মাল্টিটাস্কঃ একের অধিক কাজ এবার করুন আপনার মতো করে আর হয়ে উঠুন আরও বেশি স্মার্ট এবং প্রোডাক্টিভ!! মাল্টিটাস্ক এবার আপনার কাছে দাসত্ব স্বীকার করবেই!!! 

হ্যালো সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় টেকটিউনসে প্রযুক্তির স্বাদ নিয়েই চলছেন।

আমি চলে আসলাম ঠিক আগের মতোই আপনাদের কাছে। আমার আজকের টিউন একটু ভিন্ন বলতে পারেন। এই সমস্যায় আজকাল সচারচার সবাই পড়ছেন। আমরা এই একুশের শতকে একের অধিক কাজ করে নিজেদের জানান দিতে চাই যে আমরা কোন নির্দিষ্ট গন্ডির ভেতরের না। ভালো লাগে বা নিজের জন্য কল্যাণকর বেশ কিছু কাজ আমরা করতে পারি। অর্থাৎ একের অধিক কাজ করে আমরা চাই আমাদের অবস্থানকে আরও বেশি সুদৃঢ় করতে। যেন ভবিষ্যৎ আমাদের মনে রাখে ঠিক একটু অন্য ভাবে।  🙄

আপনি যখন ছোট বিজনেস শুরু করবেন বা অনলাইনে যারা একাধিক কাজ করেন তারা বোঝেন যে কতো রকমের প্রোডাক্টিভ কাজ তাদের করতে হয়। কিন্তু সব দিক সামলে চলা আসলে একটু কষ্ট বৈকি। একটু বললে ভুলই বলা হবে মনে হয়। অনেক সময় এই মাল্টি টাস্ক করা অনেক বেশি পরিমান কষ্টই।

কিন্তু আপনি যদি ধীরে ধীরে এই মাল্টি টাস্ক করা আয়ত্ত করতে পারেন তাহলে আপনি অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই এগিয়ে যাবেন।

কিন্তু গবেষণায় বলে, মানব মস্তিস্ক মাল্টিটাস্ক অর্থাৎ একের অধিক কাজ নাকি এক সঙ্গে করতে পারে না। Art Markman ঠিক এমনটিই প্রমাণ করেছেন তাঁর Smart Thinking বইটিতে। সেহেতু একটি প্রশ্ন থেকেই যায়, “What the human brain does is what I call time-sharing” অর্থাৎ আপনি যদি টাইমকে একাধিক কাজের সাথে শেয়ার করতে চান তাহলে সেটা কীভাবে সম্ভব? আসুন বোঝার চেষ্টা করি কীভাবে কি?  😉

আপনার ব্রেইন একটি কাজকে নিয়েই কেবল এক সঙ্গে চিন্তা করতে পারে। একের অধিক চিন্তা করার চেষ্টা করুন দেখবেন আপনি পেরে উঠছেন না বা নিজের কাছেই কষ্ট মনে হচ্ছে। তাহলে প্রকৃতপক্ষে আপনি কি একের অধিক কাজ করেন নাকি টাইম শেয়ার করেন? উত্তর আসলে আমরা টাইম শেয়ার করি। টাইম শেয়ারিং এর মাধ্যমে চেষ্টা করি দিনে একের অধিক চিন্তা বা কাজকে সফল করার জন্য।

কিন্তু প্রশ্ন থাকে আমরা কি আসলেই একের অধিক কাজ বা মাল্টিটাস্ক এক সঙ্গে করতে পারি? আসলে এটার উত্তর আপনাকে নিজেই নিতে হবে। আপনি কতোটা অভ্যস্ত মাল্টিটাস্ক করতে সেটা আপনাকেই ডিসাইড করতে হবে। সবাই চেষ্টা করলেও মাল্টিটাস্ক সবাই সমানভাবে করতে পারে না। তবে ধীরে ধীরে আয়ত্ত করতে পারে।  😛

আপনি নিচের ৩ টি টেকনিক ফলো করলে মাল্টিটাস্ককে আরও বেশি সফলভাবে করতে পারবেন, আর হয়ে উঠবেন আরও বেশি প্রোডাক্টিভ। আসুন তাহলে দেখে নিই সেই ৩ টি টেকনিক।

মাল্টিটাস্ক এবার আপনার কাছে দাসত্ব স্বীকার করবে-

মাল্টিটাস্ককে সফলভাবে করতে গবেষকরা নিচের টেকনিকগুলো ফলো করতে বলেন। যেটা আপনার কাজকে আরও বেশি সহজ করবে ভালোভাবে সব কাজকে শেষ করতে,

১) সামঞ্জস্য কাজ একের পর এক করতে চেষ্টা করুনঃ

আপনি এক কাজের পর আরেকটি কাজ যখন শুরু করার জন্য টাইম শিডিউল করবেন তখন চেষ্টা করবেন যতোদূর সম্ভব সামঞ্জস্য কাজ একত্রে করার। কারণ আপনি একটি কাজ করলে আপনার ব্রেনের সকল নিউরন সেই কাজে নিমগ্ন থাকে। ফলে ঠিক তারই সামঞ্জস্য একটি কাজ যদি আপনি পরেই করেন তাহলে আপনার নিউরন সেটাকে সহজে আয়ত্ত করতে পারবে।

কিন্তু আপনি যদি একটি কাজের পর অন্য কাজ একদম সামঞ্জস্যহীনভাবে করেন তাহলে সেটা আপনার সময় নষ্ট করবে  বলে অনেক গবেষক মত দেন। কারণ সেই কাজে আপনার নিউরনকে নিমগ্ন করতে বেশ ঝুঁকি পোহাতে হয়। যেটা সামঞ্জস্য কোন কাজের মধ্যে করলে এতোটা ঝামেলা করতে হতো না।

তবে আমার নিজস্ব মতবাদ, সামঞ্জস্য কাজকে একের পর এক করতে করতে যখন একদম ভিন্ন একটি কাজ শুরু করতে যাবেন তাঁর আগে নিজেকে একটু খোলা আকাশে পায়চারী বা অন্য হালকা বিনোদন দিয়ে নিবেন তাতে আপনার ব্রেনের নিউরন আরও বেশি কর্মঠ হবে পরবর্তী কাজের জন্য।

২) আপনার To DO লিস্টকে আপনার কাছে স্পষ্ট রাখুন অর্থাৎ ভিজিবল (Visible) রাখুনঃ

মাল্টিটাস্কে To-DO লিস্ট বাধ্যতামূলক। তবে সেখত্রে আপনার দিনের বা সপ্তাহের To-DO লিস্টকে ভিজিবল বা স্পষ্ট রাখুন আপনার কাছে। সেজন্য চেষ্টা করুন প্রিয়োরিটি অনুসারে কাজকে কালার মার্ক করে রাখার অভ্যাস করা। আপনি যেহেতু সামঞ্জস্য অনুসারে একের পর এক কাজ করবেন। সেহেতু কাজের প্রিয়োরিটি খুঁজে না বের করলে হয়তো আপনি প্রয়োজনীয় কাজে কম সময় দিয়ে ফেলবেন।

এক্ষেত্রে আমি বলবো আপনি প্রিয়োরিটি অনুসারে কয়েকটি কালার নির্বাচন করুন। সেটা আপনার গুরুত্ব বুঝতে সুবিধা করবে।

৩) নতুন কাজের তথ্য পয়েন্ট করে রাখুন এবং রিভিউ দিনঃ

আপনি যেহেতু মাল্টিটাস্ক করেন সেহেতু আপনাকে অনেক কাজ এক দিনে সামলাতে হয়। সেহেতু আপনার টিমে নতুন কোন কাজ দিলে সেটা একটু পয়েন্ট আউট করে রাখুন। কারণ সেটা যখন আপনি করতে যাবেন হয়তো ঐ তথ্যগুলো আপনাকে অনেক বেশি সাহায্য করবে।

না হলে হয়তো আপনি গুরুত্বপূর্ণ কোন পয়েন্ট কাজের সময় মনে না করতে পারেন। যেটা আপনার কাজকে বিলম্বিত করবে, এক্সট্রা প্রেসার ক্রিয়েট করবে ব্রেনে।

পরিশেষে আমি এটাই বলবো মাল্টিটাস্ক যেহেতু এখনকার যুগে জরুরী হয়ে পড়েছে সেহেতু আপনাকে একটু বেশিই দৃষ্টি দিতে হবে এদিকে। যেভাবে আপনি আপনার কাজকে খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারেন সেভাবে আপনার মতো করে আপনি পয়েন্ট করে রাখুন। তবে উপরের বিষয়গুলো মোস্টলি সবার জন্য প্রয়োজন।  😎

আপনার দৈনন্দিন কাজ আরও বেশি সফল হোক, এই কামনায় আজ এখানেই শেষ করছি। আর কিছু জানতে চাইলে বা মাল্টিটাস্ক আপনি কীভাবে আরও সফলভাবে সম্পন্ন করেন তা আমাদের জানাতে টিউমেন্ট অপশন আপনার জন্য সব সময় খোলা থাকছেই।

আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ সবাইকে।  😆

 

Level 2

আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

সর্দার ভাই আপনার টিউনের চেয়ে ইমেজ গুলা দেখে চরম মজা পাইলাম। আসলে এভাবে একাধিক কাজ সঠিক ভাবে করা যাবে কিনা সন্দেহ আছে। তবে হয়ত চেষ্টা করে মাল্টিটাস্কিং টা আয়ত্ব করা যাবে । যাতে অন্ততপক্ষে পাশাপাশি দুইটা কাজ করা যায়। (আমিও পারি- গান শোনা+ কাজ করা) ম্যান-মাল্টিটাস্কিং এর একটা ভিডিও দেখেছিলাম ঠিক এমনই একজন মানুষ একই সময়ে ৩/৪ টা টাস্ক করে চলেছে। বেশ ভালো আইডিয়া চালিয়ে যান সর্দারজী । থাংকু 🙂

    ধন্যবাদ জনি ভাই! ছবি লেখার প্রাণ; যেকোনো দিক দিয়ে কমতি হলে সার্থকতা নাই টিউন করে।
    ধন্যবাদ মূল্যবান মতবাদের জন্য।

    আর চেষ্টা করুন আয়ত্ত করার, অনেকে করছেন এখন!! 🙂

Thanks Bro

আমার কাছে টিউনের চাইতে ছবিগুলো বেশি ভাল লেগেছে ভাইয়া….পিসিতে কপি করে রাখরাম , হুমম টিউন ও কিন্তু ভাল হয়েছে ধন্যবাদ ।

অসাধারন !