পর্তুগালের টুরিস্ট ভিসার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন?

যারা পর্তুগালে আসতে চায়, তাদের অনেকের প্রশ্ন থাকে যে, কিভাবে বাংলাদেশ থেকে সহজে পর্তুগালের ভিজিট ভিসা বা টুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায়? সো আপনি যদি ইউরোপে আসতে চান, তবে পর্তুগালের ভিসা দিয়েও আসতে পারেন। এর আগে শেয়ার করেছিলাম কিভাবে ইউরোপের টুরিস্ট ভিসা পাবেন। যদি সে ভিডিওটি না দেখে থাকেন, তবে এখান থেকে অবশ্যই দেখে নিবেন। কারন ইউরোপের সেনজেন ভূক্ত সব দেশের ভিসার জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া একই রকম।

সো লেটস গেট স্টারটেড।

বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে, ইউরোপের সেনজেন ভূক্ত দেশের টুরিস্ট ভিসা পাওয়া খুবই কঠিন একটি কাজ। তবে ততটা কঠিন কাজ না। কারন আজকাল মানুষ অহরহ ইউরোপের টুরিস্ট ভিসা পাচ্ছে। তাই যদি আপনিও ভিসা পেতে চান, তবে কিছু টেকনিক ফলো করলে অবশ্যই ভিসা পেয়ে যাবেন।

তো প্রথম কথা হচ্ছে, বাংলাদেশী খালি পাসপোর্ট দিয়ে আপনি কখনোই সেনজেন ভিসা পাবেন না। সেজন্য আপনার পাসপোর্ট টা আগে ভারী করে নিতে হবে। কিন্তু কিভাবে ভারী করবেন? সেজন্য প্রথমে ৩-৪টা দেশ ভ্রমন করতে হবে। ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, চীন - এসব দেশের ৩-৪টি দেশ ভ্রমন করলেই চলবে। এতে করে আপনার পাসপোর্টে এসব দেশের ভিসা এবং সীল থাকবে। ফলে আপনার পাসপোর্টের ভ্যালু অনেক বেড়ে যাবে। তবে ২-৩ মাস পর পর প্রতিটা দেশ ভ্রমন করলে সবচেয়ে ভালো হয়। আর এসব দেশ ভ্রমণ বাবদ ২-৩ লাখ টাকা খরচ হবে।

এবারে চলুন জেনে নেই কিভাবে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।

  • প্রথমে লাগবে ভিসা আবেদন ফর্ম - এখান থেকে ভিসা অ্যাপ্লিকেশান ফর্মটি ডাউনলোড করে নিবেন। তারপর সেটা কম্পিউটারের মাধ্যমে পূরন করে প্রিন্ট করে নিবেন। তবে এ কাজটা আপনি এম্বাসীতে গিয়ে VFS Global এর অফিস থেকেও করতে পারবেন।
  • এবারে লাগবে পাসপোর্ট সাইজ ছবি - আপনার ইদানিং এর তোলা দুই কপি রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগবে। ছবির সাইজ হতে হবে ৩৫/৪৫ মিমি।
  • এখন লাগবে বৈধ পাসপোর্ট - আপনার পাসপোর্টটি সাথে করে নিতে হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে এবং এতে ৪-৫টি খালি পাতা রাখবেন।
  • এবারে লাগবে হোটেল বুকিং রিসিট - আপনি পর্তুগাল গিয়ে কোন হোটেলে থাকবেন, তা প্রমান করার জন্য সেই হোটেলের বুকিং কপি জমা দিতে হবে। সেজন্য অনলাইনে পর্তুগালের যেকোন হোটেলের বুকিং দিবেন এবং তারা আপনাকে যে রিসিট দিবে, সেটা প্রিন্ট করে নিবেন। তবে দু নম্বরি করার চেস্টা করবেন না।
  • এবারে লাগবে বিমানের টিকেট - পর্তুগালে যাওয়া এবং আসার জন্য আপ-ডাউন টিকেট কাটবেন। তারপর সেই টিকেটের প্রিন্ট করে নিবেন। অনেকে টিকেট না কেটে ডুপ্লিকেট টিকেট দিয়ে দেয়। ফলে ভিসা পায় না। তবে চালাকি করে এই কাজটা করতে যাবেন না।
  • তারপর লাগবে ব্যাংক লেনদেনের প্রমান - আপনার আর্থিক অবস্থা যে অনেক ভাল, সেটা প্রমান করতে আপনার ব্যাংকের গত ৬ মাসের লেনদেনের প্রমান দেখাতে হবে। সেজন্য গত ৬ মাসে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে ১৫-২০ লাখ টাকার লেনদেন থাকতে হবে। তবে যত বেশি দেখাতে পারবেন, ভিসা তত সহজে পেয়ে যাবেন।

    তাছাড়া আপনার অ্যাকাউন্টে বর্তমানে ১৫-২০ লাখ টাকা জমা রাখতে হবে। ফলে অ্যাম্বাসীর কর্মকর্তারা বুঝতে পারবে যে আপনার ভ্রমন খরচ চালানোর ক্ষমতা আছে।

    অনেকে কি করে, ব্যাংক স্ট্যাটমেন্টস নকল দেয়। ফলে তারা ভিসা পায় না। তাই এই কাজ থেকে দূরে থাকবেন।

  • এখন লাগবে ট্রাভেল ইন্সুরেন্স - আপনি পর্তুগালে যাওয়ার পর, যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন বা কোন দুর্ঘটনা হয়, তবে সেদেশের সরকার আপনার চিকিৎসার দায়িত্ব নিবে। সেজন্য আপনাকে ট্রাভেল ইন্সুরেন্স করতেই হবে। এম্বাসীতে গেলে আপনি এ কাজটা করতে পারবেন। সেজন্য আপনাকে ৫-৬ হাজার টাকা দিতে হবে। তবে টাকার পরিমান বাড়তে পারে।
  • সবশেষে লাগবে ভিসা ফি - আপনি আগের সবগুলো কাগজপত্র নিয়ে যখন পর্তুগাল অ্যাম্বাসীতে যাবেন, তখন ভিসা ফি জমা দিতে হবে। ভিসা ফি ৮-১০ হাজার টাকা লাগতে পারে। ভিসা ফি দেবার পর আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিবে। সাথে আপনার সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

সব কাগজপত্র ঠিক থাকলে, আবেদন করার ১০-১৫ দিনের মধ্যেই ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে অনেকে ৪-৫ দিনেও ভিসা পেয়ে যাবেন। আর ভিসা পেয়ে গেলে পর্তুগাল সহ ইউরোপের সবগুলো সেনজেনভূক্ত দেশে ভ্রমন করতে পারবেন।

তবে কোন ভাবেই ডুপ্লিকেট কাগজপত্র জমা দিবেন না।
তাহলে কিন্তু ভিসা আবেদন রিজেক্ট হয়ে যাবে।

এই নিয়ম গুলো ফলো করলে আপনি খুব সহজেই পর্তুগালের ভিজিট ভিসা পেয়ে যাবেন। আর সেক্ষেত্রে সর্বমোট ২-৩ লাখ টাকা খরচ হবে। অথচ যদি দালাল দিয়ে করেন, তবে তারা ১৫-২০ লাখ টাকা দাবী করবে। তাই সবসময় দালাল থেকে সাবধান। বরং এই নিয়ম গুলো ফলো করে নিজে নিজে আবেদন করলে ভিসা পেতে কোন সমস্যা হবে না।

ইউরোপ সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন তথ্য পেতে, আমার বিডি মায়া চ্যানেলটি ঘুরে আসতে পারেন। আর আপনার মতামত অবশ্যই জানাবেন।

Level 2

আমি মাসুম রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 24 টি টিউন ও 42 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

ইন্টারনেট আমার নেশা ❤️


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস