে বিক্রি করতে চান। কি লাগবে, কেমন খরচ-খরচা হবে, ওয়েবসাইট করবে কি করবেনা এসব বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন।

প্রথমে, কোন বিজনেস শুরু করার আগে আপনাকে এটা চিন্তা করতে হবে, আপনি যেই প্রোডাক্ট নিইয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন সেটার মার্কেট ভ্যালু কেমন? আর কারা ঐ প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে, আপনার কম্পিটিটর কারা? মার্কেট রিসার্চের জন্যে আপনার কোন “রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট” টিম দরকার নেই। আপনার প্রোডাক্ট এর নাম আর লোকেশন দিয়ে গুগল সার্চ দিলেই বুঝতে পারবেন। যেমনটা আপনি নিজে সার্চ দেন :  “Huwaei Pro lite Price in BD” ~ এই টাইপের সার্চ উইথ প্রোডাক্ট নেইম।

এরপর, আপনি আপনার প্রোডাক্টের ডিমান্ড জানেন এখন আপনার উচিত হবে “রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট – এই টার্মটি নিয়ে চিন্তা করা। আপনি যদি ১ টাকা খরচ করেন আপনি ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন কিনা! ট্রাস্ট অনলাইন বিজনেসে মানুষ কেন জানি খরচ করতে চাইনা। না ওয়েবসাইট করতে চায়, না তার প্রোডাক্টের প্রোমশন এর জন্যে বুস্টিং করতে চাই। অনলাইন সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের পয়েন্ট অফ ভিউ একদম আলাদা বলে আমার ধারনা!

আপনি একটু লজিক্যালি চিন্তা করেন, আপনি আপনার মহল্লায় ছোট্ট একটা মুদিখানা বা চায়ের দোকান দিবেন। তো আপনি কি করবেন? টেবিল, চেয়ার, বিস্কুট  এর বক্স, চায়ের পাতা, কেটলি, চায়ের কাপ – এই রকম ছোট ছোট জিনিসের উপর ইনভেস্ট করবেন। অনলাইনের ক্ষেত্রেও জিনিসটা সেইম। আপনাকে ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ, কন্টেন্ট, ছবি, প্রোমোশন এসবের পিছনেও খরচ করতে হবে। আপনাকে একটা ইনিশিয়াল বাজেট দিয়ে স্টার্ট করতে হবে যদি সেখান থেকে আপনার লাভ আসে তারপর আপনি আপনার মার্কেটিং বাজেট বাড়ানোর কথা ভাববেন।

অনেকেই আছেন ক্ষুদ্র পরিসরে স্টার্ট করতে চান, কয়েকটি প্রোডাক্ট নিয়ে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক, ইউটিউব এবং ইন্সট্রাগ্রাম সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকি। আমরা ফেসবুক লাইভে কেনাবেচা করে থাকি। এমন অনেক পেজই আছে যা আপনিও জেনে থাকবেন।

বিগ বাজেট না হলে ই-কমার্স ওয়েবসাইট না করাই ভাল। যদিও আপনি রাস্তাঘাটে, বাসে দেখে থাকবেন ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় ই-কমার্স ওয়েবসাইট করে দেয়া কোম্পানীর বিজ্ঞাপণের অভাব নাই। কোয়ালিটি কেমন হবে, আপনি আমি তা ভাল করেই জানি।  এর থেকে ভাল আপনি বড় বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে একটা অনলাইন শপ খুলে ফেলুন নিজেরই। দারাজ, বিডিশপ এই সুবিধা দিয়ে থাকে। আপনি “daraz merchant account”, “bdshop merchant account” লিখে গুগলে সার্চ করলেই পাবেন। মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে সেল জেনারেট করা খুবই সহজ।

অনেকেই আছেন, ফেসবুক বুস্টিং করে প্রোডাক্ট সেল করার কথা ভাবেন। কিন্তু সঠিক নিয়মটা জানেন না বা কিভাবে ফেসবুক এর মাধ্যমে বিজনেস করতে হয় সে সম্পর্কে কোন ধরনের জ্ঞান অর্জন করা ছাড়াই, বুস্টিং বা এডভারটাইজিং এর জন্যে টাকা খরচ করে ফেলেন। টার্গেটেড অডিয়েন্স ছাড়াই বুস্টিং করে কোন লাভ হয় না। আপনাকে আপনার প্রোডাক্ট এর কাস্টমার কারা, কিভাবে তাদের টার্গেট করে আপনার প্রোডাক্টের প্রোমশন করবেন এ বিষয় গুলো সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। আর এজন্য আপনাকে একটু সময় নিয়ে নলেজ গ্যাদার করতে হবে। তার জন্যে আপনাকে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবার, অনলাইনে পেইড কোর্স  করার বা ইউটিউবে অদক্ষ লোকের ভিডিও দেখার চেয়ে, আপনি  “facebook blueprint – লিখে অনলাইনে সার্চ করুন। ওখানের লার্নিং পয়েন্ট থেকে লার্ন করুন। প্রফেশনাল এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কোর্সগুলো একটু মনযোগ দিয়ে করুন তাহলেই হবে।

আমার মতে অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে সঠিক জায়গা থেকে সঠিক তথ্য এবং জ্ঞান থাকা খুবই জরুরি। কারণ একজন আপনার লাইভে আপনার পন্য দেখে বা আপনার ফেসবুক পেজে পন্যের ছবি দেখেই তার পকেটের টাকা খরচ করবে। তাই আপনার পন্যের কোয়ালিটি, ছবির রেজুলেশন এবং এডিটিং আর পন্য ডেলিভারী যাতে সঠিক সময়ে হয় এই ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করুন।  সাথে সব ডকুমেন্টস যেমন – ট্রেড লাইসেন্স (যদি বাইরে থেকে পন্য এনে বিক্রি করেন সেক্ষেত্রে প্রয়োজন। ), পাসপোর্ট প্রয়োজন হবেই যদি নিজে থেকে বুস্টিং করেন, ডুয়েল কারেন্সী মাস্টারকার্ড, সি এন এফ এজেন্টের সাথে ভাল সংখ্যতা যদি করতে পারেন – আপনার অনেক লাভই হবে।

পরিশেষে এটাই বলব যে, অনলাইন থেকে আয় করা খুবই সহজ। এই ধারনা থেকে বের হয়ে আসুন। কোন কিছুরই শর্টকার্ট হয় না। সবকিছুর জন্যেই সময়, ধৈর্য আর পরিশ্রমের প্রয়োজন পড়ে।

Level 1

আমি ইখলাস রহমান। Graphics Designer, chicks & feed, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

মোশন গ্রাফিক্স নিয়ে আমার অনেক ইন্টারেস্ট । আমি গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসাবে বর্তমানে একটি কোম্পানীতে জব করছি এবং পাশাপাশি মার্কেট প্লেসগুলোতে ফ্রিল্যান্সিং। কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন রকমের প্রিসেট তৈরী বা কেনার প্রয়োজন পড়ে। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে পেইড সাব-স্ক্রিপশন নেয়া আছে। আর সেজন্যই ভাবলাম যদি এগুলো শেয়ার করা যায় ফ্রি-তে তাহলে আমার মত ডিজাইনারদের...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস