বর্তমানে প্রায় প্রত্যেকটি স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো গাড়ি নির্মাণের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। ২০০৭ সালে স্টিভ জবস যখন প্রথম আইফোন তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল, তখন গুগল তাদের অ্যান্ড্রয়েড এর দিকে ঝুঁকে। এর পরবর্তীতে আমরা দেখেছি যে, প্রযুক্তি বিশ্বে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু, খুব কম লোকই এটি অনুমান করতে পেরেছিল যে, কত দ্রুত এই প্রেক্ষাপটটি পাল্টে যাবে।
খুব কম সময়ের মধ্যে তারা গ্রাহকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে নিজেদের ব্যবসায়িক মডেল পরিবর্তন করে এবং এসব স্মার্টফোন নির্মাতারা তাদের গাড়ি তৈরির ঘোষণা দেয়। আর এটি কোন কাকতালীয় ঘটনা নয়। আপনি যদি চারপাশে তাকান, তাহলে আপনি এটি স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাবেন যে, বড় বড় স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানি গুলো তাদের গাড়ির ব্যবসায় প্রবেশ করছে। উদাহরণস্বরূপ, Xiaomi থেকে শুরু করে Huawei, LG এবং Sony এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো গাড়ি ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
আজকের টিউনটিতে আমি আলোচনা করব, কিভাবে আমরা অতীতের স্মার্টফোন Revolution থেকে কি শিখতে পারি এবং এগুলো ব্যবহার করে ভবিষ্যতের গাড়ি শিল্পের বিপ্লবে প্রয়োগ করতে পারি।
বর্তমানে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানই গাড়ি উৎপাদনের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে। এক্ষেত্রে, বর্তমানে যেসব গাড়ি সবচাইতে ট্রেন্ডে রয়েছে, সেগুলো হলো: ইলেকট্রনিক্স গাড়ি, সেলফ ড্রাইভিং, গাড়িতে আধুনিক সফটওয়্যার সম্বলিত ফিচারের ব্যবস্থা। চাহিদার কথা বিবেচনা করলে, বর্তমানে তারা মৌলিকভাবে গাড়ি তৈরি এবং স্মার্টফোন বাজার দুটির পেছনেই কাজ করছে। আর ঐতিহ্যগতভাবে কিছু দশক ধরে গাড়ির ব্যবসা ও বেশ জমে উঠেছে।
স্মার্ট ফোন প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ড গুলোর একটি উপলব্ধি করতে পারছে যে, আগামীতে স্মার্ট-কারের ব্যাপক চাহিদা দেখা দেবে। যখন মানুষ আরও বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হবে এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য বাহন ব্যবহার করবে, তখন সেগুলোতে স্মার্টনেস আনা জরুরি। আর সেই লক্ষ্যেই, তারা বর্তমানে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠান এটি ঘোষণা দিয়েছে যে, কিছুদিনের মধ্যেই তারা তাদের গাড়ি বাজারে নিয়ে আসবে। স্মার্টফোন ব্র্যান্ড গুলো যদি সত্যিই তাদের গাড়ি বাজারে নিয়ে আসে, তাহলে ভবিষ্যতের এসব অনেক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ হতে চলেছে।
এটি নিশ্চিত যে, অতীতের এসব গাড়ি গুলোর সাথে ভবিষ্যতের গাড়ি গুলোর মিল থাকবে। সর্বোপরি, এসব গাড়িগুলোতেও চাকা, বসার আসন, জানালা এবং এ জাতীয় বৈশিষ্ট্যগুলো আগের মতই থাকবে। কিন্তু, ভবিষ্যতে গাড়ির ভেতরের বৈশিষ্ট্যগুলোকে আরো অনেক বেশি উন্নত করা হবে এবং সেই লক্ষ্যেই প্রত্যেকটি গাড়ি নির্মাতা কাজ করছেন। এর মধ্যে যেমন: সেলফ ড্রাইভিং কার গুলোতে নিজের ইচ্ছামত সফটওয়্যার সেটআপের সুবিধা। তবে, গাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে সেলফ ড্রাইভিং এর উপর সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
আমরা বর্তমানে এটি দেখতে পাচ্ছি যে, স্মার্টফোন নির্মাতারা গাড়ি তৈরির প্রতি বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের মনে এই প্রশ্ন আসতে পারে যে, তাহলে স্মার্টফোন তৈরি করার চাইতে কি গাড়ি তৈরি করা সহজ? কেন স্মার্টফোন নির্মাতারা গাড়ি তৈরির প্রতিও আলাদাভাবে মনোযোগ দিচ্ছেন?
মূলত স্মার্টফোন তৈরি করার চাইতে গাড়ি তৈরি করা মোটেও সহজ নয়। বরং, স্মার্টফোন তৈরির করার চাইতে গাড়ি তৈরির শিল্প আরো অনেক বেশি কঠিন। প্রায় দেড় দশক আগে অ্যাপল এবং নোকিয়া তাদের স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফোনের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে। কিন্তু, বর্তমানে আমাদের কাছে স্যামসাং, অপো, ভিভো এবং শাওমির মত ফোনগুলো পছন্দের প্রথম তালিকায় রয়েছে।
আর বর্তমান পৃথিবী স্মার্ট ফোনের যুগ থেকে শেষ হয়ে স্মার্ট গাড়ির শিল্পে প্রবেশ করেছে। এক্ষেত্রে, সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় চালিত গাড়ি গুলোর দিকে।
সমস্ত দিক বিবেচনা করলেই স্মার্টফোন তৈরি করার চাইতে গাড়ি তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন। যেমন: এখানে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হয়, অনেক শক্তিশালী প্রযুক্তির প্রয়োজন, একটি ভালো রিসার্চ সিস্টেম এর প্রয়োজন, বড় সাপ্লাই চেইন প্রয়োজন এবং সেইসাথে এটিকে সফল করার জন্য প্রচুর পরিশ্রমের দরকার। তবে, পুরনো সময়ের তুলনায় আধুনিক ও দ্রুত প্রযুক্তিতে গাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া অনেক সহজ। কিন্তু সমস্ত ফোন নির্মাতা ব্র্যান্ডগুলো গাড়ি নির্মাণ এর প্রতি আগ্রহ দেখায় না। এক্ষেত্রে, তাদের ভিন্ন বিজনেস মডেল থাকতে পারে। তবে আমরা এটি দেখে থাকি যে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই স্মার্টফোন তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য প্রোডাক্ট তৈরি করে থাকে।
কোন একটি ফোন ব্র্যান্ড কখনোই চায় না, তারা শুধুমাত্র একটি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করুক এবং একটি প্রোডাক্টের মাধ্যমেই পরিচিতি লাভ করুক। বরং, তারা বাজারে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি করে থাকে। আর তারই অংশ হিসেবে, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে অনেকেই স্মার্টফোনের পাশাপাশি গাড়ি নির্মাণের প্রতিও আগ্রহ দেখায়।
গতবছর গাড়ি নির্মাণের খরচের দিক থেকে ৪০% ইলেকট্রনিক্স এর জন্য ব্যয় করা হয়েছিল, যেটি এক দশক আগে ছিল ২৭ শতাংশ, এবং তারও এক দশক আগে ছিল ১৮ শতাংশ। তাই, গ্রাহক চাহিদার দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, বর্তমানে ইলেকট্রনিক্স আইটেম গুলো গ্রাহকদের কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে। আর, ভবিষ্যতের কার গুলোতে দরকার আরো অ্যাডভান্স টেকনোলজি। কেননা, সেই সময় মানুষ আরো বেশি প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে যাবে, যে কারণে যাতায়াত করার গাড়ি গুলোতেও এসব প্রযুক্তি গুলোর সমন্বয় দরকার হবে।
উদাহরণস্বরূপ, সে সময় একজন ব্যক্তি গাড়িতে বসে সামনের রাস্তার দিকে না তাকিয়ে শুধুমাত্র গাড়িকে তার গন্তব্যের কথা বলবে এবং এই গাড়িটি তাকে তার গন্তব্যে নিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে, গাড়িতে বসে থাকা ব্যক্তি তার বাহনের ইন্টারনেট স্ক্রিনের দিকে বেশি সময় ব্যয় করবে। তাই কোম্পানিগুলো এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে।
বর্তমানে কিছু কোম্পানি তাদের গাড়িগুলোতে Self-driving সফটওয়্যার আপডেট করতে দেয়। এই বিষয়টি আপনি মোবাইল কোম্পানিগুলোর সাথে তুলনা করুন। একসময় আমাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন গুলো ছিল শুধুমাত্র হার্ডওয়্যার ভিত্তিক। কিন্তু, সেগুলো যখন ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হল বা সেগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহার করার মত সুবিধা যুক্ত হলো, তখন সেগুলোতে Third-party অ্যাপ ইন্সটল করা শুরু হলো। আর যখন মোবাইল গুলোতে Third-party অ্যাপ গুলো বিভিন্ন স্টোর থেকে ডাউনলোডের মত সুবিধা সামনে এলো, তখন সফটওয়্যার বিক্রি নিয়ে একটি ব্যবসার উদ্ভব ঘটল।
একইভাবে ভবিষ্যতে যখন Self-driving কার গুলোর রমরমা ব্যবসা শুরু হবে, তখন আবার এসব গাড়ির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সম্পন্ন সফটওয়্যার এর ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে।
অনিবার্যভাবে সফটওয়্যার গাড়ির ব্যবসাকেও খেয়ে ফেলবে। যেখানে কাস্টমাররা সফটওয়্যার কিনবে এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে গাড়ি বেছে নিবে।
অন্যকথায় গাড়ির খরচ এবং রেভিনিউ উভয়ই ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে। এসব দিক থেকে বিবেচনা করলে, ভবিষ্যতের গাড়ি শিল্প বর্তমানের স্মার্টফোন শিল্পের মতো পরিণত হতে চলেছে। বর্তমানের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গাড়িগুলোতে বিভিন্ন ফিচার দিয়ে গ্রাহক আকৃষ্ট চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে তারা তাদের গাড়িগুলোতে Electrification, Self driving এবং Best Software সফটওয়্যার যুক্ত করছে। এক্ষেত্রে তারা শুধুমাত্র আইসবার্গের মত উপরের অংশটিকেই দেখছে।
এবার চলে আসা যাক, স্মার্ট ফোন ব্র্যান্ডগুলো কেন গাড়ি তৈরির দিকে ঝুঁকছেন, সে বিষয়টির মূল আলোচনায়।
স্মার্টফোনগুলোর গাড়ি তৈরির পেছনে প্রধান কারণ হলো, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, গাড়ির ভবিষ্যৎ ইলেকট্রনিক ড্রাইভিং এর মধ্যে নিহিত। যেখানে গাড়িগুলো পেট্রোল থেকে চার্জিং এ যাবার জন্য এই শিল্পটি বহু বিলিয়ন বিনিয়োগ করেছে। ইতিমধ্যে অনেক স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা আগামীতে ইলেকট্রনিক কার নির্মাণ করবে।
উদাহরণস্বরূপ, শাওমি বলেছে যে, তারা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বৈদ্যুতিক গাড়ি সরবরাহ করবে। কোম্পানিটির সিইও ২০২১ সালের অক্টোবরের দিকে বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি উপস্থাপনা করার সময় এই ঘোষণা দিয়েছিল। তাদের লক্ষ্য হলো, প্রতিবছর তারা প্রায় ৩ লক্ষ গাড়ি উৎপাদন করবে। তারা বৈদ্যুতিক চালিত গাড়ি গুলির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান বাজারে যাত্রা শুরু করতে চায়।
এবার প্রশ্ন আসতে পারে, শাওমি কেন স্মার্টফোন তৈরি করা বাদ দিয়ে গাড়ি তৈরি দিকে এলো? এর একটি প্রধান কারণ হতে পারে, তারা নিজেদেরকে শুধুমাত্র স্মার্টফোন নির্মাতা হিসেবে দেখে না। বরং, তারা নিজেদেরকে স্মার্ট ডিভাইসের বিক্রেতা হিসেবে দেখে। আমরা এটি জানি যে, তারা বৈদ্যুতিক স্কুটার এবং সমস্ত ধরনের ডিজিটাল গৃহস্থালি সামগ্রী বিক্রি করে। আর শাওমির সিইও গত বছরের মার্চ মাসে বলেছিলেন যে, "বৈদ্যুতিক গাড়ি গুলো স্মার্ট জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং আগামী দশকে এই বাজারটি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। আর এই বাজারে প্রবেশ করা আমাদের জন্য স্বাভাবিক। "
আর এভাবে আমরা যদি অন্যান্য মোবাইল ব্র্যান্ড গুলোর দিকে নজর দেই, তাহলেও আমারা প্রায় একই চিত্র দেখতে পাবো।
আমরা বর্তমানে এটি দেখছি যে, প্রত্যেকটি স্মার্ট ফোন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান গুলো নিজেদের গাড়ি তৈরির কথা ভাবছে। কিন্তু, এই দিক থেকে স্যামসাং পুরোটাই ব্যতিক্রম। আর গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে আমরা স্যামসাংকে চীনের হুয়াওয়ে এর সাথে তুলনা করতে পারি। যেখানে চীনের এই প্রতিষ্ঠানটি নিজেরা অন্যদেরকে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে, কিন্তু নিজেদের ক্ষেত্রে এগুলো বেশিরভাগ সময়ই প্রয়োগ করে না।
একইভাবে আমরা যদি দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং কোম্পানির দিকে তাকাই, তাহলে আমরা দেখতে পাই যে, কোম্পানিটি গাড়ি তৈরি শিল্পে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে এবং চেষ্টা করলেই তারা স্মার্ট গাড়ি তৈরি করতে পারবে। কিন্তু, তারা বর্তমানে কোন গাড়ি তৈরি করছে না। এর পরিবর্তে, স্যামসাং প্রসেসর এবং স্মার্ট গাড়ির জন্য চিপ এবং নানা ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি করে।
আমরা জানি যে, স্যামসাং আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য প্রায় সকল ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলো তৈরি করে থাকে। এগুলোর মধ্যে যেমন: টিভি, রেফ্রিজারেটর, ক্যামেরা, মেমোরি কার্ড, বিভিন্ন স্টোরেজ ডিভাইস, মোবাইল ফোন, মনিটর সহ যাবতীয় হোম এপ্লায়েন্স ও গুলো তৈরি করে। এছাড়া স্যামসাং নিজেদের জন্য এবং অন্যান্য মোবাইল ব্র্যান্ড গুলোর জন্য মাইক্রোচিপ তৈরি করে। অন্যান্য মোবাইল ব্র্যান্ডগুলো স্যামসাং এর কাছ থেকে চিপ সংগ্রহ করে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি তাদের উন্মোচিত Exynos Auto T5123 চিপ ফাইভ-জি পরিচালনা করতে পারে। এটি গাড়িতে যাত্রীদেরকে গাড়িতে বসে Netflix -এ মুভি স্ট্রিম করার সুবিধা দেয় বা এটি গাড়ির ভেতরে যেতে যেতে ভিডিও কল করার অনুমতি দেয়। আমরা যতদূর জানি তা হল, স্যামসাংয়ের নিজেদেরই গাড়ি তৈরি করার কোন পরিকল্পনা নেই।
ইলেকট্রিক কার নির্মাণের সবচাইতে জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান হল টেসলা। হাজারো ক্রেতা বসে থাকে তাদের নতুন মডেলের গাড়ি বাজারে আসার অপেক্ষায়। টেসলা তাদের গাড়ির জন্য নিজস্ব সফটওয়্যার তৈরি করে। তারা নিজেদের গাড়ির জন্য নিজস্ব চিপ ডিজাইন করে। আর সেই চিপগুলোতে নিজস্ব Self-driving algorithm রান করে। এছাড়া ইদানীং তারা নিজস্ব ব্যাটারি তৈরি করে এবং এটির একটি এসক্লুসিভ ইকো-সিস্টেম রয়েছে।
আর অন্যদিকে, কয়েক মাস আগে Nevidia ঘোষণা করে Oren এবং Atlan নামক Next Generation এর কারের SoC। সেই সাথে তারা ঘোষণা করে Hyperion নামক রেফারেন্স কিট, যেটিতে সমস্ত প্রয়োজনীয় সেন্সর যুক্ত করা রয়েছে। আর এটিতে প্রয়োজনীয় সেন্সর সার্কিট এবং সফটওয়্যার রয়েছে, যাতে নির্মাতারা এখানে মূলত বুদ্ধিমত্তা এবং Self-driving capabilities যুক্ত করে।
কয়েক মাস আগে LG এবং Contract manufacture magna ঘোষণা করেছিল যে, তা Electronic power trains নিয়ে কাজ করবে। যার মধ্যে রয়েছে Motor inverter এবং On-board charger।
তো এবার আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে, বর্তমানের ফোন ব্র্যান্ডগুলো আগামীর গাড়ির বাজার ধরার জন্য সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। তবে, কিছু প্রতিষ্ঠানের এই ধরনের কোন পরিকল্পনা আমরা দেখতে পাইনা। এর মধ্যে যেমন আমারা স্যামস্যাং এর কথা বলতে পারি। যদিও তারা গাড়ি নির্মাণ না করলেও, অন্যান্য খাত অবশ্যই দখল করে আছে। আর কিছু কিছু ব্রান্ডের এই পরিকল্পনা না থাকলেও, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে, যাতে করে ভবিষ্যতের এই বিশাল গাড়ির বাজার ধরতে পারে।
প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান চায় নিজেদের ব্যবসাকে বর্ধিত করতে। আর এজন্য প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই বাজারব্যবস্থা বিশ্লেষণ করে নিজেদের নতুন ব্যবসা সম্প্রসারিত করে। আর এখানে বিষয়টি যখন গাড়ির নির্মাণের, তখন আগ্রহটি থাকে আরো বেশি। কেননা, ভবিষ্যতে যেহেতু মানুষের জীবনযাত্রা হবে আরও স্মার্ট, তাই তখন স্মার্ট জীবনযাত্রার জন্য দরকার স্মার্ট গাড়ির। আর সেজন্যই কোন ব্র্যান্ডগুলো বর্তমানে গাড়ি নির্মাণের দিকে ঝুঁকছে।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)