ফেসবুক নিয়ে যে কনফিউশন হয়েছে…..

ফেসবুক সাইটটা তৈরী হয়েছে বেশিদিন হয়নি।

ছ'বছর হয়েছে। সাইটটা ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলির সাথে কানেক্টেড থাকার জন্য এতই ভালো যে এখন অবস্থা এমন হয়েছে - ফেসবুক ছাড়া চলেই না! আমি নিজে ফেসবুকে ঢুকেছিলাম প্রায় তিন বছর আগে। ২০০৮ এর শেষদিকে আমারই এক ফ্রেন্ডকে আমি ফেসবুকে রেজিস্টার করে দিলাম- আর সে এখন ফেসবুকে মাফিয়া ওয়ারস খেলতেই ঢোকে!

আসল কথায় আসি।

আমি যখন থেকে ফেসবুক ইউজ করি, তখন থেকেই দেখে আসছি ইসলাম, আল্লাহ, মহানবীকে অ্যাবিউজ করে পেইজ আর গ্রুপ তৈরী হত। অসংখ্য বিধর্মী সেখানে ফ্যান হত কিংবা জয়েন করত। আবার সেগুলোর অ্যান্টি গ্রুপ-ও তৈরী হত। সেখানেও অনেক মুসলিম জয়েন করত।
এই গ্রুপ-অ্যান্টি গ্রুপ, আর পেইজ-অ্যান্টি পেইজ কিংবা "ডিলিট দ্য গ্রুপ/পেইজ....." এসব ফেসবুকের প্রথম থেকেই চলে আসছে। হয়ত "রিপোর্ট অ্যাবিউজ" বাটনের কল্যাণে সেসব গ্রুপ/পেইজ ডিলিট হত।
আবার তৈরী হত একই ধরণের অ্যাবিউজিভ গ্রুপ/পেইজ। আবার তার অ্যান্টি গ্রুপ/পেইজ হত।
এগুলো প্রথম থেকেই হয়ে আসছিল এবং এখনো চলছে।
কারণ, ফেসবুকে যে কেউ পেইজ/গ্রুপ তৈরী করতে পারে।

একটা সহজ বিষয় আমরা মুসলমান ফেসবুক ইউজাররা বুঝতে পারছি না- এটা ফেসবুকের ব্যবসা।

আমরা যতদিন ফেসবুকে থাকব, ততদিন তাদের ব্যবসা জমজমাট থাকবে।

"ইসলাম ধর্মকে অ্যাবিউজ করা হচ্ছে ফেসবুকে" - বিষয়টা সম্পর্কে অবশ্যই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ অবগত আছে। কিন্তু এ ব্যাপারে তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া মানে কিন্তু এই নয় যে ঐসব পেইজ/গ্রুপ ডিলিট করে দেয়া। কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ম্যানুয়ালি এরকম অসংখ্য গ্রুপ/পেইজ ডিলিট করতে পারবে না- এটা অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে।
ফেসবুক যদি এ ব্যাপারে কেয়ারফুল হত, তাহলে অবশ্যই তারা ফিল্টারিং সিস্টেম যোগ করতে পারত।
ফিল্টারিং সিস্টেম যোগ করা হলে ইসলাম অ্যাবিউজিভ কোন গ্রুপ/পেইজ তৈরী করতে গেলে সেটা ফিল্টারে ধরা পড়ত এবং গ্রপ/পেইজ তৈরী হত না। এমন একটা ফিল্টারিং সিস্টেম তারা খুব সহজেই তৈরী করতে পারে- তার জন্য একটা প্রোগ্রাম তৈরী করতে হবে মাত্র।

কিন্তু ফেসবুক এ জাতীয় কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

আমরা যতদিন ফেসবুক ব্যবহার করব, এ জাতীয় পেইজ তৈরী হতে থাকবে। আমরা আবার তার অ্যান্টি গ্রুপে জয়েন করে ভাবব- "এইত! ইসলামকে সমুন্নত রাখার জন্য বেশ একটা কাজ করলাম।"
আদতেই কি এসব গ্রুপ দিয়ে ইসলাম অ্যাবিউজ রোধ হয়?

মুসলমানরা যদি সবাই একযোগে ফেসবুক ইউজ ছেড়ে দিত, তাহলে হয়ত তারা এ ব্যাপারে কেয়ার করত।

আমরা যদি সত্যিই চাই ফেসবুকে ইসলাম অ্যাবিউজ বন্ধ করতে, তাহলে আমাদের সবার উচিত ফেসবুক ছেড়ে দেওয়া। সারা বিশ্বে যত মুসলিম ফেসবুক ব্যবহার করে, তারা সবাই যদি এই সাইটে ঢোকা বন্ধ করে দেয়- তাদের ব্যবসার গ্রাফ নিম্নমুখী হতে সময় লাগবে না। আর এই সাইটটা আলেক্সা র‌্যাংকিং এ দ্বিতীয়। টানা সাতদিন তাদের গ্রাফ নিচের দিকে নামতে দিন- দেখুন কীভাবে ইসলাম নিয়ে কেয়ার করা শুরু করে!

সমস্যা হল, আমাদের মুসলমানদের মাঝে ইউনিটি নাই।

ফেসবুক ছেড়ে দেওয়া কোন ব্যাপারই না! ফেসবুক ছাড়া আমরা মারা যাচ্ছি না! দু-তিন বছর আগে তো আমরা ফেইসবুক ছাড়াই বেশ ছিলাম। কই, কোন সমস্যা তো হত না। আমি আমার ফ্রেন্ডদেরকে বিষয়টা বুঝিয়ে বললাম।  বেশ কয়েকজন সিদ্ধান্ত নিল ফেসবুক ছেড়ে দেওয়ার। সিদ্ধান্তটা ভালো, নি:সন্দেহে।

ফেসবুক বাদ দিলে কানেক্টেড থাকব কীভাবে?

এই প্রশ্নটা অনেকের কাছেই শুনি। স্যোশাল নেটওয়ার্কিঙের তো আরও সাইট আছে। মাইস্পেস আছে। টুইটারআছে। গুগল বাজ আছে। এগুলোতে তো আমরা কানেক্টেড থাকতে পারি।

ফেসবুকের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল- আমি একটা স্ট্যাটাস আপডেট করলে সবাই সেটা জানতে পারে।
অনেক আগে মানুষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের খোঁজ-খবর নিত, চিঠি আদান-প্রদান করত। টেলিফোন হবার পরে সেটা আরেকটু সহজ হল। মোবাইল হবার পরে আরও সহজ হল। আর ফেসবুক যে ধারণাটা নিয়ে এল, এতে মোবাইলের মত খরচও হবে না, কিন্তু কানেক্টেড থাকা যাবে আরও বেশি।

ফেসবুক ছেড়ে দিলেও, এই জাতীয় সার্ভিস আমাদের দরকার। সেজন্য আমরা টুইটার বা গুগল বাজ ব্যবহার করতে পারি। এগুলো আরও অনেক সহজ।

অনেকেই আরেকটা প্রশ্ন রাখছেন- 'টুইটার' বা 'গুগল বাজ' এ যদি একইভাবে ইসলাম অ্যাবিউজ হয়?

যারা এই প্রশ্ন করছেন, তাদের আগে টুইটার আর গুগল বাজ ইউজ করে দেখা প্রয়োজন।
গুগল বাজ তো সম্পূর্ণভাবে জিমেইলের ভিতরে ইন্টিগ্রেটেড একটা ফিচার। যার জিমেইল আছে, সে চাইলে এটা ইউজ করতে পারে। এখানে শুধু 'ফলো' আর 'আনফলো' এই দুইটা অপশন আছে। আমি যাক ফলো করব, তার স্ট্যাটাস আপডেট আমি পাব। আবার, আমাকে যে ফলো করবে, তার স্ট্যাটাস আপডেটও আমি জানতে পারব।
বিষয় হল- এখানে কোন 'পাবলিক পেইজ' বা 'গ্রুপ' নেই। সুতরাং, ইসলাম অ্যাবিউজ হবে, এমন আশংকা নেই। আর কেউ যদি ইসলাম অ্যাবিউজিভ কথা লেখেই- তাহলে তাকে আনফলো করলেই হল! তাহলে তার আপডেট আর আসবে না আমার কাছে। তাছাড়া, যে এ জাতীয় কাজ করবে, তাকে তো আমি এমনিতেই ফলো করব না!
টুইটার এর বিষয়টাও সিমিলার।

এখানে তো আরও সিম্পল। গুগল বাজ এর চেয়েও আরও কম ফিচার।
শুধুমাত্র স্ট্যাটাস আপডেট। আর একইভাবে 'ফলো' 'আনফলো' করার অপশন। এখনেও পাবলিক পেইজ বলে কিছু নাই, যেটা স্ট্যাটিক কোন কন্টেন্ট দেখাবে। এটাও গুগল বাজ এর মতই ডাইনামিক কন্টেন্ট এর।

সুতরাং, গুগল বাজ কিংবা টুইটার দিয়ে ফেসবুকের মত অ্যাবিউজের আশংকা নেই। আর কানেক্টেড থাকাটাও সহজ।

টুইটার বা গুগল বাজ নিয়ে আমার এই লেখা নয়। আমাদের দরকার কানেক্টেড থাকা। আর তার জন্য আমরা এসব সার্ভিস ব্যবহার করি। প্রয়োজনে এর যেকোনটা ছেড়ে অন্যটাতে যাওয়া যায়। বিশেষত যেখানে বিষয়টাতে আমাদের ধর্ম জড়িত, সেখানে আমাদের দ্বিমত করার দরকার নেই। এই মুহুর্তে আমাদের দরকার ফেসবুক ছেড়ে দেওয়া।

Islam is the complete code of life. And we love it.
We are Muslims, and we are almost forgetting that!
Wake up! It's been enough sleep!

পূর্বে আমার ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত: http://nure-alam.blogspot.com/2010/05/blog-post_27.html

Level 0

আমি নূরে আলম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 9 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

আমি আছি ইসলামের সাথে আছি। আজ থেকে ফেইসবুক ছেরে দিলাম

বাংলাদেশে ফেসবুক ইসলামের কারনে বন্ধ হয় নাই,হইছে আমাদের প্রধান মন্ত্রিকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক ছবি এবং মন্তব্য প্রচার করার কারনে।

    এটার কি অবস্থা একটু জানাইয়েন ভাই অনেক আগে এই ঠিকানাটা পেয়েছিলাম।
    http://www.mylemex.com

    Level 0

    তেমন কোন সাইট না জুমলায় করা jomsocial কমপোন্টেনে ব্যবহার করা।
    এই ধরনেই সাইটে সিকিউরিটি ভাল না। যে কোন সময় হ্যাকিং হয়ে যাবার সম্ভব্যনা আছে। চাইলে দিনে ১০ থেকে ২০ বার নগর বালক তৈরি করা যায়।

    Level 0

    markbiplob ভাইয়ের কাছে jomsocial কমপোনেন্ট টা কি আছে? সকাল থেকে খুঁজছি। অথবা এই সম্পর্কিত কিছু লেসন দিলে উপকৃত হতাম। ইমেইলঃ [email protected]

এতদিন মনে মনে চেয়েছিলাম যাহা, আজি বুঝি পূরণ হলো তাহা…………………………..আহা!! কি আনন্দ লাগিতেছে মনে, ফেইসবুক যেন আর নাহি দেখি এ বাংলার আয়তনে
মোর নবীকে নিয়ে যখন করেছিলো রঙ্গ, কোথায় ছিলো তখন সরকারে বঙ্গ……………….আজি যখন হইল ম্যাডামদের ইজ্জত নিয়া টানাটানি, তবেই বুঝি আদেশ এলো বন্ধ করো ফেইসবুকখানি
ক্ষমতা থাকিলে নবীর চেয়েও ম্যাডামদের সম্মান বড় হয়, ব্যাপারখানা দেখিয়া ইহাই এ অধমের মনে লয়!!!!!

    ভাই খুব জোস কইছেন । একেবারে আমার মনের কথা । সত্যি ক্ষমতা থাকিলে নবীর চেয়েও ম্যাডামদের সম্মান বড় হয় ।

    Only possible in Bangladesh..

    ঘুমন্ত জাহাঙ্গীর

    আপনি কি জানেন উনারা মারা জাবার পরে উনাদের কবর স্থান মাজারে পরিনত হয়। তাহলে বুঝেন এবার

    Level 0

    I agree with you………..Well said indeed.

    Level 0

    ওরা নিপাত যাক……………দেশ তাদের থেকে কিচ্ছু আশা করতে পারেনা

আমি মনে করি একজনের জন্য এমন কাজ করা ঠিক না । যারা করবে তাদের শাস্তি দেওয়া। খারাপ লোক পৃথিবীতে থাকবেই। তা হলে তো সব কিছু বন্ধ করে দিতে হবে। বন্ধ করে দিলেই তো সবকিছু ঠিক হয় না।

জি ভাই ফেইসবুক ছেড়ে দেওয়াই ভাল, টুইটার অনেক ভাল

অনেকে বলেন যারা কাজটা করেছে তাদের শাশ্তি দিলেই হইত কিন্তু আমার প্রশ্ন কত জনকে এভাবে শাশ্তি দেয়া যায়!আজ এক জন করবে কাল আরেক জন করবে আর ইসলাম বিরোধীরাতো সিরিয়াল দিয়ে করতেই থাকবে এবং তাদের কোন বিচারও হবেনা আমরাতো দেখতে পাচ্ছি সালমান রুশদি কিংবা তসলিমা নাসরিনকে কারা পৃষ্টপোষকতা করছে,তাই আমি বলব পাপিকে নয় আসুন আমরা পাপকে ঘৃনা করি আর ইহাই মনে হয় সমস্যা সমাধানের ভাল উপায়।

আমার মনে হয় আমি পোস্টটাতে যথেষ্ট ডিটেইলস দিয়েছি। আমাদের দরকার সার্ভিস। আমরা নেটওয়ার্কিং সার্ভিস চাই। ফেসবুক যেহেতু আমাদের ধর্মের ব্যাপারে কেয়ার করছে না, তাই আমাদেরও উচিত না ফেসবুক ইউজ করা। আর বলেছিই তো, আমাদের দরকার সার্ভিস। টুইটার ইউজ করতে দোষ কী!

ভাই আপনার লেখা পুরাটা পরতে পারলাম না তাই পরে মন্তব্য করব তবে এটা ঠিক ইসলাম বিরোদি কাজ করলে বেশ তারা তারি উপরে উঠে যাই এবং খুব তারা তারি পরে যায় আর যখন পরে তখন আর হদিস থাকেনা ।